Wednesday, July 10, 2024

বন্ধুর পথ -- এম হানিফা

বন্ধুর পথ
এম হানিফা
(১৯/০৫/২৪)
আমি ঢেউ দেখেছি অথৈ সাগরে
অনল দেখেছি অন্তরে 
ভালোবাসা দেখেছি মায়ের মাঝে 
সত্য দেখেছি প্রকৃতি জুড়ে।

আমি নীল দেখেছি নীলিমা জুড়ে
কান্না দেখেছি মজলুমের 
আমি আবেগ দেখেছি আশেকে আর
পরাজয় দেখেছি অন্যায়ের।

আমি কষ্ট দেখেছি খুব কাছ থেকে এবং 
চিনেছি মানুষ বিপদে
আমি অন্ধকার দেখেছি গভীর নিশীথে 
আপন খুঁজেছি বিষাদে।

আমি লজ্জাবতীর লজ্জা দেখেছি আরো
দেখেছি পাষাণের নিষ্ঠুরতা 
আমি কখনো সমীরণের মহা শক্তি দেখেছি 
আরো দেখেছি অমানবিকতা।

আমি মানুষের মনুষ্যত্বকে খুঁজে বেড়িয়েছি 
আর পেয়েছি নতুন শিক্ষা 
আমি অন্যায়ের প্রতিবাদ শিখে তা করেছি
আর তাই পেয়েছি অনেক দীক্ষা।

শান্তি চাই -- অরবিন্দ সরাক

 শান্তি চাই
 অরবিন্দ সরাক
২০/০৫/২০২৪
অগ্নিরথের চাকা তোমার
  থামাও রবি এইবার, 
শুনতে কি পাচ্ছো না তুমি
  জীবজগতের হুংকার। 

 তোমার তাপে বিশ্ব কাঁপে
     এবার শান্তি চাই,
বারিধারা এখন নামাও তুমি 
    এছাড়া উপায় নাই।

  তোমার তাপে কাঁপছে ধরা
       পুড়ছে লতা পাতা, 
   ঘরের বাইরে গেলে পরেই
       লাগছে সবার ছাতা। 

     এবার তুমি শান্ত হও
  তোমার রুদ্রমূর্তি ছেড়ে, 
নইলে গাছপালা যাবে শুকিয়ে
     উঠবে না আর বেড়ে।

মনকে করো সুখী -- মোঃ নুরুল ইসলাম রাকিব

 মনকে করো সুখী 
 মোঃ নূরুল ইসলাম রাকিব
 ০৯/০৭/২০২৪
সবুজ ঘাসে ঢগায় ফাঁসে
বৃষ্টি ভেজা বিন্দু হাসে 
রবির আলো পেয়ে,
সকাল বেলা চলছে খেলা 
আলো ছায়ায় মেঘের ভেলা 
আসছে শুধু ধেঁয়ে!

বাতাস নাচে রবির আঁচে 
এই গরমে প্রাণ কি বাঁচে 
পানি তৃষ্ণা পেলে?
গাছের ছায়া বাড়ায় মায়া
ওই দূরে যে উজান নায়া 
সুরে কন্ঠ মেলে!

শালিক ডাকে পাতার ফাঁকে 
আকাশ মেঘে বৃষ্টি আঁকে 
বিজলী রাণী জ্বলে,
শব্দে জাগে সবার আগে 
তৃষ্ণা মনে চমক লাগে
বজ্র সেনা বলে!

আষাঢ় শেষে বৃষ্টি এসে 
চতুর্দিকে বন্যা ভেসে 
কাঁদে গরীব দুখী,
জিন্দা লাশে বাঁচার আশে 
জলদি গিয়ে দাঁড়াও পাশে 
মনকে করো সুখী!

Tuesday, July 9, 2024

হোক শপথ -- সূর্য্যোদয় রায়

 হোক শপথ
  সূর্য্যোদয় রায়
  ১৮/০৫/২০২৪
হাতে হাতে নিয়েছি শপথ
নতুন এক অঙ্গিকার,
প্রয়োজন সকলের ঋদ্ধ মত
এসো হাতে হাত রাখি সবার।

চলার পথে মেঘ ঘনাক
আসুক বাঁধা আজ প্রতিদিন,
নতুনেরা গল্প শোনাক
মুছে যাক আজ সব ঋণ।

সত্যের পথে বিপুল বাঁধা 
আজও যে সত্য নিশ্চিত নয়,
তবু মোরা গড়ি নব মেধা
হবেই হবে আমাদের জয়।

মরে যেতে সকলেই পারি
মরনেই সব নয় শেষ,
জেনে নিক মিথ্যার কারবারি
এই হাতে গড়বই দেশ।

ছোটো ছোটো আজও এই হাত
তবু ছোট নয় আমাদের প্রাণ, 
তাই নাই সংকোচ দিন রাত
প্রত্যয়ে তাই আজও গাই গান।

আলো দেখি আঁধারের পরে
দেখি আশা বিস্মৃত দিনকাল,
তাই আজ মরণেও ঘরে
ছাড়ি নি তো জীবনের হাল।

এইখানে জেগে আছে আশা
জেগে আছে আমাদের মন,
ভোলে নি যে দূর্যোগ ভাষা
বঞ্ঝাক্ষুব্ধ রাতে বাদলের বন।

তাই আজও হাতে হাত রাখ গো
প্রতিজ্ঞার বন্ধনে দৃঢ় সেই হাত,
ঠিক একদিন জাগবেই দেখে নিও 
ঘৃনার অসীম দূর্লঙ্ঘ্যতায় দগ্ধ এ বরাত।

ইন্টারভিউ -- উত্তম গোস্বামী

 ইন্টারভিউ
 উত্তম গোস্বামী 
  ১৮/০৫/২০২৪
হাঁদারামের ইন্টারভিউ 
চলেছিল গতকাল 
প্রশ্ন ছিল চাল কুমড়োয়
 ক'ভাগ থাকে চাল?

ভাবতে থাকে হাঁদা শুধুই 
ছিঁড়ে মাথার চুল 
একশো ভাগ বলে হাঁদা 
উত্তর দিল ভুল।

হাঁদার কাছে এলো এবার 
দ্বিতীয় প্রশ্ন-বান
'মান কচুদের কোথায় থাকে 
মান আর অপমান।'

প্রশ্ন শুনেই হাঁদা এবার 
 ঝরায় দেহের ঘাম
মনে মনে করতে থাকে 
হরে কৃষ্ণ নাম। 

'বলতে পারো গোলাপজামের 
কেন এতো এর দাম?
ক'ভাগ থাকে গোলাপ এতে
 ক'ভাগ থাকে জাম?'

মুচকি হেসে বললো শেষে
দুষ্টু হাঁদারাম 
বলুন না স্যার আমার কেন 
গোবরগণেশ নাম।

শ্রাবণের রঙ -- সুরজিৎ পাল

  শ্রাবণের রঙ
 ‌‌ সুরজিৎ পাল
   ৮.৭.২০২৪
ঝমঝম বর্ষণ-অবিশ্রান্ত শ্রাবণ, 
চারিধার ডুবায়-দয়া হীন প্লাবন।
চোখ সম্মুখে-নদী ভাঙ্গন,
তলিয়ে যায়-বাস ভবন।
শ্রাবণ ধারায়-শৃঙ্খলিত আবেশ,
ধিকিধিকি আগুন-মনে প্রবেশ ।
সিক্ত বদন, সিক্ত বসন,
বর্ষণ ছন্দে-চিন্তার স্মরণ।
ইংগিত লক্ষণ-বজ্র দংশন, 
 জ্বলন জ্বালায়-এ কিসের গর্জন?
মন উদাস- বিরাগী গম্ভীর কাব্য,
পাওয়া না পাওয়া-প্রকৃতির চোখে দুঃসাধ্য।
ছমছম নূপুরের রিনিঝিনি বোল,
ক্লান্ত নয়ন তুলেছে রোল।
স্বপ্ন সিক্ত কুয়াশাচ্ছন্ন রূপ,
আয়নায় ধোঁয়াশা কল্পনার কুপ।
চারিদিক ছোটাছুটি ত্রাণ গেল কোথা ,
রাজনীতি -
আয়না কি জানে সত্যি কি স্থিতি?
বর্ষণ কর্ষণ বাগান হয় উর্বর?
মাথায় হাত কাগজের শব্দ কড়কড়।
কড়কড় গুণে পৌঁছাই মাহফিলে,
হৃদয় বেঁধেছে অলিখিত ঋণে।
ঝরঝর স্রোতে ভেসে প্রতিক্ষার দীর্ঘশ্বাস,
শ্রাবণ হয়েছে কারো সর্বনাশ কারো পৌষমাস।

Monday, July 8, 2024

চিত্তরঞ্জন সাঁতরা

কবিরাও কাঁদে
চিত্তরঞ্জন সাঁতরা 
০৭/০৭/২০২৪
কবিরাও কাঁদে হাউমাউ করে
চোখের জল ফেলে।
বুকের জমাট পাথরের নড়াচড়া
হৃদপিন্ডকে আঘাতে আঘাতে
রক্তাক্ত করে।
হৃদস্পন্দনের গতি ক্রমশ‍ঃ ক্রমশঃ 
ঝিমিয়ে আসে অজস্র রক্ত স্রোতে।
গড়িয়ে পড়ে দুচোখে নোনা সমুদ্রের 
উচ্ছ্বাস ঢেউ।
কবিরা কাঁদে গোপনে নীরবে।
দুচোখে ক্রমাগত ঝরে পড়া ফোঁটা 
ফোঁটা শিশিরের বিন্দু জলধারা হয়ে
ভেজায় বুকের জমাট স্তূপাকারের
বেদনা।
কবিদের দুঃখ বেদনার হতাশা অব্যক্ত
হয়ে ভাসে কাব্যিক ঝংকারে।
বাস্তবতায় ভেসে চলে নিঙরে নেওয়া
হৃদয়ের হাহুতাশ হতাশার আগুনের
লেলিহান শিখায় লেখনীর পাতায়
পাতায়।
কবিদের জীবনে থাকে এক ব্যক্তিগত
ব্যর্থতার সুর যা ভাবনা কল্পনাকেও হার
মানায়।
তাই কবিরা অনিচ্ছায় কেঁদে মরে একটু
হালকা হতে বুকের পাথরটাকে সড়িয়ে।
কবিরা কাঁদে লেখনীতে যা গল্প কথা
নয় ,নয় কোনো কাব্যিক সৃষ্টি, শুধু বলে
যাওয়া বাস্তব জীবনের দুঃখ বেদনা
হতাশার এক মলিন কাহিনী।

মনোকথা -- সুব্রত সেন

 মনোকথা
 সুব্রত সেন
  ০৬\০৭\২০২৪
আজকাল আর কেউ সময়ে আসে না৷ 
বর্ষা শরৎ বসন্ত এরা যেন সময় জ্ঞানটা ভুলে গেছে
কখনও কখনও বেপাড়ার ছেলেদের মত মাঝে মাঝে
উঁকি ঝুঁকি দেয় , মেঘ৷
জানালার ফাঁক দিয়ে কিছু সন্দেশ পাঠায় ৷

মেঘ আর বৃষ্টি এরা সহ পাঠি ,এক পাড়ায় থাকে
আকাশ ওদের বন্ধু..৷
আজ হঠাৎ বৃষ্টি রাগে অভিমানে অসময়ে এসে সব তোলপার করে৷
ঘর মাঠ ঘাট পাঁকা ধান ক্ষেতে যা ছিল সব ..৷

এদিকটা চুপচাপ,
তবু বৃষ্টির স্বরলিপি ঢুকে পরে ঘরে ঘরে৷
আর তখনই শুরু হয় কলোনির প্রতিদিনের রেওয়াজ সা-রে-গা-মা৷
গর্জে ওঠে আকাশ,তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে রন নৃত্যে গাছপালা, 
মেঘমল্লারের বন্দিশ টা ঢিমে তালে ভেসে আসছে   তখনও
ধীরে ধীরে রাত  নেমে আসে৷

অশান্ত মেঘের কান্না লিখে রাখে আকাশের মনো কথা..৷

Saturday, July 6, 2024

বৃষ্টি এলো ঝেঁপে -- নিকাশ মালিক

বৃষ্টি এলো ঝেঁপে 
  নিকাশ মালিক 
   ০৫/০৭/২০২৪


সূর্য ঢেকে আঁধার আসে 
বাদল হয়েছে শুরু,
ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি পড়ে 
মেঘ করে গুরু গুরু।

সারাটা দিন মেঘলা আকাশ 
বৃষ্টি স্রোতে স্রোতে,
এমন দিনে মন ছুঁটে যায় 
একটুখানি ভিজতে।

গাছের পাতা হাওয়ায় নাচে
খুশির জোয়ারে,
হাঁসগুলো চেঁচামেচি 
 করে পুকুরে।

সাদা সাদা বক গুলো 
আকাশেতে উড়ে,
 মাছরাঙা মাছের নেশায় 
পুকুর ধারে ঘুরে।

চাঁদের দেখা পাবে না আজ
কালো মেঘের জন্য,
পেয়েছে প্রাণ এই বৃষ্টিতে 
শুকিয়ে যাওয়া অরণ্য ।

রোদেলা সকাল -- মোঃ আমিরুল ইসলাম

 রোদেলা সকাল
 মোঃ আমিরুল ইসলাম
 ০৪/০৭/২৪ ইং
আমার সারাটা সকাল তোমাকে দিলাম
তুমি এতটুকু কথা দাও আমাকে।
ভোরের আলোটুকু ডাকে ইশারায়
মিটিমিটি ফোটা ঐ কাননে।

যে তুমি আমার ছিলে হৃদয় গগনে
চাঁদ তারকার অসীম নীলিমায়,
সুরে সুরে বারে বারে গেয়ে যেতে নিরবে
সে তুমি আজ কেন এতো দূরে?
বুঝিনা কেন চায় এ পোড়া মন
কেঁদে কেঁদে ঐ দূর আকাশে।

জীবনের যে পথ চলা একই মোহনায়
সে পথ কেন গেল অযথা বেঁকে?
শান্ত মনের এ গহীনে জমেছে
অশান্ত বেদনার রাশি রাশি ঢেউ
তুমি আর কাঁদাওনা এ মন ওগো
মরে যাবো পাবেনা কোথাও তো কেউ।

ঐ দূর সীমানায় অসীম তেপান্তর
রংধনু এঁকে যায় নিরবে,
প্রজাপতির ডানা বেশতো আঁকাবাঁকা
হারিয়ে যায় মন সরবে।
কে যেন কানেকানে ফিসিফিসি হেসে বলে
আজ আর নেই বেশি দূর,
ওগো প্রিয়া হাত ধরো 
কবিতার খাতা খোলো
লিখে দাও মম নামে কবিতা,
সময়ের নীল খামে কোমল প্রেম জালে
বেঁধে নাও তুমি আমাকে।

স্বভাব দোষ -- দিলীপ ঘোষ

স্বভাব দোষ
দিলীপ ঘোষ
০৩/০৭/২৪

নিজেকে কষ্টি পাথরে ফেলে দেখতে না শিখলে
আয়নায় নিজের মুখ বারবার না দেখলে
নিজেকে ভুল ত্রুটির উর্দ্ধে রেখে এঁড়ে তর্ক করবে
উচিত কথার নামে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে
অতিমানব মনে করে কার্যত্ব নিজের দোষ ঢাকবে

গরু মরলে উপরওলা, ফুল গাছ পুতলে আমি
এমন আমিত্বের রোগ ধরা পড়ে
                ‌                কিছু মানুষের চাল চলনে
কম্পাসে ফেলে ভুল ধরতে পারে না তারা
আনাড়ির মত অপরের সমালোচনা করে

নীতির রেলে গাড়ি চালিয়ে দেখার অভ্যাস হারালে
পছন্দ অপছন্দের চোখে ঠিক ভুল দেখবে
যাকে না দেখতে পারো তাকে মুরগি করে
মনগড়া ছুরিতে কেটে সুপ্ত জ্বালা মেটাবে

আমার কোন ভুল নেই, ত্রুটি নেই
যাবতীয় অধঃপতন,-  এর ওর জন্য
যারা মনে করে প্রচার করে
তারা কখনোই নিজেকে করতে পারে না সংশোধন।

গোপনে -- দেবাশীষ চ্যাটার্জী

গোপনে 
 দেবাশীষ চ্যাটার্জী 
03/07/2024 
-------------------------------------

ভালো আছি বলি প্রশ্নের কাছে  
উত্তরেরা তাই খুশি 
ভালো থাকাটা অভিনয় শুধু  
জমা ক্ষোভ  রাশি রাশি |

বুকে জমা যত অভিমান সবই 
গোপনে গুমরে কাঁদে 
মনের দুয়ার হাট করে খুলে 
সে কথা বলি আর কাকে  ?

সব-ই সবার ভাগ্যে থাকেনা 
কিছুটা রহস্যে ঘেরা 
পাওয়া না পাওয়ার দোলায় দুলেছে
জীবন আজ দিশেহারা  |

পথ হারিয়ে বেপথে চলেছে 
পথিক আজ  শত শত
সবার মুখেতে মুখোশের হাসি
বুকে জমা শুধু ক্ষত |

হাসি মুখে আজ বিষের বাঁশরী  
হলাহলে ভরা মনের দ্বার 
হৃদয়পুরে বসবাস করে   
হিংসুটে এক অহংকার |

Friday, July 5, 2024

ভরা থাক -- নিবারণ চন্দ্র দাস

ভরা থাক 
নিবারণ চন্দ্র দাস 
০৪/০৭/২০২৪
সম্পর্কের ভাঙাগড়া জীবনের অঙ্গ,
পরাজয় আশঙ্কায় রণে দেব ভঙ্গ?
যুঝিতে যুঝিতে যবে জীবন যাপন,
যুদ্ধ দাঙ্গা ছেড়ে করি বসে আলাপন।

সংসার পারাবার কারাগার নয়,
সন্তরণ জানো যদি নাই কোন ভয়।
বাসন কোসনে হয় কত ঠোকাঠুকি,
সূর্য বিনা ফোটে বুঝি কভু সূর্যমুখী?

মনোজনে কষ্ট যদি দিই অবিরত,
উবে যায় শান্তি স্থিতি জীবনের মত।
দূরত্ব সে দূর নয় মানসিক বোধ,
সম্পর্কের মাঝে গড়ে লক্ষ অবরোধ।

লভিনু মানব প্রাণ ধরণীর 'পরে,
আনন্দ হাসি গান থাক চিরতরে।
জীব সেবা করে যাই সমগ্র জীবন,
পাষাণের বুকে করি প্রাণ সঞ্জীবন।
                   :::-:::

Thursday, July 4, 2024

বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব -- মোঃ নূরুল ইসলাম

  বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব
  মো: নূরুল ইসলাম
   ০৩/০৭/২০২৪
    মৃত্যুরে নাহি করি ভয়,
    আসুক প্রলয়।
    ধুয়ে মুছে যাক হিংসা দ্বেষ,
    যত সব ভেদাভেদ জাতি বিদ্বেষ।
    মানুষের রূপ ধরি দাঁড়ায়ে শয়তান,
    বিরাজিছে বিশ্বময় ভাবে বলীয়ান।
    দেশ দেশান্তরে দাঁড়ায়ে হিংস্ররূপে,
    লোভ লালসা উঁকি দেয় বিদ্রুপে।
    ধ্বংস যজ্ঞ ঘৃত দ্রব্য আরও কতো,
    প্রস্তুত রয়েছে শত শত।
    ধ্বংসের উল্লাসে বিপুলা আয়োজন,
    মৃত্যূকে ভয় তার নাহি প্রয়োজন।
    জাগ্রত হোক বিশ্ব মাতা,
    বিনিদ্রিতা শুনি মিষ্টভাষ।
    কহিবে না উচ্চ রবে ঘৃণ্য ভাবে,
    ছাড়ি সব পরিহাস।
    সকলের তরে আপনারে লয়ে,
    মানব রূপে সকলকে দেখে দাঁড়ায়ে।
    সামনে দেখে তার ভাই,
    করে হানাহানি মত্ততা,
    জেগে ওঠে মানবতা পবিত্রতা।
    প্রেম ভালোবাসা ছাড়া,
    এ জগতে বাকি কিছু নাই।

  

আষাঢ়ে বৃষ্টি -- বেবি মন্ডল

 আষাঢ়ে বৃষ্টি 
 মহারানী ( বেবী মন্ডল ) 
  ০৩ / ০৭ / ২০২৪.
 
অবশেষে বৃষ্টির ইস্তেহার বয়ে নিয়ে এলো আষাঢ়!
বৃষ্টি এলেই ভিতরটা ফুলে ফেঁপে ওঠে ,
যেন কোনো রোশনাই ঘিরে রয়েছে জীবন,
সারাদিনের প্রচণ্ড দাবদাহের পর অচেনা ইস্তেহার ,
বিদ্যুৎ চমকালে ফিরে যাই মাতৃ ক্রোড়ে ,
ফিরে আসে চঞ্চল শৈশব,
এভাবে রাত্রি আসে , দিনের পর রাত
বিকেল বলে কিছু নেই আমার সময়ে,
 পরিচয় বলতে নাটকের গুরুত্বপূর্ণ রোল,
মন দিয়ে শুনতে চেষ্টা করি জানতে চাই আর কতোটা ভিজেছে কে কোথায়!
আলোকবর্ষ ছুটে এসেছি এতো ঘাম এতো ক্লান্তি,
বহুদূরের গ্যালাক্সি আমার খোঁজ -
আর ব্ল্যাকহোলে মিলেছে প্রত্যয়,
আমার হারিয়ে যাওয়া সবকিছু - 
কখনও কি ফিরে আসবে না কোথাও?
 কিংবা অপেক্ষা করবে না ঝিনুকের ভিতরে যেভাবে অপেক্ষা করে দেহ,
খোলসটুকু আছে,
অচেনা মন যেন নিরেট প্রতিনিধি,
পৃথিবীর ভালো থাকায় আমার ফিরে আসা লেখা নেই,
ঠিকানা হারিয়ে আমি বিন্দু হতে চেয়েছি অবকাশে ।

মানুষকে ঠিকানা খুঁজে নিতে হয়। 
যেভাবে বৃষ্টি আমাকে খুঁজে পায় ....

Wednesday, July 3, 2024

বাবু মশাই -- কল্যাণী ব্যানার্জ্জী


বাবু মশাই 
কল্যানী ব্যানার্জ্জী 
২.৭.২৪
শুনছো নাকি বাবু মশাই
আমরাও তো মানুষ।
নেই আমাদের গাড়ি ঘোড়া ;নেই তো ভালো পোষাক জোড়া
রোজ খেটে যে খাই গো মোরা ;দিনের শেষে এসে ;
তাইতো মোদের জামা কাপড় যায় যে ঘামে ভিজে।
ঘাম ঝরিয়ে খেতে যে হয় ;সংসার চলে তাতে।
কোথায় পাবো ভালো পোষাক
সুগন্ধির সাথে।
আর আমি? আমার কথা কি বলব
থাকি ফুটপাথেতে পড়ে
মানুষ বলে ভাবেনা কেউ যায় যে লাথি মেরে।
বিরক্ত হয় যে সবাই সেটাও তো বুঝি
কি করব বলো আমরা মাথার উপর নেই তো ছাদ
পলিথিনকেই মানি।
আজকে এখানে কাল ওখানে এমনি করেই বাঁচি।
তবুও যে মানুষ আমরা ;তোমরা বোঝনা
মানুষ বলে তোমরা আমায় মনেই কর না।
জন্ম হোলো গরীব ঘরে খেটে খেতে হবে
পড়াশোনা জানিনাতো খাটি খালি গায়ে।
কারোর বা জন্ম হোলো ফুটপাথের ধারে
কেযে তার পিতা কেউ প্রশ্ন নাহি করে
সেখানেই যে বেড়ে ওঠা জীবন যাপন।
নামকরণ ও হয়না আমার অনামি যে আমি
এই ভাবতেই থাকি বেঁচে জানেন অন্তর্জামি।
আমাদের ও আছে কষ্ট ;আছে সুখ দুঃখ যন্ত্রণা
স্বপ্ন যে আমাদেরও আছে
আছে ঝুপড়িতে শুয়েও কল্পনা।
উপর থেকে দেখে শুধু বিচার কোরোনা।
হয়তো সুযোগ পেলে আমিও হতাম তোমার মত বাবু।
ভাগ্য মোদের করে রেখেছে সব কিছুতেই কাবু।

ভাঙা গড়ার খেলা -- মোঃ বদরুল হুদা

 ভাঙা গড়ার খেলা
মোঃ বদরুল হুদা
০২-০৭-২৪
ভাঙা গড়ার খেলার মাঝে
কাটছে সবার জীবন কাল,
দুখ সাগরে ভাসছে কেহ
ভাঙছে কারো সুখের ডাল।

শান্তি মনে রয় না সেথায়
দুখ যেখানে করে বাস,
কষ্ট জ্বালায় জ্বলে জীবন
তিলে তিলে হয়ে যে নাশ।

ভাঙা গড়ার এই জীবনে
কারো জীবন পায় না কূল,
হতাশাতে জীবন কাটে
দুঃখ হলো তারই মূল।

কারো জীবন সাগরেতে
উঠে কভু প্রবল ঝড়,
মনের শান্তি নষ্ট করে
ভাঙে কারো সুখের ঘর।

আঁধার কেটে কারো জীবন
দেখে কভু আলোর মুখ,
দুঃখ কষ্ট দূর হয়ে সব
বিরাজ করে সেথায় সুখ।

জীবন চলা থামে না তো
ভাঙা গড়া তাতে রয়,
কেউ তো হাসে কেউ তো কাঁদে
কান্না হাসি সঙ্গী হয়।

Tuesday, July 2, 2024

বুক জুড়ে হাত ছানি -- প্রাণেশ রঞ্জন গোস্বামী

 বুক জুড়ে হাতছানি 
 প্রাণেশ রঞ্জন গোস্বামী 
 ১/০৭/২০২৪ 
বুক জুড়ে হাতছানি ছটা নিশ্বাস টানি, 
প্রিয়র চোখে প্রিয়ার মুখের সুপ্ত বাণী।
আধ খানা চাঁদ মেঘের ফাঁকে হাসে ঘুমটা টানি, 
সরল মন গরল হয় এইতো বিধিলিপির কাহানী।

চেতনার উন্মেষ বুক ভরা ভালোবাসা, 
বুকের উঠানে নিত্য যার যাওয়া আসা।
নিত্য টানে নিত্য উচাটন সেই সুদূর আশা, 
বক্ষের ক্ষত ভরাট করার শুধু একটু মীমাংসা। 

সব স্বার্থে অন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে প্রেমের দুর্গন্ধ, 
তবুও বুক জুড়ে বসে কোমল মনের প্রেমে যার দ্বন্দ্ব। 
অলীক স্বপ্ন অসীম কল্পনা বহে সম্পর্কের জোয়ার, 
আবার নীড় ভাঙা ঢেউএ বন্ধ হয় বুক ভরা কারবার। 

অযাচিত প্রেমের জোয়ার  সরোবর উতাল পাতাল, 
গায়ে হলুদের দারুণ স্বপ্ন বাসনাকে করছে বেসামাল। 
আনুষঙ্গিক প্রতীক্রিয়ায় বাহ্যিক মন হয়েছে উদাস, 
বুক জুড়ে হাতছানি এটাই তার আভ্বন্তরিক বহিঃপ্রকাশ।

মহাপরিনির্বাণ- এর পূর্বে বুদ্ধ -- বনানী সাহা

 মহাপরিনির্বাণ -এর পূর্বে বুদ্ধ 
 বনানী সাহা 
 ০১- ০৭- ২০২৪
যেতে দাও আমায়, বেঁধে রেখো না ।
এই রাজ প্রাসাদ, এই রাজ ঐশ্বর্য ,আমার জন্য না।

এই রাজ ঐশ্বর্য, রাজ প্রাসাদ, এই প্রাসাদের---
 উঁচু দেয়ালের বাইরেও একটা জগত আছে ---
যেখানে থাকে, দীন -দুঃখী- রোগী !
যেখানে আছে জরা -মৃত্যু -ব্যধি --
আছে ক্ষুধার যাতনা;
আমাকে যেতে হবে সেথা, আর বেঁধে রেখো না ।

এই স্ত্রী ,পুত্র  ,পরিবার এই সংসার---
 এ যে বড়োই মায়ার বাঁধন !
এ বাঁধন ছিন্ন করে ,যেতে হবে আমায় ।
ঐ শোনো, কত অসহায় মানুষের আর্তনাদ---
 আর বিষাদময় কান্না শোনা যায় !
আমাকে খুঁজতে হবে, সবার কষ্টের পরিত্রাণের উপায় !

এই ঐশ্বর্য আর ভোগের মধ্যে আটকে থেকে---
 কি লাভ ? জরা- ব্যাধি এসে গ্রাস করবে--
 যখন ,এই সাধের দেহ খানি!
মৃত্যুর করাল গ্রাস ,যখন ছিনিয়ে নিয়ে যাবে --
একদিন শত পাহারার মধ্যে থেকে--
 আপন জন দের কাছ থেকে !
না না, আর নয়---,।
 মিছে এই সংসারের মায়ায় ,আটকে থাকা!
যেতে দাও আমাকে, বেঁধে রেখো না ।

আমাকে খুঁজতেই হবে কোথায় মুক্তি ?
এই রোগ -শোক -জরা -ব্যাধি -মৃত্যুর থেকে,--- মানুষের মুক্তির উপায় ।
মানুষের দুঃখ -কষ্ট -পাপ -তাপ থেকে ---
 পরিত্রাণ পাওয়ার উপায়।
ঐ শোনো, আমি শুনতে পাচ্ছি---,
 শত শত লোকের কান্না !
যেতে দাও আমায়,আর বেঁধে রেখো না ।

Sunday, May 19, 2024

মনোরমা বসুন্ধরা -- নিবারণ চন্দ্র দাস

মনোরমা বসুন্ধরা
নিবারণ চন্দ্র দাস 
১৪/০৫/২০২৪
এমন একটা জগৎ গড়ি
   হিংসা বিবাদ হীন,
এমন একটা ধরিত্রী মা
   উন্নত দিন দিন।

হোক না এমন জীবন যাপন
   নয়কো বিসম্বাদ,
করবে না কেউ ইচ্ছে মতন
   জীবনটা বরবাদ।

এমন একটা উঠুক না ঝড়
   বিশ্বজগৎ ময়,
মন্দ সকল ধুয়ে মুছে
   পবিত্র সঞ্চয়।

একটা এমন প্রদোষকাল
   সঞ্জীবনী ভরা,
সুসজ্জিত শ্যামলিমায়
    আবার বসুন্ধরা।

লহর আসুক এমন একটা
    নিমজ্জিত গ্লানি,
আবার "মানুষ" হোক না মানুষ
    কিই বা এমন হানি।

হয়তো এমন একটা দিন
   সবার হাতে কাজ,
আসছে হয়তো সেই সুদিন
    ভুলেই লজ্জা লাজ।
            

আজ কবিতার ছুটি -- চিত্তরঞ্জন সাঁতরা

আজ কবিতার ছুটি 
চিত্তরঞ্জন সাঁতরা 
১৫/০৫/২০২৪
এখন কবিতা লেখালেখি আপাতত 
বন্ধ রেখেছি।
ভাবনাগুলোকে বিশ্রাম দিয়েছি মনের 
অন্তরালে।
এখন আর কল্পনা নয়। ওগুলোকে
গুটিয়ে রেখেছি ভাবনার কোনে।
এখন আর কবিতা নিয়ে বেশি কিছু 
ভাবি না।
কল্পনা ও ভাবনাগুলোকে দিয়েছি ছুটি।
ওরা থাক নিরিবিলে খোশ মেজাজে।
এখন শান্ত মেজাজে কাটাতে চাই আয়েসি 
জীবন।
এখন আর উদাসীন ভাবনায় উড়ে যেতে
চাই না।
হারাতে চাই না নিজেকে নিরুদ্দেশে।
কবিতা লিখে এখন আর অযথা সময় 
কাটাতে চাই না।
একটু রোমান্টিক জীবন নিয়ে নাড়াচাড়া 
করতে চাই।
তুমি এস আমার পাশে। বস একান্ত 
নিরিবিলিতে দেহ ছুঁয়ে হৃদয়ের গভীরে।
কিছু কথা বল আবেগী উচ্ছ্বাসে নয়ত
আলিঙ্গনে শত চুম্বনে।

প্রায়শ্চিত্ত -- বরুণ কুমার বিশ্বাস

প্রায়শ্চিত্ত"
বরুন কুমার বিশ্বাস
১৬/৫/২০২৪
এই অবেলায় হিসাবের খাতাখানি দেখি
শুধু ভরে আছে কত সব গরমিলে,
কখন যে পেরিয়ে গেছে দিনগুলো চুপিচুপি
ভেবেছি বেশ তো আছি হেসে খেলে।

এতকাল যারা যোগালো জীবনে বাঁচার রসদ
ভাবিনি বিনিময়ে কি পেয়েছে তারা,
যোগফলই মেলাতে চেয়েছি শুধু বারে বারে
আজ দেখি জীবনটা শুধু বিয়োগে ভরা।

শেষ বেলাটুকু পোহালে ঠিকানা বদলে যাবে
সেই তারাদের দেশে নীল নীলিমায়,
মত সব মান-অভিমান পড়ে রবে অবহেলে
আপনও হবে পর এক লহমায়।

কোনদিন বুঝিনি কত কাজ রয়ে গেছে বাকি
কত কথা হয়নি এখনো বলা,
অভিমানে সরে আছি যাদের থেকে বহু দূরে
হবে কি আর একসাথে পথ চলা!

জীবনের প্রতি ক্ষণে যত সাথী হয়েছিলে পরিচিত
আছো দূরে কেউ করে অভিমান,
সব ভুলে আজ এ মিলনের আহবানে দিও সাড়া
বড় সাধ জাগে পেতে এই শেষ দান।

মিলন চাই -- মানিক চন্দ্র দাস

মিলন চাই 
মানিক চন্দ্র দাস  
১৬|০৫|২০২৫ 
মিলন চাই     ভাই ভাই 
মিলন কার?  তোমার আমার 
মুসলিম-হিন্দু    একই রক্তবিন্দু 
জাতে জাতে      রক্তে রক্তে 
ব্রাহ্মণ চণ্ডালে    ঐক্য তালে 
গলে গলে           দলে দলে 
এই ভারতে        একই মতে 
প্রাণে প্রাণে        মায়ার টানে 
চলবে সবে          এইতো হবে 
আমাদের পণ    আমাদের মন ।

মিলন কার?       তোমার আমার 
ভাষায় ভাষায়     ভ্রাতায় ভ্রাতায় 
ভারত জনে         মনে মনে 
ভারত মাতা        তুলবে মাথা 
তাঁর সন্তানে        প্রাণে প্রাণে 
মিলন দেখে        যাবে রেখে 
এইনা স্মৃতি        মানবপ্রীতি 
এই ভাবনায়      ভারত মাতায় 
ভুলবে দুঃখ        ফুলবে বুক 
ঐক্য রক্ষায়       এগিয়ে আয় 
ভারতবাসী          ফুটবে হাসি 
মুখে সবার         ব্যথা কি আর?

Tuesday, May 14, 2024

কবির ভাবনা -- স্বপন আহাম্মেদ

কবির ভাবনা
কবি স্বপন আহাম্মেদ 
১৫/৫/২৪
দুঃখ কষ্ট বুকে নিয়ে
বাস করে সব কবি। 
তবু তাদের লেখায় থাকে
বেঁচে থাকার ছবি। 

কবি হয় না স্বপ্ন হারা 
ভাবে আপন মনে 
প্রজাপতির পাখা মেলে
পুষ্প ফোটা বনে।

যদিও অভাব বারো মাসই
থাকে কবির ঘরে
ক্ষুধা পেটে কাব্য লিখে
বিলায় মানব তরে।

কবির মনে কূট মানুষের 
থাকে নানান ক্ষত
তবু কবি করে না তো
লেখায় মাথা নত।

বাস্তবতা মেনে নিয়ে
স্বপ্নের মিনার গড়ে
কবিরা তাই আলোর বাতি
মানবতার তরে।

ছোটগল্প -- সুমন

ছোটগল্প
  সুমন
১৩.০৫.২০২৪
তোমার ছবিতে একটা ছোটগল্পের রসদ খুঁজে পেয়েছি,
যেখানে তোমার আমার জীবনের হিসেবে মিল দেখেছি,
অতঃপর, যেদিন প্রথম সমুখে অকস্মাৎ এসে দাঁড়ালে,
মুখোমুখি, চোখের ইশারায় পবিত্র প্রেমের জোয়ারে ভাসালে।
তোমার দু'চোখে আরেকটা আস্ত পৃথিবীর দিশা পেয়েছি,
উথালি পাথালি প্রেমময়ী উষ্ণতার পারদে হৃদয় মেলেছি,
চাহনি টেনেছে সমুদ্রতটে আছাড়ি বিছারি সাঁতারে উথলি,
নৌকা বিহারে হৃদয়ের অলিন্দে ভুলিয়েছো মান সকলি।
সেদিনই তোমার জীবনের উপাখ্যান আকুলতা নিয়ে শুনেছি,
হৃদয় উজাড়ি উদ্বেলিত মনপ্রাণ তোমাতেই আমি সঁপেছি,
খানিকটা ঋণের বোঝাও হয়তোবা আপনার করে বুঝেছি,
প্রাণপ্রিয়া তোমায় অন্তরের অন্তঃস্থলে পবিত্র আসনে বসিয়েছি। 
তোমারই পরশে উদ্ভ্রান্ত পাগলপারা প্রেমের আগুন জ্বেলেছি,‌
পাহাড়িয়া শীতলতা উপেক্ষা করেই সারারাত আমি জেগেছি,
আঁধারি নিশীথে জোনাকির আলোয় প্রেমের সাহিত্যে ভেসেছি,
লায়লা মজনুর রূপকথার ন্যায়, ছোটগল্পে কলম ধরেছি।
ছোটগল্পের বৈশিষ্ট্যে যেমনটা ভাবা, তেমনই থামতে শিখেছি,
ডাইরির পাতায় শেষাংশে তথাপি তোমারই কবিতা লিখেছি,
'শেষ-হয়েও-যেন-হইলো-না-শেষ', এমনই যবনিকা টেনেছি,
ক্ষমিও আমারে, ওগো সুচরিতা, ছোটগল্পের গান গেয়েছি,
আগামীর পথে, রেখো মোরে সাথে, তেমনই আস্থা রেখেছি।

একা আমি -- সুরজিৎ পাল

 একা আমি 
 সুরজিৎ পাল 
 ১৩.৫.২০২৪
একা আমি অপেক্ষায় মানি,
চলে এসো....
মন মন্দির করে আলো।
তোমায় আমি খুঁজে চলি,
আঁধার চোখে সবই দেখি কালো।
 অন্ধকারে হাতড়ে চলি,
মন তো শুধু কেঁদে গেলো।
কোথায় আওয়াজ দেব তোমায়?
মন কি বোঝে সেতু বন্ধনের সময়?
 বিরহের এই করুন বাঁধন ,
ছাড়বে কবে আমার রোদন?
একা আমি...
নজর দাও তুমি....
যেখানে থাক সেখান থেকে দেখো।
না জীবনকে আনন্দ চেপে ধরে  - 
না মৃত্যু হাতছানিতে নরে।
চোখে ঝরে মুক্ত ধারা,
গলা চেপে হতাশ কায়া।
খুঁজে চলি করুন হিয়া,
কাটবে কবে এ মায়া?
আমি বসা আপন মনে,
দিন ঢলে যায় সংগোপনে ।
হৃদয়ের এ কেমন ভাষা,
কাটবে কবে আমার দশা?
বলতে আমি অপারগ জানি ,
আপনারা বলুন আমি কি  করি  ????

মাতৃ দিবস -- সুজিত শর্মা বিশ্বাস

 মাতৃ দিবস 
 সুজিত শর্মা বিশ্বাস 
১২/০৫/২০২৪
সিংহাসনে অনেক মুর্তি আছে সারে সার, 
নাইকো সেথায় জগন্মাতা মুর্তি আসল মা'র ?
কষ্ট করে করলো ধারণ আপন গর্ভে তার,
সেই মায়েরে অবহেলা করিস না ভাই আর।
খায় না নিজে খোকার তরে দেয় বিলিয়ে সব
তিনিই শিশুর জগৎ প্রভু তিনিই মহান রব।
ছোট্ট থেকে মানুষ করেন, গড়েন মানব রূপ 
তাঁর ছোঁয়াতেই আঁধার কেটে প্রকাশ মনের ধূপ।
তাঁর কথাতেই কথা বলে সেটাই মুখের ভাষ 
মাতৃভাষা  মাতৃদুগ্ধ  মেটায়  মনের  আশ।
মা মা বলে ডাকতে শেখা শিশুর প্রথম বাক
মায়ের ভাষার ভান্ডারেতে শব্দ মালার চাক।
তাঁর হাত ধরেই চলার শুরু, শক্ত কঠিন মাঠ,
এই জীবনের প্রথম গুরু তাঁর কাছে নিই পাঠ।
তিলে তিলে গড়ে তোলেন মা যে আমার তাই
তার কোনো দোষ না হয় বিচার সেটাই আমি চাই।
পাথর মাটি দেব-দেবীদের পূজন করে লোক 
জ্যান্ত মায়ের হয় না পুজো তাইতো মনে শোক।
"মাতৃ দিবস" পালন করে কতোই ঘটা হায় !
বৃদ্ধাশ্রমে কাঁদছে মা যে দেখার কেহ নাই।

প্যালার খেলা -- উত্তম গোস্বামী

প্যালার খেলা
উত্তম গোস্বামী 
১৩/০৫/২০২৪
দাসপুরের ওই কলোড়াতে
আছে খেলার দল 
ট্রফি পেয়ে বাড়ছে তাদের 
দারুন মনোবল। 

গোপালপুরে ক্রিকেটের 
কালকে আছে ম্যাচ 
বলছে প্যালা করব আউট 
ধরব সবার ক্যাচ। 

শুনরে প্যালা খেলতে গেলে 
বুকে চাইতো বল 
ভরসা রেখে খেললে পরে 
এগিয়ে যাবে দল। 

কোচের কথা শুনেই প্যালার 
 ঘুম ধরে না রাতে 
বুকেতে বল যায় কি রাখা?
খেলার সাথে সাথে।

খেলার মাঠে নামলো প্যালা
মাঠে দারুণ কাদা 
প্যালার বুকেতে দড়ি দিয়ে কষে 
আছে ফুটবল বাঁধা।

'মাথায় আছে ভর্তি ওরে
গোবর পোকা তোর 
'বল' মানে কি ফুটবল ওরে?
শক্তি-মনের জোর।'

মায়ের জন্য -- রেজাউল করিম বিশ্বাস

মায়ের জন্য
রেজাউল করিম বিশ্বাস
১৩ / ০৫ / ২০২৪
মাতৃহারা সন্তানের আজ মাতৃ দিবস পালন 
অভিমানে গেছো চলে আমি ও  অভিমানী
চোখের জল ঝর্ণা হয়ে বহে চলে নদে।

ঐ যে তুমি চিরশান্তিতে চিরনিদ্রায় শায়িত মাঠের 'পরে 
তেঁতুল তলে ভাটপিটুলি কত রকম গাছে ঘেরা 
কাঠ মল্লিকা সুবাস ছড়ায় দু'বেলা তোমার চারণতলে।

পাখিরা গান গেয়ে  যায় মনের আনন্দে সেথায় তুমি
মা ডাকতে মন করে ছট্ফট্ ব্যথায় ব্যথায় দিন যায়
তোমার পরশ পেতে ব্যকুল হৃদয় করে আনচান।

আমরা নিয়মে বাঁধা সবাই নিয়ম মেনে চলি তবুও ---
ভাঙ্গা হৃদয় গুমরে ওঠে একটুখানি দেখাবো বলে
হাজারো ডাকে হাজারো স্বপ্নে মনভরে না মাগো।

জানো 'মা' আমাদের মন ক্ষুদ্র হতে অতি ক্ষুদ্র হয়েছে আজ
তোমাকে বেঁধেছি তিনশত পঁয়ষট্টি দিনের মাত্র একটি দিনে 
তুমি  আছো অন্তরের অন্তরে প্রতিটা স্পন্দনে সুখে দুঃখে।

পারিনি হয়তো তোমাকে মূল্য দিতে চিনিনি তখন আমি 
 তুমি যেখানেই থাকো ভালো থেকো শান্তিতে থেকো  
তোমার অনাথ সন্তানদের কথা ভেবো ত্রুটি মার্জনীয়।

রোমানা ডাকে দাদি দাদি চোখের জলে ভাসে রিজওয়ান
পুবের ঘরে জানালা খুলে আজও তোমায় খুঁজি সারা বেলা
ইজি চেয়ারটা শুন্য আজ  তুমি বিহীন  বড্ড একা একা।

 

Sunday, May 12, 2024

বিশ্রাম বালুকাবেলায় -- সূর্য্যোদয় রায়

বিশ্রাম বালুকাবেলায়
সূর্য্যোদয় রায়
১১/০৫/২০২৪
এখনও বহুদূর চলে যাবার পর হয়তো আলো দেখা যাবে,
এখনও অনেকগুলো ক্লান্ত সমাধি,
অকূল মাটির বক্ষে ফিরে আসে যদি;
তারা চির জন্মের মতো এ সংসার হতে বিশ্রাম খুঁজে পাবে?

এখনও বহুদূর চলে যাবার পর হয়তো আলো দেখা যাবে,
এখন আর কত যুদ্ধের পর,
মানুষ থামাবে হিংসার স্বর;
ঢেউ গুলো সব অস্ত পাথারে তাদের চির বিশ্রাম খুঁজে নেবে?

কোথায় বাদল মেঘের কোলে ভেসে আছে সেই উত্তর
কোথায় বাদল মেঘের কোলে ভেসে আছে সেই উত্তর

বহুকাল মনে ওই গগনে উঠেছে কি কোনও ঢেউ?
আলোকনয়ন তরঙ্গমালায় ফিরে আসে যদি কেউ।

নিজের ব্যাপারে ভেবেছ কি কখনও বলেছ কি কোনও কথা?
ক্লান্ত জলধি শিখরে অটল পাহাড়ে আর নাই বা পেলে স্বাধীনতা।

তুমিতো জান আরও আরও বহুবার
চুপ করা ভান কিছু না শোনার 
সব দেখে শুনে তাইতো আবার নামিয়ে নিচ্ছ মাথা!

সাত সাগরের ঢেউয়ে নাচ্ছে সেই আলাপ মনে রেখ চির দিনে
সাত সাগরের ঢেউয়ে নাচ্ছে সেই আলাপ মনে রেখ চির দিনে

তোমায় আমায় মরতেই হবে সেটা কি বুঝতে পারো,
এই পথে অনেকটা কাল হয়েছে বিগত,
তাইতো বোধহয় দেখি সকলে নিহত;
আমাদের ই সাথে আর কত মানুষ মরবেই যে আরও?

কোন হাওয়ার শৃঙ্গে দেখেছ এর উত্তর আজ
কোন বাদল দিনের অশ্রু তিমিরে শুনেছ এর আওয়াজ,
কবেই শুনেছ কবেই শুনেছ কবেই শুনেছ 
কবেই শুনেছ সেই মত্ত হাওয়ার আওয়াজ ;
পারো যদি আর একবার সব ছেড়ে ছুড়ে এর উত্তর 
খোঁজো তবে।

এখনও বহুদূর চলে যাবার পর হয়তো আলো দেখা যাবে।।

হৃদয়ে অর্গল -- অমি রেজা

হৃদয়ে অর্গল
অমি রেজা
১১-০৫-২০২৪
আমি প্রতিনিয়ত ভাবি 
একদিন তোমার মুখোমুখি দাঁড়াব 
চোখের তরে চোখ রেখে শুধাইব-
কেমন করে পারলে? 
বেমালুম ভুলে গিয়ে
অনেক প্রেমের অনেক জ্বালা চুকিয়ে দিয়ে 
আপন হৃদয়ে অর্গল দিতে? 

হে পাথরী একবারও কি পড়ে না মনে?
শ্রাবণের টিপটিপ বৃষ্টির কথা
বাবুই পাখির বাসা ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হওয়ার কথা
কৃষ্ণচূড়ার রক্ত বর্ণ ফুলের কথা
নদীর বুকে উত্তাল ঢেউয়ের কথা
ডানামেলা একঝাক গাঙচিলের আকাশ সাতঁরাবার কথা
সবুজ ধানের বুকে বাতাসের শিহরণের কথা
হাতে হাত রেখে মেঠো পথ ধরে অবিরাম ছুটে চলার কথা।

আমি প্রতিনিয়ত ভাবি
একদিন তোমার মুখোমুখি দাঁড়াব
সমুদ্র অবগাহনে আবার আমি যুবা হবো
পাহাড়ের আলিঙ্গনে আমি ইস্পাত কঠিন হবো
আগুনের অগ্নিস্ফুলিঙ্গে আমি বিদ্রোহী হবো
বিরহের নীল বেদনা জমিয়ে জমিয়ে আমি পাথর হবো -

তারপর আমি তোমার মুখোমুখি দাঁড়াব
চোখের তরে চোখ রেখে শুধাইব 
হে পাথরী কেমন করে পারলে,
বেমালুম ভুলে গিয়ে
আপন হৃদয়ে অর্গল দিতে?

হৃদয়ার্তনাদ -- শাহীনুর ইসলাম

হৃদয়ার্তনাদ
শাহীনুর ইসলাম 
১০/০৫/২৪
প্রাণের পেয়ারি প্রাণের দোসর হয়ে এলো না ফিরে 
দিবস রজনী কেঁদে 
মর্সিয়া গীতি সেধে
অকালে আকুল নয়ন ভাসিল শোকের নীরে।
প্রাণ পাখি মোর এলো না ফিরে প্রাণের নীড়ে।

দিন যায় মাস যায় কত শত কাল গুনে 
নাহি হয় চোখাচোখি 
বসে তব মুখোমুখি 
মধু বসন্ত ঋতুর এই মধু ফাল্গুনে। 
কিত শত কাল গুনে। 

অকারণে অনাদরে ফিরায়ে দিয়াছে মোরে
যার তরে বাঁধি গান
সকলই করিনু দান
সযতনে আপন মনে বাধি প্রণয়ের ডোরে।
অনাদরে ফিরায়ে দিয়াছে মোরে।

কামনার কামিনী কুসুম বাগে অনুরাগে ফোটে 
ফুলদল এলায়
গন্ধ বেলায় 
সন্ধ্যার ক্ষণে অভিমানে সে ভূতলে লুটে।
কুসুম বাগে অনুরাগে ফোটে। 

হৃদয় ভরা বাসনা লয়ে নিত্য একাকী কাঁদি
সারা দুনিয়া খুঁজিয়া 
নয়ন আসে বুজিয়া 
কামনা বাসনার প্রদীপ জ্বালিনু সারা রাতি।
নিত্য একাকী কাঁদি। 

মোর জীবনের আঙিনা জুড়ে ঘিরে ঘোর যামিনী 
শ্রাবণ ধারা বরষায়
মেঘদূত পাঠানো ভরসায়
যদি গো বারতা লয়ে আসে কেমন আছে কামিনী। 
ঘিরে ঘোর যামিনী। 

তপ্ত মরু সাহারার বুকে জাগে অসীম পিয়াসা 
একি নিদারুণ হাহাকার 
নাহি বুঝি পারাবার 
দিনে দিনে ক্লান্তি আনে জাগে প্রাণে তিয়াসা।
জাগে অসীম পিয়াসা। 

মালা গেঁথে বৃথাই মোর দিন গেল বয়ে
নিরাশে শুকায় ফুল 
প্রেম প্রণয় সবই  ভুল 
তাহার ভাবনায় জীবন গেল ক্ষয়ে।
মোর দিন গেল বয়ে।

হারিয়ে গেছ কোন অকুল পাথার অন্ধকারে 
কোন সে সূদুর দূরে
কোন সে বাঁশীর সুরে
আমি এপারে কাঁদি তুমি কোন অলকাপারে।
অকুল পাথার অন্ধকারে। 

কত না হাজার স্বপ্নের জাল বুনি মনে প্রাণে 
সে স্বপ্নের ভাষা
যেন ভালোবাসা 
নিরবে নিভৃতে শুনাই উদাসী বাতাসের কানে।
স্বপ্নের জাল বুনি মনে। 

কত গানের কলি দিনু অঞ্জলি নয়নের জলে 
আসিলে না প্রিয়তম 
শুনিলে না গান ম-ম
হৃদয়ার্তনাদ গুমরে মরিল পাষাণ বেদীর তলে। 
দিনু অঞ্জলি নয়নের জলে। 

মোর দ্বারে আসিবে বলিয়া দ্বার খুলিয়া রহিনু বসে
সার্ধক করিতে চোখ 
চেয়ে আছি অপলক 
বৃথা হলো চাওয়া মোর এ কোন কপাল দোষে।
দ্বার খুলিয়া রহিনু বসে। 

 তব প্রেমের সিন্ধু হতে বিন্দু বারি যেচে কাঁদে মন
হরষ প্রাণের পরশ মাগে 
নিত্য পথ চেয়ে থাকে 
বিষাদ আঁধারে মৃৃত্যু নিসাদক্রুর দিচ্ছে দরশন। 
বিন্দু বারি যেচে কাঁদে মন। 

হৃদয়ার্তনাদ হৃদয়ে রহিলো গোপনে শুনিলোনা কেহ
শত ব্যথা বেদনায় 
এ জীবন চলে যায় 
আসিয়া কাঁদিয়া ফিরিবে যবে ধূলিসাৎ হবে সোনার দেহ।
গোপন কথাটি শুনিলোনা কেহ।

অস্তাচলের রবি -- রবিন রায়

অস্তাচলের রবি
রবিন রায় 
২৮ শে, বৈশাখ,,১৪৩১

হারায় গেছো ভালোবাসা, 
কাল স্রোতের পাক টানে,
               স্মৃতি ভরাই ছবি ;
ডুবে গেছো অতল তলে,
বৃথা আশে খুঁজে ফিরে -
                কেঁদে ভাসে রবি।

খুঁজতে খুঁজতে সময় গেছে,
দেখতে দেখতে বেলা বাড়ে;
                যৌবন হলো নিঃসাড় ;
বার্ধক্যে এসে জীবন ঠেকে,
অপূর্ণ থাকলো অভিসার, 
                     ভাঙে বাঁধন মায়ার। 

তোমার গায়ের জানা ঘ্রাণটা,
ভুলে গেছে আমার নাসা;
                 তুমি নেই যে পাশে।
কতদিন হলো বলো প্রিয়া,
তোমার থেকে আমি দূরে;
                     সরে আছি শেষে।

কত কাল যে আমার কর্ণ,
শ্রুত হয়নি তোমার হাতে-
                বাজা কাঁকন ধ্বনি ;
শুনতে পায় কই চলার তালে -
পদ মলের নাচন কোদন -
                রিনিঝিনির রুনি? 

আমি ভুলে গেছি তোমার
আলতো ছোঁয়ার অনুভবটা, 
              শীতল হৃদয় স্পর্শি ;
স্পর্শ দূরে থাক এখন তো-
ভাগ্য দোষে দূরত্ব জেরে -
                 আঁখিতেও না দর্শি!

সোহাগ ভরে বলতে কথা-
মিষ্টি ঠোঁট দুটি নেড়ে, 
               লাগতো যে মধুর;
আজ যেন তা ভোলার জোগাড়, 
বিদায় নিলো বসন্ত কোকিল,
                   সাথে বাসন্তীক সুর।

আমার স্পৃহা থমকে গেছে,
গতি হারা সাবেক আবেগ,
              অসাড় পরেই আছি;
তোমার প্রেমের শক্তি হীনে,
আবেশ গুলো মরে গেলো,
                     বৃথাই আমি বাঁচি।

আমি সেইদিনই মরে গেছি, 
নিজের মুখে বললে তুমি,
                  অন্য জন মনে ;
তিক্ত আত্মা ছুটি চায়, 
বিষের ঢোক গিলতে চায়,
                  জীবিত কি কারণে!

তোমার হৃদয় সাগর সমান,
দিলে নোনা জলের ঝাপটা, 
                 ধরে নয়নে জ্বালা ;
রাখো না ধরে বুকে কিছু, 
পাড়ে তুলে দাও মরা,
                উতল লহরি খেলা। 

আমি ঘাটের মরা শক্ত,
নোনা ভরে পচি না তো;
                 গরম বালি পুড়ায় ;
জীর্ণ দেহ চূর্ণ হবে,
হাঁড় মাষ ঝরে ক্ষয়ে, 
                 জীবাশ্মতা হারায়। 

Friday, May 10, 2024

অবহেলিত রবিঠাকুর -- সুরজিৎ পাল

অবহেলিত রবিঠাকুর
সুরজিৎ পাল 
১০.৫.২০২৪
রাস্তার মোড়ে পক্ষী বিষ্ঠায় লিপ্ত-
অবহেলিত তোমার আবক্ষ মূর্তি,
তোমার চোখে মুখে মাথায় ত্যাগে পায় ফুর্তি।
হেঁটে যেতে যেতে ভিক্ষুক থমকে দাঁড়ায় পাশে,
এক ঝলক দেখে ফিক করে হাসে।
গুরুদেব তোমার যদি এই অবস্থা হয়,
তবে আমার অবস্থা কি তোমায় ভাবায় ?
পূর্বজন্মের কথা ধার্মিক প্রবচনে শুনি,
দুঃখ থেকে হাসি নির্গত হয় জানি।
ভাবনায় নবজন্ম পেয়ে তুমি কি আমার সমগোত্রীয়?
 হেঁটে চলেছো দিগন্ত হীন সমাজে হয়ে অযাচিত ক্ষত্রিয়।
দেহ থেকে শতছিন্ন জামা খুলে-
পাশের গাছটিতে উঠে পরিষ্কার করি রবিঠাকুরের মুর্তি।
নীচে লোকের ভিড় -
আলোচনার সারমর্ম - পাগলের রবীন্দ্র প্রেম ।
রবি ঠাকুর নূতন রূপে নিজেকে পাও,
গান্ধীর তিন বাঁদরের মতো চোখ,কান,মুখ বন্ধ করে শুধু দেখে যাও।
নব্য সমাজের ভিক্ষুকের স্মৃতিভ্রম প্রচেষ্টা , 
পেলাম কি শিক্ষায় নিষ্ঠা?

ভাঙা মন -- রায় শর্মা

ভাঙা মন 
রায় শর্মা
১০◆৫◆২০২৪
মনটা যখন বড্ড ভেঙে পড়ে 
রং তুলিতে ভরিয়ে তুলি মন
দুটি বাহুর বিশেষ নরম ছোঁয়া 
তখন বুঝি একটু প্রয়োজন।

হালকা হাতে রংয়ের প্রলেপ আঁকি
হারিয়ে যাওয়া পুরনো সেই মুখ
তুলির টানে তোমার মুখের ছবি
বুকের মাঝে ভরিয়ে তোলে দুখ।

নীলের প্রলেপ ভরিয়ে কেনভাসে
হারিয়ে যাই মেঘের দেশে যেন 
প্রশ্ন করে তোমার কালো আঁখি 
ভালোবাসো তুমি আমায় কেন।

তুলির টানে আঁকি তোমার ছবি
আকাশ পানে উড়িয়ে গাঙচিল
ঠোটের কোনে মিষ্ট মধুর হাসি
গালের পরে ছোট্ট কালো তিল।

তোমার কালো চোখে আমি চেয়ে
হারিয়ে ফেলি মনের যত বল
কাজল মেঘে বাষ্প জমা দেখি
গড়িয়ে পড়ে হয়ে চোখের জল।

প্রেম -- দেবাশীষ চ্যাটার্জি

প্রেম  
দেবাশিষ  চ্যাটার্জী    
10/05/2024 
একটু না হয় থাক না কাছে 
এই  কষ্টের দিনে  
মন বাজারে যত কিছু দুখ 
সব নেবো আজ কিনে  | 

কর না ফেরি প্রেমের হাটে 
যা কিছু তোর আছে
নিঃস্ব আমি  ধন্য হবো 
ক্রেতা হয়ে তোর কাছে |

কি হারালি কি আর পেলি 
কি লাভ এই সব বলে  
যত্ন করে শুধরে নিবি 
ভুলগুলি চোখ খুলে  |

মন আকাশে উড়বে ঘুড়ি   
দুই পাখনার ভারে
নীল গগনে  হারিয়ে যাবো 
আঁচল খানি ধরে  |

নিন্দুকেরা তুলবে আঙ্গুল  
বলবে কলঙ্কিনী 
ভালোবাসায় ভাসে যারা  
তারাই  বিরহিনী  |

মানবাত্মার পদধ্বনি -- খসরু ভাস্কর

মানবাত্মার পদধ্বনি
খসরু ভাস্কর 
০৯/০৫/২০২৪ খৃঃ 
কবিতা গল্প গানের সুর জাগালে বাঙালির প্রাণে
অন্ধকার ভেদ করে বাঙালিকে আলো দেখালে। 
সহজ বাংলা শব্দমালায় আধুনিকতম কবিতায়,
 তুমি কবিগুরু, সেখান থেকেই একটি যুগের শুরু। 
 ' আগুন আমার ভাই আমি তোমারই জয় গাই ',
আবর্জনা পুড়িয়ে নতুন সূর্যের আভা দেখতে পাই। 
 " আলো আমার আলো ওগো আলোয়ে ভুবন ভরা "
রবির কিরণে যেমন দূর হয়ে যায় সকল দুঃখ-জরা ! 

সকল বাঙালিকে ঐক্যে গেঁথেছো প্রাণে নব নব রূপে।
যত ভাইবোন ঐকতানের বন্ধনে সম্মিলিত হোক ---
এ বাণী ঘুণেধরা সমাজের কেউ মানলো,
আবার কেউবা মানে নিকো কোনো দিন,
তোমার বাণী আজো তবু জীবন্ত ---- অমলিন। 

ঝড়কে সাথে নিয়ে গ্লানি ঘোচাতে চেয়েছিলে, 
কেউ তোমাকে চিনেছে, কেউ বা চিনেনি !
' চিনিলে না আমারে কী চিনিলে না '
ষড়ঋতুর সাথে মিলে মিশে ছিলে, কেউ দেখেনি। 
 কেবল বাহির পানে চোখ মেলেছে
তারা অন্তর পানে কেউ চায়নি হৃদয় দেবতায়,গানে কবিতায়। 
কেবল পূজার ছলে কবির বাণীকে 
ভক্তির নামে আড়ালে আবডালে রাখে। 

বাংলা সংস্কৃতি বিবর্জিত বাঙালিরা বিদেশি হয়েছে ! 
যদিও বিশ্ব চিনেছে কবিকে, জানতে পেরেছে 
কবি ! তুমি'র অসাম্প্রদায়িককে -
সম্প্রদায়ভেদে তীর ছোড়া হয় সংস্কৃতির বুকে।

চল্লিশ পেরোনো মেয়েগুলো -- হাসান ফরিদ

চল্লিশ পেরোনো মেয়েগুলো 
হাসান ফরিদ
১০/০৫/২৪
চল্লিশ পেরোনো মেয়েগুলো; ভুল সাবানে ধোয় ভুল গতর...ভিড়ভাট্টায় নিজের ছায়ায় খোঁজে নিজেরই  শতরঞ্চ ছতর...
কেমন হয়ে যায় মনহারা মনভুলো...অভিমানঝরা চৈত্রের কড়কড়া দ্বিপ্রহরের তালরস মাতাল করা—সময়ের চাবুক অনবরত মারে; এক্কাদোক্কা কি যাত্রাদলের লে-ছক্কা বলা মেয়ের উদোম পিঠে-ঘাড়ে...

চল্লিশ পেরোনো মেয়েগুলো; পলাতক সময়ের ফেরারি বসন্তগুলো...
লুডুর কোটের সাপের মতো; সার্কাসদলের ভাঁড়ের মতো গুটিয়ে নেয় বয়সের ঘুঁটি;
সংসারের উদাসী বাউডি চুল; জট বাধিয়ে হয়ে যায় পুলসিরাতের পুল; পার হতেই কাটে সাফা-মারওয়া দৌড়ানো পা—ফোঁটা ফোঁটা রক্ত আরক্ত জারকে জমে যায়—আর ঘামের দামে কেনা হয় লবণখেত চালচিত্র ;

আকালের  খরায় যৌবনের বাইস্কোপ পোড়ে পরম অবহেলায়; জুটি ভাঙার হিরিকে  ভাসে একাকিত্ব মেঘ; কালোবিড়াল চেটেপুটে খায় নুনহীন অন্ধকার বিকেলের লেক; যে যার মতো লেপে রাখে ক্ষত—তবু সেজেগুজে নাট্যমঞ্চের  ঝাড়ুদার; যেন অভিনয় ঝেড়েঝুড়েই বহুরূপী  একাঙ্কিকা করে যায় নিঃশব্দে পার...

চল্লিশ পেরোনো মেয়েগুলো; অবেলার ছাদে রোদে দেওয়া অনাদরের না-তোলা কাপড়গুলো—চিলেকোঠার জমে থাকা অনেকদিনের ঝুলগুলো; ঠিক গোধূলির আগেভাগের অম্লমধুর এই ভুলগুলোর ছাড়াভিটায় উদ্দাম লুটোপুটি ...তবু দেয় না তাকে কেউই  একরত্তি ছুটি;

Thursday, May 9, 2024

রবি প্রণাম -- তপন চ্যাটার্জি।

 রবিপ্রণাম
 তপন চট্টোপাধ্যায়
  ***************                       
আজ পঁচিশে বৈশাখ, আজ তোমার শুভ জন্মদিন ,                     আকাশে, বাতাসে, পথে প্রান্তরে, নদীতটে খেয়াঘাটে, বনচ্ছায়ে, তরুশাখে, নগরের কোলাহলে  ,শান্তির নীড় ছোট ছোট গাঁয়ের নিবিড় শ্যামলিমায় ,-লতায়,পাতায়, ফলে, ফুলে, দিনের প্রথম আলোর স্নেহধন্য দুর্বাদলশ্যামের 'পরে  ছোট ছোট শিশিরবিন্দুর বর্ণিল রামধনুরঙের ভেতর আজ জেগে উঠেছে আমার প্রাণের ঠাকুরের জন্মদিনের  জয়গান  ।  বাতাসে বাতাসে ভেসে আসছে  সুগন্ধী ধূপের গন্ধ, নারীদের শঙ্খনাদে  ,উলুধ্বনিতে আসমুদ্রহিমাচল মুখরিত তোমার বন্দনা গানে, আলোর গানের আনন্দ ধারায়  উৎসারিত হোক আমাদের দেহ, মন  ...,                                    বৈশাখের খর তাপে তোমার সুশীতল বটচ্ছায়ে জুড়িয়ে দাও ঠাকুর তোমার ভক্তকুলের তনুপ্রাণমন ,শীতল হৃদয়ে তোমার পাদপদ্মে নিবেদন করি সশ্রদ্ধ প্রণাম  । তোমার জন্মদিনের আলোকে আমাদের চেতনার শুভবুদ্ধি হোক।।

বিস্ময় বাতি -- মীর নাজমুল

বিস্ময় বাতি 
মীর নাজমুল। 
 ০৮।০৫।২০২৪
এক গুচ্ছ  হাহাকারে 
এক চিলতে অনুদান 
রাখবেনা অবদান বদনাম বৈকি। 
করুণার পাত্রে জোটে না কখনো
সোনার ঘটির জল। 
সে যেই হোক তুমি কিবা আমি । 

এ যে ধূসর বিবরণে মোড়া পৃথিবীর
গোলকধাঁধা শিরোনাম । 
জীবন হেতু জীবনের তরে 
সময় গড়িয়ে অসময়ের বেলা। 
কর্ম দিয়ে কেনা অসম্মান। 

তুমি অন্য কোথাও যাও, 
আমি অন্য কোথাও খুঁজে আসি 
দেখে আসি,জীবনের সাতরং
গোধূলি রাঙা বিকেল 
নানান রঙের দিনগুলি। 

এই পৃথিবীর তল্লাটে,আর কি হবে দেখা ? 
আমার অজানার চাঁদ মুখখানি। 
আজ জীবন যেখানে যেমন
সেখানেই ম্লান কবির নিরব হাসি। 

জীবন বিষন্নতায় কাঁদবে কি মন,
আজীবন । 
ফোরাবে না- কি বিষাদের সুর,
কষ্টের দিন গুলি ? 

জীবন মানেই যুদ্ধ যখন
তখন কি হবে ভেবে আর অহর্নিশি। 
শান্ত প্রদীপ জ্বেলে অশান্ত মনে 
নির্বাক নিলিমায় খুঁজে নাও ... 
জীবনের প্রেম,জীবনানন্দের ধ্বনি।    

ওহে জীবন পরগাছা 
ঢাকা কিবা কোলকাতা 
কি হবে ভেবে সফলতা,এ কথা মিছে। 

আমি রাজপথে দেখেছি জাগ্রত 
চেতনার মৌমাছি। 
দিক হারা পথিকের কন্ঠে শুনেছি 
মধু মাখা সুর।    

দেখেছি দুরন্ত বিবাগী মানব 
খরস্রোতে বয়ে চলা নিরবধি নদী।  
আমি দেখেছি কষ্টের নির্মমতা 
অন্ধ মানবতায় উন্নয়নের স্রোত। 
আমি দেখেছি সফলতা 
উন্নয়নের পারদ,যুদ্ধ মানব।

তবে আবার কবে জয়ী হবি জীবন ? 
নীল জোৎস্নার পরশে 
হাসবে কবে মেঘ রাশি। 
আমি ডাকি তুমি ঘুমাও
তবে আর রবনা আমি ঘরে বসি..।

অর্ধ নিমজ্জিত পতাকার মতো 
আপামর পৃথিবীর বুকচিরে । 
আর কতো নোয়াবি মাথা 
ওহে পথিক পথ  ভোলা
দুরন্তর মানব জাতি। 

ভিক্ষা নই,অনুদান নই,নই কারো শাসন, 
নই জীবনের কলঙ্কিত পূর্বাপরে চেয়ে থাকা। 
সেই নিশীথের কালরাত্রি বেয়ে 
আজ যে হয়েছে স্বপ্নের ফেরিওয়ালা 
পেখম মেলেছে ধরি। 
সে জন চিরন্তন মানব,বাস্তববাদী। 

এ হাত তোর প্রভুর দেওয়া নেয়ামত   
কর্মের বাহু যোগ,শ্রেষ্ঠ মনিহার। 
এবার তবে উচ্চ কর শির,
ধরাশায়ী জীবনের বারমাসি জাতি।
কালবৈশাখীর মোকাবেলায়....
তুমি নহে একলা সমুদ্র রচিত
দারিদ্র্য অতি। 

কবির বর্ণনায়ঃ
আমি শৃঙ্খলার কথা বলি, 
ভাবি ভিন্ন কিছু দেবো উপহার।   
উত্তরণের পথে খোলা হাওয়ার আবির্ভাব 
মুক্ত মনের ভালোলাগা- বৈকি । 
তোমরা সদা সত্যের পথে চলো,
কর্মের পথে হও দূর্বার। 
যেথাই মঙ্গল সেথাই হোক বিনিয়োগ 
তোমাদের সময় কিবা সম্পদ। 

কেমন আছে শান্তিনিকেতন -- বেবি মন্ডল

 কেমন আছে শান্তিনিকেতন 
  মহারানী ( বেবী মন্ডল ) 
   ০৮ / ০৫ / ২০২৪.
             ২৫ শে বৈশাখ ....

এ ভরা বসন্ত পার করে আজ বৈশাখের ছবি  
কেমন আছে শান্তিনিকেতন ভাবছো বসে কবি  
দিন-রাতের মালা গেথে যাও শান্তিনিকেতনে এসে। 
কতো কবিতা কাব্যগাঁথা মনে এসে ভিড় করে
উদার কন্ঠে গেয়ে উঠি গান পাখিদের কলরবে
চমক ভেঙে চোখ মেলে দেখি সন্ধ্যা হবে হবে
ভিড় করে আসে মনের কোণে রবি ঠাকুরের সৃষ্টি  
আকাস বাতাস হরষিত প্রেম এক পশলা বৃষ্টি
ধুয়ে দিয়ে গেল মনের ময়লা চোখের কোনে জল
রবী ঠাকুরে মজিয়াছে প্রেম চলরে ভুবন চল। 
এক মুখ দাঁড়ি কাছে এসে বলে রবীন্দ্রনাথকে চেনো
তাকিয়ে দেখি দাঁড়িয়ে আছে রবী ঠাকুরই যেন
আজকালকার ছেলেমেয়েরা রবীন্দ্রনাথকে পড়ে
রাশিরাশি লেখা গল্প কবিতা লিখেছেন কাহাদের তরে।
শান্তিনিকেতন আজ ভালো নেই অশান্তির ঢেউ খেলে
গল্প-কবিতা-গানে ভরা দেশ শুকনো মুখে যেনো
ওদের বল আমি এসেছিলাম আমার জন্মদিনে
 চিনতে পারেনি শান্তিনিকেতন গেলাম বিষন্ন মনে। 
তুমি যদি পারো দেশে দেশে ঘোরো 
 রবীঠাকুরের গান গাও  
 আজ শুভ জন্মদিনে দু'একটি লাইন 
 কবিতা পাঠ করে যাও। 

 লুপ্ত করেছে আমার ভুবন দুঃস্বপ্নের তলে, 
তাইতো তোমায় শুধাই অশ্রু জলে ....
 যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু  
        নিভাইছে তব আলো, 
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছো, 
      তুমি কি বেসেছ ভালো? 
                         (কবিগুরু) 

বিষন্ন মনে গগনে গগনে ঘন বর্ষার বৃষ্টি
 যতো কিছু সব বাংলা ভাষার রবি ঠাকুরের সৃষ্টি  
রবীঠাকুরের শান্তিনিকেতনে এ কি অনাসৃষ্টি। 
মম মম মম সুন্দরীতম শান্তিনিকেতন
বাউল বাতাস মন কেড়ে নেয় উদাস বাউল মন
বেরিয়ে পড়লেন কাঁধে ঝোলা নিয়ে দেশ হতে দেশান্তর
পড়লেম রবী শোনালেম সবে রবীন্দ্রনাথ নিরন্তর 
শেষ করে ফেলি রচনাবলী তবুও হয় নি জানা
 রবীন্দ্রনাথ তুমি মহাসাগর অনন্ত ঠিকানা 
আমি অতি সাধারণ কি করে বুঝিব তোমায় বিশ্বকবি!!
তোমার আশীষ ঝরে পড়ুক শিরে হে পূর্ণ রবি।

কবি প্রণামে -- মনিরা মাসিদ

কবি প্রণামে ( রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর )
মনিরা মাসিদ 
২৫.১.১৪৩১
 আমার ছোটো বেলার স্মৃতিতে জড়িয়ে থাকা এক কাহিনী যে কাহিনীতে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে এক করুন প্রেম কাহিনী ও কবির কবিতা " এক গাঁয়ে " -------
   আমার ছোট বেলায় আমাদের বাড়িতে বাংলাদেশ
থেকে মাঝেমাঝে আমার দাদুর এক বন্ধু আসত
ওনার নাম ছিল সুকুমার ঘোষাল। ছোট বড় সবাই
ওনাকে ভবঘুরে দাদু বলে ডাকত  কারণ উঁনি যখন 
আসতেন তখনই উঁনি দূরে দূরে গ্রাম _শহর _ মেলা
ঘুরে ঘুরে বেড়াতেন তারপর আবার নিজের দেশে চলে যেতেন। বছরে দুই তিনবার আসত আমাদের বাড়িতে থাকত। একবার আমারা ভাই বোনেরা
পড়ছি আর ভবঘুরে দাদু বসে আছে, আমি একটা কবিতা শুর করে করে পড়ছি, কবিতাটা পড়া শেষ হলে
দাদু বলে আর একবার পড়, বারবার পড় তারপর
দেখি আমি পড়েই যাচ্ছি আর দাদু কেঁদেই যাচ্ছে।
তারপর থেকে দাদু যখনি আসত তার ব্যাগ থেকে একটা বই বার করে সেই কবিতাটি দেখিয়ে বলত  পড় আমি পড়ি আর দাদু কাঁদে ।  ।আমি যতবার দাদু কে জিজ্ঞেস করি এই কবিতা পড়লে তুমি কাঁদো কেন ?
 দাদু বলে দিদিভাই তুমি এখন বুঝবে না। যখন 
তুমি বড় হবে তখন তুমি ঠিক বুঝতে পারবে, 
শুধু হয়তো সেদিন আর আমি এই পৃথিবীতে থাকবো না।আর সত্যিই যখন বুঝতে পারলাম দাদু কেন কাঁদত, কেন দাদু সারাজীবন বিয়ে করেননি তখন সত্যিই পৃথিবীতে দাদু আর নেই।
দাদু কাঁদত তার ছোট্ট বেলার প্রেম রঞ্জনার জন্য,
যে রঞ্জনা দেশভাগের সময় তার বাবার সঙ্গে এই দেশে
চলে এসেছিল।  সেই রঞ্জনাকে খুঁজতেই দাদু বারবার এই দেশে ছুটে ছুটে আসত আর গ্রামে, শহরে , মেলায়  দাদু তার রঞ্জনা কে খুজে বেড়াতো ।বারো - তের বছর বয়সে মনের মধ্যে এক অদ্ভুত কষ্ট হত আর সেই কষ্টটা
বেশ অনেক দিন ছিল আমার মনের মধ্যে। তারপর
আস্তে আস্তে কবে যেন ভুলেই গিয়েছিলাম।
আর এখন এই বয়সে এসে যখন স্মার্টফোন হাতে
পেলাম তখন দেখলাম, পৃথিবীটা আজ বড়ই ছোটো, এখন আর কেউ হারায় না। কোনো না কোনো ভাবে তার বর্তমান অবস্থান ঠিকই জানা যায় ।আজ খুবই আফসোস হয় দাদু যদি সেই যুগে না জন্মে এই যুগে জন্মাত তবে দাদু কে আর এত কষ্ট পেতে হতো না। আরকিছু না হোক জানতে তো পারত তার রঞ্জনা কেমন আছে।_____
    আজ সেই কবিতাটা সব্বাই কে পড়াতে ইচ্ছে
করছে, আমার দাদুর স্মৃতির উদ্দেশ্যে ।
_________________________________________
                  এক  গাঁয়ে
               রবীন্দ্রনাথ  ঠাকুর
                     ________
   আমরা দুজন একটি গাঁয়ে থাকি ,
                সেই আমাদের একটি মাত্র সুখ।
      তাদের গাছে গায় যে দোয়েল পাখি
               তাহার গানে আমার নাচে বুক।
তাহার দুটি পালন - করা ভেড়া
               চড়ে বেড়ায় মোদের বটমূলে,
   যদি ভাঙে আমার ক্ষেতের বেড়া
                কোলের ' পরে নিই তাহারে তুলে।

    আমাদের এই গ্রামের নামটি খঞ্জনা
আমাদের এই নদীর নামটি অঞ্জনা,
আমার নাম তো জানে গাঁয়ের পাঁচজনে,
আমাদের সেই তাহার নামটি রঞ্জনা।।

দুইটি পাড়ায় বড়োই কাছাকাছি,
            মাঝে শুধু একটি মাঠের ফাঁক।
তাদের বনের অনেক মধুমাছি
           মোদের বনে বাঁধে মধুর চাক।
তাদের ঘাটে পূজার জবামালা
           ভেসে আসে মোদের বাঁধা ঘাটে,
তাদের পাড়ার কুসুম - ফুলের ডালা
           বেচতে আসে মোদের পাড়ার হাটে।
         
         আমাদের এই গ্রামের নামটি খঞ্জনা,
         আমাদের এই নদীর নামটি অঞ্জনা,
          আমার নাম তো জানে গাঁয়ের পাঁচজনে,
          আমাদের সেই তাহার নামটি রঞ্জনা।।

  আমাদের এই গ্রামের গলির '- পরে
                আমের বোলে ভরে আমের বন।
  তাদের ক্ষেতে যখন তিসি ধরে
             মোদের ক্ষেতে তখন ফোটে শণ।
 তাদের ছাদে যখন ওঠে তারা
               আমার ছাদে দখিন হাওয়া ছোটে।
  তাদের বনে ঝরে শ্রাবণ - ধারা,
                       আমার বনে কদম ফুটে ওঠে।

      আমাদের এই গ্রামের নামটি খঞ্জনা,
     আমাদের এই নদীর নামটি অঞ্জনা,
       আমার নাম তো জানে গাঁয়ের পাঁচজনে,
         আমাদের সেই তাহার নামটি রঞ্জনা।।

Tuesday, May 7, 2024

রহস্যময় সাঁঝবাতি -- সারস

 রহস‍্যময় সাঁঝবাতি
  সারস
  4th May 2024
সাঁঝবাতিটা জ্বালিয়ে দাও
গোধূলির ধূলা চোখের আড়ে,
সময় হয়েছে নীড়ে ফেরার।
টুনটুনি মালতীলতায় গীত ধরেছে
আজি প্রখর তপ্ত দিনের শেষে,
বিশ্বাস লয়ে মালতীলতা বেশে
আশ্রয় লবো রাতের বিশ্রামে।
কাঁঠালীচাঁপা সুবাস ছড়ায় মনের সুখে,
বকুল আমায় সাথ দেবে মালা গেঁথে;
টুনটুনি বলে এরাত বয়ে যাবে বাসর জেগে
জোনাকি সাথে রোষনায় আলো ভরে দেবে।
ঝিঝিপোকা সানায়ে পো-ধরবে জেনে
মজবুত মহল্লায় প্রবেশ অবাধ সাড়ম্বরে,
পেঁচা কুবো নিশাচর আমন্ত্রিত অতিথি।
আহারে পঞ্চব‍্যঞ্জন যোগে পিঁপীলীকা লার্ভা
অর্ধজাগ্রত পিঁপড়ে জানেনা কে করবে সাবাড়,
পেঁচা কুবোও জানে না মৃত‍্যুর পর
এ পিঁপড়ে ছানা কুঁড়েকুঁড়ে খাবে
কি অদ্ভুত জীবন চক্র তাই না !
সাঁঝবাতিটা জ্বলিয়ে দাও,
আঁধার ঘনায় দিনের শেষে
মহল্লা আলোকিত করো জোনাকির জোরে,
নহবতি ধুমমাচাও বাসর জাগাতে।
বাবুই শিল্পের ছোঁয়ায় বাসর সাজে
এরাত দিনের চেয়েও ভয়ঙ্কর।
এখানে ধর্মের কোন স্থান নেই
আছে জীবন চক্রের শুভ শৈলী,
বাঁচার তাগিদে হাঁকুপাঁকুর হাতছানি
ধর্ম বলতে আহার আশ্রয়ের বিলাপ,
সঞ্চয় নেই চিন্তা ও রোগমুক্ত সমাজ
সাবলম্বনে আছে মায়ামমতা ক্ষণিকের।
তপ্ত দুপুর পুড়ে খাগ হচ্ছে ধরা
মেঘেরা ভুলে গেছে পথের দিশা,
লু-বয়ছে ক্ষিপ্ত বায়ু প্রবাহ শিখা
আঁয়ঢায় করছে দিনের আলো
খাঁপি খাওয়া জীবকুল অসহায়।
সাঁঝবাতিটা জ্বালিয়ে দাও,
তিমিরাচ্ছন্ন নব ভুবন
আলোর বড় অভাব সমাজে;
দিনে শরীর মন পোড়ে রাতের
অন্ধকার ফ‍্যাকাশে ম্লান সব মানে
শীতল হাওয়া বয়লেও দুর্বোধ‍্য এরাত
তাই সাঁঝবাতিটা জ্বালিয়ে দাও।