Friday, August 9, 2024

আমি নই -- নিবারণ চন্দ্র দাস

আমি নই 
নিবারণ চন্দ্র দাস 
০৮/০৮/২০২৪
চাই না আমি কবি হতে 
  নইকো আমি কবি,
সোহাগ ভরে লিখে রাখি 
  চলমান জলছবি।

সাহিত্য থাক সজাগ সচল 
  থাক প্রতিবাদ বেঁচে,
নাই বা হল মুক্তো পাওয়া 
   সপ্তসিন্ধু সেঁচে।

লিখে রাখি মানব বেদন 
  সমাজ সচেতনা,
লিপিবদ্ধ করে রাখি 
  মানবিক বেদনা।

তিতিবিরক্ত গৃহবাসী 
  লিখি কেমন করে,
তাও লিখে যাই যেমন তেমন 
   এই কালো অক্ষরে।

লিখে রাখি মানবতার
   নীতিগত ক্ষয়,
আমার সময় ফুরিয়ে এলো 
   পাইনা তো আর ভয়।

লিখে রাখি দেশ বিদেশে 
   চলছে যা সব আজ,
মন কামনায় ডাক দিয়ে যাই 
   পড়ুক ভেঙে বাজ।

রেখে গেলাম আপন মনন 
   বদলে যাবেই সব,
জগত জুড়ে ভরবে আবার 
   খুশির কলরব।

মানুষ আবার মানবতায় 
  আসবে ফিরে ঠিক,
গাইবে আবার আনন্দ গান 
   ভরবে দিগ্বিদিক।

বলছি আবার নই তো আমি 
   কবি সাহিত্যিক,
ভুল যদি কই তোমরা সবাই 
   দিও আমায় ধিক্।
          

বাইশে শ্রাবণের অর্ঘ্য -- দুলাল চন্দ্র দাস

বাইশে শ্রাবণের অর্ঘ্য
দুলাল চন্দ্র দাস
৮/৮/২৪
কলকাতার জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারে
জন্ম হয়েছিল তোমার কবি,
তোমার কলমে এঁকেছিলে সারা বিশ্বের ছবি
তোমার হৃদয় মাঝে।

বাইশে শ্রাবণ দুপর বেলায়
নিভলো রবীর জীবন প্রদীপ
নামলো ধরায় অন্ধকার, হরিয়েছি রবী তোমার
হৃদয় মাঝে থাকো হৃদয় জুড়ে।

তুমি ছিলে গানের জগতের আলো
তুমি ছিলে বিশ্ব ভূবনে ভাষার যাদুকর,
তোমার রচনা গানের সুরে,
সবাইকে নিলে আপন করে
সোনারতরী, খেয়া,গীতিমাল্য,গীতালি, গীতবিতান
রচিলে তুমি গীতাঞ্জলি, বিশ্ব দিয়েছে সন্মান।

হে বিশ্ব কবি ,জ্বালাতে জ্ঞানের প্রদীপ
ফিরে এসো আবার ধরণীর মাঝে,
কোন এক নবীন কবির সাজে
তোমার কলমের গল্প নাটক নিয়ে।

আমরা সকল দেশবাসী বাইশে শ্রাবণ এলে
প্রয়াণ দিবস করছি পালন,তোমাকে হারিয়ে
আজ যেখানে থাকো তুমি, লহ পুষ্পাঞ্জলি
জানাই প্রণাম তোমার চরণে
গেয়ে তোমার লেখা গানে।

রাহু দশা -- উন্মেষন খীসা

রাহু দশা
উন্মেষন খীসা
০৮।০৮।২০২৪
দেখবো কতো ভুবন মাঝে
ভাল কিংবা মন্দ,
দেখতে চাইনা মোরা যে আর
এই ধ্বংসাত্মককাণ্ড।

ধ্বংস করতে লাগেনা সময়
গড়তে লাগে সময়,
ধ্বংসাত্মক থেকে বাঁচতে কে
দিতে পারে অভয়?

চলছে এখন রাহু দশা
কখন আসে বিপদ,
একবিন্দুও বিশ্বাস নাই
কখন আছে হঠাৎ।

আপদ-বিপদ কখন আসে
জানেনা কেউ ভাই,
সবাই থেকো সাবধান করে
জীবনের গ্যারান্টি নাই।

অসুর এখন বড্ড রাগী
কখন যে কি করে,
সাবধানের মার নাই প্রবাদে কয়
মানো তা মনভরে।

একদিন যাবে বিপদ কেটে
হবে সব স্বাভাবিক,
তখন সবাই শান্তি পাবে
মানসিক ও শারীরিক।

Wednesday, August 7, 2024

সত্যি না হয় তাই -- নিবারণ চন্দ্র দাস

সত্যি না হয় তাই 
নিবারণ চন্দ্র দাস
০৫/০৮/২০২৪
চাই না আমার আর কিছু,
          তোমাদের ফেলে দেওয়া গুলো
               রেখে দিও একপাশে ঠেলে।
ঘুরবো না আর পিছু পিছু,
          খুঁজব না আর চালচুলো
                থাকব এবার এলেবেলে।

পাওয়ার ভাঁড়ার পূর্ণ হয়েছে,
          চাই না আমার কিছু,
                অন্তর থেকে বলছি তা মেনে নিও।
এই মন জেনো শান্ত যে হয়ে গেছে,
          হয়তো এ মাথা আছে নীচু,
                চাইলে আঘাত আবার সজোরে দিও।

বন্ধনহীন চাই না যে হতে আমি,
      অযুত বাঁধনে বাঁধতে পারো আমায়,
      করবনা কোন ওজর আপত্তি।
হতে চাই না তো কভু আমি নামী দামী,
      আমার আমিতে থাকতে যদিও থামায়, 
      তাতেও আমার নয়কো বিপত্তি।

রঙচঙে কোন জীবনের পথে নয়,
   রয়ে যেতে চাই পিছে,
      সবহারাদের সাথে গাঁটছড়া বেঁধে।
        চাইনা আমার আর কোন বরাভয়,
          ডেকো না আমায় মিছে,
             এ জীবন খানি কেটে যাক হেসে কেঁদে।

শুনে শুনে পচে গেল কান,
                আমি এক অযোগ্য অধম,
              কোনরূপ নাই যোগ্যতা।
           গোপনে নিভৃতে মনে মোর,
         ঘা দিয়ে যায় কথাগুলো,
সত্যি কি এই কথকতা?
          

উলট পুরাণ -- নেপাল চন্দ্র বিশ্বাস

 উলট পুরাণ 
 নেপাল চন্দ্ৰ বিশ্বাস 
  ৬.৮.২৪
গাছের ডালে হনুমানে বেড়ায় ঘুরে ঘুরে, 
ক্ষুৎপিপাসায় খাদ্য থাকে নাগাল থেকে দূরে ।
পাথর দিয়ে হনুমানের মূর্তি গ'ড়ে গ'ড়ে,
মন্দিরেতে পুজো দি' তায় অতি ভক্তি ক'রে ।

পাথর-তৈরি হনুমানের খাবার নাই যে শক্তি, 
খাবার তবু দিই তাহাকে দেখিয়ে খুব ভক্তি ।
গাছের ডালে মিষ্টি মধুর গান গাহিছে পাখি,
সেখান থেকে ধ'রে এনে খাঁচায় বেঁধে রাখি ।

আবার কভু মাংস খাচ্ছি শিকার ক'রে তাকে,
ভারসাম্য তো পরিবেশের এরাই ধ'রে রাখে ।
পাথর-তৈরি পক্ষীরাজ পুজো পাচ্ছে ঘরে, 
অদ্ভুত শাস্ত্র কী বিচিত্র মানুষ তৈরি করে ।

অনাথ শিশু পথের ধারে অভুক্ত রয় পড়ে, 
মাটির মূর্তির সামনে খাবার রাখি থরে থরে ।
শ্বেত পাথুরে বাবার জন্য জল বয়ে নিই বাকে,
জন্মদাতার স্নানের খবর কেউ কভু না রাখে ।

এই রকমের উলট পুরাণ গোড়াতে যার গলদ,
দেখছি এখন মনুষ্যকুল আগাগোড়াই বলদ ।
রাজনীতিতে দোষটা দেখে কী হবে আর বলো,
রাজনীতি তো নীতির চালে চিরকাল-ই ম'লো ।

গলদ দেখছি ঘোড়াঘাটে, নেতারা তাই করে, 
সব অকারণ নীতির খেলা, নীতি কাঁদে ঘরে ।
বন্ধ ঘরে অন্ধ হলো ন্যায়-নীতিহীন দেশটা, 
অন্ধকারে নীতিগুলো আবদ্ধ রয় শেষটা ।

Tuesday, August 6, 2024

আলোর দিশা দাও -- সুরজিৎ পাল

 আলোর দিশা দাও
 সুরজিৎ পাল 
 ৫.৮.২০২৪
স্বপ্ন গুলো চোখের মণি কণায় ভাসতে.. ভাসতে.. কখন হারিয়ে গেল বুঝতে পারলাম না।
স্বপ্ন ভঙ্গের চারদেয়ালের অন্ধকারময়-ঘর ঘিরে ধরে গিলতে আসে - কেনো এমন হয় জানি না?
এটা কি ভয় না আশংকা?
জীবনের দর্শন পাল্টে যেতে যেতে কানে কানে বলে চলে- 
মৃত্যু ভয় কাহারে কয় সম্রাজ্ঞী - সে কি বোঝ তুমি?
চোখ থেকে নিখোঁজ হয়ে, মনের গলি ঘুরে,ঘিলু তে বিলুপ্তি, 
সব অন্ধকার, একি  সূর্য রশ্মির হারিয়ে যাওয়া ভূমি?
নাকি পাগলা গারদে বন্দী 
অর্ধ উন্মাদ সেই ছেলেটি- যে
শিকল ভাঙ্গার গান গাইতে গাইতে ফাঁসির মঞ্চে দিয়ে গেল প্রাণ।
রাতের অন্ধকারের শেষ নেই,
সকালের সূর্যের দেখা নেই,
স্বপ্ন গুলো বুঁদবুদের মতো ওঠে- ফেটে ছড়িয়ে যায় অসংখ্য ছোট ছোট স্বপ্নে।
কানে ভাসে - "ভাঙলো রে, ভাঙলো রে, ভাঙলো রে, 
ভাঙলো আঁধারের ঘুম....."
শৈশবের স্মৃতি ঘেঁটে দু একটা,
কৈশোরের ভালো লাগা, 
যৌবনের নির্ভয় উদ্দাম।
হারিয়ে গেছে চিলেকোঠার চিল চিৎকার যন্ত্রণায়,
আমি পথ ভ্রষ্ট নাবিক - মাস্তুল হীন নৌকায় বসে সামলে চলি
উথালপাথাল ঝঞ্ঝা বিদ্ধস্ত রাতের কায়া হীন মায়া।
আমি অন্ধকারের যাত্রী... ধরিত্রী মা আমায় আলোর দিশা দাও।

নিত্য বাঁধি যে ঘর বুকের কোনে -- আইনুল হোসেন সানু

' নিত্য বাঁধি যে' ঘর                
                         বুকের কোণে', ~
---//-------আইনুল হোসেন সানু' ~
চেয়েছিলে
শব্দহীন কন্ঠে বলি, 
ফিরে এসো বুকে', সেই থেকে' ই
বসি একা,
প্রতীক্ষা' র প্রহর 
কি' যে' কষ্টে' র আর সে' যদি হয় 
প্রিয়' অতি প্রিয়' জনের,
বোঝো তবে,...
.... 

অভূত,.....
সময় করি পার, 
পরন্তে এই পাড় ভাঙা জীবনের ! 
সাথে জুড়ে থাকা এলোমেলো আত্মিক 
স্বপ্ন খুঁজে ফিরি দিনভর, বিবর্ণময় যত বর্ণ
 দু' হাতে কুড়িয়ে ফিরি সযতনে,
কুরুক্ষেত্র হবে ভেবে 
বর্ণের সাথে মিলিয়ে বর্ণ গড়ি 
পংক্তি আর 
পংক্তি' তে পংক্তি যোগে 
করতে গঠন অযাচিত ভিন্ন গল্পের 
ধারা এক, অনাহূত 
এই জীবনের .....

গভীর 
হতে গভীরে 
কখনও বা' প্রয়োজন ছেড়ে
অপ্রয়োজনে নেমে আরও নীচে কিংবা
 তারও অতি গভীরে গিয়ে খুঁজি
করতে যাচাই 
ভিন্নতর শব্দের মানে কেবলই
জীবনের প্রয়োজনে ......

তবুও সে' 
অপ্রয়োজনেই ঘুরেফিরে
প্রশ্নে প্রশ্নে কেবলই বিদ্ধ আমায়, 
না দেয় স্বস্তি বিন্দু, একটুও ঘুমোতে ? 
এক মূহুর্ত না' মিলতে' একত্রে
পাতা দু' চোখে' র, 
হোক' না' রাত্রি গভীর হোক' 
সে' যতই গম্ভীর   ....... 

কোথা' 
হতে শুরু  
কোথা' গিয়ে শেষ
না বোধি অযাচিত ব্যাথার
খচখচানি মনে-তে, আকুলি বিকুলি 
সারাক্ষণ এ' পাশ ওপাশ, 
বুকের ভিতর তড়িৎ প্রবাহ নিরব
ছুটোছুটি প্রাণ বাধ্য করে 
মানতে..... 

তীক্ষ্ণ তায়
রই পেতে কান ক্ষীণ' শুনি
তান্ডব খেলা ভাঙনের,  
 
সশব্দে
প্রতিনিয়ত ভাঙছে কূল  
হুঙ্কারে হচ্ছে সাবার, এ' পাড়
ওপারে মানছে না' নিয়ম না বিধি
নিষেধ কেউ-ই, চলছে যে' যার ইচ্ছে মত
 অতি গোপনে,
গড়তে জীবন 
নিবিড় মমতায় রোধিতে ভাঙন
সামনে পিছন অহেতুক ঝুট ঝামেলায় 
কাটে বেলা', 
 
অন্তর্নিহিতে 
ভুলে সৃষ্ট অদৃশ্য ক্ষত
ক্রমশ সংক্রমিত, ছড়ায়' সংক্রমণ 
সমস্ত দেহময় পৌঁছে গভীরে আরও 
গভীরতার আরও একটু গভীরের ঐ 
অতি গহীনে .... 

প্রতিরোধ
প্রতিহতের ঠিক নাগালের 
যেন' বাহিরে 
চঞ্চল যদি হয় মন, তবে
তারে শাসিবে কি' করে তখন,? কেন 
সে' আর কিসের লাগি এমন করিয়া খুঁজে
মরে ঐ অস্পৃশ্য সুখ,
বোধি 
সে' কি' অনাহূত, নাকি' সে'
শুধুই মিলনের তরে .? 

দিনভর 
ঠিকানা হীন কাঁদিয়া 
ফেরে, মনের অসুখে জাগে
নিশি একা, ধুঁকে ধুঁকে না' মরিবার 
তরে কখনও সে' ঘুমের ঘোরে, সে' কি' 
শুধু তৃপ্তিহীন অতৃপ্ত 
অপ্রাপ্তির কারণ ?  

নাকি' 
নিরুপায় 
অহিংস সজ্ঞানে,  
পরিত্যাক্ত জেনেও পেয়ালা ঐ 
বিষের 
অনিচ্ছা ভরে 
ইচ্ছে করেই দিচ্ছে চুমুক চুকচুক 
প্রতি প্রত্যুষে' হতে বিমুখ.? 

তবে কি' 
এই ভেবে.? 
কি' হবে বেঁচে আর
এমনি করে, পাওয়া না' 
পাওয়ার ছিলো যত আশ মিটেছে 
সে-তো' কবে'ই এবং সকল' ই,....
জীবন নামক
দুঃসহ 
কোনো গল্পের যেন'
শেষ দৃশ্যপট  .... 
পৌঁছে এখন এই অন্তে 
জানি' বাকী' আরও যত অগনিত 
গুনাঙ্ক ঐ গুনিতের .....

নয়' 
সে' তো গুনে শেষিবার 
প্রাণ নাশের ধ্বংসাবশেষ যত 
সে' শুধুই নিরবে দেখে সয়ে যাবার, 
নয় সে' 
শুধরে নেবার না বোধ 
না বিবেচনা অবশিষ্ট বুঝি আজ, না
সময় এখন আকুতির.? 
 
নেই ক্ষতি 
দিস নে পাতে ভাত ! তবে, 
চাই নে দিস ঐ হাতে মিশিয়ে বিষ 
তাতে একটু একটু করে তুলে এই মুখে 
হতে নিঃশেষ, 
দোহায়
দিস নে বেঁচে থাকবার 
এমন উপকরণ, যা' গিলতে 
অতিশয় কষ্টের, পরিপাক উপক্ষয় 

জীবিত 
অথচ কঙ্কাল স্বরূপে
ঠিকরে রবে চেয়ে বিস্ফরিত 
দুই চোখ', চলবে নিঃশ্বাস নামেতে,
নয় 
ধুঁকেধুঁকে বেঁচে
এখন সময় কাটাবার, না 
অপেক্ষা' আক্ষেপ না কালক্ষেপণ 
আগত ঐ প্রতীক্ষিত 
নির্মম মৃত্যু' র  ...... 

চলন্ত 
অনন্ত চলবে 
গ্রীস্মের প্রখর খরতাপে, হিম 
বরফ শীতার্ত শীতে দূর্বার দূর্যোগে 
ঝড় ঝঞ্ঝাট ময় তীব্র বর্ষণ' মুখর দিনে 
ও রাতে কোহাল ঐ রাজপথে 
প্রতিনিয়ত
প্রতিমুহূর্ত ফিরবে মুখে মুখে নিপীড়ন নিপীড়িতের কথা' এই গল্পের 
একটু হলেও খানিক, হোক' 
ভয়ার্ত নীচু স্বরে 
উদয়িত ঐ
শেষ সূর্য অস্তমিত 
শেষার্ধের শেষ সময়েরও 
শেষ পর্যন্ত জানি' রবে এর রেশ,...
............যা'
শেষ হতে চেয়েও 
না হবে কখনওই শেষ
ক্ষণে' ক্ষণে' কেবলই মনে হবে, 
এই তো' বেশ 
ঝুলে ঝুলে তবু চলবে, 
হবে না' কখনই ত্যাগী'-দের জীবন 
গল্পের কথা' কভু শেষ .....

কালোমনি -- প্রহ্লাদ

  কালোমনি
  প্র হ্লা দ 
   ০৫/০৮/২৪
আমার গায়ের রং কালঅ বল্যে
সবাই আমাকে কালোমনি বল্যে ডাকে। 
তাও তুই আমাকে.... 

এই ত, সেদিনের কুথা!
আমার বয়েস তখন পনরঅ
আর তুর কত? কুড়িও হয় নাই!
তুর কুনু লজ্জ্যা শরম ছিল নাই, 
রুজ রুজ লদীর ধারে
অর্জুন গাছের ডালে বস্যে
বাঁশিটো বাজাতিস আর আমি
তুর বাঁশি শুন্যে
ঘরে থাইকত্যে লাইরথ্যম।
আহা! কত ঢং!
আবার ওই গানটোই বাজাতিস  - 
"ও ললিতা উকে আজ চল্যে যেত্যে....." 

আচ্ছা বল ত, তুই কী কইরে জেন্যে ছিলিস
য্যা উ গানটঅ আমার খুব ভালঅ লাগে? 
উ গানটঅ যখন তুই বাজাতিস
তখন আমার বুকের ভিতরটঅ 
হাঁজড় পাঁজড় কইরে উইঠতঅ
আর তখন আমি 
ছাগল চরাবার নাম কইরে
লদীর ধারে চল্যে আইসথম, 
এমনি কইরে তুই আমার 
মনটঅ মজাইঁছিলিস। 
তুর লেইগ্যে আমি ঘর ছাইড়ল্যম,
বাপ-মা ছাইড়ল্যম, সব ছেইড়্যে
আমি তুর ঘরে উইঠল্যম... 

তারবাদে
কতঅ দিন গেলঅ, মাস গেলঅ, 
বছরের পর বছর পার হঁইগেল
কিন্তুক আমাদের ঘরে আখুনো.... 
মা ডাক শুনার লেগ্যে
মনটঅ আমার ছটফট কইরথ্য
ভগমান একবার আমার দিকে 
মুখ তুল্যে ভেল্যেও দেইখল্যেক নাই। 
গাঁয়ের লুকে আমাকে
বাঁজা মিয়া বল্যে ডাইকত্যে লাইগল্য, 
তখন আমার বুকের ভিতরটঅ
কঁকাইঁ উইঠত্য। 
আমার আর বাঁইচতে মন হইত্য নাই। 
সত্যি বলছি, আমার দিকে একবার
ভালঅ কইরে ভেল্যে দেখ
দিনকে দিন আমার শরীলটঅ
কেমন যেন শুকাঁই যেছ্যে! 
সত্যি বইলছি, আমি আর বাঁইচবঅ নাই রে, 

কী বললি? আমাকে আগুল্যে রাখবি? 
মইরত্যে দিবি নাই? 
আচ্ছা শুন, আমি কালঅ
আর তুর গায়ের রং 
পাকা আমের পারা টকটক্যা-
তাও তুই আমাকে 
ভালঅবেস্যে বিয়া কইরে ছিলিস
ইবার কিন্তুক আমি মইরল্যে
একটঅ সুন্দরী মিয়া দেখ্যে 
তুই একটঅ বিয়া করিস! 
কী বললি? আমাকে মইরত্যে দিবি নাই? 
না রে না, সত্যি বলছি-
আমি আর বাঁইচবঅ নাই রে, 
এই দ্যাখ, বইলত্যে বইলত্যে
আমার যেন কেমন লাইগছ্যে --
..... আমি চইলল্যম রে.... 
তুই ভালঅ থাকি... স
আমি... চ ই..... ল.... ম্........! 
               

Saturday, August 3, 2024

বিলুপ্তির পথে -- সঞ্জীব চক্রবর্তী

বিলুপ্তির পথে 
সঞ্জীব চক্রবর্তী
১/৮/২০২৪
 বিলুপ্তির পথে চলছে একান্নবর্তী পরিবার
ভয় পেয়েছে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখার ঘর ।  
অকারণে ঘর ভেঙে যায় কখন 
বেশ ছিল মিলেমিশে একত্রে তখন।

টাকা চাই,বাড়ি চাই বাজারে যান চাই
জীবন টা চাই চাই করে শেষ হলো তাই
কত উঁচুতে এখন থাকা হয়
ঝড় উঠেছে মনেতে কেনো ভয়।

একান্নবর্তী পরিবার বেশ ছিল ভালো
সকলের চোখে ছিল স্বচ্ছ আলো
মোবাইল হাতে শুভেচ্ছা চলছে এখন
পায়ে হাত দিয়ে প্রণাম প্রথা ছিল তখন।

 প্রতিক্ষণে ভেঙে যায় একান্নবর্তী পরিবার
হচ্ছে হবে আরো কত কি আছে করার
ধার করা সভ্যতা যদি আসে ঘরে
একান্নবর্তী পরিবার গুলো এই ভাবে মরে।

ছোট ছোট পরিবার এক একটা কবুতরের বাসা
স্বজন নেই কেবল নিত্য নূতন মুখের যাওয়া আসা।
বাতানুকুল ঘরের মাঝে মনের সঙ্গে সংহার চলে 
কাঁদে কেবল কথার কথা বিরামহীন জীবন বলে।

আকাশটা করে ছোট,প্রবেশ বন্ধ মনের আলো
নজরে কেবল সন্দেহের ছবি ,সাদা দেখে কালো।
চলে রোজ নিজের সঙ্গে কানামাছি খেলা 
এমনি করেই জন্ম নেয় হরেক রকম মিথ্যার মেলা।

অনন্যা -- প্রতাপ রাকসাম

 অনন্যা
 প্রতাপ রাকসাম
 ০২/০৮/২০২৪ 
আজ জোছনা ভরা পূর্ণিমা 
রাত; ঐ দূর আকাশের অজস্র 
তারাগুলো মিটমিট করে জ্বলে
হাসছে: কানেকানে কথা বলছে।
ওদের আনন্দ দেখে ভাবলাম 
তোমায় নিয়ে একটি প্রেমের 
কবিতা লিখবো।
কিন্তু, কিছুতেই ভাব আসছেনা 
সব কিছু এলোমেলো হয়ে যাচ্ছে।
তবুও কাগজ কলম নিয়ে বসলাম;
হঠাৎ দেখি একটি রাত জাগা 
পাখি মাথার উপর দিয়ে উঁড়াল 
দিয়ে চলে গেলো।
সেও হয়তো আমার মতো প্রেমে
পড়েছে।
রাতটি নিঃসন্দেহে শান্ত: দক্ষিণা
মৃদু হিমেল হাওয়া বয়ছে।
রজনীগন্ধা, হাসনাহেনা বাতাসে 
সুগন্ধি ছড়িয়ে মাতোয়ারা।
আহা: কি অপরূপ প্রকৃতিও 
অমর প্রেমে গাঁথা।
আমার কবিতায় মূল চরিত্র 
শুধু তুমি" তুমিই আমার অনন্ত
কালের সাধনা।
আমি এখন তোমার প্রেমে পড়েছি 
এ নয় কোনো পাগলামি।
তুমিই আমার হৃদয় মন্দিরে 
তপস্যার রাণী।
জোছনার আলোতে দেখি প্রকৃতির 
গাছপালাও বিভোর প্রেমে মত্ত।
আমি প্রাণভরে মনোরম দৃশ্য  
উপভোগ করি আর তোমাকেই 
ভাবি।
চঞ্চল এই উদাস মন আনমনে 
শুধু তোমাকেই কাছে পেতে চাই।
প্রেম মানেই কি মাধুর্যে ভরা 
হৃদয়ে অনুভূতির ছোঁয়া!
প্রেম মানে দুটি মন এক হয়ে
হৃদয়ের অথৈ গভীরে পরিপূর্ণ 
ভাবে ভালোবাসার মোহনায় 
মিশে যাওয়া! 
সংগোপনে দুজনার পথ এক 
হয়ে হওয়া!
শেষ প্রহরে শুকতারা গুলো 
যেমন বিদায়ের আভা ছড়িয়ে 
সূর্যকে স্বাগত জানাই।
তেমনি আমিও স্নিগ্ধ ভোরে 
মুগ্ধ হয়ে যাই তোমার আগমনে। 
প্রাণের উচ্ছ্বাসে নবযৌবন 
আনন্দে ভরে যায়।
অনুভবে শিহরণ জেগে উঠে রবি 
ঠাকুরের সেই অনন্ত প্রেম কবিতা।
মনের মাঝে শুধু তোমার আনাগোনা।
তোমার নিখুঁত ভালোবাসা আমার 
হৃদয়ের গহীনে বকুলের সৌরভ ছড়ায়।
তুমিই আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ অনন্যা।

অপেক্ষা -- বিকাশ সাহা

 অপেক্ষা, 
 বিকাশ সাহা, 
 ০২-০৮-২৪
কথা দিয়েছিলে আমাকে- তুমি আসবে বলে, আমি আছি আজও তোমার অপেক্ষায়। 
তোমার আলতা পায়ের নুপুরের ধ্বনি শুনে মনটা দোলায় বেজায়। 
সকাল শেষ- সন্ধ্যা নামে-রাত ঘনায়, তারাগুলো আসে আকাশে, তোমার কথা মনে পড়ে খুব-- কথা দিয়েছিলে- তুমি আসবে বলে- আমি আছি তোমার অপেক্ষায়। 
আবেগ ভাসে এ বুকের ভিতরে, তুমি বলেছিলে ফিরবে আবার, অপেক্ষার প্রহর শেষ হবে, কিন্তু দিন যায়, রাত যায়, এখন যে গভীর রাত, তোমার দেখা আর কই মেলে? আমি আছি তোমার অপেক্ষায়। 
আজ সারা দিন বৃষ্টির ফোঁটায় ভীজে যায় শরীর ও মন, আজ সারাদিন আকাল ও কান্না করছে! কথা দিয়েছিলে তুমি আসবে বলে- আমি আছি তোমার অপেক্ষায়?  
দেখা দাও না, তবুও আশা রাখি এ মনের গভীরে। 
তোমার প্রতিশ্রুতির আশায়, আমি আছি আজও অপেক্ষায়, শুধু জানি, একদিন তুমি আসবে, সব দুঃখ মুছে যাবে, হবে নতুন জীবনের শুরু। 
তুমি আসবে বলেই তো, প্রতিদিন নতুন আশা, তাই নিয়ে আমার লেখনী কবিতা। 
অপেক্ষা-; তোমার জন্যই তো বাঁচি, তোমার অপেক্ষায়, তুমি আসবে এই বিশ্বাসে কাটাই প্রতিটি ক্ষণ। 
অপেক্ষায় আছি আমি--- তোমার সঙ্গেই কাটাব আমি আমার জীবনের প্রতিটি নতুন দিন-; আছি আমি অপেক্ষায়।।

উড়ন্ত মেঘ -- মোঃ কামরুল হাসান

 উড়ন্ত মেঘ
 মোঃ কামরুল হাসান 
 ০১/০৮/২০২৪ 
উড়ন্ত মেঘ দূরন্ত গতিতে 
এসে গেলে চলে,
বৃষ্টি হয়ে ঝড়ে পরলে না
আমার শুকনো উঠনে।

শুধু কেন আসলে তুমি?
রঙিন আকাশটাকে ঢেকে দিতে,
যে আকাশে চাঁদ তারা উঠে 
জ্যোৎস্নার আলোয় করে বিমোহিত।

মেঘ তোমাকে দিয়ে দিলাম 
রঙিন আকাশটা,
আমি কুড়িয়ে নিলাম আকাশের
নীল বেদনা টা।

মেঘ দিলাম রঙিন আকাশ 
মুক্ত মনে উড়িও,
যদি কারো উঠোন মনে ধরে 
বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়িও।

দেখবো না আর রঙিন আকাশ
চাঁদ তারার মেলা,
জ্যোৎস্নার আলোয় স্নান করাবো না
আমার রঙিন স্বপ্নগুলো।

তোমার সাথে এটাই হলো
আমার চির সন্ধি,
তোমার সুখে থাকবো আমি 
নীল বেদনাকে করে সঙ্গী।

Thursday, August 1, 2024

নিতান্ত নিরুপায়ে -- শিবপ্রসাদ হালদার

    নিতান্ত নিরুপায়ে
    শিবপ্রসাদ হালদার
    ৩১/৭/২০২৪
গভীর রাতে সেদিন শুনেছিলাম তার বুকফাটা কান্না
অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে একান্ত নিরুপায়ে 
তুলে দিয়েছিল প্রতিপক্ষের সুযোগের সদ্ব্যবহারে 
যোগ্য মূল্যের থেকেও অনেক অ-নে-ক কম দামে 
অত্যন্ত সখের ও বড্ড দরকারি শেষ সম্বল ল্যাপটপটি, 
তুলে দিতে হলো এক হাত থেকে অন্য হাতে, 
তখন ঝরছে একজনের হৃদয় নিংড়ানো অশ্রু 
আর অন্য জনের প্রাপ্তিতে তৃপ্তি। 
হায়! 
জীবন নদীর ঘূর্ণিপাকে ভাগ্যের কি আজব খেলা! 
নিতান্ত নিরুপায়ে যখন হাতে নিয়ে হবে রওনা 
তখন ছোট্ট মেয়ে কেঁদে কেঁদে বলে 
"বাবা! এটা বিক্রি করে দেবে? 
আমি তাহলে কি করে দেখবো কার্টুন?" 
ছোট্ট মেয়ের আকুল আকুতি শুনেও নিরব নিথর। 
অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বাবা আজ বুঝেও অবুঝ 
চোখ ফেটে টপটপ করে ঝরছে তারও অশ্রু, 
মেয়ের ক্রমাগত আকুতির উপেক্ষায় একান্ত নিরুপায়ে
বেরিয়ে এলো বাইরে হৃদয়স্পর্শী ব্যথিত অবস্থায় 
তখন সে একান্ত বিধ্বস্ত - একদম নিরুপায়--!!

ফিরে পেতে চেয়ে -- ড. বলরাম ঘোষ

 ফিরে পেতে চেয়ে  
  ড. বলরাম ঘোষ 
   ৩১. ০৭. ২৪
      চারপাশে বড় অভিমান জড়ো হচ্ছে 
     নীল সমুদ্রে ঝড় ওঠার আগে 
ক্ষোভে ফুঁসে ওঠা বাতাস বড় ভারী হয়ে আছে।
       একটা নিস্তব্ধতার পরে বৃষ্টি এসে ভিজিয়ে দিলেও 
উত্তাপ কমে যায় না ! 
       মনের কোনে জমে থাকা মেঘের মতো 
জমে থাকা অভিমান একদিন তো ঝরে পড়বেই!
    আমি তুমি পৃথিবী যতই চুপ থাকি না কেন 
একদিন সবাই ঘর ছেড়ে বেরিয়ে আসবেই 
হয়তো সূর্যাস্ত দেখবে বলে, হয়তো সূর্যোদয় পর্যন্ত 
সারারাত মানুষ অপেক্ষা করবে একটা আস্ত অন্ধকার 
কাটিয়ে ঘাসে ঝরা শিশির, ধান ভরা মাঠ আর নীল
মাখানো আকাশ দেখবে বলে! 
   হাজার বসন্তের উৎসব, শরতের সোনালি রোদ, শ্রাবণের 
ক্ষেত চষা মাটির গন্ধে মাতাল বাতাস বয়ে যাক আমার তোমার হৃদয় খুঁড়ে...

বাসনা -- অনিরুদ্ধ রানা


       বাসনা
       অনিরুদ্ধ রানা 
        ৩১/০৭/২৪
শ্রাবণী বেলায়       ঘন বরষায় 
কে ডাকে আমায়   আয় রে ছুটে,
যৌবন সায়রে       প্রণয় বাসরে 
মধু প্রাণ ভরে  নেবো রে লুটে।

মনের আয়না      ধরেছে বায়না 
ছোঁয়া তো যায় না  আপন করে,
সে কি ভোলা যায়?     ব্যথা বেদনায় --
নীড় বাঁধা দায় হৃদয় ডোরে।

ভুলিব কেমনে      তাই সঙ্গোপনে 
নয়নে নয়নে  ঝরিছে অশ্রু, 
এ কেমন মায়া      বট বৃক্ষ ছায়া 
বিরহিণী কায়া পাকিল শ্মশ্রু।

'তুমি' আছে তাই ......-- দিলীপ ঘোষ

'তুমি' আছে তাই - - -
দিলীপ ঘোষ
৩১/০৭/২৪
'তুমি' আছে তাই
আদর ভালোবাসা মাখা কত কি যে যায়
অভিধানে তত শব্দের হদিশ মেলা ভার।
বর্ণনা দিতে গিয়ে কলম ক্লান্ত
প্রকাশ করার ক্ষেত্রে হয়ে যায় পরিশ্রান্ত।

'তুমি' আছে তাই
ভালোবাসার মিষ্টি দেওয়া চা
বিছানায়, সকালকে মেলে।
সময়ের লাল চোখ
পেটে গামছা বেঁধে, না খেয়ে
কান ধরে কোনদিন যদি টেনে নিয়ে যায় কর্মস্থলে
'তুমি' তখন রাগ করে
গোলাপ যেমন রাগ করে ভ্রমরের প্রতি
                                                     পাপড়ি মেলে।
কড়া শাসনের সাথে অনুরাগ
কার না ভালো লাগে
কার না ভালো লাগে ভালোবাসার বকুনি পেলে।

পরিস্কার পোশাক না পোরে, একদিন বাইরে গেলে
কড়া পাকের লাল চোখের আন্তরিকতা
'তুমি' সযত্নে দেয় আঁচল খুলে
তুমি আছে, তাই সীমাহীন মূল্যবান প্রশ্রয় মেলে।

অসুস্থতা কোন সময় গ্রাস করলে
অবিশ্রান্ত বৃষ্টি নামে 'তুমি'-র মরমী অন্তরে
দরদী হৃদয় দুঃখ কষ্টের চিতায়
নীরবে পুড়ে মরে
যতক্ষন অন্তর-আত্মার অসুখ না-সারে।

'তুমি' আছে তাই - - -

Wednesday, July 31, 2024

আকাশের মতো মন -- বনানী সাহা

 আকাশের মতো মন
 বনানী সাহা
 ৩০- ০৭- ২০২৪
আকাশের ব্যাপ্তি বোঝা নাহি যায়--
ছড়িয়ে আছে, দূর--- সীমানায়!
মিশে রয় মহাকাশের সাথে ।
মাপবে তারে , সাধ্য কার আছে !

মনের ব্যাপ্তিও আকাশের মতো!
আলোর গতিবেগের চেয়ে দ্রুত !
অতো বড়ো ব্যাপ্তি যার আছে---
সেই মন কে ছোট করা, নাহি সাজে ।

মনের উদারতা ,ভালো মানুষের পরিচয় ।
একে ছোট করা ,প্রকৃতির বিরুদ্ধ হয়।
ঈশ্বর দিয়েছেন, মনের ব্যাপ্তি আকাশের মতো ।
জগতের কল্যাণের তরে, করতে ব্যবহৃত ।

মনকে বড় করে ,যদি দাড়াও মানুষের পাশে--
একই সাথে সূর্য -চন্দ্র ,মনের আকাশে হাসে।
খেলবে তখন, অনেক ফুল মনের আঙিনায় ।
খুশির বাতাস লহর হয়ে, মনের মাঝে বায়।

ধন্ সম্পদ ,উচ্চ বংশ ,মানুষের নয় তো পরিচয়।
সুন্দর আচার- ব্যবহার আসল পরিচয় ।
সুন্দর বাবহার আসে ,উদার হলে মন ।
সুন্দর একটা মন হল-- আসল সম্পদ ধন ।

সৃষ্টি ধারা -- মোঃ নূরুল ইসলাম

     সৃষ্টি ধারা
     মো: নূরুল ইসলাম
     ৩০/০৭/২০২৪
    বয়ে চলে সৃষ্টির ধারা,
    কোথা হতে বহে অবিরত!
    জানে না তো কেউ, শুধু অনুমান করে।
    দেখেনি কেউ, অনুমান করে শুধু কোন খানে,
    জমা আছে জানে একসাথে।
    নেমে আসে একে একে,
     কিছু দিন থেকে ফিরে যায় সেখানে।

    যেমন বৃষ্টি আসে ফিরে ফিরে ধরণীতলে,
    সবাই তা জানে আকাশ হতে,
    জমা হয় মেঘরূপে, ভরে যায় জলে।
    নদনদী খাল বিল সাগরের জল,
    রৌদ্র তাপে উড়ে যায়,
    করে ঘোরাঘুরি আকাশে কিছু কাল,
    সেথা ঠান্ডা পরশে হয় শীতল।
    পায় নতুন জীবন, বিন্দু বিন্দু বরফ সুশীতল,
 ‌    ঝাপি ঝাপি ঝড়ে পড়ে অবিরল।
    কালো মেঘে সামঞ্জস্  হয় তারা,
    করে প্রাণ সচল শষ্য শ্যামলা ধরা।

    প্রশ্ন জাগে মনে কেহ কি আছে কোনো খানে!
    ধরেছে লাটাই রচিতেছে মায়াজাল।
    কোন অভিপ্রায় উদ্দেশ্য কি তার!
    শুধু কি সৃষ্টির আনন্দে ভাসা!
    বহিবে ভুবনে এমনে নিয়ে বাধাহীন গতি,
    নাকি অন্যরূপ তার,অন্য কোনো নীতি।
    দেখিবার ইচ্ছা জীবন চরাচর,
    কেমন তার হাসিখেলা, কেমন রূপাচার!
    দেখিতে চায়কি তবে বুকফাটা ক্রন্দন!
    জীবন যুদ্ধ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা!
    শৈশব কৈশোর যৌবন কিংবা বৃদ্ধাশ্রম,
    কোনটা তার আপনজন, কোনটা প্রিয়তম।

    

Tuesday, July 30, 2024

দাম্ভিকত্ব করেছে সমাজ থেকে ব্রাত্য -- সুরজিৎ পাল

 দাম্ভিকত্ব করেছে সমাজ থেকে ব্রাত্য 
 সুরজিৎ পাল 
২৯.৭.২০২৪
দাম্ভিকত্ব কুটে কুটে ভরা -
 নমনীয়তা ধরতে বিলক্ষণ- লাগবে অণুবীক্ষণ ।
কেউ এলে দারোয়ান বলে-
আছে কি পূর্ব অনুমতি ও সময় নির্ধারণ?
না থাকলে বাড়ি জান,
খেয়ে দেয়ে ঘুমান।
অন্যথা আমি হবো বরখাস্ত,
মালিকের মুখ ঘুরিয়ে নেওয়ার নাম পুরুষত্ব।
কিসের দম্ভ, কাকে দেখায়, পায় কি? 
রক্তে ছিল না,দরীদ্র পরিবার থেকে আগত,
পড়ার সুযোগে উচ্চ শিক্ষা , উচ্চপদস্থ চাকরিতে ধাতস্থ।
বড়োলোকের মেয়ে কে বিয়ে, 
পরিবার,পরিজন,শ্রেণী সঙ্গ ত্যাগে নিজেকে আলাদা করে।
দম্ভের শুরু -
দেখায় নিজ সম্প্রদায়কে - নিজের অতীত ভুলতে চায়,
দুই একবার বিদেশ সফর-
বাবু থেকে কালো সাহেব হয়ে যায়।
ধরাকে সরা জ্ঞান করে,
দুর দুর ছৈ ছৈ অভ্যাসে পরিণত হয়।
ভাই দেখা করতে এলে 
বলে -
ইংরেজিতে কথা বলতে শিখলে তবেই প্রবেশ করবি ঘরে,
অন্যথা যে তিমিরে আছিস সে তিমিরে ই থাক হরে কৃষ্ণ হরে রাম করে।
অপমানিত হয়ে ভাই চলে যায়,
রাস্তার ভিখারী টা দেখে হাসে-
নতুন নতুন টাকায় গরমান্ধ-
হায় দম্ভ ! 
কি আর বলি , 
কিছুদিন পর পাব পাশের আসনে ,
নির্ঘাত রাখবো যতনে।
এটাই যে ভবিতব্য,
বিধাতার সাথে সাথে সমাজে ব্রাত্য।

কবিতা কথা বল্ -- উত্তম গোস্বামী

কবিতা কথা বল্
উত্তম গোস্বামী 
২৯/০৭/২০২৪
গরীব মায়ের ছোট্ট মেয়ে 
নামটি কবিতা 
স্বপ্ন আঁকে দু-চোখের তার
জীবন ছবিটা। 

ক্লাস ফোরের সেই মেয়েটি 
সব কাজে পারদর্শী
অবাক চোখে তাকিয়ে দেখে 
 পাড়র সকল পড়শি।

বাপ মরা সেই ছোট্ট মেয়ে 
ক্লাসের ফাস্ট গার্ল
নেই কোন তার বেশভূষা আর 
নেই কোনো তার চাল। 

গত রবিবার গিয়েছিল মা 
ধান রুইতে মাঠে 
গামছা বেঁধে মুড়ি নিয়ে সে
যাচ্ছিল পায়ে হেঁটে।

মাথায় আছে মুড়ির থালা 
হাতে জলের ঘটি
রাস্তা একটু ভালো দেখলেই 
করছে ছুটোছুটি।

ঘাস ভরা ওই মেঠো পথে 
যাচ্ছে যখন মেয়ে 
হঠাৎ করে করুন কান্নার 
শব্দ আসে ধেয়ে।

"মাগো তুমি এসো ছুটে 
সাপ দিয়েছে কামড়ে 
যন্ত্রণাতে মরছি আমি 
জীবন পথে আছড়ে।"

"যাচ্ছি সোনা ছুটে ছুটে 
করিস না তুই ভয়
হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে 
করবো জীবন জয়।"

নীরব হলো মায়ের কোলে 
প্রাণের কবিতা 
জীবন সাঁঝে উঠল ভেসে 
করুন ছবিটা।

হাহাকারে মায়ের দুচোখ 
ঝরায় অশ্রু জল 
কেঁদে কেঁদে মা বলছে তারে 
'কবিতা কথা বল্!'

ঈশ্বর আজ আর নেই -- অরুণ কুমার মহাপাত্র

ঈশ্বর আজ আর নেই 
অরুণ কুমার মহাপাত্র 
২৯/০৭/২০২৩
নিষাদের তীরে হত প্রেমিক ঈশ্বর
চিদাকাশ ফুঁড়ে চলে যায় জীবন 
থেমে যায় যাদুবাঁশির সুর আর গান 
একাল পরকাল সেকাল সবই মুছে যায় 
যেতে তো হবেই...
মৃত্যু উপত্যকায় বাঁশি বাজলে যেতে হবে
যেতে তো হবেই...
হতে পারেন ঈশ্বর 
এটাই নিয়তি...
শরীর জুড়ে শলাকার তীব্র জ্বালা 
সে এক রক্তাক্ত খবর
নিটোল এক কবিতা 
কবিতার রঙ মানুষের রঙের মতো 
ঈশ্বর আজ আর নেই....
ঈশ্বর নেই তবুও আছেন সবচেয়ে বেশি তোমার আমার মাঝে...
পূর্ণিমার বোষ্টমী চাঁদে সঙ্গী হন তিনি 
চাঁদভাসি মধ্যরাতে...
রসকলির তিলক এঁকে চলো যাই তবে রূপসায়রের সাধন পথে...
অবেলায় দোল দিলে জাগে নিধুবন
পেলেও পেতে পারি সাধন শেষে মধ্যযামে
যদি দ্বিধা হন তিনি...  ।

Monday, July 29, 2024

এমন কি হতে পারে না -- চাঙমা বিনয় যমুনা

এমন কি হতে পারেনা?
 চাঙমা বিনয় যমুনা
২৮/০৭/২০২৪ 
মানুষে মানুষে থাকবেনা কোন বিভেদ
চির শান্তির সুবাতাস বহিবে অবিরাম
ছড়াবেনা সাম্প্রদায়িকতার বিষ বাষ্প
দুঃখ বেদনা চিরতরে হবে অন্তর্ধান।

থাকবেনা হিংসা,বিদ্বেষ,লোভ,লালসা
যতোসব মোহ আর বিকৃত কামাচার
একে অপরের প্রতি থাকবেনা ক্ষোভ
হিংসানলে পুড়ে পৃথিবী হবেনা ছাড়খার।

স্বার্থান্ধ হয়ে কেউ করবেনা মানবসম্পদ
নির্দ্ধিধায় অহরহ অবাধে আর লুটপাত
কেউউ করবেনা ধ্বংস আর কখনো
এই পৃথিবীর সর্বশ্রষ্ট প্রাণী মানবজাত।

গর্জে উঠবেনা আর পৃথিবীতে মারনাস্ত্র
যতোসব ভয়ার্ত বিধ্বংসী কামানের গোলা
পরিবেশ বিপর্যয়ের যতোসব  কর্মকাণ্ড
পৃথিবীতে আর কখনো হবেনা তোলা।

পথে ঘাটে,মন্দির,উপাসনালয়ে আর
অবাধে কখনো মানুষ হবেনা বলী
সৃষ্টিকর্তার হাতে গড়া সুন্দর পৃথিবীটাতে
হিংসার আগুন কখনো উঠবেনা জ্বলি।

পুড়বেনা গ্রাম,লোকালয়,আরাধ্য মুর্তি
সবকিছু হারিয়ে মানুষ হবেনা সর্বহারা
প্রেম,ভালবাসা,বিবেক,মনুষ্যত্ববোধ
মানুষের মনে প্রতিনিয়ত দিবে সাড়া।

ভন্ডরা হয়ে যাবে সাধু চিরতরে তারা
দুর্নীতির বেড়াজাল চিরতরে যাবে ছিঁড়ে
জঙ্গী,সন্ত্রাসসহ যতোসব রয়েছে কুকর্ম
থাকবেনা আর কখনো সমাজকে ঘিরে।

রক্ষক কখনো আর হবেনা ভক্ষক
বিচারকেরা নিয়ত করে যাবে সুবিচার
বিচার প্রত্যাশীরা কখনো হবেনা বিমুখ
বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদবেনা আর।

রাজনীতি,ধর্মনীতি নিয়ে চলবেনা ব্যবসা
যার যার ধর্ম সবে করবে প্রতিপালন
যতোসব বিভেদ ভুলে ভালবাসার বন্ধনে
পড়বে বাঁধা প্রতি জনে জন।

আমি ঈশ্বরের চোখে চোখ রেখেছিলাম -- মনিরা মাসিদ

 আমি ঈশ্বরের চোখে চোখ রেখেছিলাম !!
  মনিরা মাসিদ
  28.7.2024
  
মাঝে মাঝে কিছু কাজ করতেও ইচ্ছে করেনা, 
কিছু বলতেও ইচ্ছে করে না। 
মনে হয় যা হচ্ছে তাই হোক না, কি আসে যায়, 
যা হওয়ার তা তো হবেই।।  তখন আমি 
বসে বসে আমার দিনপঞ্জি দেখতে থাকি। 
আমার বেশ মজাই লাগে দেখতে।
আহা আমার জীবনের চলমান আমি।
তো এহেন এক মাঝরাতে আমি আমি গ্যালারিতে 
বসে,মনে হলো কে যেন পাসে এসে টুক করে 
বসলো, তাকিয়ে দেখি চাঁদ পানা এক করুন মুখ জিজ্ঞেস করলাম-
তুমি কে গো? তো সে বললো সে নাকি ঈশ্বর!তো আমার অবাক হওয়ার কথা কিন্তু আজকাল আমি আর কোনো কিছুতেই অবাক হই না। বা বলা যায়
অবাক লাগে না।

তা তুমি আমার ব্যক্তিগত লাইফ লাইনে ঢুকে পড়লে কেন? 
আর অমন চাঁদের মতো মুখখানা ব্যাজার কেন?

তো সেই ঈশ্বর বললো " আর বলো কেন সে আমার অনেক অনেক জ্বালা
তার আগে তুমি বলোতো তোমার ছোট্ট একটা জীবনের কি  এতো দেখ? "

 ঈশ্বর জানতে চাইছে!! 

আমার ভীষন হাসি পেল। মনে মনে 
বলে ফেললাম  " হায় ঈশ্বর "! 

আমি দেখি আমার সুখ  - দুঃখ - রাগ -হতাশা  - আফসোস ,আর দেখি আমার অনাবিল হাসি- আর চোখের নিচে থমকে থাকা অনেকখানি চোখের জল। 
এখান থেকে দেখি আমি- কে যে আপন ,কে যে পর।
সব শেষে করি আমার আমিকে আত্মবিশ্লেষণ। 

এরপর ঈশ্বর যা বললো আমি তো হাঁ -

ঈশ্বর বললো- " আমার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষ। আর আমি শ্রষ্ঠা হয়েও আমার সৃষ্টি মানুষকেই আমি চিনতে পারিনা! আমি বুঝতে পারিনা। 
অথচ এই মানুষই যখন আমার কাছে প্রয়োজনের
থেকে ও বেশি বেশি সবকিছু চাইল- বাড়ি-গাড়ি-
টাকা- ধনসম্পদ-মেধা- বুদ্ধি, তো আমিও এছাড়াও
মানুষ  যত কিছু চাইলো সবকিছুই বেশি বেশি  দিয়ে দিলাম কিন্তু এখন দেখছি এত দিয়েও মানুষের
মধ্যে কোনো শান্তি নেই সবসময় অশান্তি লেগেই
আছে এবং কারণ হিসাবে মানুষ আমাকেই দোষারোপ করছে। 
এই জন্যই মনটা খারাপ। "

" আর তুমি তো গ্যালারির দর্শক হয়ে জীবনের
আত্মবিশ্লেষণ করো ,তো দেখতো খুঁজে পাও কিনা
আমার  ভুল কোথায় হলো  ? "

ঈশ্বরের কথা শুনে এবার তো আমার আক্কেল গুড়ুম। 

ঈশ্বরের ভুল  !!! 

তবুও ঐযে বললাম আমি আজকাল কোনো কিছুতেই অবাক হইনা। 
তো ঈশ্বরকে বললাম চলো তোমার টাইমলাইনে। 
ঈশ্বর বললো চলো... 
দুজনে পাশাপাশি গ্যালারিতে বসে দেখছি .... 
বললাম বুঝতে পারছো? দেখতে পাচ্ছো? 
ঈশ্বর বললো " আমি তো দেখছি মানুষ যা 
চেয়েছে সবই পেয়েছে ভুল তো কিছু দেখছি না।"

ভালো করে দেখো ঈশ্বরের পৃথিবীতে এখন ---

* আশার বড়ো হতাশা। 
* শুভর বেশি অশুভ। 
* ঞ্জানের আলোর থেকে অঞ্জানতার আঁধার বেশি। 
*ত্যাগের থেকে মানুষের এখন লোভ বেশি। 
*শান্তির থেকে হিংসা বেশি। 
* বিশ্বাসের আগে আসে সন্দেহ। 
*প্রেমের আগেই আসে কাম। 
* ভালোবাসাও চাইছে আজ একের অধিক মন।

ঈশ্বর বললো " তাহলে তুমি বলতে চাইছো মানুষকে
সবকিছু বেশি বেশি দেওয়াই আমার ভুল হয়েছে?? "

একদম না, কোনো ভুল নেই কিন্তু তুমি বোধহয়
এসবের সাথে সাথে একটা বিশেষ অনুভূতি জাগ্রত
করতে ভুলে গেছো।
ঈশ্বর বললো " তা বলোতো শুনি কি সেই অনুভুতির
নাম "।

আমি ঘাড় ঘুরিয়ে ঈশ্বরের চোখে চোখ রেখে বললাম
সেই অনুভুতির নাম   " বিবেক " , ঈশ্বরের পৃথিবীতে
এখন বিবেকহীন মানুষরাই রাজ করছে !!

আমিও দেখলাম অবাক বিস্ময়ে আমার
 দিকে তাকিয়ে আছে " ঈশ্বর "!!

মাটির কায়া -- ফয়েজুর রহমান

মাটির কায়া 
ফয়জুর রহমান 
 ২৭/৭/২০২৪ লন্ডন 
সময় যখন করবে তাড়া
         বিকেল হলে খেলার মাঠে।
দাঁড়িয়ে থাকেন মা জননী 
         সূর্য্য ডোবা পুকুর ঘাটে।

সলজ চোখে আকাশ দেখি
       দুহাত তোলে করছি দোয়া।
 বেঁচে থাকুক এই দুনিয়া
        আল্লাহ রাহা মাটির কায়া ।

এইতো মানুষ উচিত কথায়
           জীবন চাহি সকাল দুপুর।
শেষ বয়সের দুনিয়া সাঁতার 
          এক হাটু জল টুপুরটাপুর।

তোমরা যারা উদয় পথিক
      ফুলের বুকে জ্বলতি শিশির।
আল্লাহ তোদের হৃদয় দানি
           বাঁচবে যখন উন্নত শীর।

জানতে জীবন মানুষ নামের
       দেখবে পথিক চলার কলায়।
আলোর পথের শেষ সীমানা
     লুকিয়ে আছে জ্ঞান সাধনায়।


Sunday, July 28, 2024

অরাজকতা -- দুলাল চন্দ্র দাস

অরাজকতা 
দুলাল চন্দ্র দাস
২৭/৭/২৪
উল্টো দেশের উল্টো নিয়ম  উল্টো সকল কথা,
পড়া শোনা শিঁকেই তোলা    মনেতে নাই ব্যথা।
মদ খেলেই বুদ্ধি বাড়ে         বিড়িতে নাকি জ্ঞান,
পড়া শোনা দিচ্ছে ছেড়ে    টাকার প্রতি ধ্যান।

খিদের জ্বালায় মরছে শিশু  চাকরি দেশে নাই,
যুব সমাজ বেকার জ্বালায়  পথে পথে বেড়ায়।
খেলছে জুয়া সাট্টা ও সাথে  পঙ্গু ছাত্রের দল,
শিক্ষা কাঁদে পথের ধূলায়   ভাঙেছে মনের বল।

আলোর কিরণ  খাঁচায় বন্দি   জ্ঞান যাচ্ছে হারিয়ে,
বিবেক বেটা হাতছানি দেয়   দূ্রনিতীর উপর দাড়িয়ে।
মানুষ দেশে যাচ্ছ কমে          জনগণ যাচ্ছে বেড়ে,
সব জায়গা মিথ্যার জয়      সত্যি যাচ্ছে হেড়ে।

পথে ঘাটে নেশার‌ আসর   প্রতিবাদী কেউ নাই,
শাসন কেহ করতে গেলে   ধরার থেকে বিদায়।
কেউ মানেনা কারো কথা   সবাই দেশের নেতা,
ঘুষ খাওয়াটা প্রধান কর্ম   ভাবেনা কারো কথা।

ধংস হবে এই পৃথিবী     ভাঙছে মনের বল,
কেউ গড়ে না সমাজটাকে   বলেনা এগিয়ে চল।
স্বার্থ ভরা দুনিয়া আজ    ধনী হওয়ার লড়াই,
চুরি করে হচ্ছে মহান    বড় সাধু তারাই।

যাওয়ার বেলা -- ডঃ বিষ্ণুপ্রসাদ সিংহ

 যাওয়ার বেলা
 ড. বিষ্ণু প্রসাদ সিংহ
২৬|০৭|২০২৪
যাওয়ার বেলা কিছু না কহিব,
আমি শুধু নীরবে রহিব। 
পুষ্পে গাঁথা মালাখানি-
চেয়ে চেয়ে বিদায় মাগিব!

ব্যাকুল করিবে মোরে,
কুসুমের সুভাষিত গন্ধ।
সাজানো স্মৃতির পাতা ঝরে,
দুয়ারখানি হবেগো বন্ধ।

দূরে যবে রবির কিরণ,
রক্ত জবা মনে হবে বরণ।
আমি করজোরে নমে,
অস্ত যেতে করিব বারণ!

ধীরে প্রদীপ যাবে নিভে,
না রহিবে গীত কন্ঠে।
আমি বিরহিনী মূর্ছিত বদন,
চাতক পাখি যেন চাহিব গগন।

সবারে জানাবো সম্ভাষণ,
মুছিব অশ্রুজল করে আভরণ।
এ বেদনা আর না হবে মুচন,
শান্ত হবে মোর এ ভুবন।

Friday, July 26, 2024

অচিন পাখি -- দীপ্তি চৌধুরী ঘোষ

অচিন পাখি
দীপ্তি চৌধুরী ঘোষ 
25/07/24
ভিনদেশী এক পাখি এনে
পুষলাম যতন করে,
আদর করি তবু পাখির
মনটা না আর ভরে।

খাঁচার পাখি পোষ মানে না
ছটফটিয়ে মরে,
সুখ থাকে না হৃদয় মাঝে
থেকে বদ্ধ ঘরে।

খাঁচার পাখি বলছে ডাকি
দাও না আমায় ছেড়ে,
মনের সুখে উড়বো আমি
পাখা দুটি নেড়ে।

বনের পাখি বনে মানায়
মনের পাখি মনে,
খাঁচার আগল খুলে গেলে
পালিয়ে যায় বনে।

যা উড়ে যা আকাশপানে
খাঁচা দিলাম খুলে,
মন খারাপের দিনে আসিস
নিজ ঠিকানা ভুলে।

শ্রাবণ দিনে -- নেপাল চন্দ্র বিশ্বাস

শ্রাবণ দিনে 
নেপাল চন্দ্ৰ বিশ্বাস 
২৫.৭.২৪
আকাশ গাঙে মেঘের নৌকো 
পাল তুলেছে আজি,
নবীন বর্ষা নবীন রঙে 
নবীন রূপে সাজি ।

সকাল বেলায় পুবাকাশে 
মেঘ জমেছে ভারি, 
শ্বেত বলাকা দিঙমণ্ডলে 
উড়ছে সারি সারি ।

ময়ূর নাচে পেখম তুলে 
বর্ষার খবর পেয়ে, 
শেয়াল মামা হুক্কা হুয়া 
ডাক দিয়ে যায় ধেয়ে ।

চিরহরিৎ বৃক্ষ গুলি 
বর্ষা স্নানে মাতে, 
সবুজ পাতার শাখা গুলি 
দোলে বর্ষা রাতে ।

মেঘ বালিকা সেজেগুজে 
কালো শাড়ি পরে, 
মাথার 'পরে ছাতার মতো 
ঠেকায় রৌদ্র করে ।

অনেক দিনের পরে আজি 
শ্রাবণ এলো ফিরি,
চতুর্দিকে ধূমেল হাওয়া 
বৃষ্টি ঝিরি ঝিরি ।

শ্রাবণের হাত ধরা বৃষ্টি কথা -- সুব্রত সেন

শ্রাবণের হাত ধরা বৃষ্টি কথা৷
সুব্রত সেন
২৫\০৭\২০২৪
ও এসেছে, ওকে ঘরের মধ্যে আসতে দাও
বসতে দাও, হাত মুখ ধোয়ার জল দাও
তারপর ওকে দিয়ো তোমার ভালোবাসার এক গ্লাস সরবৎ
তাতে দিয়ো একটু কাজু কিশমিশ আর গোলাপের পাপরি৷
ইরাকী তৃষ্ণার আগুন দেহে কাদা মাটির ক্লান্তির ছাপ...৷

জিরোতে দিয়ো, মাথার কাছে খুলে দিয়ো পূবের জানালা
ভেসে আসুক শিউলির গন্ধ ,বেজে উঠুক হালকা সুরে ইমনকল্যাণ ৷

ওর স্মৃতিজুড়ে হেমন্তের কুয়াশার চাদর, মৃত জোয়ানের কপিন
 ঝার বাতির রঙ্গিন আলোয়, যেন নিঃশ্ব হয়ে না যায়৷

ওকে দুরের পাহাড় দেখাও, ঝর্ণা দেখাও, দেখাও পুরোনো 
মাটির বাড়ি ,লাউ মাচা ,পুঁই মাচা,ভোরের ভৈরবি সুর
গ্রাম্য কিশোরি বধুর কত ক্ষত বিক্ষত নদীঘাট..৷
ছোট্ট ডিঙা,দোয়েল কোয়েল শ্যামা আর শ্রাবণীর হাত ধরা বৃষ্টি কথা...৷

এবার একটু একটু করে মুছে যাক সব... পুরোন বইয়ের মাঝে
ছেড়া চিঠি, ইরাবতীর গন্ধ..৷

Thursday, July 25, 2024

মুঠোয় মরীচিকা -- লক্ষ্মীকান্ত দাস

মুঠোয় মরীচিকা
লক্ষ্মীকান্ত দাস 
২৪.০৭.২০২৪
মুঠোফোনের মরীচিকা 
চোখের তারায় জ্বলে 
কেউবা বলে প্রানভ্রমরা 
কেউবা বন্ধু বলে ,
কেউবা তাকে মাস্টার বলে 
কেউবা জ্ঞান ভান্ডার 
কেউবা তাকে হাতিয়ার করে
লুটতে চাইছে গন্ডার ।
তোমার আমার মধ্যিখানে
থাকনা হাজার যোজন ।
আঙুলেরই ছোট্ট টোকায়
হব্বে যে সংযোজন ।
দূরের লোককে দেখবে কাছে
নড়ছে চড়ছে সবই 
ছুঁয়ে দেখা বারণ কিন্তু 
প্রেমটা থাকবে কবি ।
পলকেতে পুলক জাগায়
পুলক যে সে পলকা ।
পরক্ষণেই বিষণ্ণতায়
দুঃখ ব্যাথার হলকা ।

বিষাক্ত দাঁত -- নুপুর নন্দী

বিষাক্ত দাঁত
নুপুরনন্দী
24/7 /2024
তোমার কাছে একটাই প্রশ্ন
কি করে তুমি পারো এতো ! 
এক হৃদয়ে বাসতে ভালো,
একি সময়ে, দুটি মানুষকে !!!

বলেছিলে তিন সত্যিতে
থাকবে তুমি আমার হবে,
তবে কেনো আজ আমায় রেখে
খুজে নিলে নতুন স্বজন ! 
কি এমন ক্ষতি করেছি আমি তোমার !?  

খেললে দারুন খেলা,
ভালোবাসার দোহাই দিয়ে 
বুঝিনি তাই তোমার নিষ্ঠুরতা 
বিশ্বাসের কালো পদ্মায়
চোখ ঢাকা ছিলো বলে ৷

কি করে পারলে নীল... তুমি ! 
প্রতি মুহুর্ত নিষ্টুরতায়
মিছামিছি অভিনয়ে,
আমর জন্য সঞ্চয় করা সময় তোমার,
অন্যকে দিতে  !? 

সব কিছু জেনে বুঝেও তুমি
আমায় ঠকাতে পারলে ?
সত্যি করে বলছি,
স্বপ্নেও কখনো ভাবিনি ! 
এমন করে তুমি আমায় ঠকাবে ৷

এতোটাই ছিলো বিশ্বাস আমার !
তোমার প্রতি.....
আর এই তুমি ভুলে সব বাঁধন মায়া,
দূর অজানায় পারি জমালে ৷

নীল তুমি কি একবার বলবে!
আমায় দেখানো যতো সব স্বপ্ন তোমার,
তা আর আমার মতো কজন-কে দেখাবে!?

মানব মনন -- নিবারণ চন্দ্র দাস

মানব মনন 
নিবারণ চন্দ্র দাস
২৪/০৭/২০২৪
মানবের সাথে মিলেমিশে রই
   আত্ম গরব ছাড়ি,
সুখের সাগরে ভেসে যেতে যেতে
    অজানায় দিই পাড়ি।

কত কথা জাগে পরাণের মাঝে
    যায়না সকল বলা,
গহীন আঁধার পথে যেতে যেতে
    থেমে যায় পথচলা।

কত হাসি গান কত কলতান
    অন্তর হ'তে দূর,
শুনিনা যে আর ধুম বারাবার
    ভুবন মোহন সুর।

একদিন যবে সব থেমে যাবে
    শান্ত এ পৃথিবীটা,
নীরবে গোপনে বিদায় লগনে
     ছেড়ে যেতে হবে ভিটা।

মানুষের সাথে মানবিক পথে
   থাকি যদি কিছুদিন,
হয়তো তখনি শোধ হতে পারে
   জমে থাকা কিছু ঋণ।
            :::-:::

Wednesday, July 24, 2024

স্টেশন কিন্তু গাড়ী থামেনা -- দিলীপ ঘোষ

স্টেশন কিন্তু গাড়ী থামেনা
দিলীপ ঘোষ
২৩/০৭/২৪
ঘড়িতে ন'বার ঘন্টা বাজলো
এখন অন্ধকার
শেষ ট্রেন চলে যাওয়া স্টেশনের মতো
পরাজিত প্যাসেঞ্জার
পা দুটো টলে, বুকে ভারী পাথর
বাঁকা সিড়িতে দাঁড়িয়ে সন্ধ্যার নদী
অপেক্ষামান যাত্রী ফুটো নৌকায় চেপে
করছে পারাপার

পান থেকে চুন না-খসা আবেগ
উল্টোডাঙ্গায় মেট্রোতে চেপে
কাট পুড়ানোর দেশে পৌঁছায়
ব্যর্থতার আঙ্গুল দিয়ে ভিজে কাট কুড়ায়
আসে-যায় পরীযায়ী প্লাটফর্মে,
            সময় কাটায় ছায়াহীন গাছতলায়

সময় চলে যায়, আবেগ প্রাণ হারায়
গন্তব্য কপাল ঠোকে,
              প্ল্যাটফর্মহীন কোন জায়গায়।

Tuesday, July 23, 2024

রক্তেই যদি রাজপথ ভেসে যায় -- নিখিলেশ চক্রবর্তী

 রক্তেই যদি রাজপথ ভেসে যায়
 নিখিলেশ চক্রবর্তী 
 22/07/2024
 রক্তেই  যদি  রাজপথ ভেসে যায় ,
মায়ের কান্না ভেসে যায় বাতাসেতে ,
অধিকার চাওয়া হয় যদি  অন্যায়  ,
সুবিচার জেনো আসবেই আদালতে।

 মনে রেখো শুধু মিছিলের জয় হয় ,
হেরে যায় জেনো গোলা গুলি বেয়নেটে;
সময়ই  পেয়েছে  আন্দোলনের ভয় ,
শুনি জয়গান সীমানায় খেতে খেতে। 

 স্বাধীনতা শুধু স্বাধীনতা জেনো নয় ,
লড়াইয়ের পথে কথা কয় স্বাধীনতা  ;
নেমে থাকো পথে পথই আনবে জয় ,
মাভৈঃ দেশের দাবীর মেধাবী কথা। 

 রক্তেই যদি রাজপথ ভেসে যায় ,
মৃত্যুই  হয়  জীবনের  পরিণতি ;
দাফনের মাটি ঢেকে যায় কান্নায়,
শোণিতেই লেখা থাকবে শহীদ ইতি।
                 

এ কেমন বরষা -- মহাদেব চট্টোপাধ্যায়।

 এ কেমন বরষা
  মহাদেব চট্টোপাধ্যায়
 ২০/৭/২৪
 আসিল বরষা এ মনে সহসা
উথাল-পাথাল ওঠে ঢেউ ,
উন্মনা মন ওড়ে বনবন 
আমার পাশেতে নেই কেউ |

আশা গেছে খসে একাকিনী বসে
মনের তরণী যাই বেয়ে ,
কামনার কূলে মন ওঠে দুলে
হাজার চিন্তা আসে ধেয়ে |

দিবস রজনী শুধু কাল গুনি
কান পেতে রই আমি একা ,
হৃদয় বীণায় আছি  সাধনায়
কোথায় কখন পাবো দেখা |

দেখিবার তরে আঁখিজল ঝরে
মুষলধারায় শুধু নামে ,
ভিজিল অঙ্গ প্রেমেতে ভঙ্গ 
ওগো প্রিয়া ,আছো কোন্ ধামে ?

বিরহের  ঘরে বিচ্ছেদ মরে
চিরকাল জানি জ্বলে ,
মিলন আশাতে নয়ন জলেতে
প্রেমের অশ্রু শুধু টলে |

গুরু বন্দনা -- তরুণ কুমার ভট্টাচার্য

গুরু বন্দনা
তরুণ কুমার ভট্টাচার্য
মাঝ রাস্তায় পথ আটকে
হাস্য মুখে দাঁড়িয়ে
অলক্ষ্যে টান ডাকছে কাছে
চরণ কমল বাড়িয়ে  ।

এত দিনের চেনা পথে
ওনার দেখা পাইনি
মনের থেকে তেমন ক'রে
হয়তো আমি চাইনি  ।

আমার চাওয়া ওনার চাওয়া
যখনই হয় শুরু
তখন থেকেই উনি হলেন
আমার পরম গুরু  ।

আমার হৃদয় মন্দিরেতে
ওনার মূরতি রাজে
সুখে দুখে পথের দিশা
সদাই কানে বাজে  ।

গুরুদেবই হাতটি ধ'রে
সাথে নিয়ে যাবেন
গুরু গ্রহণ করুন বন্ধু
অসীম শান্তি পাবেন  জজ ডডড

রাহুলের জীবন স্বপ্ন -- উত্তম গোস্বামী

রাহুলের জীবন স্বপ্ন
উত্তম গোস্বামী
২১/০৭/২০২৪
চাঁইপাটের  এক ছোট্ট ছেলের 
গল্প বলি শোনো 
মানবসেবী সেই ছেলেটির
নাম কি তোমরা জানো? 

কত অসহায় মুমূর্ষুদের 
কাঁদছে যখন প্রাণ 
এগিয়ে আসেন সেই ছেলেটি 
রাহুল মাজী নাম।

সেই ছেলেটির ছোটবেলায় 
স্বপ্ন ছিল মনে 
করবে সেবা দিন-দরিদ্র
গরিব আর্তজনে।

সেই ছেলেটি বিদ্যালয়ে 
আঁকতো জীবন ছবি 
মানব সেবাই পরমব্রত 
জীবনেতে ছিল হবি।

স্যার বলতেন,'রাহুল তুমি 
 অনেক বড় হবে 
তোমার কথা চিরজীবন 
মোদের মনে রবে।'

বাবা-মা তার মানব দরদী
 পরম নিষ্ঠাবান 
বাবা মায়ের মতো ছেলের ঢ়
হৃদয়  শ্রদ্ধা বান।

কত কষ্ট সংগ্রামে আজ 
জ্বলছে জয়ের বাতি 
আঁধার রাতে আলোর পথে 
পেয়েছে জীবন সাথী।

স্বপ্ন আঁকা জীবন পথে 
ছেলের জয় গান
হৃদয় পাতায় থাকবে লেখা 
রাহুল মাজী নাম।

Monday, July 22, 2024

হ য ব র ল -- সমর কুমার বোস

  হযবরল 
  সমর কুমার বোস 
  ২০/০৭/২০২৪
  অসীম শূণ্য গহ্বরে অতি ভঙ্গুর সোপান,
  বৈরাগ্যের ছত্রছায়ায় বিষন্নতার চাপান।
  বাঁধনহারা নজরকাড়া পরশ উচ্ছলতার,
  পাগলপারা ছন্নছাড়া নীরস প্রগল্ভতার।
  সুরার নেশা বেহাল দশা পিঞ্জরেতে বন্দী,
  বিহ্বলতার রুদ্ধ দুয়ার মনে আঁটে ফন্দি।
  স্বর্ণ হরিণ বর্ণ মলিন নীরব কাতর দৃষ্টি,
  মেঘের বাঁধন মন উচাটন অপরূপ সৃষ্টি।
  অস্থিরতার ঘোর প্যাঁচ জীবন যুদ্ধে রত,
  মন ফাগুন উদাস স্বপন ভাসে কতশত।
  বিলাসিতার বৈভবতার সাঙ্গ হল খেলা,
  তাচ্ছিল্যের আবহে স্বৈরাচারী অবহেলা।
  মরণ ভয় কন্টকময় পথ সুনসান ফাঁকা,
  যদি পৌছায় তবে ওড়ায় বিজয় পতাকা।

বৃষ্টি- সৃষ্টি -- সুভাষচন্দ্র ঘোষ

 বৃষ্টি -সৃষ্টি
 সুভাষচন্দ্র ঘোষ 
  ২০/০৭/২০২৪
     শ্রাবণ বেলায়
     মেঘের ভেলায়
     মনকে দোলায়
     বৃষ্টি।
     টাপুর টুপুর
     সকাল দুপুর
     বাজে নূপুর
      মিষ্টি।।
     পুকুর পাড়ে
     নদীর ধারে
     বাঁশের ঝাড়ে
      বৃষ্টি ।
     জল থৈথৈ
     মাগুর কৈ
     কি হৈচৈ
     অনাসৃষ্টি।।
     কচুর পাতায়
     ব্যাঙের মাথায়
     গাছের ছাতায়
      বৃষ্টি।
     চাষী মাঠে
     ধানে পাটে
     দারুন খাটে
     কৃষ্টি।।
     বেলী ফুটে
      জুঁই জুটে
      গন্ধ লুটে
      বৃষ্টি।
     কোথায় রবি
      ভাবে কবি
      নূতন ছবি
       সৃষ্টি।।

  

Saturday, July 20, 2024

ভাগ্যহীন -- অরবিন্দ সরাক

 ভাগ্যহীন 
 অরবিন্দ সরাক 
১৯/০৭/২০২৪
আমি যদি মুক্ত পাখি হতাম তবে
বহুদূরে নীল আকাশে,
উড়ে যেতাম সেথায় খুবই জোরে    
সুন্দর স্নিগ্ধ বাতাসে।

আমি বাস করি বদ্ধ খাঁচার মধ্যে
যেখানে দরজা বন্ধ,
প্রবেশ করে না যেখানে কোনদিন
সুন্দর ফুলের গন্ধ।

মৃত লাশের মতো পড়ে আছি সেথা
স্বাধীনতা কোন নেই,
সেথা থেকে কোন আলোর ঠিকানা
দেখতে পাবেনা কেউ।

আমার মতো হতভাগার খবর কেউ
জানবেই না কোনদিন,
এই সব কারণেই নিজেকে মনে হয়
ভীষণ রকয় ভাগ্যহীন।

উপলব্ধি -- গৌতম কুমার চক্রবর্তী

 উপলব্ধি 
গৌতম কুমার চক্রবর্তী 
 ১৯.০৭.২০২৪
প্রেম ছাড়া কোনো ভাবেই জীবন চলেনা 
তাই প্রতিদিন প্রকৃতির প্রেমে পড়ি ...
রূপ রস আর গন্ধে প্রকৃতির ভালোবাসা 
আমার মন ভরিয়ে দেয় ! 
প্রেম ছাড়া কোনো ভাবেই বাঁচতে পারিনা 
তাই নিয়ম করে পশু পাখির প্রেমে পড়ি ...
ওদের প্রেমে কোনো শর্ত বা স্বার্থ নেই 
আছে শুধু অফুরান ভালোবাসা !
মানুষের প্রেমে পড়ে দেখেছি ...
শর্ত আর স্বার্থ ছাড়া ভালোবাসা হয়না !
মানুষকে ভালোবেসে পাহাড় প্রমাণ 
দুঃখ উপহার পেয়েছি ...
যা আজও মনে পড়লে শিউরে উঠি !
যখন প্রতি রাতে অব্যক্ত যন্ত্রণা 
অনুভব করি তখন সাহিত্যের প্রেমে পড়ে 
জীবনবোধ শিখতে থাকি ...
মন খারাপে একাকিত্ব ভুলে থাকতে 
সঙ্গীতের প্রেমে পড়ি ...
সুরের মূর্ছনায় মনের মাঝে 
শান্তির রসদ খুঁজে পাই ! 
এভাবেই বারবার প্রেমের আবর্তে 
ঘুরতে ঘুরতে বিজ্ঞানের প্রেমে পড়ে 
জানতে পারি বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের রহস্য !
তবু আজও  স্বপ্নের ঘোরে 
কোনো এক মায়াবী আলোয় ... 
এক নারীর প্রেমে মন আকুল হয়ে পড়ে !
আজও বুঝিনা তার রহস্য ...
অনুভূতির ছোঁয়ায় খুঁজে পাই তারে 
শুধুই  অনুভবে ... 
বারেবারে অনুভবে কাছে পাই তারে ... 

আরশি -- দেবাশীষ চ্যাটার্জী

 আরশি  
 দেবাশিষ চ্যাটার্জী 
19/07/2024 
আয়নায় গিয়ে মুখ দেখি যখন
চোখের কোনেতে জল
চাপা হাসি হেসে দর্পণ বলে
ভালবাসা বিষ ফল ।

এক মনে একা বেঁধে ছিলি বাসা
বুক ভরা ছিল সুখ
এখন আয়না প্রতিচ্ছবি  দেয়
পাশাপাশি দুটি মুখ ।

প্রেমের আড়ালে ছলনা মিশিয়ে
ভালোবাসায় দিলি ধোঁকা
নিজেকে চালাকের আকাশে উড়িয়ে
আমায় সাজালি বোকা ।

সহজ মানেই বোকা তারা নয় 
এমন ভাবনা মিছে
ছলনার মন ভাবে অনুক্ষণ
আরো বেশী পাওয়ার আছে ।

জানিনা এখন কেমন আছিস
নূতন কে ভালবেসে
যদি কোনোদিন আর দেখা হয় 
লজ্জা ঢাকবি কিসে ?

আয়নায় আমি মুখ দেখিনা
ভুলে থাকি প্রেম আদর
কাঁচের টুকরো ভাঙা দর্পণ
চিরে দেয় বুক পাঁজর।

বলেছিলি ভালো সদাই থাকবি
মিটে যাবে যতো আশা 
তবে কেনো আজ ভাঙ্গা মন তোর 
কেনো এই দুর্দশা ?

Friday, July 19, 2024

সুধায় মগন বিশ্বজগৎ -- অরুণ কুমার মহাপাত্র

সুধায় মগন বিশ্বজগৎ 
অরুণ কুমার মহাপাত্র 
১৭/০৭/২০২৪
ঝুম বেদনায় নদীর ধরে
হাঁটছি আমি একা একা 
আড়বাতাসে দোল খাওয়া
গাছগুলো সব যাচ্ছে দেখা 

পাতাগুলো সব জানে না তো 
মনপাখিটার বিষাদ খবর 
মনের মাঝে তাই জেগে রয় 
মন বিলাসের ভাবনা ডোর 

গাছে গাছে পাতার শীষ আর 
পোয়াতি নদীর ছলাৎ শব্দ 
মন কুঠুরির ঐ হাজার কথা 
নাচছে তুলে‌ কত না ছন্দ

পাকুড়তলে বসে যেন আমার
বোধি লাভের তপস্যা 
মন কুঠুরির খুলতে তালা প্রভু
হয় না যেন সমস্যা 

জলে বনে পর্বতে দেখছি আমি
ভাস্কর্য যেন পরত পরত 
সবটুকু যেন আজ উজা়ড় করে
সুধায় মগন বিশ্বজগত ।

কাজ করে দেখাতে হবে -- চন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়

  কাজ করে দেখাতে হবে
  চন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
  ১৭/০৭/২৪
রবীন্দ্রনাথ বলতেন শুধু কলম ধরে, ভাষণ মেরে
টাকা-পয়সা দান করে , সমাজের উপকার হয় না,
মানুষের কাছে যেতে হয় , তাদের ব্যথা বুঝতে হয়
তাদের জাগ্রত করে কাজ করার চাই পরিকল্পনা।

মানুষের মধ্যে যে শক্তি লুকিয়ে আছে, তার বিকাশে
বাইরের বৃহৎ শক্তির কাছে তাকে তুলে ধরতে পারলে
ক্ষুদ্র মনুষ্য শক্তির বৃহৎ রূপ আমরা দেখব অপরূপে
তাই কাজ করে দেখাতে হবে সমাজের উন্নতি চাইলে।

বিবেকানন্দেরও তো সেই একই কথা , চাই প্রগতি
প্রগতি হল বাইরের ও ভিতরে, উভয়ের মিলনের
এক সুন্দর শক্তির বিকাশ যার ফলে উন্নতির প্রকাশ
পরিবার - সমাজ - দেশ - জাতির পথ উত্তরণের ।

কিন্তু এখন মানুষের পাশে কত জনা মানুষ আছে
মানুষ রয়েছে অনেক দূরে প্রকৃত মানুষের কাছ থেকে
দেহ মন সব যেন ধীরে ধীরে কোথায় যাচ্ছে সরে
রয়েছে সুন্দর মুখোশ পরে শুধু কৃত্তিমতায় ঢেকে!

অনেকের প্রশ্ন - কাজ কোথায়, কাজ করতে বলছো যে হায়
যদি কাজ করতে এগিয়ে যাই, কেউ সহযোগিতা করে না।
আগে ঘরের কাজ করে দেখাও , তবে তো বাইরে যাও
নিজের ঘর সামলাতে না পারলে অন্যেরা কেউ শুনবে না।