Thursday, August 1, 2024

বাসনা -- অনিরুদ্ধ রানা


       বাসনা
       অনিরুদ্ধ রানা 
        ৩১/০৭/২৪
শ্রাবণী বেলায়       ঘন বরষায় 
কে ডাকে আমায়   আয় রে ছুটে,
যৌবন সায়রে       প্রণয় বাসরে 
মধু প্রাণ ভরে  নেবো রে লুটে।

মনের আয়না      ধরেছে বায়না 
ছোঁয়া তো যায় না  আপন করে,
সে কি ভোলা যায়?     ব্যথা বেদনায় --
নীড় বাঁধা দায় হৃদয় ডোরে।

ভুলিব কেমনে      তাই সঙ্গোপনে 
নয়নে নয়নে  ঝরিছে অশ্রু, 
এ কেমন মায়া      বট বৃক্ষ ছায়া 
বিরহিণী কায়া পাকিল শ্মশ্রু।

'তুমি' আছে তাই ......-- দিলীপ ঘোষ

'তুমি' আছে তাই - - -
দিলীপ ঘোষ
৩১/০৭/২৪
'তুমি' আছে তাই
আদর ভালোবাসা মাখা কত কি যে যায়
অভিধানে তত শব্দের হদিশ মেলা ভার।
বর্ণনা দিতে গিয়ে কলম ক্লান্ত
প্রকাশ করার ক্ষেত্রে হয়ে যায় পরিশ্রান্ত।

'তুমি' আছে তাই
ভালোবাসার মিষ্টি দেওয়া চা
বিছানায়, সকালকে মেলে।
সময়ের লাল চোখ
পেটে গামছা বেঁধে, না খেয়ে
কান ধরে কোনদিন যদি টেনে নিয়ে যায় কর্মস্থলে
'তুমি' তখন রাগ করে
গোলাপ যেমন রাগ করে ভ্রমরের প্রতি
                                                     পাপড়ি মেলে।
কড়া শাসনের সাথে অনুরাগ
কার না ভালো লাগে
কার না ভালো লাগে ভালোবাসার বকুনি পেলে।

পরিস্কার পোশাক না পোরে, একদিন বাইরে গেলে
কড়া পাকের লাল চোখের আন্তরিকতা
'তুমি' সযত্নে দেয় আঁচল খুলে
তুমি আছে, তাই সীমাহীন মূল্যবান প্রশ্রয় মেলে।

অসুস্থতা কোন সময় গ্রাস করলে
অবিশ্রান্ত বৃষ্টি নামে 'তুমি'-র মরমী অন্তরে
দরদী হৃদয় দুঃখ কষ্টের চিতায়
নীরবে পুড়ে মরে
যতক্ষন অন্তর-আত্মার অসুখ না-সারে।

'তুমি' আছে তাই - - -

Wednesday, July 31, 2024

আকাশের মতো মন -- বনানী সাহা

 আকাশের মতো মন
 বনানী সাহা
 ৩০- ০৭- ২০২৪
আকাশের ব্যাপ্তি বোঝা নাহি যায়--
ছড়িয়ে আছে, দূর--- সীমানায়!
মিশে রয় মহাকাশের সাথে ।
মাপবে তারে , সাধ্য কার আছে !

মনের ব্যাপ্তিও আকাশের মতো!
আলোর গতিবেগের চেয়ে দ্রুত !
অতো বড়ো ব্যাপ্তি যার আছে---
সেই মন কে ছোট করা, নাহি সাজে ।

মনের উদারতা ,ভালো মানুষের পরিচয় ।
একে ছোট করা ,প্রকৃতির বিরুদ্ধ হয়।
ঈশ্বর দিয়েছেন, মনের ব্যাপ্তি আকাশের মতো ।
জগতের কল্যাণের তরে, করতে ব্যবহৃত ।

মনকে বড় করে ,যদি দাড়াও মানুষের পাশে--
একই সাথে সূর্য -চন্দ্র ,মনের আকাশে হাসে।
খেলবে তখন, অনেক ফুল মনের আঙিনায় ।
খুশির বাতাস লহর হয়ে, মনের মাঝে বায়।

ধন্ সম্পদ ,উচ্চ বংশ ,মানুষের নয় তো পরিচয়।
সুন্দর আচার- ব্যবহার আসল পরিচয় ।
সুন্দর বাবহার আসে ,উদার হলে মন ।
সুন্দর একটা মন হল-- আসল সম্পদ ধন ।

সৃষ্টি ধারা -- মোঃ নূরুল ইসলাম

     সৃষ্টি ধারা
     মো: নূরুল ইসলাম
     ৩০/০৭/২০২৪
    বয়ে চলে সৃষ্টির ধারা,
    কোথা হতে বহে অবিরত!
    জানে না তো কেউ, শুধু অনুমান করে।
    দেখেনি কেউ, অনুমান করে শুধু কোন খানে,
    জমা আছে জানে একসাথে।
    নেমে আসে একে একে,
     কিছু দিন থেকে ফিরে যায় সেখানে।

    যেমন বৃষ্টি আসে ফিরে ফিরে ধরণীতলে,
    সবাই তা জানে আকাশ হতে,
    জমা হয় মেঘরূপে, ভরে যায় জলে।
    নদনদী খাল বিল সাগরের জল,
    রৌদ্র তাপে উড়ে যায়,
    করে ঘোরাঘুরি আকাশে কিছু কাল,
    সেথা ঠান্ডা পরশে হয় শীতল।
    পায় নতুন জীবন, বিন্দু বিন্দু বরফ সুশীতল,
 ‌    ঝাপি ঝাপি ঝড়ে পড়ে অবিরল।
    কালো মেঘে সামঞ্জস্  হয় তারা,
    করে প্রাণ সচল শষ্য শ্যামলা ধরা।

    প্রশ্ন জাগে মনে কেহ কি আছে কোনো খানে!
    ধরেছে লাটাই রচিতেছে মায়াজাল।
    কোন অভিপ্রায় উদ্দেশ্য কি তার!
    শুধু কি সৃষ্টির আনন্দে ভাসা!
    বহিবে ভুবনে এমনে নিয়ে বাধাহীন গতি,
    নাকি অন্যরূপ তার,অন্য কোনো নীতি।
    দেখিবার ইচ্ছা জীবন চরাচর,
    কেমন তার হাসিখেলা, কেমন রূপাচার!
    দেখিতে চায়কি তবে বুকফাটা ক্রন্দন!
    জীবন যুদ্ধ মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা!
    শৈশব কৈশোর যৌবন কিংবা বৃদ্ধাশ্রম,
    কোনটা তার আপনজন, কোনটা প্রিয়তম।

    

Tuesday, July 30, 2024

দাম্ভিকত্ব করেছে সমাজ থেকে ব্রাত্য -- সুরজিৎ পাল

 দাম্ভিকত্ব করেছে সমাজ থেকে ব্রাত্য 
 সুরজিৎ পাল 
২৯.৭.২০২৪
দাম্ভিকত্ব কুটে কুটে ভরা -
 নমনীয়তা ধরতে বিলক্ষণ- লাগবে অণুবীক্ষণ ।
কেউ এলে দারোয়ান বলে-
আছে কি পূর্ব অনুমতি ও সময় নির্ধারণ?
না থাকলে বাড়ি জান,
খেয়ে দেয়ে ঘুমান।
অন্যথা আমি হবো বরখাস্ত,
মালিকের মুখ ঘুরিয়ে নেওয়ার নাম পুরুষত্ব।
কিসের দম্ভ, কাকে দেখায়, পায় কি? 
রক্তে ছিল না,দরীদ্র পরিবার থেকে আগত,
পড়ার সুযোগে উচ্চ শিক্ষা , উচ্চপদস্থ চাকরিতে ধাতস্থ।
বড়োলোকের মেয়ে কে বিয়ে, 
পরিবার,পরিজন,শ্রেণী সঙ্গ ত্যাগে নিজেকে আলাদা করে।
দম্ভের শুরু -
দেখায় নিজ সম্প্রদায়কে - নিজের অতীত ভুলতে চায়,
দুই একবার বিদেশ সফর-
বাবু থেকে কালো সাহেব হয়ে যায়।
ধরাকে সরা জ্ঞান করে,
দুর দুর ছৈ ছৈ অভ্যাসে পরিণত হয়।
ভাই দেখা করতে এলে 
বলে -
ইংরেজিতে কথা বলতে শিখলে তবেই প্রবেশ করবি ঘরে,
অন্যথা যে তিমিরে আছিস সে তিমিরে ই থাক হরে কৃষ্ণ হরে রাম করে।
অপমানিত হয়ে ভাই চলে যায়,
রাস্তার ভিখারী টা দেখে হাসে-
নতুন নতুন টাকায় গরমান্ধ-
হায় দম্ভ ! 
কি আর বলি , 
কিছুদিন পর পাব পাশের আসনে ,
নির্ঘাত রাখবো যতনে।
এটাই যে ভবিতব্য,
বিধাতার সাথে সাথে সমাজে ব্রাত্য।

কবিতা কথা বল্ -- উত্তম গোস্বামী

কবিতা কথা বল্
উত্তম গোস্বামী 
২৯/০৭/২০২৪
গরীব মায়ের ছোট্ট মেয়ে 
নামটি কবিতা 
স্বপ্ন আঁকে দু-চোখের তার
জীবন ছবিটা। 

ক্লাস ফোরের সেই মেয়েটি 
সব কাজে পারদর্শী
অবাক চোখে তাকিয়ে দেখে 
 পাড়র সকল পড়শি।

বাপ মরা সেই ছোট্ট মেয়ে 
ক্লাসের ফাস্ট গার্ল
নেই কোন তার বেশভূষা আর 
নেই কোনো তার চাল। 

গত রবিবার গিয়েছিল মা 
ধান রুইতে মাঠে 
গামছা বেঁধে মুড়ি নিয়ে সে
যাচ্ছিল পায়ে হেঁটে।

মাথায় আছে মুড়ির থালা 
হাতে জলের ঘটি
রাস্তা একটু ভালো দেখলেই 
করছে ছুটোছুটি।

ঘাস ভরা ওই মেঠো পথে 
যাচ্ছে যখন মেয়ে 
হঠাৎ করে করুন কান্নার 
শব্দ আসে ধেয়ে।

"মাগো তুমি এসো ছুটে 
সাপ দিয়েছে কামড়ে 
যন্ত্রণাতে মরছি আমি 
জীবন পথে আছড়ে।"

"যাচ্ছি সোনা ছুটে ছুটে 
করিস না তুই ভয়
হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে 
করবো জীবন জয়।"

নীরব হলো মায়ের কোলে 
প্রাণের কবিতা 
জীবন সাঁঝে উঠল ভেসে 
করুন ছবিটা।

হাহাকারে মায়ের দুচোখ 
ঝরায় অশ্রু জল 
কেঁদে কেঁদে মা বলছে তারে 
'কবিতা কথা বল্!'

ঈশ্বর আজ আর নেই -- অরুণ কুমার মহাপাত্র

ঈশ্বর আজ আর নেই 
অরুণ কুমার মহাপাত্র 
২৯/০৭/২০২৩
নিষাদের তীরে হত প্রেমিক ঈশ্বর
চিদাকাশ ফুঁড়ে চলে যায় জীবন 
থেমে যায় যাদুবাঁশির সুর আর গান 
একাল পরকাল সেকাল সবই মুছে যায় 
যেতে তো হবেই...
মৃত্যু উপত্যকায় বাঁশি বাজলে যেতে হবে
যেতে তো হবেই...
হতে পারেন ঈশ্বর 
এটাই নিয়তি...
শরীর জুড়ে শলাকার তীব্র জ্বালা 
সে এক রক্তাক্ত খবর
নিটোল এক কবিতা 
কবিতার রঙ মানুষের রঙের মতো 
ঈশ্বর আজ আর নেই....
ঈশ্বর নেই তবুও আছেন সবচেয়ে বেশি তোমার আমার মাঝে...
পূর্ণিমার বোষ্টমী চাঁদে সঙ্গী হন তিনি 
চাঁদভাসি মধ্যরাতে...
রসকলির তিলক এঁকে চলো যাই তবে রূপসায়রের সাধন পথে...
অবেলায় দোল দিলে জাগে নিধুবন
পেলেও পেতে পারি সাধন শেষে মধ্যযামে
যদি দ্বিধা হন তিনি...  ।

Monday, July 29, 2024

এমন কি হতে পারে না -- চাঙমা বিনয় যমুনা

এমন কি হতে পারেনা?
 চাঙমা বিনয় যমুনা
২৮/০৭/২০২৪ 
মানুষে মানুষে থাকবেনা কোন বিভেদ
চির শান্তির সুবাতাস বহিবে অবিরাম
ছড়াবেনা সাম্প্রদায়িকতার বিষ বাষ্প
দুঃখ বেদনা চিরতরে হবে অন্তর্ধান।

থাকবেনা হিংসা,বিদ্বেষ,লোভ,লালসা
যতোসব মোহ আর বিকৃত কামাচার
একে অপরের প্রতি থাকবেনা ক্ষোভ
হিংসানলে পুড়ে পৃথিবী হবেনা ছাড়খার।

স্বার্থান্ধ হয়ে কেউ করবেনা মানবসম্পদ
নির্দ্ধিধায় অহরহ অবাধে আর লুটপাত
কেউউ করবেনা ধ্বংস আর কখনো
এই পৃথিবীর সর্বশ্রষ্ট প্রাণী মানবজাত।

গর্জে উঠবেনা আর পৃথিবীতে মারনাস্ত্র
যতোসব ভয়ার্ত বিধ্বংসী কামানের গোলা
পরিবেশ বিপর্যয়ের যতোসব  কর্মকাণ্ড
পৃথিবীতে আর কখনো হবেনা তোলা।

পথে ঘাটে,মন্দির,উপাসনালয়ে আর
অবাধে কখনো মানুষ হবেনা বলী
সৃষ্টিকর্তার হাতে গড়া সুন্দর পৃথিবীটাতে
হিংসার আগুন কখনো উঠবেনা জ্বলি।

পুড়বেনা গ্রাম,লোকালয়,আরাধ্য মুর্তি
সবকিছু হারিয়ে মানুষ হবেনা সর্বহারা
প্রেম,ভালবাসা,বিবেক,মনুষ্যত্ববোধ
মানুষের মনে প্রতিনিয়ত দিবে সাড়া।

ভন্ডরা হয়ে যাবে সাধু চিরতরে তারা
দুর্নীতির বেড়াজাল চিরতরে যাবে ছিঁড়ে
জঙ্গী,সন্ত্রাসসহ যতোসব রয়েছে কুকর্ম
থাকবেনা আর কখনো সমাজকে ঘিরে।

রক্ষক কখনো আর হবেনা ভক্ষক
বিচারকেরা নিয়ত করে যাবে সুবিচার
বিচার প্রত্যাশীরা কখনো হবেনা বিমুখ
বিচারের বাণী নিভৃতে কাঁদবেনা আর।

রাজনীতি,ধর্মনীতি নিয়ে চলবেনা ব্যবসা
যার যার ধর্ম সবে করবে প্রতিপালন
যতোসব বিভেদ ভুলে ভালবাসার বন্ধনে
পড়বে বাঁধা প্রতি জনে জন।

আমি ঈশ্বরের চোখে চোখ রেখেছিলাম -- মনিরা মাসিদ

 আমি ঈশ্বরের চোখে চোখ রেখেছিলাম !!
  মনিরা মাসিদ
  28.7.2024
  
মাঝে মাঝে কিছু কাজ করতেও ইচ্ছে করেনা, 
কিছু বলতেও ইচ্ছে করে না। 
মনে হয় যা হচ্ছে তাই হোক না, কি আসে যায়, 
যা হওয়ার তা তো হবেই।।  তখন আমি 
বসে বসে আমার দিনপঞ্জি দেখতে থাকি। 
আমার বেশ মজাই লাগে দেখতে।
আহা আমার জীবনের চলমান আমি।
তো এহেন এক মাঝরাতে আমি আমি গ্যালারিতে 
বসে,মনে হলো কে যেন পাসে এসে টুক করে 
বসলো, তাকিয়ে দেখি চাঁদ পানা এক করুন মুখ জিজ্ঞেস করলাম-
তুমি কে গো? তো সে বললো সে নাকি ঈশ্বর!তো আমার অবাক হওয়ার কথা কিন্তু আজকাল আমি আর কোনো কিছুতেই অবাক হই না। বা বলা যায়
অবাক লাগে না।

তা তুমি আমার ব্যক্তিগত লাইফ লাইনে ঢুকে পড়লে কেন? 
আর অমন চাঁদের মতো মুখখানা ব্যাজার কেন?

তো সেই ঈশ্বর বললো " আর বলো কেন সে আমার অনেক অনেক জ্বালা
তার আগে তুমি বলোতো তোমার ছোট্ট একটা জীবনের কি  এতো দেখ? "

 ঈশ্বর জানতে চাইছে!! 

আমার ভীষন হাসি পেল। মনে মনে 
বলে ফেললাম  " হায় ঈশ্বর "! 

আমি দেখি আমার সুখ  - দুঃখ - রাগ -হতাশা  - আফসোস ,আর দেখি আমার অনাবিল হাসি- আর চোখের নিচে থমকে থাকা অনেকখানি চোখের জল। 
এখান থেকে দেখি আমি- কে যে আপন ,কে যে পর।
সব শেষে করি আমার আমিকে আত্মবিশ্লেষণ। 

এরপর ঈশ্বর যা বললো আমি তো হাঁ -

ঈশ্বর বললো- " আমার শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষ। আর আমি শ্রষ্ঠা হয়েও আমার সৃষ্টি মানুষকেই আমি চিনতে পারিনা! আমি বুঝতে পারিনা। 
অথচ এই মানুষই যখন আমার কাছে প্রয়োজনের
থেকে ও বেশি বেশি সবকিছু চাইল- বাড়ি-গাড়ি-
টাকা- ধনসম্পদ-মেধা- বুদ্ধি, তো আমিও এছাড়াও
মানুষ  যত কিছু চাইলো সবকিছুই বেশি বেশি  দিয়ে দিলাম কিন্তু এখন দেখছি এত দিয়েও মানুষের
মধ্যে কোনো শান্তি নেই সবসময় অশান্তি লেগেই
আছে এবং কারণ হিসাবে মানুষ আমাকেই দোষারোপ করছে। 
এই জন্যই মনটা খারাপ। "

" আর তুমি তো গ্যালারির দর্শক হয়ে জীবনের
আত্মবিশ্লেষণ করো ,তো দেখতো খুঁজে পাও কিনা
আমার  ভুল কোথায় হলো  ? "

ঈশ্বরের কথা শুনে এবার তো আমার আক্কেল গুড়ুম। 

ঈশ্বরের ভুল  !!! 

তবুও ঐযে বললাম আমি আজকাল কোনো কিছুতেই অবাক হইনা। 
তো ঈশ্বরকে বললাম চলো তোমার টাইমলাইনে। 
ঈশ্বর বললো চলো... 
দুজনে পাশাপাশি গ্যালারিতে বসে দেখছি .... 
বললাম বুঝতে পারছো? দেখতে পাচ্ছো? 
ঈশ্বর বললো " আমি তো দেখছি মানুষ যা 
চেয়েছে সবই পেয়েছে ভুল তো কিছু দেখছি না।"

ভালো করে দেখো ঈশ্বরের পৃথিবীতে এখন ---

* আশার বড়ো হতাশা। 
* শুভর বেশি অশুভ। 
* ঞ্জানের আলোর থেকে অঞ্জানতার আঁধার বেশি। 
*ত্যাগের থেকে মানুষের এখন লোভ বেশি। 
*শান্তির থেকে হিংসা বেশি। 
* বিশ্বাসের আগে আসে সন্দেহ। 
*প্রেমের আগেই আসে কাম। 
* ভালোবাসাও চাইছে আজ একের অধিক মন।

ঈশ্বর বললো " তাহলে তুমি বলতে চাইছো মানুষকে
সবকিছু বেশি বেশি দেওয়াই আমার ভুল হয়েছে?? "

একদম না, কোনো ভুল নেই কিন্তু তুমি বোধহয়
এসবের সাথে সাথে একটা বিশেষ অনুভূতি জাগ্রত
করতে ভুলে গেছো।
ঈশ্বর বললো " তা বলোতো শুনি কি সেই অনুভুতির
নাম "।

আমি ঘাড় ঘুরিয়ে ঈশ্বরের চোখে চোখ রেখে বললাম
সেই অনুভুতির নাম   " বিবেক " , ঈশ্বরের পৃথিবীতে
এখন বিবেকহীন মানুষরাই রাজ করছে !!

আমিও দেখলাম অবাক বিস্ময়ে আমার
 দিকে তাকিয়ে আছে " ঈশ্বর "!!

মাটির কায়া -- ফয়েজুর রহমান

মাটির কায়া 
ফয়জুর রহমান 
 ২৭/৭/২০২৪ লন্ডন 
সময় যখন করবে তাড়া
         বিকেল হলে খেলার মাঠে।
দাঁড়িয়ে থাকেন মা জননী 
         সূর্য্য ডোবা পুকুর ঘাটে।

সলজ চোখে আকাশ দেখি
       দুহাত তোলে করছি দোয়া।
 বেঁচে থাকুক এই দুনিয়া
        আল্লাহ রাহা মাটির কায়া ।

এইতো মানুষ উচিত কথায়
           জীবন চাহি সকাল দুপুর।
শেষ বয়সের দুনিয়া সাঁতার 
          এক হাটু জল টুপুরটাপুর।

তোমরা যারা উদয় পথিক
      ফুলের বুকে জ্বলতি শিশির।
আল্লাহ তোদের হৃদয় দানি
           বাঁচবে যখন উন্নত শীর।

জানতে জীবন মানুষ নামের
       দেখবে পথিক চলার কলায়।
আলোর পথের শেষ সীমানা
     লুকিয়ে আছে জ্ঞান সাধনায়।


Sunday, July 28, 2024

অরাজকতা -- দুলাল চন্দ্র দাস

অরাজকতা 
দুলাল চন্দ্র দাস
২৭/৭/২৪
উল্টো দেশের উল্টো নিয়ম  উল্টো সকল কথা,
পড়া শোনা শিঁকেই তোলা    মনেতে নাই ব্যথা।
মদ খেলেই বুদ্ধি বাড়ে         বিড়িতে নাকি জ্ঞান,
পড়া শোনা দিচ্ছে ছেড়ে    টাকার প্রতি ধ্যান।

খিদের জ্বালায় মরছে শিশু  চাকরি দেশে নাই,
যুব সমাজ বেকার জ্বালায়  পথে পথে বেড়ায়।
খেলছে জুয়া সাট্টা ও সাথে  পঙ্গু ছাত্রের দল,
শিক্ষা কাঁদে পথের ধূলায়   ভাঙেছে মনের বল।

আলোর কিরণ  খাঁচায় বন্দি   জ্ঞান যাচ্ছে হারিয়ে,
বিবেক বেটা হাতছানি দেয়   দূ্রনিতীর উপর দাড়িয়ে।
মানুষ দেশে যাচ্ছ কমে          জনগণ যাচ্ছে বেড়ে,
সব জায়গা মিথ্যার জয়      সত্যি যাচ্ছে হেড়ে।

পথে ঘাটে নেশার‌ আসর   প্রতিবাদী কেউ নাই,
শাসন কেহ করতে গেলে   ধরার থেকে বিদায়।
কেউ মানেনা কারো কথা   সবাই দেশের নেতা,
ঘুষ খাওয়াটা প্রধান কর্ম   ভাবেনা কারো কথা।

ধংস হবে এই পৃথিবী     ভাঙছে মনের বল,
কেউ গড়ে না সমাজটাকে   বলেনা এগিয়ে চল।
স্বার্থ ভরা দুনিয়া আজ    ধনী হওয়ার লড়াই,
চুরি করে হচ্ছে মহান    বড় সাধু তারাই।

যাওয়ার বেলা -- ডঃ বিষ্ণুপ্রসাদ সিংহ

 যাওয়ার বেলা
 ড. বিষ্ণু প্রসাদ সিংহ
২৬|০৭|২০২৪
যাওয়ার বেলা কিছু না কহিব,
আমি শুধু নীরবে রহিব। 
পুষ্পে গাঁথা মালাখানি-
চেয়ে চেয়ে বিদায় মাগিব!

ব্যাকুল করিবে মোরে,
কুসুমের সুভাষিত গন্ধ।
সাজানো স্মৃতির পাতা ঝরে,
দুয়ারখানি হবেগো বন্ধ।

দূরে যবে রবির কিরণ,
রক্ত জবা মনে হবে বরণ।
আমি করজোরে নমে,
অস্ত যেতে করিব বারণ!

ধীরে প্রদীপ যাবে নিভে,
না রহিবে গীত কন্ঠে।
আমি বিরহিনী মূর্ছিত বদন,
চাতক পাখি যেন চাহিব গগন।

সবারে জানাবো সম্ভাষণ,
মুছিব অশ্রুজল করে আভরণ।
এ বেদনা আর না হবে মুচন,
শান্ত হবে মোর এ ভুবন।

Friday, July 26, 2024

অচিন পাখি -- দীপ্তি চৌধুরী ঘোষ

অচিন পাখি
দীপ্তি চৌধুরী ঘোষ 
25/07/24
ভিনদেশী এক পাখি এনে
পুষলাম যতন করে,
আদর করি তবু পাখির
মনটা না আর ভরে।

খাঁচার পাখি পোষ মানে না
ছটফটিয়ে মরে,
সুখ থাকে না হৃদয় মাঝে
থেকে বদ্ধ ঘরে।

খাঁচার পাখি বলছে ডাকি
দাও না আমায় ছেড়ে,
মনের সুখে উড়বো আমি
পাখা দুটি নেড়ে।

বনের পাখি বনে মানায়
মনের পাখি মনে,
খাঁচার আগল খুলে গেলে
পালিয়ে যায় বনে।

যা উড়ে যা আকাশপানে
খাঁচা দিলাম খুলে,
মন খারাপের দিনে আসিস
নিজ ঠিকানা ভুলে।

শ্রাবণ দিনে -- নেপাল চন্দ্র বিশ্বাস

শ্রাবণ দিনে 
নেপাল চন্দ্ৰ বিশ্বাস 
২৫.৭.২৪
আকাশ গাঙে মেঘের নৌকো 
পাল তুলেছে আজি,
নবীন বর্ষা নবীন রঙে 
নবীন রূপে সাজি ।

সকাল বেলায় পুবাকাশে 
মেঘ জমেছে ভারি, 
শ্বেত বলাকা দিঙমণ্ডলে 
উড়ছে সারি সারি ।

ময়ূর নাচে পেখম তুলে 
বর্ষার খবর পেয়ে, 
শেয়াল মামা হুক্কা হুয়া 
ডাক দিয়ে যায় ধেয়ে ।

চিরহরিৎ বৃক্ষ গুলি 
বর্ষা স্নানে মাতে, 
সবুজ পাতার শাখা গুলি 
দোলে বর্ষা রাতে ।

মেঘ বালিকা সেজেগুজে 
কালো শাড়ি পরে, 
মাথার 'পরে ছাতার মতো 
ঠেকায় রৌদ্র করে ।

অনেক দিনের পরে আজি 
শ্রাবণ এলো ফিরি,
চতুর্দিকে ধূমেল হাওয়া 
বৃষ্টি ঝিরি ঝিরি ।

শ্রাবণের হাত ধরা বৃষ্টি কথা -- সুব্রত সেন

শ্রাবণের হাত ধরা বৃষ্টি কথা৷
সুব্রত সেন
২৫\০৭\২০২৪
ও এসেছে, ওকে ঘরের মধ্যে আসতে দাও
বসতে দাও, হাত মুখ ধোয়ার জল দাও
তারপর ওকে দিয়ো তোমার ভালোবাসার এক গ্লাস সরবৎ
তাতে দিয়ো একটু কাজু কিশমিশ আর গোলাপের পাপরি৷
ইরাকী তৃষ্ণার আগুন দেহে কাদা মাটির ক্লান্তির ছাপ...৷

জিরোতে দিয়ো, মাথার কাছে খুলে দিয়ো পূবের জানালা
ভেসে আসুক শিউলির গন্ধ ,বেজে উঠুক হালকা সুরে ইমনকল্যাণ ৷

ওর স্মৃতিজুড়ে হেমন্তের কুয়াশার চাদর, মৃত জোয়ানের কপিন
 ঝার বাতির রঙ্গিন আলোয়, যেন নিঃশ্ব হয়ে না যায়৷

ওকে দুরের পাহাড় দেখাও, ঝর্ণা দেখাও, দেখাও পুরোনো 
মাটির বাড়ি ,লাউ মাচা ,পুঁই মাচা,ভোরের ভৈরবি সুর
গ্রাম্য কিশোরি বধুর কত ক্ষত বিক্ষত নদীঘাট..৷
ছোট্ট ডিঙা,দোয়েল কোয়েল শ্যামা আর শ্রাবণীর হাত ধরা বৃষ্টি কথা...৷

এবার একটু একটু করে মুছে যাক সব... পুরোন বইয়ের মাঝে
ছেড়া চিঠি, ইরাবতীর গন্ধ..৷

Thursday, July 25, 2024

মুঠোয় মরীচিকা -- লক্ষ্মীকান্ত দাস

মুঠোয় মরীচিকা
লক্ষ্মীকান্ত দাস 
২৪.০৭.২০২৪
মুঠোফোনের মরীচিকা 
চোখের তারায় জ্বলে 
কেউবা বলে প্রানভ্রমরা 
কেউবা বন্ধু বলে ,
কেউবা তাকে মাস্টার বলে 
কেউবা জ্ঞান ভান্ডার 
কেউবা তাকে হাতিয়ার করে
লুটতে চাইছে গন্ডার ।
তোমার আমার মধ্যিখানে
থাকনা হাজার যোজন ।
আঙুলেরই ছোট্ট টোকায়
হব্বে যে সংযোজন ।
দূরের লোককে দেখবে কাছে
নড়ছে চড়ছে সবই 
ছুঁয়ে দেখা বারণ কিন্তু 
প্রেমটা থাকবে কবি ।
পলকেতে পুলক জাগায়
পুলক যে সে পলকা ।
পরক্ষণেই বিষণ্ণতায়
দুঃখ ব্যাথার হলকা ।

বিষাক্ত দাঁত -- নুপুর নন্দী

বিষাক্ত দাঁত
নুপুরনন্দী
24/7 /2024
তোমার কাছে একটাই প্রশ্ন
কি করে তুমি পারো এতো ! 
এক হৃদয়ে বাসতে ভালো,
একি সময়ে, দুটি মানুষকে !!!

বলেছিলে তিন সত্যিতে
থাকবে তুমি আমার হবে,
তবে কেনো আজ আমায় রেখে
খুজে নিলে নতুন স্বজন ! 
কি এমন ক্ষতি করেছি আমি তোমার !?  

খেললে দারুন খেলা,
ভালোবাসার দোহাই দিয়ে 
বুঝিনি তাই তোমার নিষ্ঠুরতা 
বিশ্বাসের কালো পদ্মায়
চোখ ঢাকা ছিলো বলে ৷

কি করে পারলে নীল... তুমি ! 
প্রতি মুহুর্ত নিষ্টুরতায়
মিছামিছি অভিনয়ে,
আমর জন্য সঞ্চয় করা সময় তোমার,
অন্যকে দিতে  !? 

সব কিছু জেনে বুঝেও তুমি
আমায় ঠকাতে পারলে ?
সত্যি করে বলছি,
স্বপ্নেও কখনো ভাবিনি ! 
এমন করে তুমি আমায় ঠকাবে ৷

এতোটাই ছিলো বিশ্বাস আমার !
তোমার প্রতি.....
আর এই তুমি ভুলে সব বাঁধন মায়া,
দূর অজানায় পারি জমালে ৷

নীল তুমি কি একবার বলবে!
আমায় দেখানো যতো সব স্বপ্ন তোমার,
তা আর আমার মতো কজন-কে দেখাবে!?

মানব মনন -- নিবারণ চন্দ্র দাস

মানব মনন 
নিবারণ চন্দ্র দাস
২৪/০৭/২০২৪
মানবের সাথে মিলেমিশে রই
   আত্ম গরব ছাড়ি,
সুখের সাগরে ভেসে যেতে যেতে
    অজানায় দিই পাড়ি।

কত কথা জাগে পরাণের মাঝে
    যায়না সকল বলা,
গহীন আঁধার পথে যেতে যেতে
    থেমে যায় পথচলা।

কত হাসি গান কত কলতান
    অন্তর হ'তে দূর,
শুনিনা যে আর ধুম বারাবার
    ভুবন মোহন সুর।

একদিন যবে সব থেমে যাবে
    শান্ত এ পৃথিবীটা,
নীরবে গোপনে বিদায় লগনে
     ছেড়ে যেতে হবে ভিটা।

মানুষের সাথে মানবিক পথে
   থাকি যদি কিছুদিন,
হয়তো তখনি শোধ হতে পারে
   জমে থাকা কিছু ঋণ।
            :::-:::

Wednesday, July 24, 2024

স্টেশন কিন্তু গাড়ী থামেনা -- দিলীপ ঘোষ

স্টেশন কিন্তু গাড়ী থামেনা
দিলীপ ঘোষ
২৩/০৭/২৪
ঘড়িতে ন'বার ঘন্টা বাজলো
এখন অন্ধকার
শেষ ট্রেন চলে যাওয়া স্টেশনের মতো
পরাজিত প্যাসেঞ্জার
পা দুটো টলে, বুকে ভারী পাথর
বাঁকা সিড়িতে দাঁড়িয়ে সন্ধ্যার নদী
অপেক্ষামান যাত্রী ফুটো নৌকায় চেপে
করছে পারাপার

পান থেকে চুন না-খসা আবেগ
উল্টোডাঙ্গায় মেট্রোতে চেপে
কাট পুড়ানোর দেশে পৌঁছায়
ব্যর্থতার আঙ্গুল দিয়ে ভিজে কাট কুড়ায়
আসে-যায় পরীযায়ী প্লাটফর্মে,
            সময় কাটায় ছায়াহীন গাছতলায়

সময় চলে যায়, আবেগ প্রাণ হারায়
গন্তব্য কপাল ঠোকে,
              প্ল্যাটফর্মহীন কোন জায়গায়।

Tuesday, July 23, 2024

রক্তেই যদি রাজপথ ভেসে যায় -- নিখিলেশ চক্রবর্তী

 রক্তেই যদি রাজপথ ভেসে যায়
 নিখিলেশ চক্রবর্তী 
 22/07/2024
 রক্তেই  যদি  রাজপথ ভেসে যায় ,
মায়ের কান্না ভেসে যায় বাতাসেতে ,
অধিকার চাওয়া হয় যদি  অন্যায়  ,
সুবিচার জেনো আসবেই আদালতে।

 মনে রেখো শুধু মিছিলের জয় হয় ,
হেরে যায় জেনো গোলা গুলি বেয়নেটে;
সময়ই  পেয়েছে  আন্দোলনের ভয় ,
শুনি জয়গান সীমানায় খেতে খেতে। 

 স্বাধীনতা শুধু স্বাধীনতা জেনো নয় ,
লড়াইয়ের পথে কথা কয় স্বাধীনতা  ;
নেমে থাকো পথে পথই আনবে জয় ,
মাভৈঃ দেশের দাবীর মেধাবী কথা। 

 রক্তেই যদি রাজপথ ভেসে যায় ,
মৃত্যুই  হয়  জীবনের  পরিণতি ;
দাফনের মাটি ঢেকে যায় কান্নায়,
শোণিতেই লেখা থাকবে শহীদ ইতি।
                 

এ কেমন বরষা -- মহাদেব চট্টোপাধ্যায়।

 এ কেমন বরষা
  মহাদেব চট্টোপাধ্যায়
 ২০/৭/২৪
 আসিল বরষা এ মনে সহসা
উথাল-পাথাল ওঠে ঢেউ ,
উন্মনা মন ওড়ে বনবন 
আমার পাশেতে নেই কেউ |

আশা গেছে খসে একাকিনী বসে
মনের তরণী যাই বেয়ে ,
কামনার কূলে মন ওঠে দুলে
হাজার চিন্তা আসে ধেয়ে |

দিবস রজনী শুধু কাল গুনি
কান পেতে রই আমি একা ,
হৃদয় বীণায় আছি  সাধনায়
কোথায় কখন পাবো দেখা |

দেখিবার তরে আঁখিজল ঝরে
মুষলধারায় শুধু নামে ,
ভিজিল অঙ্গ প্রেমেতে ভঙ্গ 
ওগো প্রিয়া ,আছো কোন্ ধামে ?

বিরহের  ঘরে বিচ্ছেদ মরে
চিরকাল জানি জ্বলে ,
মিলন আশাতে নয়ন জলেতে
প্রেমের অশ্রু শুধু টলে |

গুরু বন্দনা -- তরুণ কুমার ভট্টাচার্য

গুরু বন্দনা
তরুণ কুমার ভট্টাচার্য
মাঝ রাস্তায় পথ আটকে
হাস্য মুখে দাঁড়িয়ে
অলক্ষ্যে টান ডাকছে কাছে
চরণ কমল বাড়িয়ে  ।

এত দিনের চেনা পথে
ওনার দেখা পাইনি
মনের থেকে তেমন ক'রে
হয়তো আমি চাইনি  ।

আমার চাওয়া ওনার চাওয়া
যখনই হয় শুরু
তখন থেকেই উনি হলেন
আমার পরম গুরু  ।

আমার হৃদয় মন্দিরেতে
ওনার মূরতি রাজে
সুখে দুখে পথের দিশা
সদাই কানে বাজে  ।

গুরুদেবই হাতটি ধ'রে
সাথে নিয়ে যাবেন
গুরু গ্রহণ করুন বন্ধু
অসীম শান্তি পাবেন  জজ ডডড

রাহুলের জীবন স্বপ্ন -- উত্তম গোস্বামী

রাহুলের জীবন স্বপ্ন
উত্তম গোস্বামী
২১/০৭/২০২৪
চাঁইপাটের  এক ছোট্ট ছেলের 
গল্প বলি শোনো 
মানবসেবী সেই ছেলেটির
নাম কি তোমরা জানো? 

কত অসহায় মুমূর্ষুদের 
কাঁদছে যখন প্রাণ 
এগিয়ে আসেন সেই ছেলেটি 
রাহুল মাজী নাম।

সেই ছেলেটির ছোটবেলায় 
স্বপ্ন ছিল মনে 
করবে সেবা দিন-দরিদ্র
গরিব আর্তজনে।

সেই ছেলেটি বিদ্যালয়ে 
আঁকতো জীবন ছবি 
মানব সেবাই পরমব্রত 
জীবনেতে ছিল হবি।

স্যার বলতেন,'রাহুল তুমি 
 অনেক বড় হবে 
তোমার কথা চিরজীবন 
মোদের মনে রবে।'

বাবা-মা তার মানব দরদী
 পরম নিষ্ঠাবান 
বাবা মায়ের মতো ছেলের ঢ়
হৃদয়  শ্রদ্ধা বান।

কত কষ্ট সংগ্রামে আজ 
জ্বলছে জয়ের বাতি 
আঁধার রাতে আলোর পথে 
পেয়েছে জীবন সাথী।

স্বপ্ন আঁকা জীবন পথে 
ছেলের জয় গান
হৃদয় পাতায় থাকবে লেখা 
রাহুল মাজী নাম।

Monday, July 22, 2024

হ য ব র ল -- সমর কুমার বোস

  হযবরল 
  সমর কুমার বোস 
  ২০/০৭/২০২৪
  অসীম শূণ্য গহ্বরে অতি ভঙ্গুর সোপান,
  বৈরাগ্যের ছত্রছায়ায় বিষন্নতার চাপান।
  বাঁধনহারা নজরকাড়া পরশ উচ্ছলতার,
  পাগলপারা ছন্নছাড়া নীরস প্রগল্ভতার।
  সুরার নেশা বেহাল দশা পিঞ্জরেতে বন্দী,
  বিহ্বলতার রুদ্ধ দুয়ার মনে আঁটে ফন্দি।
  স্বর্ণ হরিণ বর্ণ মলিন নীরব কাতর দৃষ্টি,
  মেঘের বাঁধন মন উচাটন অপরূপ সৃষ্টি।
  অস্থিরতার ঘোর প্যাঁচ জীবন যুদ্ধে রত,
  মন ফাগুন উদাস স্বপন ভাসে কতশত।
  বিলাসিতার বৈভবতার সাঙ্গ হল খেলা,
  তাচ্ছিল্যের আবহে স্বৈরাচারী অবহেলা।
  মরণ ভয় কন্টকময় পথ সুনসান ফাঁকা,
  যদি পৌছায় তবে ওড়ায় বিজয় পতাকা।

বৃষ্টি- সৃষ্টি -- সুভাষচন্দ্র ঘোষ

 বৃষ্টি -সৃষ্টি
 সুভাষচন্দ্র ঘোষ 
  ২০/০৭/২০২৪
     শ্রাবণ বেলায়
     মেঘের ভেলায়
     মনকে দোলায়
     বৃষ্টি।
     টাপুর টুপুর
     সকাল দুপুর
     বাজে নূপুর
      মিষ্টি।।
     পুকুর পাড়ে
     নদীর ধারে
     বাঁশের ঝাড়ে
      বৃষ্টি ।
     জল থৈথৈ
     মাগুর কৈ
     কি হৈচৈ
     অনাসৃষ্টি।।
     কচুর পাতায়
     ব্যাঙের মাথায়
     গাছের ছাতায়
      বৃষ্টি।
     চাষী মাঠে
     ধানে পাটে
     দারুন খাটে
     কৃষ্টি।।
     বেলী ফুটে
      জুঁই জুটে
      গন্ধ লুটে
      বৃষ্টি।
     কোথায় রবি
      ভাবে কবি
      নূতন ছবি
       সৃষ্টি।।

  

Saturday, July 20, 2024

ভাগ্যহীন -- অরবিন্দ সরাক

 ভাগ্যহীন 
 অরবিন্দ সরাক 
১৯/০৭/২০২৪
আমি যদি মুক্ত পাখি হতাম তবে
বহুদূরে নীল আকাশে,
উড়ে যেতাম সেথায় খুবই জোরে    
সুন্দর স্নিগ্ধ বাতাসে।

আমি বাস করি বদ্ধ খাঁচার মধ্যে
যেখানে দরজা বন্ধ,
প্রবেশ করে না যেখানে কোনদিন
সুন্দর ফুলের গন্ধ।

মৃত লাশের মতো পড়ে আছি সেথা
স্বাধীনতা কোন নেই,
সেথা থেকে কোন আলোর ঠিকানা
দেখতে পাবেনা কেউ।

আমার মতো হতভাগার খবর কেউ
জানবেই না কোনদিন,
এই সব কারণেই নিজেকে মনে হয়
ভীষণ রকয় ভাগ্যহীন।

উপলব্ধি -- গৌতম কুমার চক্রবর্তী

 উপলব্ধি 
গৌতম কুমার চক্রবর্তী 
 ১৯.০৭.২০২৪
প্রেম ছাড়া কোনো ভাবেই জীবন চলেনা 
তাই প্রতিদিন প্রকৃতির প্রেমে পড়ি ...
রূপ রস আর গন্ধে প্রকৃতির ভালোবাসা 
আমার মন ভরিয়ে দেয় ! 
প্রেম ছাড়া কোনো ভাবেই বাঁচতে পারিনা 
তাই নিয়ম করে পশু পাখির প্রেমে পড়ি ...
ওদের প্রেমে কোনো শর্ত বা স্বার্থ নেই 
আছে শুধু অফুরান ভালোবাসা !
মানুষের প্রেমে পড়ে দেখেছি ...
শর্ত আর স্বার্থ ছাড়া ভালোবাসা হয়না !
মানুষকে ভালোবেসে পাহাড় প্রমাণ 
দুঃখ উপহার পেয়েছি ...
যা আজও মনে পড়লে শিউরে উঠি !
যখন প্রতি রাতে অব্যক্ত যন্ত্রণা 
অনুভব করি তখন সাহিত্যের প্রেমে পড়ে 
জীবনবোধ শিখতে থাকি ...
মন খারাপে একাকিত্ব ভুলে থাকতে 
সঙ্গীতের প্রেমে পড়ি ...
সুরের মূর্ছনায় মনের মাঝে 
শান্তির রসদ খুঁজে পাই ! 
এভাবেই বারবার প্রেমের আবর্তে 
ঘুরতে ঘুরতে বিজ্ঞানের প্রেমে পড়ে 
জানতে পারি বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডের রহস্য !
তবু আজও  স্বপ্নের ঘোরে 
কোনো এক মায়াবী আলোয় ... 
এক নারীর প্রেমে মন আকুল হয়ে পড়ে !
আজও বুঝিনা তার রহস্য ...
অনুভূতির ছোঁয়ায় খুঁজে পাই তারে 
শুধুই  অনুভবে ... 
বারেবারে অনুভবে কাছে পাই তারে ... 

আরশি -- দেবাশীষ চ্যাটার্জী

 আরশি  
 দেবাশিষ চ্যাটার্জী 
19/07/2024 
আয়নায় গিয়ে মুখ দেখি যখন
চোখের কোনেতে জল
চাপা হাসি হেসে দর্পণ বলে
ভালবাসা বিষ ফল ।

এক মনে একা বেঁধে ছিলি বাসা
বুক ভরা ছিল সুখ
এখন আয়না প্রতিচ্ছবি  দেয়
পাশাপাশি দুটি মুখ ।

প্রেমের আড়ালে ছলনা মিশিয়ে
ভালোবাসায় দিলি ধোঁকা
নিজেকে চালাকের আকাশে উড়িয়ে
আমায় সাজালি বোকা ।

সহজ মানেই বোকা তারা নয় 
এমন ভাবনা মিছে
ছলনার মন ভাবে অনুক্ষণ
আরো বেশী পাওয়ার আছে ।

জানিনা এখন কেমন আছিস
নূতন কে ভালবেসে
যদি কোনোদিন আর দেখা হয় 
লজ্জা ঢাকবি কিসে ?

আয়নায় আমি মুখ দেখিনা
ভুলে থাকি প্রেম আদর
কাঁচের টুকরো ভাঙা দর্পণ
চিরে দেয় বুক পাঁজর।

বলেছিলি ভালো সদাই থাকবি
মিটে যাবে যতো আশা 
তবে কেনো আজ ভাঙ্গা মন তোর 
কেনো এই দুর্দশা ?

Friday, July 19, 2024

সুধায় মগন বিশ্বজগৎ -- অরুণ কুমার মহাপাত্র

সুধায় মগন বিশ্বজগৎ 
অরুণ কুমার মহাপাত্র 
১৭/০৭/২০২৪
ঝুম বেদনায় নদীর ধরে
হাঁটছি আমি একা একা 
আড়বাতাসে দোল খাওয়া
গাছগুলো সব যাচ্ছে দেখা 

পাতাগুলো সব জানে না তো 
মনপাখিটার বিষাদ খবর 
মনের মাঝে তাই জেগে রয় 
মন বিলাসের ভাবনা ডোর 

গাছে গাছে পাতার শীষ আর 
পোয়াতি নদীর ছলাৎ শব্দ 
মন কুঠুরির ঐ হাজার কথা 
নাচছে তুলে‌ কত না ছন্দ

পাকুড়তলে বসে যেন আমার
বোধি লাভের তপস্যা 
মন কুঠুরির খুলতে তালা প্রভু
হয় না যেন সমস্যা 

জলে বনে পর্বতে দেখছি আমি
ভাস্কর্য যেন পরত পরত 
সবটুকু যেন আজ উজা়ড় করে
সুধায় মগন বিশ্বজগত ।

কাজ করে দেখাতে হবে -- চন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়

  কাজ করে দেখাতে হবে
  চন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়
  ১৭/০৭/২৪
রবীন্দ্রনাথ বলতেন শুধু কলম ধরে, ভাষণ মেরে
টাকা-পয়সা দান করে , সমাজের উপকার হয় না,
মানুষের কাছে যেতে হয় , তাদের ব্যথা বুঝতে হয়
তাদের জাগ্রত করে কাজ করার চাই পরিকল্পনা।

মানুষের মধ্যে যে শক্তি লুকিয়ে আছে, তার বিকাশে
বাইরের বৃহৎ শক্তির কাছে তাকে তুলে ধরতে পারলে
ক্ষুদ্র মনুষ্য শক্তির বৃহৎ রূপ আমরা দেখব অপরূপে
তাই কাজ করে দেখাতে হবে সমাজের উন্নতি চাইলে।

বিবেকানন্দেরও তো সেই একই কথা , চাই প্রগতি
প্রগতি হল বাইরের ও ভিতরে, উভয়ের মিলনের
এক সুন্দর শক্তির বিকাশ যার ফলে উন্নতির প্রকাশ
পরিবার - সমাজ - দেশ - জাতির পথ উত্তরণের ।

কিন্তু এখন মানুষের পাশে কত জনা মানুষ আছে
মানুষ রয়েছে অনেক দূরে প্রকৃত মানুষের কাছ থেকে
দেহ মন সব যেন ধীরে ধীরে কোথায় যাচ্ছে সরে
রয়েছে সুন্দর মুখোশ পরে শুধু কৃত্তিমতায় ঢেকে!

অনেকের প্রশ্ন - কাজ কোথায়, কাজ করতে বলছো যে হায়
যদি কাজ করতে এগিয়ে যাই, কেউ সহযোগিতা করে না।
আগে ঘরের কাজ করে দেখাও , তবে তো বাইরে যাও
নিজের ঘর সামলাতে না পারলে অন্যেরা কেউ শুনবে না।

Thursday, July 18, 2024

আশার আলিঙ্গন -- শুভায়ন দে

আশার আলিঙ্গন
শুভায়ন দে
16/07/2024
অন্ধকার যখন ঢেকে ফেলে বাইরের পৃথিবী,
এবং ভয় চুপিসারে এগিয়ে যায়,
যখন সন্দেহ আক্রমণ করে এবং হৃদয় দুর্বল অনুভব করে,
এবং অশ্রু শরতের চিৎকারের মতো পড়ে,
তারপর আশা কোমল করুণার সাথে পা দেয়,
অন্ধকার জায়গায় একটি বাতিঘর,
একটি উষ্ণ আলিঙ্গন যা ভয়কে তাড়া করে,
এবং অস্থির কানের কাছে ফিসফিস করে শান্তি।
প্রতি নিঃশ্বাসে আশার শিখা জ্বলে জ্বলে,
জীবনের উত্তাল রাতের মধ্য দিয়ে একটি পথনির্দেশক আলো,
একটি অনুস্মারক যে ভোর আসবে,
আর অন্ধকার কেটে যাবে।

অতুলনীয় -- সুমন

অতুলনীয়া
সুমন
১৬.০৭.২০২৪
আমার দেখা সেরা মিথ্যুক
আমার ঘরের মা,
জীবনে কখনো একটি কথাও 
সত্য বলেন না।
গর্ভে ছটফট করলে সন্তান
মাতৃ গর্বে বাঁচেন,
তীব্র প্রসব যন্ত্রণায় কাতরেও
তৃপ্তির হাসি হাসেন।
সকলের আগে বিছানা ছেড়ে
সবার শেষে ঘুমান,
স্বামী, সন্তানদের খাওয়া হলে
রোজ আধপেটা খান।
স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি বকলেও
বলেন, ভালো আছি,
হাজার অভাব সমস্যা সামলান
আমরা আদরে বাঁচি।
স্বামী, সন্তানের অসুস্থতা আনে
মায়ের চোখে জল,
সেবায়, যত্নে সারান নিজহাতে
পাশে থেকে অবিচল।
পুত্রবধূর কটুকথা, কটুক্তি শুনে
জানান, বৌমা ভালো,
ছেলেটা আমার দুনিয়ার সেরা
ঘর, সংসারের আলো।
বৃদ্ধাশ্রমে সন্তান রাখলে তাঁকে
বলেন, ভালো থাকিস,
সন্তানের কল্যাণে মশগুল সদা
দু'হাতে করেন আশীষ।
তাইতো সেরার সেরা মিথ্যাবাদী
জগৎ জননী মা,
দশহরা, দশভূজা আমার মায়ের
নেই যে তুলনা।

Wednesday, July 17, 2024

মনোরমা বসুন্ধরা -- নিবারণ চন্দ্র দাস

মনোরমা বসুন্ধরা
নিবারণ চন্দ্র দাস 
১৪/০৫/২০২৪
এমন একটা জগৎ গড়ি
   হিংসা বিবাদ হীন,
এমন একটা ধরিত্রী মা
   উন্নত দিন দিন।

হোক না এমন জীবন যাপন
   নয়কো বিসম্বাদ,
করবে না কেউ ইচ্ছে মতন
   জীবনটা বরবাদ।

এমন একটা উঠুক না ঝড়
   বিশ্বজগৎ ময়,
মন্দ সকল ধুয়ে মুছে
   পবিত্র সঞ্চয়।

একটা এমন প্রদোষকাল
   সঞ্জীবনী ভরা,
সুসজ্জিত শ্যামলিমায়
    আবার বসুন্ধরা।

লহর আসুক এমন একটা
    নিমজ্জিত গ্লানি,
আবার "মানুষ" হোক না মানুষ
    কিই বা এমন হানি।

হয়তো এমন একটা দিন
   সবার হাতে কাজ,
আসছে হয়তো সেই সুদিন
    ভুলেই লজ্জা লাজ।
            

নীরব ব্যথা -- অমিত চরণ রায়

  নীরব ব্যথা 
  অমিত চরণ রায় 
  ১৪/০৭/২০২৪
নিত্য পণ্যের বাজারে 
দরদামে লেগেছে আগুন। 
একশ টাকা ছাড়ালো 
পেঁয়াজ আর বেগুন। 

তিনশ টাকার কাছাকাছি 
আদা আর রসুন। 
ভেজালের ভারে কমছে 
তরিতরকারি  সঠিক গুনাগুন। 

পঞ্চাশ টাকার উপরে 
বিক্রি হচ্ছে ঝিঙা, ধুন্দল, 
ঢেড়শ, চিচিঙ্গা, পটল, 
কচু, আর  কাকরোল। 

মধ্যবিত্তরা সংসার চালাতে 
খাচ্ছে ভীষণ হিমশিম। 
এর মাঝে বাড়তি দামে 
বিক্রি হচ্ছে আলু আর ডিম। 

হাতের নাগালের বাইরে 
মাছ মাংসের বাজার। 
আহারের তালিকা থেকে 
করেছে তাই পরিহার। 

চালের বাজার অস্থির সবখানে 
ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের হাত।
কষ্ট হয়ে যাচ্ছে জোগাড় 
করতে দুবেলা দুমুঠো ভাত। 

শুনতে চাই না কেউ 
আজ কষ্টের কথা। 
মধ্যবিত্ত পরিবারের মধ্যে 
বয়ে যাচ্ছে  নীরব ব্যথা।

বুজরুকি -- দিলীপ ঘোষ

বুজরুকি
দিলীপ ঘোষ
১৫/০৭/২৪
অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কারকে পুঁজি করে
ভেকধারী ফেকুবাবারা চালাচ্ছে বুজরুকি
রাজনীতির সাথে স্ট্রাটেজিক বোঝাপড়ার দৌলতে
বাবারা হয়ে উঠছে বিলিয়ন ডলারের অধিপতি

সম্প্রতি ঘটে গেলো বড়সড় এক বুজরুকি
বাবার পদরেণু পেতে গিয়ে
পদপিষ্ট হয়ে মারা গেলো শতাধিক নর-নারী

পুণ্য আকুল উন্মত্ত পায়ের তলায়
লাশ হয়ে গেলো একশো একুশটা মানব দেহ
পড়ে থাকলো চটি, জুতো, পুঁতির মালা, ভাঙা চুড়ি
বেশিরভাগ মহিলা, শিশু, বয়স্ক কেহ কেহ

বাবাজির চরণ স্পর্শ করলে অসুখ ভালো হয়,
মেলে চাকরি
হ্যান্ড পাম্প থেকে বের হয় সর্বরোগ হয়,- অমৃতবারি
এক চুমুকে শরীর মনের সব কষ্ট যন্ত্রণা
দূর হয়ে যায়
যত রোগর বালাই বলে পালাই পালাই
ওঃ, কি সাংঘাতিক বুজরুকি

বুজরুকির অসংখ্য রকমের ফন্দি-ফিকির
ভন্ড বিরিঞ্চিবাবা চড়েন বিলিতি গাড়ি
ক্যাশ করেন অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার আর গরিবি
পদপিষ্ট হয়ে মারা গেলে বলেন, --
ওপরের ডাক এসেছে তাই গেলো চলি
ওঃ, কি সাংঘাতিক বুজরুকি

ওপরওলার নাম করে, বিভিন্ন ধরনের মরণফাঁদ
চলছে দিনের পর দিন
অসংখ্য মানুষ হচ্ছে নিঃস্ব, রিক্ত, মৃত
বাবাজিদের মিলছে সুদিন।

Monday, July 15, 2024

একলা আছি বেশ -- শেখ সাখাওয়াত আলী

একলা আছি বেশ
শেখ শাখাওয়াত আলী
15/07//2024
ভালোবাসা চাইনা তো আর
একলা আছি বেশ,
ভালোবাসা বিষিয়ে গেছে
মনের পরিবেশ।

সকাল হলে যারে আমি
নিতাম খবর রোজ,
এখন তো আর হয়না নিতে
তার কোনো খোঁজ,
সে আমায় ভুলে গেছে চলে
সুদুর আরব দেশ।
ভালোবাসা বিষিয়ে গেছে
মনের পরিবেশ।

কাজের মাঝে হারিয়ে আছি
বেশতো কাটে দিন,
কারও কাছে নেইতো আমার
ভালোবাসার ঋণ,
সে নিজের হাতে করে গেছে 
ভালোবাসার শেষ।
ভালোবাসা বিষিয়ে গেছে
মনের পরিবেশ।

রাতের বেলায় মনটা জ্বালায়
হারায় চোখের ঘুম,
এলোমেলো ওই স্মৃতি গুলো
তাড়ায় খুশির ধুম,
সে  চলে গেছে সুদুর দেশে ,
রেখে প্রেমের রেষ ।
ভালোবাসা বিষিয়ে গেছে 
মনের পরিবেশ।

স্বস্তি -- বরুন কুমার বিশ্বাস


 স্বস্তি
 বরুন কুমার বিশ্বাস
গাঙের জলে গান ধরেছে
কোলা ব্যাঙের ছানা,
শিঙি মাগুর শিং উঁচিয়ে
করলো তারে মানা।

কাতলা এসে কানটি মূলে
যেই ধরেছে টুঁটি,
চিত সাঁতারে চিতল এসে
করে হেসে লুটোপুটি।

একখানা বক একা সেথায়
দাঁড়িয়েছিল ধারে,
ব্যাক ভলিতে ব্যাঙের ঠ্যাঙে
ল্যাং মারলো জোরে।

কোলার মামা কোথা থেকে
লাফিয়ে এসে বলে,
বড্ড বেজায় বাড় বেড়েছ
যত বখাটে ছেলেপুলে।

সাধছে গলা সাধের ভাগ্নে
না-হয় একটু জোরে,
রাজার প্রিয় রাজকন্যা নিজে
করেছে বিয়ে তারে।

খবর পাঠায় খাস পেয়াদা
নিমেষে রাজার কাছে,
মাগুর মাছে মেরেছে ল্যাং
চ্যাং মেরেছে পিছে।

রেগে আগুন রাজ মহিষী 
রাজাকে বলল হেঁকে,
তুমি দেখ তোমার জামাইকেই
মেরেছে চাটি লোকে।

রাজার গিন্নি রাগের বশে
চলল বাপের বাড়ি,
মন্ত্রী ধরাল মহিষীর হাতে
মিষ্টি দইয়ের হাঁড়ি।

রাজা এলো রাগ থামাতে
এমন খবর শুনে,
রাজার কোলে রানী লজ্জায়
ঘোমটা দিল টেনে।

এবার সমুদ্র হও তুমি -- অরুন কুমার মহাপাত্র।

এবার সমুদ্র হও তুমি
অরুণ কুমার মহাপাত্র
 ১৫/০৭/২০২৪
দুম করে এসে গেল বৃষ্টিটা
বৃষ্টির প্রথম ফোঁটায় শরীর জুড়ে
শিহরণ...
চঞ্চল শিরা ধমনী
কেঁপে উঠলো দেহতন্ত্রী
পেশিতে ঝলসে ওঠে বিদ্যুৎ
নাভিমূল বেয়ে নেমে আসে
চোরা স্রোত.....
আঃ !! তীব্র এক শরীরী উন্মাদনা !
বৃষ্টির শৃঙ্গার শেষ ।
সিক্ত বসন ভেদ করে সুঠাম
তনু প্রকট ।
টানটান যৌবনে মাদক আকর্ষণ ।
শিল্পীর তুলিতে টানা মোহময়
অবয়ব ।
হ্যাঁ , নীরা টেনে নিয়ে গেল আমায়
তার বালিকা বেলায়....
আমার শরীর জুড়ে মাতনের
দ্রিমি দ্রিমি....
আদিম সৌরভে কাঁপে ঝাউবন ।
রীনা ফিসফিস করে বলে বন্ধু
এবার সমুদ্র হও তুমি...
এখন দু'জন জ্যোৎস্না মেখে জ্যোৎস্না
হয়ে পাশাপাশি শুয়ে.... ।


Saturday, July 13, 2024

আমার বাড়ি -- বনানী সাহা

আমার বাড়ি
বনানী সাহা 
২১ -০৫ -২০২৫
 আমার বাড়ি, আমার ঘর--
এই সারা, বিশ্ব চরাচর।
এই সারা পৃথিবী আমার,--
বাসস্থান আমার ।
সর্বত্র আমার মনের ভাবনার বিচরণ!
আমি চাই না, কোনো নির্দিষ্ট --
ছোট্ট একটা ঠিকানা ।
যেখানে, সারা পৃথিবী আমার ঠিকানা !
সবাই আমার আপনজন।

থাকতে চাই না আমি ,ক্ষুদ্র মন--
নিয়ে; দুনিয়াতে এসেছি যখন ।
আমার ভাবনা, নয়তো গোনা কয়েকজন ।
সবাই যখন আমার আপনজন --
কাকে ছাড়ি, কাকে রাখি !
ক্ষুদ্র সীমা দিয়ে, কেন নিজেকে মাপি !
এই হাওয়া, এই আলো যেমন --
মানে না, কোনো বাধা --
সর্বত্র তার বিচরণ !
আমি ও হব তেমন, ঠিক তেমন ।
সবার আমি হব আপনজন ।

নাই বা কেউ, ডাকলে  আমায়।
নাই বা কেউ ,রাখলে আমায়।
আমি সদা হাসি মুখে, যাবো সবার কাছে ।
আমার যা কিছু  আছে --
 সেই ছোট্ট কিছু ,নিজের করে --
কেন আগলে রাখি!
নিজের বলে দুনিয়াতে, যখন কিছুই না!
তখন, কেন শুধু শুধু --
আগলে রাখি যক্ষের ধন্ !
সারাক্ষণ তারই চিন্তন --,
করে কেন মরি !
বরং সারা বিশ্বটাকে আপন করে --
দুহাতে হৃদয়ে ভরি।

প্রেম -- নিবারণ চন্দ্র দাস

প্রেম
নিবারণ চন্দ্র দাস
১২/০৭/২০২৪
কবিতা লিখতে চাইনি কোনদিন,
প্রতিবাদী হয়ে রই বাড়াই না ঋণ।
পথের 'পরে মানুষের বাস দেখি,
তোমাদের গণদেবতা-প্রেম বুঝি,মেকি।

খনিতে শ্রমিক নিরাপত্তাহীন,
ক্রোধ জমা করে লিখে রাখি প্রতিদিন।
কবিতার আমি নইতো প্রেমিক মোটে,
প্রতিবাদগুলো কবিতা হয়েই ফোটে।

যখন তোমার লুটপাট বল্গাহীন,
ক্ষেপে উঠে লিখি সেই কথা প্রতিদিন।
সবাই সেগুলো কবিতা হিসেবে পড়ে,
আসন তোমার হয়ে যায় নড়বড়ে।

দান ধ্যান আর খেলা মেলা উৎসব,
চাপা পড়ে যায় প্রতিবাদীদের রব।
তখনই ঝলসে মোর মসি-তরবারি,
লিখে রেখে যাই কিছু কথা দরকারি।

ভূমিহীন যত মুটে মজুরের দল,
আমায় লিখিয়ে নয়,দেয় মনোবল।
ওদের মাঝেই খুঁজে ফিরি আপনায়,
লিখে রাখি যেথা ঘটে যত মাৎস্যন্যায়।

তোমরা যখন যুদ্ধ যুদ্ধ খেলো,
কান্না-ধ্বংস,চারিদিক এলোমেলো।
তখন আমার লেখনীটা কথা বলে,
উগরায় ক্ষোভ কবিতা লেখার ছলে।

কবিতা প্রেমিক হতে চাই একদিন,
শোধ করে দিতে জমে থাকা কিছু ঋণ।
তোমরা আমায় বলো না কো কভু কবি,
এঁকে রেখে যাই অত্যাচারের নির্মম জলছবি।
                      
আসবে সেদিন,তোমারও বিচার হবে,
নিথর পাষাণ ন্যায়ের নিয়ম ক'বে।
দেখে নিও তুমি তোমার এই অনাচার,
পাবেনা রেহাই,হবেই হবে বিচার।
                   

তোমাকে নতুন করে পাই -- শেখ শাখাওয়াত আলী

তোমাকে নতুন করে পাই
শেখ শাখাওয়াত আলী
12/07/2024
পাহাড়ের বুক থেকে কিছু ফুল এনে আমি
তোমাকে দিলাম,
ফুল তুমি ভালোবাসো তাই,
সাগরের বুক থেকে কিছু নীল এনে আমি 
তোমাকে দিলাম,
নীল তুমি ভালোবাসো তাই।

পাখিরা আকাশের বুকে গান গেয়ে যায়,
ফুলেরা বাতাসের বুকে সুরভী ছড়ায়, 
কত চেনা জানার ভিড়ে,
আসি আবার ঘুরে ফিরে,
তোমাকে হারিয়ে আবার নতুন করে 
মনের মাঝারে  ফিরে পাই।

ভূবনের এলো মেলো কত পথ চলার শেষে
জীবনের স্মৃতিগলো বারেবারে ফিরে আসে,
আশা নিরাশার দোলায়
মন দোলে প্রাণ দোলায়,
তোমাকে জড়িয়ে আবার নতুন করে
 সুখের  সাগরে ভেসে যাই।

এই কুলে আমি , ওই কুলে তুমি -- উত্তম গোস্বামী

এই কুলে আমি,ওই কুলে তুমি
উত্তম গোস্বামী 
১২/০৭/২০২৪
নদীর দুপারে প্রেমিক-প্রেমিকা 
তাকিয়ে দুকুল পানে 
দুজনাতে হবে কখন দেখা 
ভালোবাসা খুঁজে মানে। 

এ কুলে সাগর ও কুলে কুসুম 
মাঝখানে ছোট নদী 
দুজনেতে যেত ছুটে ছুটে কাছে
পেতো এক সেতু যদি।

এপারে সাগর ওপারে কুসুম 
চেয়ে আছে দুই গ্রাম
 সবুজে ঘেরা গাঁ দুটি আজো 
দেখায় স্বর্গধাম। 

জানাজানি হতেই প্রেমের খবর 
কুসুম হয় গৃহবন্দী 
মা-বাবা যখন থাকে না বাড়িতে 
মনে ভাঁজে কত ফন্দি।

বাবা বলে রেগে গরিব সাগরে 
তুমি ভালো আর বাসবে না 
তোমার জন্য দেখেছি ছেলে 
মেলামেশা আর করবে না। 

পাঁচ দিন হলো বাড়ি থেকে কুসুম
আসেনা বাহিরে আর 
 নদী ঘাটে সাগর প্রতিদিন আসে
দেখিতে মুখখানা তার। 

সানাই বাজিছে ওপারে কুসুমের
কাল হবে বিয়ে বাড়ি 
 বুকখানা ফাটে সাগরের আজ
হাতে বেনারসি শাড়ি। 

গভীর রাতে দুজনে আসে 
 দুই পাড়ে নদী ঘাটে 
নিরব নিথর দুজনের দেহ 
পড়ে আছে দুই ঘাটে। 

চিঠিতে লেখা দুজনেরই বুকে 
"ভালোবাসা চির অমর,
পর জনমে তুমি হবে ফুল 
আমি হব তব ভ্রমর।"

থেমে গেল সানাই নহবৎ সুর 
নদী তীরে শেষ দেখা 
"এই কুলে আমি,ওই কুলে তুমি 
ভালোবাসা হৃদে লেখা।"

Friday, July 12, 2024

তাতিনী -- গৌতম তরফদার

 তাতিনী 
 গৌ ত ম  ত র ফ দা র 
 ১০.০৭.২০২৪
            দীর্ঘ চব্বিশ বছর পরে নিজের জন্মভূমি মালদা জেলার অজ পাড়াগাঁ কান্তিপুরে এসে পৌঁছাল ছেচল্লিশ বছরের বিপত্নীক হরিনীল বর্ধন। সন্ধ্যার ঠিক আগে আগে সারাদিনে একবার চলা রেলগাড়ির শেষ বগি থেকে কান্তিপুর স্টেশনে নামতেই যেন ঘন অন্ধকার তার দিকে ধেয়ে এল। সদ্য বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যা যেন আঁধার রাতের নিমন্ত্রণ নিয়ে হাজির। রাস্তাঘাট আজও কোথাও এবড়োখেবড়ো, কোথাও বেশি বেশি গর্ত, বিদ্যুতের খুঁটি উপস্থিতির জানান দিলেও সারাদিনে বিদ্যুৎ দু'ঘন্টাও থাকে না। ছেড়ে যাওয়া গ্রামের আনাচেকানাচে কোথাও উন্নতিলাভের চিহ্ন নেই। গ্রামের বনেদি বাড়ির দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা সাধাসিধে বিচিত্র বিশ্বাস ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে ছেলের ঘোড়ার গাড়ি পাঠিয়েছে। বৃষ্টির কারণে গাড়ি চারিদিক ঢাকা। গাড়ির চালক অল্পবয়সী বিচিত্র বিশ্বাসের ছেলে।

        ছেলেটি পটাপট মালিকের দুইটা সুটকেস গাড়িতে তুলে নিতেই ঝমঝমিয়ে আবার বৃষ্টি শুরু হল।
হরিনীল তড়িঘড়ি ঘোড়ার গাড়িতে উঠতেই দেখতে পেল আগে থেকেই পুরোপুরি ঘোমটায় এক মহিলা ঘোড়ার গাড়ির ভেতরে বসে আছে। হাতে একটা ছোটো বোচকা। ছেলেটি চলতে চলতে বলতে থাকলো.....

         --- এই দিদিটাও নাকি আমাদের গ্রামেরই। অনেক বছর আগেই চলে গিয়েছিল। আজ আপনার সাথেই একই ট্রেন থেকে নেমেছে। গ্রামে যাওয়ার গাড়ি নেই, তাই তারে তুলে নিয়েছি।

       --- ঠিকই করেছো

প্রত্যুত্তরে হরিনীল বললো।

       চলতে চলতে হরিনীল মহিলার মুখটা দেখতে চাইলো... কথা বলতে চাইলো.... একই গ্রামের যখন কোনো পরিচিতাও হতে পারে। কিন্তু না, ঘোমটা বা মুখ কোনোটাই খুললো না।

       গ্রামে ঢোকার মুখে বৃষ্টির প্রাবল্য দেখা দিলেও মহিলাটি ঘোড়ার গাড়ি থামিয়ে নীরবে নেমে গেল। আশ্চর্য!  এখানেই তো হরিনীলের স্মৃতিবিজড়িত প্রেমিকা তাতিনী তালুকদারের বাড়ি ছিল। ভালোবাসা... গোপন অভিসার... দুই পরিবারের তীব্র আপত্তি... চুপিসারে লুকিয়ে গ্রামের পশ্চিমে অবস্থিত কালীমন্দিরে গিয়ে মালাবদল...সিঁদুর দান করার পরই তাদের জীবনে সিঁদুরমেঘ দেখা দিয়েছিল।
গ্রাম্য সালিশিতে দু'জনকেই ব্যাপক মারধোর... সেই রাতেই আপন দাদার হাতে তাতিনীর নৃশংসভাবে খুন হওয়া....হরিনীলের কান্তিপুর গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়া কোলকাতার মেসবাড়ি। সেখানেই পড়াশুনো শেষে সরকারি চাকরি পাওয়া... বাড়ি করা....তাতিনীকে ভুলতে না পারা.... পুনর্বার বিয়ে না করায় অনড় থেকেছে।

        বাড়ি দেখভাল করা বিচিত্র বিশ্বাস, তার স্ত্রী ও তাদের ঘোড়া গাড়ি চালানো ছেলে খুব খাতির-যত্ন করে রাতের খাবার খাইয়ে আগে থেকেই পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখা হরিনীলের আপন ঘরেই বিছানা করে দিল রাতের জন্য।

        গভীর রাত পর্যন্ত অস্থিরভাবে পায়চারি করতে লাগলো হরিনীল। এই ঘরেই তো চুপিচুপি তাতিনীকে প্রথমবার নিয়ে এসেছিল বিয়ে করার রাতে। অসমাপ্ত ফুলসজ্জার অতৃপ্ততা আজও কষ্ট দেয় হরিনীলকে।

        বৃষ্টি মুখর গভীর রাতে দু'চোখ বন্ধ করে ঘুমে জড়িয়ে পড়তেই হঠাৎ অস্ফুট আওয়াজে মায়াবী নীলাভ আলো হাতে কে যেন হরিনীলের দিকে এগিয়ে এল। কাছে আসতেই অবাক! আরে!  এ তো ঘোড়ার গাড়িতে বসা সেই নারীর মুর্তি! ঘোমটা সরতেই হরিনীল শিহরিত। একি! এ তো তার তাতিনী! আবছা আবছা হাসিমুখ। হরিনীলের বাস্তবজ্ঞান হারালো.... তাতিনীকে বারবার নাম ধরে ডাকলো.... ছুঁতে চাইলো...হাসি ও কান্নার শব্দ একসাথে এল... নীল আলোটাও নিভে গেল... হরিনীল জ্ঞান হারালো।

      পরদিন সকালে হরিনীল দেরিতে দরজা খুলতেই দেখে বিচিত্র বিশ্বাস ও তার স্ত্রী উদ্বিগ্নচিত্তে তার জন্য অপেক্ষা করছে। সঙ্গে পাড়ার আরও কয়েকজন মহিলাদের জটলা। রাত্রে হরিনীল বারবার তাতিনীর নাম ধরে ডাকছিল আর গোঙাচ্ছিল। আশেপাশের সবাই জানে অতৃপ্ত তাতিনীর আত্মা প্রতি রাত্রেই বর্ধনদের বাড়িময় ঘুরে বেড়ায়। আজ হরিনীলকে কাছে পেয়ে কাছে আসতে চাইছিল, নিজের করে পেতে চাইছিল। কপালজোরে বেঁচে গেছে হরিনীল।

       হরিনীলের আপত্তি স্বত্বেও দুপুরে গ্রামের মাতব্বরদের আয়োজনে গ্রামের পশ্চিমে জাগ্রত কালীমন্দির সংলগ্ন ঘাটে সাধুসন্ন্যাসী ডেকে পুজো ও তাতিনীর পিন্ডিদানের ব্যবস্থা করা হয়।

     লৌকিক বনাম অলৌকিকের বহুযুগের বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের গোলমেলে আচার-আচরণে হরিনীলের দু'চোখ জলে ভরে এল প্রিয়তমা তাতিনীর জন্য। ঈশ্বরের কাছে ওর চিরশান্তি কামনা করলো।


এসো ভালোবাসার কাছে যাই -- অরুণ কুমার মহাপাত্র

এসো ভালোবাসার কাছে যাই
অরুণ কুমার মহাপাত্র
তাং - ১০/০৭/২০২৪
চল যাই , এবার ফুলেরা অবগুণ্ঠন 
খুলবে...
চল যাই দূর থেকে দেখবো ফুলেদের
পাপড়ি মেলা...
দেখছো না , এক রত্তি আলো ছুটছে
গোপন উপত্যকায়...
লাজবতীদের সংকোচের ঘুম এই
ভাঙলো বলে...
সহস্রাব্দের সব লজ্জা ধুয়ে মুছে এরা
এবার আলোয় হাসবে...
এসো , উপলব্ধির চেতনায় সৃষ্টির
আনন্দে ভাসি আমরা এবার...
এসো ফুলেদের সাথে আমরাও গাই
জীবনের জয়গান... ।
এসো আমরা আমাদের আবেগ , 
আকাংখা জাগাই চিরকল্যানময়
অখন্ড চেতনায়...
এসো হৃদয় মন্দিরে করি নিয়ত
স্তোত্রপাঠ...
এসো মৃতকল্প জীবন ছেড়ে আমরা
সবাই ভালোবাসার কাছে যাই...  

পাঠকহীন গ্রন্থাগার -- স্বপন কুমার দাস


      পাঠকহীন গ্রন্থাগার 
       স্বপন কুমার দাস 
        ১০/০৭/২০২৪
ছুটছে জগৎ ছুটছে মোবাইল 
কলম কালি বিনে,
কম্পিউটারে বন্দী সকল ফাইল 
গ্রন্থাগার শুনশানে।

পাঠক সকল ব্যস্ত এখন 
পড়ার সময় কই, 
তুলছে সকল এখন মাখন 
স্বার্থের খোঁজে সবাই।

রবীন্দ্রনাথ নজরুল বন্দী 
তালাবন্ধ গ্রন্থাগারে,
আরো কতশত মহান কবি 
তাঁদের সাথে অন্ধকারে।

ঘুনপোকা ইঁদুর তাঁদের সাথী 
আরশোলা আর মশা,
আরো কতশত সরীসৃপ জুটি 
সুখে বেঁধেছে বাসা ।

স্কুল প্রেম -- দেবাশীষ চ্যাটার্জী

স্কুল-প্রেম
দেবাশীষ  চ্যাটার্জী   
21/05/2024 
বর্ষার ছুটি অতীত এখন 
স্কুল যাই না ভিজে  
বৃষ্টি ভেজার আনন্দ সুখ 
কজন এখন বোঝে  |

হাফ প্যান্ট আর চপ্পল ছেঁড়া  
সাথে বইয়ের ঝোলা  
টিফিন দিত মাতৃ স্নেহে 
গুড় মুড়ি আর ছোলা  

ম্যাগি চাউমিন ছিল কোথায় 
ছিলনা বই এর পর্বত  
স্কুল ফিরতেই মায়ের হাতে 
পেতাম লেবুর সরবত | 

বন্ধুরা সব বিকেল হলে 
খেলতাম  ড্যাঙ গুলি 
ফিরতে বাড়ি সন্ধ্যা নামতো 
হাতে পায়ে তে ধূলি   | 

ফেরার পথে সেই মুখটা  
লুকিয়ে আলো আঁধার 
আজ কেন তা স্মৃতির পটে
ফুটছে বারংবার  |

আঁখির কোণে আকুতির টান 
সেই দিন টা কবে 
আমার তখন হয়তো বা 
তেরো বৎসর হবে |

বারো কি আর অনেক বড়ো 
তবু ডাকতো আয় 
সাধ ছিল সাধ্য ছিলোনা  
এড়িয়ে যাবার দায় |

লম্বা ফ্রকে বিনুনি চুল 
লাল বর্ণের ফিতায় 
সরল মনের স্নিগ্ধ হাসি    
ঠোঁটের কিনারায়  |

আজ দুপুরে দগ্ধ গ্রীষ্ম 
ছেলে বেলার সেই স্মৃতি  
সেটাই ছিল প্রথম প্রেম  
বলতে আপত্তি কী ?

প্রথম প্রেম বাল্য কালের  
ভোলা ভীষণ দায়  
স্মৃতির বাক্স উল্টে দেখি 
বিবর্ণ সব ছাই  |