Wednesday, July 17, 2024

বুজরুকি -- দিলীপ ঘোষ

বুজরুকি
দিলীপ ঘোষ
১৫/০৭/২৪
অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কারকে পুঁজি করে
ভেকধারী ফেকুবাবারা চালাচ্ছে বুজরুকি
রাজনীতির সাথে স্ট্রাটেজিক বোঝাপড়ার দৌলতে
বাবারা হয়ে উঠছে বিলিয়ন ডলারের অধিপতি

সম্প্রতি ঘটে গেলো বড়সড় এক বুজরুকি
বাবার পদরেণু পেতে গিয়ে
পদপিষ্ট হয়ে মারা গেলো শতাধিক নর-নারী

পুণ্য আকুল উন্মত্ত পায়ের তলায়
লাশ হয়ে গেলো একশো একুশটা মানব দেহ
পড়ে থাকলো চটি, জুতো, পুঁতির মালা, ভাঙা চুড়ি
বেশিরভাগ মহিলা, শিশু, বয়স্ক কেহ কেহ

বাবাজির চরণ স্পর্শ করলে অসুখ ভালো হয়,
মেলে চাকরি
হ্যান্ড পাম্প থেকে বের হয় সর্বরোগ হয়,- অমৃতবারি
এক চুমুকে শরীর মনের সব কষ্ট যন্ত্রণা
দূর হয়ে যায়
যত রোগর বালাই বলে পালাই পালাই
ওঃ, কি সাংঘাতিক বুজরুকি

বুজরুকির অসংখ্য রকমের ফন্দি-ফিকির
ভন্ড বিরিঞ্চিবাবা চড়েন বিলিতি গাড়ি
ক্যাশ করেন অন্ধবিশ্বাস, কুসংস্কার আর গরিবি
পদপিষ্ট হয়ে মারা গেলে বলেন, --
ওপরের ডাক এসেছে তাই গেলো চলি
ওঃ, কি সাংঘাতিক বুজরুকি

ওপরওলার নাম করে, বিভিন্ন ধরনের মরণফাঁদ
চলছে দিনের পর দিন
অসংখ্য মানুষ হচ্ছে নিঃস্ব, রিক্ত, মৃত
বাবাজিদের মিলছে সুদিন।

Monday, July 15, 2024

একলা আছি বেশ -- শেখ সাখাওয়াত আলী

একলা আছি বেশ
শেখ শাখাওয়াত আলী
15/07//2024
ভালোবাসা চাইনা তো আর
একলা আছি বেশ,
ভালোবাসা বিষিয়ে গেছে
মনের পরিবেশ।

সকাল হলে যারে আমি
নিতাম খবর রোজ,
এখন তো আর হয়না নিতে
তার কোনো খোঁজ,
সে আমায় ভুলে গেছে চলে
সুদুর আরব দেশ।
ভালোবাসা বিষিয়ে গেছে
মনের পরিবেশ।

কাজের মাঝে হারিয়ে আছি
বেশতো কাটে দিন,
কারও কাছে নেইতো আমার
ভালোবাসার ঋণ,
সে নিজের হাতে করে গেছে 
ভালোবাসার শেষ।
ভালোবাসা বিষিয়ে গেছে
মনের পরিবেশ।

রাতের বেলায় মনটা জ্বালায়
হারায় চোখের ঘুম,
এলোমেলো ওই স্মৃতি গুলো
তাড়ায় খুশির ধুম,
সে  চলে গেছে সুদুর দেশে ,
রেখে প্রেমের রেষ ।
ভালোবাসা বিষিয়ে গেছে 
মনের পরিবেশ।

স্বস্তি -- বরুন কুমার বিশ্বাস


 স্বস্তি
 বরুন কুমার বিশ্বাস
গাঙের জলে গান ধরেছে
কোলা ব্যাঙের ছানা,
শিঙি মাগুর শিং উঁচিয়ে
করলো তারে মানা।

কাতলা এসে কানটি মূলে
যেই ধরেছে টুঁটি,
চিত সাঁতারে চিতল এসে
করে হেসে লুটোপুটি।

একখানা বক একা সেথায়
দাঁড়িয়েছিল ধারে,
ব্যাক ভলিতে ব্যাঙের ঠ্যাঙে
ল্যাং মারলো জোরে।

কোলার মামা কোথা থেকে
লাফিয়ে এসে বলে,
বড্ড বেজায় বাড় বেড়েছ
যত বখাটে ছেলেপুলে।

সাধছে গলা সাধের ভাগ্নে
না-হয় একটু জোরে,
রাজার প্রিয় রাজকন্যা নিজে
করেছে বিয়ে তারে।

খবর পাঠায় খাস পেয়াদা
নিমেষে রাজার কাছে,
মাগুর মাছে মেরেছে ল্যাং
চ্যাং মেরেছে পিছে।

রেগে আগুন রাজ মহিষী 
রাজাকে বলল হেঁকে,
তুমি দেখ তোমার জামাইকেই
মেরেছে চাটি লোকে।

রাজার গিন্নি রাগের বশে
চলল বাপের বাড়ি,
মন্ত্রী ধরাল মহিষীর হাতে
মিষ্টি দইয়ের হাঁড়ি।

রাজা এলো রাগ থামাতে
এমন খবর শুনে,
রাজার কোলে রানী লজ্জায়
ঘোমটা দিল টেনে।

এবার সমুদ্র হও তুমি -- অরুন কুমার মহাপাত্র।

এবার সমুদ্র হও তুমি
অরুণ কুমার মহাপাত্র
 ১৫/০৭/২০২৪
দুম করে এসে গেল বৃষ্টিটা
বৃষ্টির প্রথম ফোঁটায় শরীর জুড়ে
শিহরণ...
চঞ্চল শিরা ধমনী
কেঁপে উঠলো দেহতন্ত্রী
পেশিতে ঝলসে ওঠে বিদ্যুৎ
নাভিমূল বেয়ে নেমে আসে
চোরা স্রোত.....
আঃ !! তীব্র এক শরীরী উন্মাদনা !
বৃষ্টির শৃঙ্গার শেষ ।
সিক্ত বসন ভেদ করে সুঠাম
তনু প্রকট ।
টানটান যৌবনে মাদক আকর্ষণ ।
শিল্পীর তুলিতে টানা মোহময়
অবয়ব ।
হ্যাঁ , নীরা টেনে নিয়ে গেল আমায়
তার বালিকা বেলায়....
আমার শরীর জুড়ে মাতনের
দ্রিমি দ্রিমি....
আদিম সৌরভে কাঁপে ঝাউবন ।
রীনা ফিসফিস করে বলে বন্ধু
এবার সমুদ্র হও তুমি...
এখন দু'জন জ্যোৎস্না মেখে জ্যোৎস্না
হয়ে পাশাপাশি শুয়ে.... ।


Saturday, July 13, 2024

আমার বাড়ি -- বনানী সাহা

আমার বাড়ি
বনানী সাহা 
২১ -০৫ -২০২৫
 আমার বাড়ি, আমার ঘর--
এই সারা, বিশ্ব চরাচর।
এই সারা পৃথিবী আমার,--
বাসস্থান আমার ।
সর্বত্র আমার মনের ভাবনার বিচরণ!
আমি চাই না, কোনো নির্দিষ্ট --
ছোট্ট একটা ঠিকানা ।
যেখানে, সারা পৃথিবী আমার ঠিকানা !
সবাই আমার আপনজন।

থাকতে চাই না আমি ,ক্ষুদ্র মন--
নিয়ে; দুনিয়াতে এসেছি যখন ।
আমার ভাবনা, নয়তো গোনা কয়েকজন ।
সবাই যখন আমার আপনজন --
কাকে ছাড়ি, কাকে রাখি !
ক্ষুদ্র সীমা দিয়ে, কেন নিজেকে মাপি !
এই হাওয়া, এই আলো যেমন --
মানে না, কোনো বাধা --
সর্বত্র তার বিচরণ !
আমি ও হব তেমন, ঠিক তেমন ।
সবার আমি হব আপনজন ।

নাই বা কেউ, ডাকলে  আমায়।
নাই বা কেউ ,রাখলে আমায়।
আমি সদা হাসি মুখে, যাবো সবার কাছে ।
আমার যা কিছু  আছে --
 সেই ছোট্ট কিছু ,নিজের করে --
কেন আগলে রাখি!
নিজের বলে দুনিয়াতে, যখন কিছুই না!
তখন, কেন শুধু শুধু --
আগলে রাখি যক্ষের ধন্ !
সারাক্ষণ তারই চিন্তন --,
করে কেন মরি !
বরং সারা বিশ্বটাকে আপন করে --
দুহাতে হৃদয়ে ভরি।

প্রেম -- নিবারণ চন্দ্র দাস

প্রেম
নিবারণ চন্দ্র দাস
১২/০৭/২০২৪
কবিতা লিখতে চাইনি কোনদিন,
প্রতিবাদী হয়ে রই বাড়াই না ঋণ।
পথের 'পরে মানুষের বাস দেখি,
তোমাদের গণদেবতা-প্রেম বুঝি,মেকি।

খনিতে শ্রমিক নিরাপত্তাহীন,
ক্রোধ জমা করে লিখে রাখি প্রতিদিন।
কবিতার আমি নইতো প্রেমিক মোটে,
প্রতিবাদগুলো কবিতা হয়েই ফোটে।

যখন তোমার লুটপাট বল্গাহীন,
ক্ষেপে উঠে লিখি সেই কথা প্রতিদিন।
সবাই সেগুলো কবিতা হিসেবে পড়ে,
আসন তোমার হয়ে যায় নড়বড়ে।

দান ধ্যান আর খেলা মেলা উৎসব,
চাপা পড়ে যায় প্রতিবাদীদের রব।
তখনই ঝলসে মোর মসি-তরবারি,
লিখে রেখে যাই কিছু কথা দরকারি।

ভূমিহীন যত মুটে মজুরের দল,
আমায় লিখিয়ে নয়,দেয় মনোবল।
ওদের মাঝেই খুঁজে ফিরি আপনায়,
লিখে রাখি যেথা ঘটে যত মাৎস্যন্যায়।

তোমরা যখন যুদ্ধ যুদ্ধ খেলো,
কান্না-ধ্বংস,চারিদিক এলোমেলো।
তখন আমার লেখনীটা কথা বলে,
উগরায় ক্ষোভ কবিতা লেখার ছলে।

কবিতা প্রেমিক হতে চাই একদিন,
শোধ করে দিতে জমে থাকা কিছু ঋণ।
তোমরা আমায় বলো না কো কভু কবি,
এঁকে রেখে যাই অত্যাচারের নির্মম জলছবি।
                      
আসবে সেদিন,তোমারও বিচার হবে,
নিথর পাষাণ ন্যায়ের নিয়ম ক'বে।
দেখে নিও তুমি তোমার এই অনাচার,
পাবেনা রেহাই,হবেই হবে বিচার।
                   

তোমাকে নতুন করে পাই -- শেখ শাখাওয়াত আলী

তোমাকে নতুন করে পাই
শেখ শাখাওয়াত আলী
12/07/2024
পাহাড়ের বুক থেকে কিছু ফুল এনে আমি
তোমাকে দিলাম,
ফুল তুমি ভালোবাসো তাই,
সাগরের বুক থেকে কিছু নীল এনে আমি 
তোমাকে দিলাম,
নীল তুমি ভালোবাসো তাই।

পাখিরা আকাশের বুকে গান গেয়ে যায়,
ফুলেরা বাতাসের বুকে সুরভী ছড়ায়, 
কত চেনা জানার ভিড়ে,
আসি আবার ঘুরে ফিরে,
তোমাকে হারিয়ে আবার নতুন করে 
মনের মাঝারে  ফিরে পাই।

ভূবনের এলো মেলো কত পথ চলার শেষে
জীবনের স্মৃতিগলো বারেবারে ফিরে আসে,
আশা নিরাশার দোলায়
মন দোলে প্রাণ দোলায়,
তোমাকে জড়িয়ে আবার নতুন করে
 সুখের  সাগরে ভেসে যাই।

এই কুলে আমি , ওই কুলে তুমি -- উত্তম গোস্বামী

এই কুলে আমি,ওই কুলে তুমি
উত্তম গোস্বামী 
১২/০৭/২০২৪
নদীর দুপারে প্রেমিক-প্রেমিকা 
তাকিয়ে দুকুল পানে 
দুজনাতে হবে কখন দেখা 
ভালোবাসা খুঁজে মানে। 

এ কুলে সাগর ও কুলে কুসুম 
মাঝখানে ছোট নদী 
দুজনেতে যেত ছুটে ছুটে কাছে
পেতো এক সেতু যদি।

এপারে সাগর ওপারে কুসুম 
চেয়ে আছে দুই গ্রাম
 সবুজে ঘেরা গাঁ দুটি আজো 
দেখায় স্বর্গধাম। 

জানাজানি হতেই প্রেমের খবর 
কুসুম হয় গৃহবন্দী 
মা-বাবা যখন থাকে না বাড়িতে 
মনে ভাঁজে কত ফন্দি।

বাবা বলে রেগে গরিব সাগরে 
তুমি ভালো আর বাসবে না 
তোমার জন্য দেখেছি ছেলে 
মেলামেশা আর করবে না। 

পাঁচ দিন হলো বাড়ি থেকে কুসুম
আসেনা বাহিরে আর 
 নদী ঘাটে সাগর প্রতিদিন আসে
দেখিতে মুখখানা তার। 

সানাই বাজিছে ওপারে কুসুমের
কাল হবে বিয়ে বাড়ি 
 বুকখানা ফাটে সাগরের আজ
হাতে বেনারসি শাড়ি। 

গভীর রাতে দুজনে আসে 
 দুই পাড়ে নদী ঘাটে 
নিরব নিথর দুজনের দেহ 
পড়ে আছে দুই ঘাটে। 

চিঠিতে লেখা দুজনেরই বুকে 
"ভালোবাসা চির অমর,
পর জনমে তুমি হবে ফুল 
আমি হব তব ভ্রমর।"

থেমে গেল সানাই নহবৎ সুর 
নদী তীরে শেষ দেখা 
"এই কুলে আমি,ওই কুলে তুমি 
ভালোবাসা হৃদে লেখা।"

Friday, July 12, 2024

তাতিনী -- গৌতম তরফদার

 তাতিনী 
 গৌ ত ম  ত র ফ দা র 
 ১০.০৭.২০২৪
            দীর্ঘ চব্বিশ বছর পরে নিজের জন্মভূমি মালদা জেলার অজ পাড়াগাঁ কান্তিপুরে এসে পৌঁছাল ছেচল্লিশ বছরের বিপত্নীক হরিনীল বর্ধন। সন্ধ্যার ঠিক আগে আগে সারাদিনে একবার চলা রেলগাড়ির শেষ বগি থেকে কান্তিপুর স্টেশনে নামতেই যেন ঘন অন্ধকার তার দিকে ধেয়ে এল। সদ্য বৃষ্টিভেজা সন্ধ্যা যেন আঁধার রাতের নিমন্ত্রণ নিয়ে হাজির। রাস্তাঘাট আজও কোথাও এবড়োখেবড়ো, কোথাও বেশি বেশি গর্ত, বিদ্যুতের খুঁটি উপস্থিতির জানান দিলেও সারাদিনে বিদ্যুৎ দু'ঘন্টাও থাকে না। ছেড়ে যাওয়া গ্রামের আনাচেকানাচে কোথাও উন্নতিলাভের চিহ্ন নেই। গ্রামের বনেদি বাড়ির দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা সাধাসিধে বিচিত্র বিশ্বাস ও তার পরিবারের পক্ষ থেকে ছেলের ঘোড়ার গাড়ি পাঠিয়েছে। বৃষ্টির কারণে গাড়ি চারিদিক ঢাকা। গাড়ির চালক অল্পবয়সী বিচিত্র বিশ্বাসের ছেলে।

        ছেলেটি পটাপট মালিকের দুইটা সুটকেস গাড়িতে তুলে নিতেই ঝমঝমিয়ে আবার বৃষ্টি শুরু হল।
হরিনীল তড়িঘড়ি ঘোড়ার গাড়িতে উঠতেই দেখতে পেল আগে থেকেই পুরোপুরি ঘোমটায় এক মহিলা ঘোড়ার গাড়ির ভেতরে বসে আছে। হাতে একটা ছোটো বোচকা। ছেলেটি চলতে চলতে বলতে থাকলো.....

         --- এই দিদিটাও নাকি আমাদের গ্রামেরই। অনেক বছর আগেই চলে গিয়েছিল। আজ আপনার সাথেই একই ট্রেন থেকে নেমেছে। গ্রামে যাওয়ার গাড়ি নেই, তাই তারে তুলে নিয়েছি।

       --- ঠিকই করেছো

প্রত্যুত্তরে হরিনীল বললো।

       চলতে চলতে হরিনীল মহিলার মুখটা দেখতে চাইলো... কথা বলতে চাইলো.... একই গ্রামের যখন কোনো পরিচিতাও হতে পারে। কিন্তু না, ঘোমটা বা মুখ কোনোটাই খুললো না।

       গ্রামে ঢোকার মুখে বৃষ্টির প্রাবল্য দেখা দিলেও মহিলাটি ঘোড়ার গাড়ি থামিয়ে নীরবে নেমে গেল। আশ্চর্য!  এখানেই তো হরিনীলের স্মৃতিবিজড়িত প্রেমিকা তাতিনী তালুকদারের বাড়ি ছিল। ভালোবাসা... গোপন অভিসার... দুই পরিবারের তীব্র আপত্তি... চুপিসারে লুকিয়ে গ্রামের পশ্চিমে অবস্থিত কালীমন্দিরে গিয়ে মালাবদল...সিঁদুর দান করার পরই তাদের জীবনে সিঁদুরমেঘ দেখা দিয়েছিল।
গ্রাম্য সালিশিতে দু'জনকেই ব্যাপক মারধোর... সেই রাতেই আপন দাদার হাতে তাতিনীর নৃশংসভাবে খুন হওয়া....হরিনীলের কান্তিপুর গ্রাম ছেড়ে চলে যাওয়া কোলকাতার মেসবাড়ি। সেখানেই পড়াশুনো শেষে সরকারি চাকরি পাওয়া... বাড়ি করা....তাতিনীকে ভুলতে না পারা.... পুনর্বার বিয়ে না করায় অনড় থেকেছে।

        বাড়ি দেখভাল করা বিচিত্র বিশ্বাস, তার স্ত্রী ও তাদের ঘোড়া গাড়ি চালানো ছেলে খুব খাতির-যত্ন করে রাতের খাবার খাইয়ে আগে থেকেই পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করে রাখা হরিনীলের আপন ঘরেই বিছানা করে দিল রাতের জন্য।

        গভীর রাত পর্যন্ত অস্থিরভাবে পায়চারি করতে লাগলো হরিনীল। এই ঘরেই তো চুপিচুপি তাতিনীকে প্রথমবার নিয়ে এসেছিল বিয়ে করার রাতে। অসমাপ্ত ফুলসজ্জার অতৃপ্ততা আজও কষ্ট দেয় হরিনীলকে।

        বৃষ্টি মুখর গভীর রাতে দু'চোখ বন্ধ করে ঘুমে জড়িয়ে পড়তেই হঠাৎ অস্ফুট আওয়াজে মায়াবী নীলাভ আলো হাতে কে যেন হরিনীলের দিকে এগিয়ে এল। কাছে আসতেই অবাক! আরে!  এ তো ঘোড়ার গাড়িতে বসা সেই নারীর মুর্তি! ঘোমটা সরতেই হরিনীল শিহরিত। একি! এ তো তার তাতিনী! আবছা আবছা হাসিমুখ। হরিনীলের বাস্তবজ্ঞান হারালো.... তাতিনীকে বারবার নাম ধরে ডাকলো.... ছুঁতে চাইলো...হাসি ও কান্নার শব্দ একসাথে এল... নীল আলোটাও নিভে গেল... হরিনীল জ্ঞান হারালো।

      পরদিন সকালে হরিনীল দেরিতে দরজা খুলতেই দেখে বিচিত্র বিশ্বাস ও তার স্ত্রী উদ্বিগ্নচিত্তে তার জন্য অপেক্ষা করছে। সঙ্গে পাড়ার আরও কয়েকজন মহিলাদের জটলা। রাত্রে হরিনীল বারবার তাতিনীর নাম ধরে ডাকছিল আর গোঙাচ্ছিল। আশেপাশের সবাই জানে অতৃপ্ত তাতিনীর আত্মা প্রতি রাত্রেই বর্ধনদের বাড়িময় ঘুরে বেড়ায়। আজ হরিনীলকে কাছে পেয়ে কাছে আসতে চাইছিল, নিজের করে পেতে চাইছিল। কপালজোরে বেঁচে গেছে হরিনীল।

       হরিনীলের আপত্তি স্বত্বেও দুপুরে গ্রামের মাতব্বরদের আয়োজনে গ্রামের পশ্চিমে জাগ্রত কালীমন্দির সংলগ্ন ঘাটে সাধুসন্ন্যাসী ডেকে পুজো ও তাতিনীর পিন্ডিদানের ব্যবস্থা করা হয়।

     লৌকিক বনাম অলৌকিকের বহুযুগের বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের গোলমেলে আচার-আচরণে হরিনীলের দু'চোখ জলে ভরে এল প্রিয়তমা তাতিনীর জন্য। ঈশ্বরের কাছে ওর চিরশান্তি কামনা করলো।


এসো ভালোবাসার কাছে যাই -- অরুণ কুমার মহাপাত্র

এসো ভালোবাসার কাছে যাই
অরুণ কুমার মহাপাত্র
তাং - ১০/০৭/২০২৪
চল যাই , এবার ফুলেরা অবগুণ্ঠন 
খুলবে...
চল যাই দূর থেকে দেখবো ফুলেদের
পাপড়ি মেলা...
দেখছো না , এক রত্তি আলো ছুটছে
গোপন উপত্যকায়...
লাজবতীদের সংকোচের ঘুম এই
ভাঙলো বলে...
সহস্রাব্দের সব লজ্জা ধুয়ে মুছে এরা
এবার আলোয় হাসবে...
এসো , উপলব্ধির চেতনায় সৃষ্টির
আনন্দে ভাসি আমরা এবার...
এসো ফুলেদের সাথে আমরাও গাই
জীবনের জয়গান... ।
এসো আমরা আমাদের আবেগ , 
আকাংখা জাগাই চিরকল্যানময়
অখন্ড চেতনায়...
এসো হৃদয় মন্দিরে করি নিয়ত
স্তোত্রপাঠ...
এসো মৃতকল্প জীবন ছেড়ে আমরা
সবাই ভালোবাসার কাছে যাই...  

পাঠকহীন গ্রন্থাগার -- স্বপন কুমার দাস


      পাঠকহীন গ্রন্থাগার 
       স্বপন কুমার দাস 
        ১০/০৭/২০২৪
ছুটছে জগৎ ছুটছে মোবাইল 
কলম কালি বিনে,
কম্পিউটারে বন্দী সকল ফাইল 
গ্রন্থাগার শুনশানে।

পাঠক সকল ব্যস্ত এখন 
পড়ার সময় কই, 
তুলছে সকল এখন মাখন 
স্বার্থের খোঁজে সবাই।

রবীন্দ্রনাথ নজরুল বন্দী 
তালাবন্ধ গ্রন্থাগারে,
আরো কতশত মহান কবি 
তাঁদের সাথে অন্ধকারে।

ঘুনপোকা ইঁদুর তাঁদের সাথী 
আরশোলা আর মশা,
আরো কতশত সরীসৃপ জুটি 
সুখে বেঁধেছে বাসা ।

স্কুল প্রেম -- দেবাশীষ চ্যাটার্জী

স্কুল-প্রেম
দেবাশীষ  চ্যাটার্জী   
21/05/2024 
বর্ষার ছুটি অতীত এখন 
স্কুল যাই না ভিজে  
বৃষ্টি ভেজার আনন্দ সুখ 
কজন এখন বোঝে  |

হাফ প্যান্ট আর চপ্পল ছেঁড়া  
সাথে বইয়ের ঝোলা  
টিফিন দিত মাতৃ স্নেহে 
গুড় মুড়ি আর ছোলা  

ম্যাগি চাউমিন ছিল কোথায় 
ছিলনা বই এর পর্বত  
স্কুল ফিরতেই মায়ের হাতে 
পেতাম লেবুর সরবত | 

বন্ধুরা সব বিকেল হলে 
খেলতাম  ড্যাঙ গুলি 
ফিরতে বাড়ি সন্ধ্যা নামতো 
হাতে পায়ে তে ধূলি   | 

ফেরার পথে সেই মুখটা  
লুকিয়ে আলো আঁধার 
আজ কেন তা স্মৃতির পটে
ফুটছে বারংবার  |

আঁখির কোণে আকুতির টান 
সেই দিন টা কবে 
আমার তখন হয়তো বা 
তেরো বৎসর হবে |

বারো কি আর অনেক বড়ো 
তবু ডাকতো আয় 
সাধ ছিল সাধ্য ছিলোনা  
এড়িয়ে যাবার দায় |

লম্বা ফ্রকে বিনুনি চুল 
লাল বর্ণের ফিতায় 
সরল মনের স্নিগ্ধ হাসি    
ঠোঁটের কিনারায়  |

আজ দুপুরে দগ্ধ গ্রীষ্ম 
ছেলে বেলার সেই স্মৃতি  
সেটাই ছিল প্রথম প্রেম  
বলতে আপত্তি কী ?

প্রথম প্রেম বাল্য কালের  
ভোলা ভীষণ দায়  
স্মৃতির বাক্স উল্টে দেখি 
বিবর্ণ সব ছাই  |

Thursday, July 11, 2024

নায়িকা তুমি কার -- মীর নাজমুল

নায়িকা তুমি কার 
মীরঃ নাজমুল
 ২২।০৫।২০২৪
কবি আমি তোমার বন্ধু 
স্বরবর্ণের অ,ব্যঞ্জনবর্ণের ক। 
আমি বলছি তুমি শোনো 
নায়িকা আছে বেশ ভালো। 

বলি,ভালোবাসা কি এতোই বড়  
যতদুর তুমি ভাবো। 
তার চেয়ে সেই ভালো 
পাশের বাড়ীর নীম ডালে চেয়ে থাকো। 

তোমার জন্য মন টা পোড়ে কবি 
তাই ছুঁটি তোমার পিছু পিছু 
স্মরণিকার আকাশ কুসুমে চেয়ে।

কে কবি, তুমি না আমি 
আমি শরীর, তুমি মন । 
এ কথাই বা জানে ক'জন 
আর আমি, তুমি, সে 
এই তিন জনই বা কে ? 

নায়িকা তুমি কার 
কেই বা তোমার প্রাণ পুরুষ। 
স্বামী না প্রেমিক কার বাস 
তোমার  মনে। 
কার স্পর্শ ভালোলাগে তোমার 
আমার খুব জানতে ইচ্ছে করে। 

ছিঃ ছিঃ এসব কি,কেউ বলে, 
কবি তুমি বড্ড বেহায়া প্রেমিক। 
কি চাও তুমি,জীবন না মরণ ? 

আমি বলি.. 
তোমার  মাথায় প্রেমের ভুত 
আমার মাথায় জীবন সংসার । 
তবু ঐ পোড়া মনে ভাসে প্রেমের স্রোত, 
.....প্রেমিক বড়ো অভাগা জাত। 

তার চেয়ে সেই ভালো কবি 
তুমি বরং কবিতা ছেড়ে উপন্যাস লেখো 
..........নায়িকা তুমি কার ? 

দুর্বলের লড়াই -- মৃণাল কান্তি রায়

দুর্বলের লড়াই
মৃণাল কান্তি রায় 
২১/০৫/২০২৪
ধ্বনিতেছে ধ্বনিতেছে  দিকে দিকে বলিতেছে
            চলিতেছে অঘোষিত লড়াই,
স্বার্থবাজ ধান্দাবাজ লাভ-মোহের ফরাজ
          অসত্যের করিতেছে বড়াই। 
লুকোচুরি লুকোচুরি যত শত ঘরবাড়ি 
         বিভক্তিতে বিভক্তিতে ছয়লাপ,
চাঁদার চাঁদার প্রীতি উবে গিয়াছে সম্প্রীতি
       দিকে-দিকে চলিতেছে সংলাপ। 
প্রতিষ্ঠান আর প্রতিষ্ঠান আর যত অনুষ্ঠান 
           সফল ভাবেই বিভক্তি,
ফায়দায় ফায়দায় কায়দায় কায়দায়
           লাভে-লাভেই আসক্তি। 
লোকবল জনবল বল বল বাহুবল
          ধরাতে অস্বস্তি বিরাজিত,
হিংগায়-হিংসায় আর যত প্রতিহিংসায়
          চলিতেছে অস্বস্তির কাহন,
সিংহে-সিংহের লড়াই যুগপৎ বুদ্ধি জানাই
          শোনে কী কেউ কারোর বারন?
কাল-কাল মহাকাল সব দিক বেসামাল
          লক্ষ্য-উদ্দেশ্যের জাগরণ,
টিপছাপ স্বাক্ষর ব্লাকমেল জব্বর জব্বর
         সীলে-সীলে দায়িক-দেনা চারণ। 
কিস্তি আর কিস্তি সব দিকে ফিরিস্তি
         অলৌকিক যত সব কাণ্ড,
অবিশ্বাস্য অবিশ্বাস্য হাস-পরিহাস তোষ্য
        রাখিবার যত স্থান ভাণ্ড!
গোল্লায়-গোল্লায় সম্প্রীতি ছাড়ায়
      আগেভাগে ভাগগুলো বাড়ায়,
হিল্লোল আর হিল্লোল কল্লোল আর কল্লোল
           ঊর্মির ন্যায় ধাবমান,
দলছুট দলছুট সব কুলে গোল্লাছুট 
          বেগে-বেগেই বেগবান। 
নীরব নীরব যুদ্ধ দেশজ ভূমির অব্দ
         ভোগ-বিলাসের তাড়া,
বানায় বানায় নাম যত যত আকাম
        পাল্লায়-পাল্লায় ভারী,
নিরাকার আর সাকার লড়াইয়ের আকার
        সবদিকে ধ্বনিতেছে ধ্বনিতেছে,
এন জিও আর এন জিও কিস্তির ফলিও
       ওলট-পালটের মহাজের,
নিষ্কাম আর সকাম কর্মে-কর্মে বেকাম
       সবল-দুর্বলের মহাঘের। 
পরিশিষ্ট পরিশিষ্ট অবশিষ্ট অবশিষ্ট 
        মান দেয়া মান নেয়া কাণ্ড,
সবলে-সবলে অবিচার কণ্ট্রোলিত সব আচার
          রাখবার ভাণ্ডের ভাণ্ড। 
খিল খিল মহাখিল অমিল-অমিল
         না-ই তা-ই কারোর দিল,
সুবিচার অবিচার পাল্লাতে লাগাতার
       কুড়িটি বছরের সীল। 
সবল-দুর্বল ভাব পাণ্ডাদের প্রাদুর্ভাব 
        চলিতেছে মহা আলোড়ন,
প্রভাব-প্রতিপত্তি যেমন সুবিধা ফায়দা তেমন
      বোঝাটা সময়ের প্রয়োজন। 


আমি অজ্ঞান , দান করি জ্ঞান -- নেপাল চন্দ্র বিশ্বাস

 আমি অজ্ঞান,দান করি জ্ঞান  
 নেপাল চন্দ্ৰ বিশ্বাস 
 ১০.৭.২৪
প্রতিটি জিনিসের সংশোধন আছে 
সংশোধন করা কঠিন তো নয়,
জীবন ছোটো নয় তা বোঝা দরকার 
জ্ঞানীরাও ভেঙে পড়ে সময় সময় ।

স্বল্প জ্ঞানী সদা অল্পে হাল ছাড়ে 
বিজ্ঞ সর্বদা জয় করে সব,
বিজ্ঞের তুলনা বিজ্ঞ সনে হয় 
বিজ্ঞ মনুষ্য শব্দে নীরব ।

বিজ্ঞতা-য় জ্ঞানী শান্ত সুস্থির 
মূর্খেরা লাফায় পুঁটি মাছ যথা, 
কর্মকালে এরা বাধায় জঞ্জাল 
নয় ছয় কর্ম করে সর্বথা ।

জ্ঞান-ই সর্বদা জয় করতে পারে 
অধরা জগতের দুর্গম স্থান, 
অজ্ঞানী কখনো কৃতকার্য্য নয় 
সঙ্কল্পে তার সদা পিছটান ।

জ্ঞান বৃদ্ধি করো জ্ঞান অস্ত্র ধরো 
জয় করো বিশ্ব জ্ঞানের প্রভাবে,
ভয়শূন্য হয়ে নির্বিঘ্নে চলো 
উচ্চ স্থান তুমি সর্বদা পাবে ।

সকলের মধ্যে সকলের সাধ্যে 
থাকো তুমি সর্ব মননের মাঝে,
তাহলেই বিশ্বে এসে যাবে শান্তি 
কেটে যাবে ভ্রান্তি সুস্থির কাজে ।

Wednesday, July 10, 2024

বন্ধুর পথ -- এম হানিফা

বন্ধুর পথ
এম হানিফা
(১৯/০৫/২৪)
আমি ঢেউ দেখেছি অথৈ সাগরে
অনল দেখেছি অন্তরে 
ভালোবাসা দেখেছি মায়ের মাঝে 
সত্য দেখেছি প্রকৃতি জুড়ে।

আমি নীল দেখেছি নীলিমা জুড়ে
কান্না দেখেছি মজলুমের 
আমি আবেগ দেখেছি আশেকে আর
পরাজয় দেখেছি অন্যায়ের।

আমি কষ্ট দেখেছি খুব কাছ থেকে এবং 
চিনেছি মানুষ বিপদে
আমি অন্ধকার দেখেছি গভীর নিশীথে 
আপন খুঁজেছি বিষাদে।

আমি লজ্জাবতীর লজ্জা দেখেছি আরো
দেখেছি পাষাণের নিষ্ঠুরতা 
আমি কখনো সমীরণের মহা শক্তি দেখেছি 
আরো দেখেছি অমানবিকতা।

আমি মানুষের মনুষ্যত্বকে খুঁজে বেড়িয়েছি 
আর পেয়েছি নতুন শিক্ষা 
আমি অন্যায়ের প্রতিবাদ শিখে তা করেছি
আর তাই পেয়েছি অনেক দীক্ষা।

শান্তি চাই -- অরবিন্দ সরাক

 শান্তি চাই
 অরবিন্দ সরাক
২০/০৫/২০২৪
অগ্নিরথের চাকা তোমার
  থামাও রবি এইবার, 
শুনতে কি পাচ্ছো না তুমি
  জীবজগতের হুংকার। 

 তোমার তাপে বিশ্ব কাঁপে
     এবার শান্তি চাই,
বারিধারা এখন নামাও তুমি 
    এছাড়া উপায় নাই।

  তোমার তাপে কাঁপছে ধরা
       পুড়ছে লতা পাতা, 
   ঘরের বাইরে গেলে পরেই
       লাগছে সবার ছাতা। 

     এবার তুমি শান্ত হও
  তোমার রুদ্রমূর্তি ছেড়ে, 
নইলে গাছপালা যাবে শুকিয়ে
     উঠবে না আর বেড়ে।

মনকে করো সুখী -- মোঃ নুরুল ইসলাম রাকিব

 মনকে করো সুখী 
 মোঃ নূরুল ইসলাম রাকিব
 ০৯/০৭/২০২৪
সবুজ ঘাসে ঢগায় ফাঁসে
বৃষ্টি ভেজা বিন্দু হাসে 
রবির আলো পেয়ে,
সকাল বেলা চলছে খেলা 
আলো ছায়ায় মেঘের ভেলা 
আসছে শুধু ধেঁয়ে!

বাতাস নাচে রবির আঁচে 
এই গরমে প্রাণ কি বাঁচে 
পানি তৃষ্ণা পেলে?
গাছের ছায়া বাড়ায় মায়া
ওই দূরে যে উজান নায়া 
সুরে কন্ঠ মেলে!

শালিক ডাকে পাতার ফাঁকে 
আকাশ মেঘে বৃষ্টি আঁকে 
বিজলী রাণী জ্বলে,
শব্দে জাগে সবার আগে 
তৃষ্ণা মনে চমক লাগে
বজ্র সেনা বলে!

আষাঢ় শেষে বৃষ্টি এসে 
চতুর্দিকে বন্যা ভেসে 
কাঁদে গরীব দুখী,
জিন্দা লাশে বাঁচার আশে 
জলদি গিয়ে দাঁড়াও পাশে 
মনকে করো সুখী!

Tuesday, July 9, 2024

হোক শপথ -- সূর্য্যোদয় রায়

 হোক শপথ
  সূর্য্যোদয় রায়
  ১৮/০৫/২০২৪
হাতে হাতে নিয়েছি শপথ
নতুন এক অঙ্গিকার,
প্রয়োজন সকলের ঋদ্ধ মত
এসো হাতে হাত রাখি সবার।

চলার পথে মেঘ ঘনাক
আসুক বাঁধা আজ প্রতিদিন,
নতুনেরা গল্প শোনাক
মুছে যাক আজ সব ঋণ।

সত্যের পথে বিপুল বাঁধা 
আজও যে সত্য নিশ্চিত নয়,
তবু মোরা গড়ি নব মেধা
হবেই হবে আমাদের জয়।

মরে যেতে সকলেই পারি
মরনেই সব নয় শেষ,
জেনে নিক মিথ্যার কারবারি
এই হাতে গড়বই দেশ।

ছোটো ছোটো আজও এই হাত
তবু ছোট নয় আমাদের প্রাণ, 
তাই নাই সংকোচ দিন রাত
প্রত্যয়ে তাই আজও গাই গান।

আলো দেখি আঁধারের পরে
দেখি আশা বিস্মৃত দিনকাল,
তাই আজ মরণেও ঘরে
ছাড়ি নি তো জীবনের হাল।

এইখানে জেগে আছে আশা
জেগে আছে আমাদের মন,
ভোলে নি যে দূর্যোগ ভাষা
বঞ্ঝাক্ষুব্ধ রাতে বাদলের বন।

তাই আজও হাতে হাত রাখ গো
প্রতিজ্ঞার বন্ধনে দৃঢ় সেই হাত,
ঠিক একদিন জাগবেই দেখে নিও 
ঘৃনার অসীম দূর্লঙ্ঘ্যতায় দগ্ধ এ বরাত।

ইন্টারভিউ -- উত্তম গোস্বামী

 ইন্টারভিউ
 উত্তম গোস্বামী 
  ১৮/০৫/২০২৪
হাঁদারামের ইন্টারভিউ 
চলেছিল গতকাল 
প্রশ্ন ছিল চাল কুমড়োয়
 ক'ভাগ থাকে চাল?

ভাবতে থাকে হাঁদা শুধুই 
ছিঁড়ে মাথার চুল 
একশো ভাগ বলে হাঁদা 
উত্তর দিল ভুল।

হাঁদার কাছে এলো এবার 
দ্বিতীয় প্রশ্ন-বান
'মান কচুদের কোথায় থাকে 
মান আর অপমান।'

প্রশ্ন শুনেই হাঁদা এবার 
 ঝরায় দেহের ঘাম
মনে মনে করতে থাকে 
হরে কৃষ্ণ নাম। 

'বলতে পারো গোলাপজামের 
কেন এতো এর দাম?
ক'ভাগ থাকে গোলাপ এতে
 ক'ভাগ থাকে জাম?'

মুচকি হেসে বললো শেষে
দুষ্টু হাঁদারাম 
বলুন না স্যার আমার কেন 
গোবরগণেশ নাম।

শ্রাবণের রঙ -- সুরজিৎ পাল

  শ্রাবণের রঙ
 ‌‌ সুরজিৎ পাল
   ৮.৭.২০২৪
ঝমঝম বর্ষণ-অবিশ্রান্ত শ্রাবণ, 
চারিধার ডুবায়-দয়া হীন প্লাবন।
চোখ সম্মুখে-নদী ভাঙ্গন,
তলিয়ে যায়-বাস ভবন।
শ্রাবণ ধারায়-শৃঙ্খলিত আবেশ,
ধিকিধিকি আগুন-মনে প্রবেশ ।
সিক্ত বদন, সিক্ত বসন,
বর্ষণ ছন্দে-চিন্তার স্মরণ।
ইংগিত লক্ষণ-বজ্র দংশন, 
 জ্বলন জ্বালায়-এ কিসের গর্জন?
মন উদাস- বিরাগী গম্ভীর কাব্য,
পাওয়া না পাওয়া-প্রকৃতির চোখে দুঃসাধ্য।
ছমছম নূপুরের রিনিঝিনি বোল,
ক্লান্ত নয়ন তুলেছে রোল।
স্বপ্ন সিক্ত কুয়াশাচ্ছন্ন রূপ,
আয়নায় ধোঁয়াশা কল্পনার কুপ।
চারিদিক ছোটাছুটি ত্রাণ গেল কোথা ,
রাজনীতি -
আয়না কি জানে সত্যি কি স্থিতি?
বর্ষণ কর্ষণ বাগান হয় উর্বর?
মাথায় হাত কাগজের শব্দ কড়কড়।
কড়কড় গুণে পৌঁছাই মাহফিলে,
হৃদয় বেঁধেছে অলিখিত ঋণে।
ঝরঝর স্রোতে ভেসে প্রতিক্ষার দীর্ঘশ্বাস,
শ্রাবণ হয়েছে কারো সর্বনাশ কারো পৌষমাস।

Monday, July 8, 2024

চিত্তরঞ্জন সাঁতরা

কবিরাও কাঁদে
চিত্তরঞ্জন সাঁতরা 
০৭/০৭/২০২৪
কবিরাও কাঁদে হাউমাউ করে
চোখের জল ফেলে।
বুকের জমাট পাথরের নড়াচড়া
হৃদপিন্ডকে আঘাতে আঘাতে
রক্তাক্ত করে।
হৃদস্পন্দনের গতি ক্রমশ‍ঃ ক্রমশঃ 
ঝিমিয়ে আসে অজস্র রক্ত স্রোতে।
গড়িয়ে পড়ে দুচোখে নোনা সমুদ্রের 
উচ্ছ্বাস ঢেউ।
কবিরা কাঁদে গোপনে নীরবে।
দুচোখে ক্রমাগত ঝরে পড়া ফোঁটা 
ফোঁটা শিশিরের বিন্দু জলধারা হয়ে
ভেজায় বুকের জমাট স্তূপাকারের
বেদনা।
কবিদের দুঃখ বেদনার হতাশা অব্যক্ত
হয়ে ভাসে কাব্যিক ঝংকারে।
বাস্তবতায় ভেসে চলে নিঙরে নেওয়া
হৃদয়ের হাহুতাশ হতাশার আগুনের
লেলিহান শিখায় লেখনীর পাতায়
পাতায়।
কবিদের জীবনে থাকে এক ব্যক্তিগত
ব্যর্থতার সুর যা ভাবনা কল্পনাকেও হার
মানায়।
তাই কবিরা অনিচ্ছায় কেঁদে মরে একটু
হালকা হতে বুকের পাথরটাকে সড়িয়ে।
কবিরা কাঁদে লেখনীতে যা গল্প কথা
নয় ,নয় কোনো কাব্যিক সৃষ্টি, শুধু বলে
যাওয়া বাস্তব জীবনের দুঃখ বেদনা
হতাশার এক মলিন কাহিনী।

মনোকথা -- সুব্রত সেন

 মনোকথা
 সুব্রত সেন
  ০৬\০৭\২০২৪
আজকাল আর কেউ সময়ে আসে না৷ 
বর্ষা শরৎ বসন্ত এরা যেন সময় জ্ঞানটা ভুলে গেছে
কখনও কখনও বেপাড়ার ছেলেদের মত মাঝে মাঝে
উঁকি ঝুঁকি দেয় , মেঘ৷
জানালার ফাঁক দিয়ে কিছু সন্দেশ পাঠায় ৷

মেঘ আর বৃষ্টি এরা সহ পাঠি ,এক পাড়ায় থাকে
আকাশ ওদের বন্ধু..৷
আজ হঠাৎ বৃষ্টি রাগে অভিমানে অসময়ে এসে সব তোলপার করে৷
ঘর মাঠ ঘাট পাঁকা ধান ক্ষেতে যা ছিল সব ..৷

এদিকটা চুপচাপ,
তবু বৃষ্টির স্বরলিপি ঢুকে পরে ঘরে ঘরে৷
আর তখনই শুরু হয় কলোনির প্রতিদিনের রেওয়াজ সা-রে-গা-মা৷
গর্জে ওঠে আকাশ,তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে রন নৃত্যে গাছপালা, 
মেঘমল্লারের বন্দিশ টা ঢিমে তালে ভেসে আসছে   তখনও
ধীরে ধীরে রাত  নেমে আসে৷

অশান্ত মেঘের কান্না লিখে রাখে আকাশের মনো কথা..৷

Saturday, July 6, 2024

বৃষ্টি এলো ঝেঁপে -- নিকাশ মালিক

বৃষ্টি এলো ঝেঁপে 
  নিকাশ মালিক 
   ০৫/০৭/২০২৪


সূর্য ঢেকে আঁধার আসে 
বাদল হয়েছে শুরু,
ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি পড়ে 
মেঘ করে গুরু গুরু।

সারাটা দিন মেঘলা আকাশ 
বৃষ্টি স্রোতে স্রোতে,
এমন দিনে মন ছুঁটে যায় 
একটুখানি ভিজতে।

গাছের পাতা হাওয়ায় নাচে
খুশির জোয়ারে,
হাঁসগুলো চেঁচামেচি 
 করে পুকুরে।

সাদা সাদা বক গুলো 
আকাশেতে উড়ে,
 মাছরাঙা মাছের নেশায় 
পুকুর ধারে ঘুরে।

চাঁদের দেখা পাবে না আজ
কালো মেঘের জন্য,
পেয়েছে প্রাণ এই বৃষ্টিতে 
শুকিয়ে যাওয়া অরণ্য ।

রোদেলা সকাল -- মোঃ আমিরুল ইসলাম

 রোদেলা সকাল
 মোঃ আমিরুল ইসলাম
 ০৪/০৭/২৪ ইং
আমার সারাটা সকাল তোমাকে দিলাম
তুমি এতটুকু কথা দাও আমাকে।
ভোরের আলোটুকু ডাকে ইশারায়
মিটিমিটি ফোটা ঐ কাননে।

যে তুমি আমার ছিলে হৃদয় গগনে
চাঁদ তারকার অসীম নীলিমায়,
সুরে সুরে বারে বারে গেয়ে যেতে নিরবে
সে তুমি আজ কেন এতো দূরে?
বুঝিনা কেন চায় এ পোড়া মন
কেঁদে কেঁদে ঐ দূর আকাশে।

জীবনের যে পথ চলা একই মোহনায়
সে পথ কেন গেল অযথা বেঁকে?
শান্ত মনের এ গহীনে জমেছে
অশান্ত বেদনার রাশি রাশি ঢেউ
তুমি আর কাঁদাওনা এ মন ওগো
মরে যাবো পাবেনা কোথাও তো কেউ।

ঐ দূর সীমানায় অসীম তেপান্তর
রংধনু এঁকে যায় নিরবে,
প্রজাপতির ডানা বেশতো আঁকাবাঁকা
হারিয়ে যায় মন সরবে।
কে যেন কানেকানে ফিসিফিসি হেসে বলে
আজ আর নেই বেশি দূর,
ওগো প্রিয়া হাত ধরো 
কবিতার খাতা খোলো
লিখে দাও মম নামে কবিতা,
সময়ের নীল খামে কোমল প্রেম জালে
বেঁধে নাও তুমি আমাকে।

স্বভাব দোষ -- দিলীপ ঘোষ

স্বভাব দোষ
দিলীপ ঘোষ
০৩/০৭/২৪

নিজেকে কষ্টি পাথরে ফেলে দেখতে না শিখলে
আয়নায় নিজের মুখ বারবার না দেখলে
নিজেকে ভুল ত্রুটির উর্দ্ধে রেখে এঁড়ে তর্ক করবে
উচিত কথার নামে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে
অতিমানব মনে করে কার্যত্ব নিজের দোষ ঢাকবে

গরু মরলে উপরওলা, ফুল গাছ পুতলে আমি
এমন আমিত্বের রোগ ধরা পড়ে
                ‌                কিছু মানুষের চাল চলনে
কম্পাসে ফেলে ভুল ধরতে পারে না তারা
আনাড়ির মত অপরের সমালোচনা করে

নীতির রেলে গাড়ি চালিয়ে দেখার অভ্যাস হারালে
পছন্দ অপছন্দের চোখে ঠিক ভুল দেখবে
যাকে না দেখতে পারো তাকে মুরগি করে
মনগড়া ছুরিতে কেটে সুপ্ত জ্বালা মেটাবে

আমার কোন ভুল নেই, ত্রুটি নেই
যাবতীয় অধঃপতন,-  এর ওর জন্য
যারা মনে করে প্রচার করে
তারা কখনোই নিজেকে করতে পারে না সংশোধন।

গোপনে -- দেবাশীষ চ্যাটার্জী

গোপনে 
 দেবাশীষ চ্যাটার্জী 
03/07/2024 
-------------------------------------

ভালো আছি বলি প্রশ্নের কাছে  
উত্তরেরা তাই খুশি 
ভালো থাকাটা অভিনয় শুধু  
জমা ক্ষোভ  রাশি রাশি |

বুকে জমা যত অভিমান সবই 
গোপনে গুমরে কাঁদে 
মনের দুয়ার হাট করে খুলে 
সে কথা বলি আর কাকে  ?

সব-ই সবার ভাগ্যে থাকেনা 
কিছুটা রহস্যে ঘেরা 
পাওয়া না পাওয়ার দোলায় দুলেছে
জীবন আজ দিশেহারা  |

পথ হারিয়ে বেপথে চলেছে 
পথিক আজ  শত শত
সবার মুখেতে মুখোশের হাসি
বুকে জমা শুধু ক্ষত |

হাসি মুখে আজ বিষের বাঁশরী  
হলাহলে ভরা মনের দ্বার 
হৃদয়পুরে বসবাস করে   
হিংসুটে এক অহংকার |

Friday, July 5, 2024

ভরা থাক -- নিবারণ চন্দ্র দাস

ভরা থাক 
নিবারণ চন্দ্র দাস 
০৪/০৭/২০২৪
সম্পর্কের ভাঙাগড়া জীবনের অঙ্গ,
পরাজয় আশঙ্কায় রণে দেব ভঙ্গ?
যুঝিতে যুঝিতে যবে জীবন যাপন,
যুদ্ধ দাঙ্গা ছেড়ে করি বসে আলাপন।

সংসার পারাবার কারাগার নয়,
সন্তরণ জানো যদি নাই কোন ভয়।
বাসন কোসনে হয় কত ঠোকাঠুকি,
সূর্য বিনা ফোটে বুঝি কভু সূর্যমুখী?

মনোজনে কষ্ট যদি দিই অবিরত,
উবে যায় শান্তি স্থিতি জীবনের মত।
দূরত্ব সে দূর নয় মানসিক বোধ,
সম্পর্কের মাঝে গড়ে লক্ষ অবরোধ।

লভিনু মানব প্রাণ ধরণীর 'পরে,
আনন্দ হাসি গান থাক চিরতরে।
জীব সেবা করে যাই সমগ্র জীবন,
পাষাণের বুকে করি প্রাণ সঞ্জীবন।
                   :::-:::

Thursday, July 4, 2024

বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব -- মোঃ নূরুল ইসলাম

  বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব
  মো: নূরুল ইসলাম
   ০৩/০৭/২০২৪
    মৃত্যুরে নাহি করি ভয়,
    আসুক প্রলয়।
    ধুয়ে মুছে যাক হিংসা দ্বেষ,
    যত সব ভেদাভেদ জাতি বিদ্বেষ।
    মানুষের রূপ ধরি দাঁড়ায়ে শয়তান,
    বিরাজিছে বিশ্বময় ভাবে বলীয়ান।
    দেশ দেশান্তরে দাঁড়ায়ে হিংস্ররূপে,
    লোভ লালসা উঁকি দেয় বিদ্রুপে।
    ধ্বংস যজ্ঞ ঘৃত দ্রব্য আরও কতো,
    প্রস্তুত রয়েছে শত শত।
    ধ্বংসের উল্লাসে বিপুলা আয়োজন,
    মৃত্যূকে ভয় তার নাহি প্রয়োজন।
    জাগ্রত হোক বিশ্ব মাতা,
    বিনিদ্রিতা শুনি মিষ্টভাষ।
    কহিবে না উচ্চ রবে ঘৃণ্য ভাবে,
    ছাড়ি সব পরিহাস।
    সকলের তরে আপনারে লয়ে,
    মানব রূপে সকলকে দেখে দাঁড়ায়ে।
    সামনে দেখে তার ভাই,
    করে হানাহানি মত্ততা,
    জেগে ওঠে মানবতা পবিত্রতা।
    প্রেম ভালোবাসা ছাড়া,
    এ জগতে বাকি কিছু নাই।

  

আষাঢ়ে বৃষ্টি -- বেবি মন্ডল

 আষাঢ়ে বৃষ্টি 
 মহারানী ( বেবী মন্ডল ) 
  ০৩ / ০৭ / ২০২৪.
 
অবশেষে বৃষ্টির ইস্তেহার বয়ে নিয়ে এলো আষাঢ়!
বৃষ্টি এলেই ভিতরটা ফুলে ফেঁপে ওঠে ,
যেন কোনো রোশনাই ঘিরে রয়েছে জীবন,
সারাদিনের প্রচণ্ড দাবদাহের পর অচেনা ইস্তেহার ,
বিদ্যুৎ চমকালে ফিরে যাই মাতৃ ক্রোড়ে ,
ফিরে আসে চঞ্চল শৈশব,
এভাবে রাত্রি আসে , দিনের পর রাত
বিকেল বলে কিছু নেই আমার সময়ে,
 পরিচয় বলতে নাটকের গুরুত্বপূর্ণ রোল,
মন দিয়ে শুনতে চেষ্টা করি জানতে চাই আর কতোটা ভিজেছে কে কোথায়!
আলোকবর্ষ ছুটে এসেছি এতো ঘাম এতো ক্লান্তি,
বহুদূরের গ্যালাক্সি আমার খোঁজ -
আর ব্ল্যাকহোলে মিলেছে প্রত্যয়,
আমার হারিয়ে যাওয়া সবকিছু - 
কখনও কি ফিরে আসবে না কোথাও?
 কিংবা অপেক্ষা করবে না ঝিনুকের ভিতরে যেভাবে অপেক্ষা করে দেহ,
খোলসটুকু আছে,
অচেনা মন যেন নিরেট প্রতিনিধি,
পৃথিবীর ভালো থাকায় আমার ফিরে আসা লেখা নেই,
ঠিকানা হারিয়ে আমি বিন্দু হতে চেয়েছি অবকাশে ।

মানুষকে ঠিকানা খুঁজে নিতে হয়। 
যেভাবে বৃষ্টি আমাকে খুঁজে পায় ....

Wednesday, July 3, 2024

বাবু মশাই -- কল্যাণী ব্যানার্জ্জী


বাবু মশাই 
কল্যানী ব্যানার্জ্জী 
২.৭.২৪
শুনছো নাকি বাবু মশাই
আমরাও তো মানুষ।
নেই আমাদের গাড়ি ঘোড়া ;নেই তো ভালো পোষাক জোড়া
রোজ খেটে যে খাই গো মোরা ;দিনের শেষে এসে ;
তাইতো মোদের জামা কাপড় যায় যে ঘামে ভিজে।
ঘাম ঝরিয়ে খেতে যে হয় ;সংসার চলে তাতে।
কোথায় পাবো ভালো পোষাক
সুগন্ধির সাথে।
আর আমি? আমার কথা কি বলব
থাকি ফুটপাথেতে পড়ে
মানুষ বলে ভাবেনা কেউ যায় যে লাথি মেরে।
বিরক্ত হয় যে সবাই সেটাও তো বুঝি
কি করব বলো আমরা মাথার উপর নেই তো ছাদ
পলিথিনকেই মানি।
আজকে এখানে কাল ওখানে এমনি করেই বাঁচি।
তবুও যে মানুষ আমরা ;তোমরা বোঝনা
মানুষ বলে তোমরা আমায় মনেই কর না।
জন্ম হোলো গরীব ঘরে খেটে খেতে হবে
পড়াশোনা জানিনাতো খাটি খালি গায়ে।
কারোর বা জন্ম হোলো ফুটপাথের ধারে
কেযে তার পিতা কেউ প্রশ্ন নাহি করে
সেখানেই যে বেড়ে ওঠা জীবন যাপন।
নামকরণ ও হয়না আমার অনামি যে আমি
এই ভাবতেই থাকি বেঁচে জানেন অন্তর্জামি।
আমাদের ও আছে কষ্ট ;আছে সুখ দুঃখ যন্ত্রণা
স্বপ্ন যে আমাদেরও আছে
আছে ঝুপড়িতে শুয়েও কল্পনা।
উপর থেকে দেখে শুধু বিচার কোরোনা।
হয়তো সুযোগ পেলে আমিও হতাম তোমার মত বাবু।
ভাগ্য মোদের করে রেখেছে সব কিছুতেই কাবু।

ভাঙা গড়ার খেলা -- মোঃ বদরুল হুদা

 ভাঙা গড়ার খেলা
মোঃ বদরুল হুদা
০২-০৭-২৪
ভাঙা গড়ার খেলার মাঝে
কাটছে সবার জীবন কাল,
দুখ সাগরে ভাসছে কেহ
ভাঙছে কারো সুখের ডাল।

শান্তি মনে রয় না সেথায়
দুখ যেখানে করে বাস,
কষ্ট জ্বালায় জ্বলে জীবন
তিলে তিলে হয়ে যে নাশ।

ভাঙা গড়ার এই জীবনে
কারো জীবন পায় না কূল,
হতাশাতে জীবন কাটে
দুঃখ হলো তারই মূল।

কারো জীবন সাগরেতে
উঠে কভু প্রবল ঝড়,
মনের শান্তি নষ্ট করে
ভাঙে কারো সুখের ঘর।

আঁধার কেটে কারো জীবন
দেখে কভু আলোর মুখ,
দুঃখ কষ্ট দূর হয়ে সব
বিরাজ করে সেথায় সুখ।

জীবন চলা থামে না তো
ভাঙা গড়া তাতে রয়,
কেউ তো হাসে কেউ তো কাঁদে
কান্না হাসি সঙ্গী হয়।

Tuesday, July 2, 2024

বুক জুড়ে হাত ছানি -- প্রাণেশ রঞ্জন গোস্বামী

 বুক জুড়ে হাতছানি 
 প্রাণেশ রঞ্জন গোস্বামী 
 ১/০৭/২০২৪ 
বুক জুড়ে হাতছানি ছটা নিশ্বাস টানি, 
প্রিয়র চোখে প্রিয়ার মুখের সুপ্ত বাণী।
আধ খানা চাঁদ মেঘের ফাঁকে হাসে ঘুমটা টানি, 
সরল মন গরল হয় এইতো বিধিলিপির কাহানী।

চেতনার উন্মেষ বুক ভরা ভালোবাসা, 
বুকের উঠানে নিত্য যার যাওয়া আসা।
নিত্য টানে নিত্য উচাটন সেই সুদূর আশা, 
বক্ষের ক্ষত ভরাট করার শুধু একটু মীমাংসা। 

সব স্বার্থে অন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে প্রেমের দুর্গন্ধ, 
তবুও বুক জুড়ে বসে কোমল মনের প্রেমে যার দ্বন্দ্ব। 
অলীক স্বপ্ন অসীম কল্পনা বহে সম্পর্কের জোয়ার, 
আবার নীড় ভাঙা ঢেউএ বন্ধ হয় বুক ভরা কারবার। 

অযাচিত প্রেমের জোয়ার  সরোবর উতাল পাতাল, 
গায়ে হলুদের দারুণ স্বপ্ন বাসনাকে করছে বেসামাল। 
আনুষঙ্গিক প্রতীক্রিয়ায় বাহ্যিক মন হয়েছে উদাস, 
বুক জুড়ে হাতছানি এটাই তার আভ্বন্তরিক বহিঃপ্রকাশ।

মহাপরিনির্বাণ- এর পূর্বে বুদ্ধ -- বনানী সাহা

 মহাপরিনির্বাণ -এর পূর্বে বুদ্ধ 
 বনানী সাহা 
 ০১- ০৭- ২০২৪
যেতে দাও আমায়, বেঁধে রেখো না ।
এই রাজ প্রাসাদ, এই রাজ ঐশ্বর্য ,আমার জন্য না।

এই রাজ ঐশ্বর্য, রাজ প্রাসাদ, এই প্রাসাদের---
 উঁচু দেয়ালের বাইরেও একটা জগত আছে ---
যেখানে থাকে, দীন -দুঃখী- রোগী !
যেখানে আছে জরা -মৃত্যু -ব্যধি --
আছে ক্ষুধার যাতনা;
আমাকে যেতে হবে সেথা, আর বেঁধে রেখো না ।

এই স্ত্রী ,পুত্র  ,পরিবার এই সংসার---
 এ যে বড়োই মায়ার বাঁধন !
এ বাঁধন ছিন্ন করে ,যেতে হবে আমায় ।
ঐ শোনো, কত অসহায় মানুষের আর্তনাদ---
 আর বিষাদময় কান্না শোনা যায় !
আমাকে খুঁজতে হবে, সবার কষ্টের পরিত্রাণের উপায় !

এই ঐশ্বর্য আর ভোগের মধ্যে আটকে থেকে---
 কি লাভ ? জরা- ব্যাধি এসে গ্রাস করবে--
 যখন ,এই সাধের দেহ খানি!
মৃত্যুর করাল গ্রাস ,যখন ছিনিয়ে নিয়ে যাবে --
একদিন শত পাহারার মধ্যে থেকে--
 আপন জন দের কাছ থেকে !
না না, আর নয়---,।
 মিছে এই সংসারের মায়ায় ,আটকে থাকা!
যেতে দাও আমাকে, বেঁধে রেখো না ।

আমাকে খুঁজতেই হবে কোথায় মুক্তি ?
এই রোগ -শোক -জরা -ব্যাধি -মৃত্যুর থেকে,--- মানুষের মুক্তির উপায় ।
মানুষের দুঃখ -কষ্ট -পাপ -তাপ থেকে ---
 পরিত্রাণ পাওয়ার উপায়।
ঐ শোনো, আমি শুনতে পাচ্ছি---,
 শত শত লোকের কান্না !
যেতে দাও আমায়,আর বেঁধে রেখো না ।

Sunday, May 19, 2024

মনোরমা বসুন্ধরা -- নিবারণ চন্দ্র দাস

মনোরমা বসুন্ধরা
নিবারণ চন্দ্র দাস 
১৪/০৫/২০২৪
এমন একটা জগৎ গড়ি
   হিংসা বিবাদ হীন,
এমন একটা ধরিত্রী মা
   উন্নত দিন দিন।

হোক না এমন জীবন যাপন
   নয়কো বিসম্বাদ,
করবে না কেউ ইচ্ছে মতন
   জীবনটা বরবাদ।

এমন একটা উঠুক না ঝড়
   বিশ্বজগৎ ময়,
মন্দ সকল ধুয়ে মুছে
   পবিত্র সঞ্চয়।

একটা এমন প্রদোষকাল
   সঞ্জীবনী ভরা,
সুসজ্জিত শ্যামলিমায়
    আবার বসুন্ধরা।

লহর আসুক এমন একটা
    নিমজ্জিত গ্লানি,
আবার "মানুষ" হোক না মানুষ
    কিই বা এমন হানি।

হয়তো এমন একটা দিন
   সবার হাতে কাজ,
আসছে হয়তো সেই সুদিন
    ভুলেই লজ্জা লাজ।
            

আজ কবিতার ছুটি -- চিত্তরঞ্জন সাঁতরা

আজ কবিতার ছুটি 
চিত্তরঞ্জন সাঁতরা 
১৫/০৫/২০২৪
এখন কবিতা লেখালেখি আপাতত 
বন্ধ রেখেছি।
ভাবনাগুলোকে বিশ্রাম দিয়েছি মনের 
অন্তরালে।
এখন আর কল্পনা নয়। ওগুলোকে
গুটিয়ে রেখেছি ভাবনার কোনে।
এখন আর কবিতা নিয়ে বেশি কিছু 
ভাবি না।
কল্পনা ও ভাবনাগুলোকে দিয়েছি ছুটি।
ওরা থাক নিরিবিলে খোশ মেজাজে।
এখন শান্ত মেজাজে কাটাতে চাই আয়েসি 
জীবন।
এখন আর উদাসীন ভাবনায় উড়ে যেতে
চাই না।
হারাতে চাই না নিজেকে নিরুদ্দেশে।
কবিতা লিখে এখন আর অযথা সময় 
কাটাতে চাই না।
একটু রোমান্টিক জীবন নিয়ে নাড়াচাড়া 
করতে চাই।
তুমি এস আমার পাশে। বস একান্ত 
নিরিবিলিতে দেহ ছুঁয়ে হৃদয়ের গভীরে।
কিছু কথা বল আবেগী উচ্ছ্বাসে নয়ত
আলিঙ্গনে শত চুম্বনে।

প্রায়শ্চিত্ত -- বরুণ কুমার বিশ্বাস

প্রায়শ্চিত্ত"
বরুন কুমার বিশ্বাস
১৬/৫/২০২৪
এই অবেলায় হিসাবের খাতাখানি দেখি
শুধু ভরে আছে কত সব গরমিলে,
কখন যে পেরিয়ে গেছে দিনগুলো চুপিচুপি
ভেবেছি বেশ তো আছি হেসে খেলে।

এতকাল যারা যোগালো জীবনে বাঁচার রসদ
ভাবিনি বিনিময়ে কি পেয়েছে তারা,
যোগফলই মেলাতে চেয়েছি শুধু বারে বারে
আজ দেখি জীবনটা শুধু বিয়োগে ভরা।

শেষ বেলাটুকু পোহালে ঠিকানা বদলে যাবে
সেই তারাদের দেশে নীল নীলিমায়,
মত সব মান-অভিমান পড়ে রবে অবহেলে
আপনও হবে পর এক লহমায়।

কোনদিন বুঝিনি কত কাজ রয়ে গেছে বাকি
কত কথা হয়নি এখনো বলা,
অভিমানে সরে আছি যাদের থেকে বহু দূরে
হবে কি আর একসাথে পথ চলা!

জীবনের প্রতি ক্ষণে যত সাথী হয়েছিলে পরিচিত
আছো দূরে কেউ করে অভিমান,
সব ভুলে আজ এ মিলনের আহবানে দিও সাড়া
বড় সাধ জাগে পেতে এই শেষ দান।

মিলন চাই -- মানিক চন্দ্র দাস

মিলন চাই 
মানিক চন্দ্র দাস  
১৬|০৫|২০২৫ 
মিলন চাই     ভাই ভাই 
মিলন কার?  তোমার আমার 
মুসলিম-হিন্দু    একই রক্তবিন্দু 
জাতে জাতে      রক্তে রক্তে 
ব্রাহ্মণ চণ্ডালে    ঐক্য তালে 
গলে গলে           দলে দলে 
এই ভারতে        একই মতে 
প্রাণে প্রাণে        মায়ার টানে 
চলবে সবে          এইতো হবে 
আমাদের পণ    আমাদের মন ।

মিলন কার?       তোমার আমার 
ভাষায় ভাষায়     ভ্রাতায় ভ্রাতায় 
ভারত জনে         মনে মনে 
ভারত মাতা        তুলবে মাথা 
তাঁর সন্তানে        প্রাণে প্রাণে 
মিলন দেখে        যাবে রেখে 
এইনা স্মৃতি        মানবপ্রীতি 
এই ভাবনায়      ভারত মাতায় 
ভুলবে দুঃখ        ফুলবে বুক 
ঐক্য রক্ষায়       এগিয়ে আয় 
ভারতবাসী          ফুটবে হাসি 
মুখে সবার         ব্যথা কি আর?

Tuesday, May 14, 2024

কবির ভাবনা -- স্বপন আহাম্মেদ

কবির ভাবনা
কবি স্বপন আহাম্মেদ 
১৫/৫/২৪
দুঃখ কষ্ট বুকে নিয়ে
বাস করে সব কবি। 
তবু তাদের লেখায় থাকে
বেঁচে থাকার ছবি। 

কবি হয় না স্বপ্ন হারা 
ভাবে আপন মনে 
প্রজাপতির পাখা মেলে
পুষ্প ফোটা বনে।

যদিও অভাব বারো মাসই
থাকে কবির ঘরে
ক্ষুধা পেটে কাব্য লিখে
বিলায় মানব তরে।

কবির মনে কূট মানুষের 
থাকে নানান ক্ষত
তবু কবি করে না তো
লেখায় মাথা নত।

বাস্তবতা মেনে নিয়ে
স্বপ্নের মিনার গড়ে
কবিরা তাই আলোর বাতি
মানবতার তরে।

ছোটগল্প -- সুমন

ছোটগল্প
  সুমন
১৩.০৫.২০২৪
তোমার ছবিতে একটা ছোটগল্পের রসদ খুঁজে পেয়েছি,
যেখানে তোমার আমার জীবনের হিসেবে মিল দেখেছি,
অতঃপর, যেদিন প্রথম সমুখে অকস্মাৎ এসে দাঁড়ালে,
মুখোমুখি, চোখের ইশারায় পবিত্র প্রেমের জোয়ারে ভাসালে।
তোমার দু'চোখে আরেকটা আস্ত পৃথিবীর দিশা পেয়েছি,
উথালি পাথালি প্রেমময়ী উষ্ণতার পারদে হৃদয় মেলেছি,
চাহনি টেনেছে সমুদ্রতটে আছাড়ি বিছারি সাঁতারে উথলি,
নৌকা বিহারে হৃদয়ের অলিন্দে ভুলিয়েছো মান সকলি।
সেদিনই তোমার জীবনের উপাখ্যান আকুলতা নিয়ে শুনেছি,
হৃদয় উজাড়ি উদ্বেলিত মনপ্রাণ তোমাতেই আমি সঁপেছি,
খানিকটা ঋণের বোঝাও হয়তোবা আপনার করে বুঝেছি,
প্রাণপ্রিয়া তোমায় অন্তরের অন্তঃস্থলে পবিত্র আসনে বসিয়েছি। 
তোমারই পরশে উদ্ভ্রান্ত পাগলপারা প্রেমের আগুন জ্বেলেছি,‌
পাহাড়িয়া শীতলতা উপেক্ষা করেই সারারাত আমি জেগেছি,
আঁধারি নিশীথে জোনাকির আলোয় প্রেমের সাহিত্যে ভেসেছি,
লায়লা মজনুর রূপকথার ন্যায়, ছোটগল্পে কলম ধরেছি।
ছোটগল্পের বৈশিষ্ট্যে যেমনটা ভাবা, তেমনই থামতে শিখেছি,
ডাইরির পাতায় শেষাংশে তথাপি তোমারই কবিতা লিখেছি,
'শেষ-হয়েও-যেন-হইলো-না-শেষ', এমনই যবনিকা টেনেছি,
ক্ষমিও আমারে, ওগো সুচরিতা, ছোটগল্পের গান গেয়েছি,
আগামীর পথে, রেখো মোরে সাথে, তেমনই আস্থা রেখেছি।

একা আমি -- সুরজিৎ পাল

 একা আমি 
 সুরজিৎ পাল 
 ১৩.৫.২০২৪
একা আমি অপেক্ষায় মানি,
চলে এসো....
মন মন্দির করে আলো।
তোমায় আমি খুঁজে চলি,
আঁধার চোখে সবই দেখি কালো।
 অন্ধকারে হাতড়ে চলি,
মন তো শুধু কেঁদে গেলো।
কোথায় আওয়াজ দেব তোমায়?
মন কি বোঝে সেতু বন্ধনের সময়?
 বিরহের এই করুন বাঁধন ,
ছাড়বে কবে আমার রোদন?
একা আমি...
নজর দাও তুমি....
যেখানে থাক সেখান থেকে দেখো।
না জীবনকে আনন্দ চেপে ধরে  - 
না মৃত্যু হাতছানিতে নরে।
চোখে ঝরে মুক্ত ধারা,
গলা চেপে হতাশ কায়া।
খুঁজে চলি করুন হিয়া,
কাটবে কবে এ মায়া?
আমি বসা আপন মনে,
দিন ঢলে যায় সংগোপনে ।
হৃদয়ের এ কেমন ভাষা,
কাটবে কবে আমার দশা?
বলতে আমি অপারগ জানি ,
আপনারা বলুন আমি কি  করি  ????

মাতৃ দিবস -- সুজিত শর্মা বিশ্বাস

 মাতৃ দিবস 
 সুজিত শর্মা বিশ্বাস 
১২/০৫/২০২৪
সিংহাসনে অনেক মুর্তি আছে সারে সার, 
নাইকো সেথায় জগন্মাতা মুর্তি আসল মা'র ?
কষ্ট করে করলো ধারণ আপন গর্ভে তার,
সেই মায়েরে অবহেলা করিস না ভাই আর।
খায় না নিজে খোকার তরে দেয় বিলিয়ে সব
তিনিই শিশুর জগৎ প্রভু তিনিই মহান রব।
ছোট্ট থেকে মানুষ করেন, গড়েন মানব রূপ 
তাঁর ছোঁয়াতেই আঁধার কেটে প্রকাশ মনের ধূপ।
তাঁর কথাতেই কথা বলে সেটাই মুখের ভাষ 
মাতৃভাষা  মাতৃদুগ্ধ  মেটায়  মনের  আশ।
মা মা বলে ডাকতে শেখা শিশুর প্রথম বাক
মায়ের ভাষার ভান্ডারেতে শব্দ মালার চাক।
তাঁর হাত ধরেই চলার শুরু, শক্ত কঠিন মাঠ,
এই জীবনের প্রথম গুরু তাঁর কাছে নিই পাঠ।
তিলে তিলে গড়ে তোলেন মা যে আমার তাই
তার কোনো দোষ না হয় বিচার সেটাই আমি চাই।
পাথর মাটি দেব-দেবীদের পূজন করে লোক 
জ্যান্ত মায়ের হয় না পুজো তাইতো মনে শোক।
"মাতৃ দিবস" পালন করে কতোই ঘটা হায় !
বৃদ্ধাশ্রমে কাঁদছে মা যে দেখার কেহ নাই।

প্যালার খেলা -- উত্তম গোস্বামী

প্যালার খেলা
উত্তম গোস্বামী 
১৩/০৫/২০২৪
দাসপুরের ওই কলোড়াতে
আছে খেলার দল 
ট্রফি পেয়ে বাড়ছে তাদের 
দারুন মনোবল। 

গোপালপুরে ক্রিকেটের 
কালকে আছে ম্যাচ 
বলছে প্যালা করব আউট 
ধরব সবার ক্যাচ। 

শুনরে প্যালা খেলতে গেলে 
বুকে চাইতো বল 
ভরসা রেখে খেললে পরে 
এগিয়ে যাবে দল। 

কোচের কথা শুনেই প্যালার 
 ঘুম ধরে না রাতে 
বুকেতে বল যায় কি রাখা?
খেলার সাথে সাথে।

খেলার মাঠে নামলো প্যালা
মাঠে দারুণ কাদা 
প্যালার বুকেতে দড়ি দিয়ে কষে 
আছে ফুটবল বাঁধা।

'মাথায় আছে ভর্তি ওরে
গোবর পোকা তোর 
'বল' মানে কি ফুটবল ওরে?
শক্তি-মনের জোর।'

মায়ের জন্য -- রেজাউল করিম বিশ্বাস

মায়ের জন্য
রেজাউল করিম বিশ্বাস
১৩ / ০৫ / ২০২৪
মাতৃহারা সন্তানের আজ মাতৃ দিবস পালন 
অভিমানে গেছো চলে আমি ও  অভিমানী
চোখের জল ঝর্ণা হয়ে বহে চলে নদে।

ঐ যে তুমি চিরশান্তিতে চিরনিদ্রায় শায়িত মাঠের 'পরে 
তেঁতুল তলে ভাটপিটুলি কত রকম গাছে ঘেরা 
কাঠ মল্লিকা সুবাস ছড়ায় দু'বেলা তোমার চারণতলে।

পাখিরা গান গেয়ে  যায় মনের আনন্দে সেথায় তুমি
মা ডাকতে মন করে ছট্ফট্ ব্যথায় ব্যথায় দিন যায়
তোমার পরশ পেতে ব্যকুল হৃদয় করে আনচান।

আমরা নিয়মে বাঁধা সবাই নিয়ম মেনে চলি তবুও ---
ভাঙ্গা হৃদয় গুমরে ওঠে একটুখানি দেখাবো বলে
হাজারো ডাকে হাজারো স্বপ্নে মনভরে না মাগো।

জানো 'মা' আমাদের মন ক্ষুদ্র হতে অতি ক্ষুদ্র হয়েছে আজ
তোমাকে বেঁধেছি তিনশত পঁয়ষট্টি দিনের মাত্র একটি দিনে 
তুমি  আছো অন্তরের অন্তরে প্রতিটা স্পন্দনে সুখে দুঃখে।

পারিনি হয়তো তোমাকে মূল্য দিতে চিনিনি তখন আমি 
 তুমি যেখানেই থাকো ভালো থেকো শান্তিতে থেকো  
তোমার অনাথ সন্তানদের কথা ভেবো ত্রুটি মার্জনীয়।

রোমানা ডাকে দাদি দাদি চোখের জলে ভাসে রিজওয়ান
পুবের ঘরে জানালা খুলে আজও তোমায় খুঁজি সারা বেলা
ইজি চেয়ারটা শুন্য আজ  তুমি বিহীন  বড্ড একা একা।

 

Sunday, May 12, 2024

বিশ্রাম বালুকাবেলায় -- সূর্য্যোদয় রায়

বিশ্রাম বালুকাবেলায়
সূর্য্যোদয় রায়
১১/০৫/২০২৪
এখনও বহুদূর চলে যাবার পর হয়তো আলো দেখা যাবে,
এখনও অনেকগুলো ক্লান্ত সমাধি,
অকূল মাটির বক্ষে ফিরে আসে যদি;
তারা চির জন্মের মতো এ সংসার হতে বিশ্রাম খুঁজে পাবে?

এখনও বহুদূর চলে যাবার পর হয়তো আলো দেখা যাবে,
এখন আর কত যুদ্ধের পর,
মানুষ থামাবে হিংসার স্বর;
ঢেউ গুলো সব অস্ত পাথারে তাদের চির বিশ্রাম খুঁজে নেবে?

কোথায় বাদল মেঘের কোলে ভেসে আছে সেই উত্তর
কোথায় বাদল মেঘের কোলে ভেসে আছে সেই উত্তর

বহুকাল মনে ওই গগনে উঠেছে কি কোনও ঢেউ?
আলোকনয়ন তরঙ্গমালায় ফিরে আসে যদি কেউ।

নিজের ব্যাপারে ভেবেছ কি কখনও বলেছ কি কোনও কথা?
ক্লান্ত জলধি শিখরে অটল পাহাড়ে আর নাই বা পেলে স্বাধীনতা।

তুমিতো জান আরও আরও বহুবার
চুপ করা ভান কিছু না শোনার 
সব দেখে শুনে তাইতো আবার নামিয়ে নিচ্ছ মাথা!

সাত সাগরের ঢেউয়ে নাচ্ছে সেই আলাপ মনে রেখ চির দিনে
সাত সাগরের ঢেউয়ে নাচ্ছে সেই আলাপ মনে রেখ চির দিনে

তোমায় আমায় মরতেই হবে সেটা কি বুঝতে পারো,
এই পথে অনেকটা কাল হয়েছে বিগত,
তাইতো বোধহয় দেখি সকলে নিহত;
আমাদের ই সাথে আর কত মানুষ মরবেই যে আরও?

কোন হাওয়ার শৃঙ্গে দেখেছ এর উত্তর আজ
কোন বাদল দিনের অশ্রু তিমিরে শুনেছ এর আওয়াজ,
কবেই শুনেছ কবেই শুনেছ কবেই শুনেছ 
কবেই শুনেছ সেই মত্ত হাওয়ার আওয়াজ ;
পারো যদি আর একবার সব ছেড়ে ছুড়ে এর উত্তর 
খোঁজো তবে।

এখনও বহুদূর চলে যাবার পর হয়তো আলো দেখা যাবে।।

হৃদয়ে অর্গল -- অমি রেজা

হৃদয়ে অর্গল
অমি রেজা
১১-০৫-২০২৪
আমি প্রতিনিয়ত ভাবি 
একদিন তোমার মুখোমুখি দাঁড়াব 
চোখের তরে চোখ রেখে শুধাইব-
কেমন করে পারলে? 
বেমালুম ভুলে গিয়ে
অনেক প্রেমের অনেক জ্বালা চুকিয়ে দিয়ে 
আপন হৃদয়ে অর্গল দিতে? 

হে পাথরী একবারও কি পড়ে না মনে?
শ্রাবণের টিপটিপ বৃষ্টির কথা
বাবুই পাখির বাসা ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হওয়ার কথা
কৃষ্ণচূড়ার রক্ত বর্ণ ফুলের কথা
নদীর বুকে উত্তাল ঢেউয়ের কথা
ডানামেলা একঝাক গাঙচিলের আকাশ সাতঁরাবার কথা
সবুজ ধানের বুকে বাতাসের শিহরণের কথা
হাতে হাত রেখে মেঠো পথ ধরে অবিরাম ছুটে চলার কথা।

আমি প্রতিনিয়ত ভাবি
একদিন তোমার মুখোমুখি দাঁড়াব
সমুদ্র অবগাহনে আবার আমি যুবা হবো
পাহাড়ের আলিঙ্গনে আমি ইস্পাত কঠিন হবো
আগুনের অগ্নিস্ফুলিঙ্গে আমি বিদ্রোহী হবো
বিরহের নীল বেদনা জমিয়ে জমিয়ে আমি পাথর হবো -

তারপর আমি তোমার মুখোমুখি দাঁড়াব
চোখের তরে চোখ রেখে শুধাইব 
হে পাথরী কেমন করে পারলে,
বেমালুম ভুলে গিয়ে
আপন হৃদয়ে অর্গল দিতে?