Sunday, April 23, 2023

ধোঁকা -- অরবিন্দ মাজী

 ধোঁকা
 অরবিন্দ মাজী
২০/০৪/২০২৩
রিয়া ও অনুপ একপাড়াতেই থাকতো, অনুপ যখন ক্লাস ইলেভেনের ছাত্র, রিয়া তখন ক্লাস নাইনে পড়তো, এবং তখন থেকেই ওদের মধ্যে ভালোবাসা গড়ে উঠে। 
ওদের মধ্যে প্রতিদিন একবার অন্তত দেখা হতোই, বিশেষ করে রিয়া বিকেলে অপেক্ষা করে থাকতো কখন অনুপের সাথে সাক্ষাৎ হবে, দুজনেই প্রতিদিন বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে একটি পুকুরের পাড়ে একটি কৃষ্ণচূড়া গাছের তলায় বসে গল্পগুজব করতো। অনুপের সাথে রিয়ার একদিন দেখা না হলেই যেনো  রিয়ার পেটের ভাত হজম হতো না ,অনুপ ক্লাস দুয়েলভের পরীক্ষায় উত্তীর্ন হওয়ার পর শহরের একটি কলেজে বি, কম অনার্স কোর্সে ভর্তি হয়, এবং তারপরে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম, কম পাশ করে চাকরির চেষ্টা করতে থাকে, কিন্তু কিছুতেই ওর চাকরি হচ্ছিলো না। এম, কম পাশ করার পর সুদীর্ঘ পাঁচ পাঁচটি বছর সে বেকার ছিলো, তখন একপ্রকার বাধ্য হয়েই সে টিউশনি করে হাতখরচের টাকাটা জোগাড় করতো, এদিকে রিয়া বিয়ে পাশ করার পর বাড়িতে বসেই ছিলো, সে কিন্তু চাকরির চেষ্টা চরিত্র করেনি, কেননা ওদের বাড়ির অবস্থা তুলনামূলকভাবে অনুপদের থেকে অনেক ভালো ছিলো, ইতিমধ্যে ঐ গ্ৰমেরই অনুপের ঘনিষ্ঠ বন্ধু অনিমেষ এম, এস, সি পাশ করে একটি ব্যাঙ্কের কেরানির চাকরি পেয়ে যায়, রিয়া ধীরে ধীরে অনিমেষের দিকে ঝুঁকতে থাকে, এবং একসময় সে অনিমেষকেই বিয়ে করে ফেলে। 
   অনুপ বেকার বলেই রিয়া ওর জন্য অপেক্ষা না করে অনিমেষকেই বিয়ে করে। 
অনুপের মধ্যে প্রচন্ড হতাশা তৈরি হয়, খানিকটা অবসাদেও গ্রাস করে ওকে, অবসাদে ভূগতে ভূগতে একসময় সে বৃন্দাবনে চলে গিয়ে একটা আশ্রমের একজন গুরুর কাছে দীক্ষা নেয় এবং বর্তমানে সে আশ্রমের বিভিন্ন কাজ করার পরও হরেকৃষ্ণ, হরেকৃষ্ণ নাম জপ করে কাল অতিবাহিত করে।

Saturday, April 22, 2023

ছেলেবেলা -- শ্যামল কুমার মিশ্র

 ছেলেবেলা
 শ্যামল কুমার মিশ্র
২১-০৪-২০২৩
সকালের নরম রোদ্দুর এসে পড়েছে খোকনের পড়ার টেবিলে
খবরের কাগজে মুখ গুঁজে খোকন যেন হারিয়ে যায় চোখের সামনে ভেসে ওঠে একটা মুখ
দড়ি দেওয়া প্যান্টটা টানতে টানতে ও খোকনের মুখোমুখি হয় 
--তুমি এমন করে কী দেখছ?
--তোমায় 
--আমায় তুমি চিনতে পারলে না? 
--না 
--আমি যে তুমি, তোমার শৈশব, তোমার ছেলেবেলা 
ওই তাকিয়ে দেখো ডাইনে সামন্তদের ঠাকুরবাড়ি 
বামে পায়ে চলে রাস্তা এঁকেবেঁকে চলে গেছে 
ওই পথে হেঁটে চলেছে একটা ছোট্ট ছেলে
চিনলে না ওরে? 
খোকনের দুচোখ হাসি ফুটে ওঠে 
ছেলেটি ও হাসছে 
দিনান্তে খিড়কির পুকুরের শাণ বাঁধানো ঘাটে বসে ছেলেটি
কত ছবি, কত প্রশ্ন,কত স্বপ্ন ওর চোখে 
কালো জলের গভীরে কী যক্ষ বাস করে? 
হাজারো প্রশ্ন উঁকি দেয়...

সন্ধ্যা নামে 
ছেলেটি হেঁটে চলেছে..মাঠ পেরিয়ে দূরে, বহুদূরে 
হঠাৎ যেন পথ হারিয়ে ফেলে ছেলেটি 
অভিমুন্যর চক্রব্যূহ যেন.. বেরোনোর পথ নেই
ডাইনে বাঁয়ে পাশে
চেনা জগৎ অচেনা মনে হয় 
ঘুম ভেঙ্গে যায় খোকনের  
খিড়কির পুকুর, জোনাক জ্বলা রাস্তা 
সবই যেন দেখতে পায় খোকন
কিন্তু সেই ছেলেটি? 
অনেক খুঁজেও পায় না খোকন
অন্তহীন যেন সেই খোঁজ...

Friday, April 21, 2023

দাবদাহে জ্বলছে আগুন -- প্রদীপ কুমার মাইতি

 দাবদাহে জ্বলছে আগুন
 প্রদীপ কুমার মাইতি 
 ২০/০৪/২০২৩
তাপ দহে পুড়ছে মানুষ 
পশু-পাখি যত,
মায়ের কোলে ঘামছে শিশু 
কাঁদছে অবিরত।

দাবদাহে জ্বলছে আগুন 
ঘুম আসেনা রাতে, 
সবাই থাকে শীতল ভোরের 
আলোর অপেক্ষাতে।

তীব্র গরমে সবুজ শস্য 
করছে হাহাকার, 
ঘরের মধ্যে থেকেও মানুষ 
নেই কোন নিস্তার। 

আকাশ পানে ডাকছে চাতকী 
পায়না সাড়া তার 
একফোঁটা জল ঠোঁটের মাঝে 
চাইছে বারেবার, 

মাঠঘাট সব পুড়ছে রোদে 
শুকছে পুকুর ডোবা,
পরিবেশ দূষণে প্রকৃতি তাই 
হয়েছে আজ বোবা।

আকাশ ভরা আগুনে আজ
সব যেন বেসুর, 
তীব্র গরম বলো না তুমি 
বর্ষা কতদূর।

Thursday, April 20, 2023

ব্যথার অতীত --সেখ লিয়াকত

.ব্যথার অতীত
.সেখ লিয়াকত
১৯,০৪,২৩
অতীত ব্যাথা স্মরণ হলে
অশ্রু আসে চোখে,
ঝরা পাতা ধূলায় পড়ে 
যেমন কাঁদে শোকে !

নতুন পাতা গাছের ডালে 
আনে নতুন আশা,
ভাঙা বাসা ছেড়ে পাখি
গড়ে  নতুন বাসা । 

কালের স্রোতে দিন চলে যায় 
স্মৃতিটুকু রেখে,
সামনে যেতে নতুন আশা 
নেয় যে সদা ডেকে । 

ভবের মাঠে আসা-যাওয়ার
নিত্য চলে খেলা,
কান্না-হাসি লুকোচুরির
মাঝে কাটে বেলা । 

অতীত ব্যথা পীড়া দিয়ে 
মনকে করে কালো,
সোনা রবি সেটা  মুছে 
আনে নতুন আলো ।

Wednesday, April 19, 2023

চৈতি ফাগুন বৈশাখে -- নিবারণ চন্দ্র দাস

 চৈতি ফাগুন বৈশাখে   
নিবারণ চন্দ্র দাস
 ১৮/০৪/২০২৩
আসে ওই বৈশাখ মহা উল্লাসে,
সাথে কালবৈশাখী  পল্লবে ঘাসে।
পত্র পুষ্প শাখা দোদুল দোলায়,
সকল দহন জ্বালা নিমেষে ভোলায়।

তপ্ত দাহন শেষ চৈত্র বিদায়,
পুরাতন লাগি মন করে হায় হায়।
ছেড়ে যেতে হবে জানি পুরাতন যত,
সাথে নিতে হবে তবু স্বচ্ছ সমুন্নত।

পুরাতন স্মৃতি যত পুরাতন প্রেম,
রবে অন্তরে যেন নিকষিত হেম।
পুরাতন বেদনার অশ্রু বারিধারা,
সাথে লয়ে রয়ে যাব আমি দিশেহারা।

অগ্র গমণ সাথে থাক পিছুটান,
অতীতের লাগি সদা পেতে রব কান।
অতীতের সাথে মিলে ভবিষ্যৎ ভাব,
সমৃদ্ধ এ বর্তমান অনন্য স্বভাব।

বেদনার শতদল,আনন্দধারা,
করে দিক প্রাণ মন পূর্ণ ছন্নছাড়া।
আনন্দ অবগাহন,বিষাদ তিমির,
এই নিয়ে গড়া মোর পর্ণ কুটির।

ফাগুন চৈত্র কিবা হোক বৈশাখ,
থাক মাঙ্গলিক সুর,মঙ্গল শাঁখ।
চিরন্তন প্রবাহের অশ্রুত সঙ্গীত,
কারও হাসি কারও গান,কারও হার জিত?
                       :::-:::

Tuesday, April 18, 2023

ভুলো -- প্রোজ্জল

 ভুলো
 প্রোজ্জ্বল 
১৭/০৪/২৩
 আমরা খুব ভুলো।
করে  জমকালো 
পয়লা জানুয়ারি 
নিউ ইয়ার পালন করি।
আর, নিজেদের নতুন বছর,
কবে যে হয় তার খবর
ভুলে গেছি পরিপাটি।
স্মৃতিতে মা গঙ্গার পলিমাটি
জমেছে পাহাড় সমান।
 জিজ্ঞেস করলেই -
এসো হে বৈশাখ ধরে গান।
ঠোঁটে দিয়ে টান -

 দেঁতো হাসি হেসে বলি--
ভুললে কী বিলকুলই -
বাঙালির  বঙ্গাব্দ - পয়লা বৈশাখ?
 স্মৃতির পাতা গুলো আজ পুড়ে খাক।
 পয়লা বৈশাখ বুঝি বঙ্গীয় রীতি?
না গো না ! এটি হলো বাদশাহি নীতি।

নউরোজ প্রথার ই বঙ্গীয় রূপ,
বৈশাখ পয়লায় হতো ধুম খুব,
কর নেওয়ার  ছিল 
দিন সেই যুগে।
অভাবেতে ভুগে,
এই দিনে বঙ্গীয় প্রজা দিত,
বাদশাহি কর,
গুনে গুনে কর,
বুকের পাঁজরসম,
ট্যাঁকের  কড়িটি,
 পেয়াদার হাতে দিয়ে,
বাঁচাত ভিটেটি।

করের কড়ির এই 
হিসেবেটি রাখতে 
নউরোজি রীতিতে,
পয়লা বোশেখ হল
বছর  শুরুর দিন
নউরোজি রীতি  থেকে নিয়ে ঋণ,
বাংলায় শুরু  হলো বৈশাখী রেওয়াজ,
পপুলার করলেন রবি কবি রাজ।

বাংলার নিজের বছরের শুরু,
হয় তো ছিল অঘ্রানে,
কিন্তু সে কথা ভুলে গেছি কোনখানে।
নিজেরাই না জানি।
অগ্রহায়ন মানে- বছরের শুরু,
যদি এই কথাটুকু মানি,
তাহলেই পরিষ্কার,
নয় বৈশাখ আর,
অঘ্রানই ছিল বাঙালির নিউ ইয়ার।
তখন নতুন  ধান 
উঠত ঘরে,
বাঙালির বুক যেতো আশায় ভরে।
পরিবেশও  থাকত বড়ো মনোরম
উৎসবের জন্য যেরম,
দরকার 
একেবারে তাই
তাই মনে হয় ভাই,
নয় বৈশাখের একে
কিন্তু অঘ্রান থেকে
ছিল বাঙালির বছরের  শুরু,
কিন্তু  ভুলেছি সব,
ইতিহাস যেন শব,
নিশ্চল আছে পড়ে, কুঁচকে ভুরু।

Monday, April 17, 2023

স্বপ্ন দেখি -- সত্যব্রত মন্ডল

 স্বপ্ন দেখি
 সত্যব্রত মন্ডল
 16-04-23
আমি স্বপ্ন দেখি --
 স্বপ্ন দেখি আমি ।
 দিনের আলোয় ও স্বপ্ন যে মিলিয়ে যায় 
   দেখতে দেয় না । 
দিনে যারা স্বপ্ন দেখে 
ওরা যে রাতে দেখতে পায় না । 
রাতের স্বপ্নই দিনের আলোয় ভ'রে
 কর্মে মর্মে ধর্মে প্রেমের পথে ।
  সব স্বপ্ন স্বপ্ন নয়  । যে স্বপ্ন আসে -
অগ্নিহোত্রীর জোত্যির্ময় আলো নির্মল হৃদয়ে ।

 ও স্বপ্নের দেশে নিশিরাত জেগে
  নিতে হয় চোখের জলে ।
 স্বপ্ন লোকের স্বপ্ন গুলো বাসা বাঁধতে চায়
    মর্ত জীবনের নন্দনলোকে
   মানবের  সুখ দুঃখের জীবন
পথের পার্থিব জীবন পাঁচালিতে ।

ও পাঁচালিতে আখর লিপির দিন রজনী
 লিখে গো স্বপ্নের লিপির কারিগর ।
   অলিখন লিপি মানস ব্রহ্ম চেতনার নিরাকারে
    লিপির পাঠোদ্ধার করে স্বপ্ন প্রেমিক।
  ওরাই স্বপ্ন প্রেমিক ওরাই মানব প্রেমিক
  স্বপ্ন ময় স্বর্গের  আনন্দধামের আনন্দ 
 ধরায় নিয়ে আসে ঘরে ঘরে --
    
     
   

 ,

ঘুরেফিরে সেই প্রত্যাবর্তন -- পরেশ চন্দ্র সরকার

 ঘুরেফিরে  সেই প্রত্যাবর্তন
পরেশ চন্দ্র সরকার
১৫_০৪_২০২৩
দেওয়ালেতে 'পিঠ' ঠেকে গেলে-ই
সাময়িকের স্থবিরতায় 'কিংকর্তব্যবিমূঢ়' আঁকে,
সাধারণই নির্ধারণ ক'রে সুযোগ পেলেই
আগামী পাঁচ-টি বছর 'সত্তা' যাবে 'কার' বাঁকে?

মানুষ শিখছে অনেক, পাচ্ছে না দাম
দেখেছে প্রতিশ্রুতির আড়ালেতে মুখোশের রঙ,
দেখেছে ডান দেখেছে বাম কিংবা রাম
দেখছে অতি বামেরও অনুপ্রেরণার সহস্র সঙ।

সাধারণের মনে স্পিন ধ'রেছে আজ
অফ অথবা লেগ, কিংবা গুগলি দুসরা ক্যারাম,
ঠেকে ঠেকে আঁকছে দায়ে ঠেকা সাজ
মস্তিষ্কে আবার কারোর 'নোটা' রোগের ব্যারাম।

মানুষ আর বিশ্বাস ক'রে না কাউকেই
পদ্ধতিতে এবার আনতে চায় আমূল পরিবর্তন,
কিন্তু কিভাবে তা সম্ভব হ'বে জানা নেই
তাই তো সাধারণের মস্তিষ্কেও হাঁটে প্রত্যাবর্তন।

******************************************

Saturday, April 15, 2023

বৈশাখ এলো -- কনক বিশ্বাস


বৈশাখ এলো
--------------     
কনক বিশ্বাস   
--------------------
 ১৪/০৪/২০২৩
      
বৈশাখ এলো বৈশাখ এলো-
পড়ল শোরগোল
ঢাক কুর কুর নাচছে ঢুলি
মুখে নানান বোল।
বটতলাতে পসরা নিয়ে
মেলা বসেছে
ছোট বড় সবাই সেথায়
জড়ো হয়েছে
মুড়ি মুড়কি খেলনা পুতুল
মিষ্টি  মোয়া খই
নাড়ু সন্দেশ   পাটালি গুড়
মাটির ভাড়ে দৈ।
চুড়ি ফিতে রকমারি
সব দোকানের ভিড়ে
ছেলে মেয়ে ছোট বড়
সবাই আছে ঘিরে।
ঘরে ঘরে পূজা পারবন
পিঠে পুলির ধুম
মেয়েরা তাই ব্যাস্ত কাজে
নাইতো চোখে ঘুম।
নতুন শাড়ী  নতুন চুড়ি
মুখে আলপনা
পায়ে আলতা খোপায় পড়া
বেলী  ফুলের মালা।
ঘুড়ি নিয়ে ছুটছে কিশোর
হাতে নাটাই ধরা
নূপুর  পায়ে কিশোরী টি
করছে তাকে তাড়া
চড়ক গাছে চড়কা ঘোরে
বন্ বন্ বন্ করে
তারি তালে সাধক বাউল
নানান গান ধরে।
শহর বনদোর গ্রামে  গনজে
প্রতি ঘরে ঘরে
নতুন বছর বরন করে
না না আরম্বরে।

Thursday, April 13, 2023

শিবপ্রসাদ মন্ডল -- পোড়া চৈত্র

পোড়া চৈত্র।
 শিবপ্রসাদ মণ্ডল।
১১/০৪/২০২৩
"পোড়া চৈত্র" বলুক সবাই, তবুও ঋতু বসন্ত,
এই চৈত্রই বড় মধুর, রূপ আছে এর অনন্ত।

হারিয়ে গেলেও রক্ত পলাশ ,ফুটছে চাঁপা গন্ধরাজ,
তাই না দেখে হাজার ভ্রমর পরছে সবে বিয়ের সাজ।

পুকুরগুলো শুকিয়ে গেলেও মাঝেমাঝেই বৃষ্টি হয়,
বৃষ্টি হলে সবাই খুশি,অশেষ শান্তি এতেই রয়।

কোকিলগুলো কুহু রবে--দিন ও রাতে গান করে,
তাইনা শুনে দোয়েল চাতক, তাদের সুরে সুর ধরে।

পাগলা হাওয়া কেমন যেন,বুকের মাঝে নাও ভাসায়
ছলাৎ ছলাৎ জলের শব্দে,শূন্য হিয়ায় প্রেম জাগায়।

শুকনো ধুলো উড়ছে দেখেও--তবুও মনে হয়না রাগ,
ঐ ধুলো সব বসলে গায়ে-- জন্ম যে নেয় অনুরাগ।

নদীবক্ষে ঢেউগুলো সব,পাড়ের দিকে আসছে ধীরে 
রাখলে দু'পা নদীর জলে--কয়েক বিন্দু পড়ে শিরে।

সব গাছেতেই ধরছে মুকুল, ফুটছে নূতন কিশলয়,
স্বেদবিন্দু জমলে গায়ে, দখিনা হাওয়া--কিসের ভয়!

সন্ধ্যাবেলায় সবাই বসে গল্প করে একমনে,
সুখদুঃখের নানান কথা--ভাগ করে নেয় সবজনে।

তাইতো বলি "পোড়া চৈত্র"--এই কথাটি বড়ই ভুল,
এস চৈত্র বুকের মাঝে, তোমার খোঁপায় দেব ফুল।

Wednesday, April 12, 2023

স্বপন কুমার গায়েন -- গোধূলির চাঁদ বাঁকা

  গোধূলির চাঁদ বাঁকা
  স্বপন গায়েন
  ১১/০৪/২০২৩
*********************
বেঁকে গেছে জীবনের পথ
হাসিটুকু শুধু থাক
উত্থান পতন থাকবে চিরকাল
পাবেও কঠিন বাঁক।

মাথা নিচু অনেক করেছি
বুকেতে বেড়েছে ব্যথা
আর নয়, উঁচু মাথায়
করবো প্রতিবাদী কথা।

ঝড় উঠেছে হৃদয় মাঝে
থাকবো না আর নীরব
গলায় পা দিলেই দেখাবে
মানুষই হবে সরব।

সভ্যতা আজও ডুকরে কাঁদে
গোধূলির চাঁদ বাঁকা
স্বপ্নগুলো রাখবো বাঁচিয়ে
ক্যানভাসের রঙ পাকা।

দখিনা হাওয়ায় আবীর গন্ধ
দিশেহারা হয় জীবন
সুখের ঠিকানা অলিখিত থাক
ঈশ্বরকে করবো স্মরণ।

         ******

Tuesday, April 11, 2023

শুভা রায় -- অভিমানী চৈতি

অভিমানী চৈতি
শুভা রায়
১০/০৪/২০২৩
বসন্তের বিদায় আর নববর্ষের অপেক্ষা....
এরই মাঝে নিশ্চুপে আসে চৈতিবেলা, ঋতুচক্রের শেষ লগনে!

এক বুক অভিমান সে 
করলো উজাড় আমার কাছে;
আমি কেন এত উপেক্ষিত
কোন গুরুত্ব কি আমার আছে ?

সকলে নতুন প্রভাতের অপেক্ষায় কালরাত্রির মত আমাকে বিদায় করতে পারলে বাঁচে!

বোঝালাম তাকে,
রেখো না মনে অভিমান..

তুমিই তো শুষ্ক শাখায় শাখায়
নব পল্লব করেছো দান!
তোমারই জন্য বাতাসে ভাসে
আম্র মুকুলের সুমিষ্ট ঘ্রাণ!
বেলি ফুলের সুবাসে মাতাল
সাঁঝবেলা রোজ দাও উপহার,
চৈতি রাতে একফালি চাঁদ
যেন আকাশের গলে চন্দ্রহার !

সবার তুমি বড্ড প্রিয়
ওগো চৈত্র মাস,
বিশ্বকবির সৃষ্টি মাঝে
তোমার স্থায়ী বাস।

"সেদিন চৈত্র মাস--
তোমার চোখে দেখেছিলেম
আমার সর্বনাশ" !!

Monday, April 10, 2023

লক্ষ্মী কান্ত দাস -- পালাতে পারবে কিনা?

 পালাতে পারবে কিনা ?
 লক্ষ্মী কান্ত দাস ।
০৯.০৪.২০২৩.
এত রূপ নিয়ে তুমি 
বারে বারে সামনে এসে 
দাঁড়ালে ,
আমি মুগ্ধতায় আত্মহারা হলে ,
নিজের কাছে বড্ড অসহায় হই ।
আড়ালে আবডালে যে অপরাধবোধ 
আমাকে আষ্টেপিষ্টে জড়িয়ে ধরে 
আমার নির্জনতায় নিঃসঙ্গতার অন্ধকারে ,
আমি আমার সৎসাহস হারাই ,
আমার চৈতন্যের আয়নার মুখোমুখি দাঁড়াতে ।
আমি জানি , রূপ আলোর প্রকাশে বদ্ধপরিকর ,
আমি জানি , আগামীতেও তুমি আরো আরও অনেকবার , আলোর সামনে আসবে রূপ নিয়ে ,
আমি জানি না , আলিঙ্গন পিয়াসী জীবন প্রবণতা ,
এমনই মুচকি হেসে, পারবে কি না , নিজের পাপগুলোকে পাশ কাটিয়ে ,
নিজের কাছ থেকে , পালিয়ে যেতে ??

Sunday, April 9, 2023

অসিত কুমার সরকার -- সিনিয়র সিটিজেনশিপের প্রেমপত্র

সিনিয়ার সিটিজেন এর প্রেম পত্র
অসিত কুমার সরকার
৮/৪/২০২৩

গিন্নি ,
          আমি ভাল আছি। সারাদিন তোমার মুখঝামটা না খেয়ে বেশ স্বাধীনভাবে দিন কাটাচ্ছি। তুমি বাবলির মেয়ে মাস-দুয়েকের হলেই ফিরে আসবে, এই কথা ছিল। আজ ঠিক চার মাস আঠারো দিন। কথার খেলাপ করা তোমার চিরকালের স্বভাব। তুমি না থাকাতে আমার কোন অসুবিধা হচ্ছে না। শুধু বলে রাখি দিল্লিতে কিন্তু সাংঘাতিক ঠান্ডা পড়ে। 

সেই সময় যদি কলকাতা ফিরে না এসে ওখানেই থেকে যাও এবং ঠান্ডা লাগাও পরে তার ঝক্কি এই বয়সে আমি পোহাতে পারব না। তোমার তুলসীগাছে রোজ জল দিতে আর সন্ধ্যায় তুলসীতলায় প্রদীপ জ্বালাতেও আমি আর পারছি না......আমার ভাল লাগছে না, এই বলে দিলাম। তাই বলে ভেবো না যে, আমি তোমার দুঃখে কাতর হয়ে পড়েছি। মোটেও তা নয়। শুধু তুলসীগাছ শুকিয়ে গেলে আমাকে যাতে দোষ দিতে না পার, তাই আগে থেকেই জানিয়ে রাখলাম।

আরও  জেনে রাখো যে, আমি কিন্তু মনে করে লাইট-ফ্যানের সুইচ বন্ধ করে বাইরে যাচ্ছি না......সারাদিন ওগুলো চলুক, যা ইচ্ছে হোক। তুমি না থাকাতে এসব নিয়ে কেউ আমাকে খিচ্ খিচ্ করছে না, তাই বেশ শান্তিতেই আছি। শুধু  ভোরবেলা রান্নাঘরেের পাশে যে কাকগুলোকে তুমি বিস্কুট ভেঙে ভেঙে খেতে দাও, তারা তোমাকে দেখতে না পেয়ে প্রবল ডাকাডাকি করছে,সকালবেলা ঘুমের দফারফা। অসহ্য লাগছে আমার.....তোমার অনুপস্থিতির জন্য মোটেই নয়, কাকগুলোর কর্কশ চিৎকারের জন্য। 

আমাদের নাতনিটিকে নিয়ে তুমি খুবই ব্যস্ত বুঝতে পারছি। যে মিনতির মার উপর আমার দেখ্ভালের দায়িত্ব দিয়ে গেছ, সে প্রায়শই রান্নায় নুন বেশী দিচ্ছে। কাল রাত্রে তো দুধ দিয়ে রুটি খেলাম, তরকারি মুখে তুলতে পারি নি। অবশ্য দুধ-রুটি খেতে আমার কোনো অসুবিধা নেই, তবে মিনতির মার হাতের রান্না নিয়ে তোমার  আদিখ্যেতা দেখলে আমার মাঝে মাঝে হাড় পিত্তি চটে যায়,তাই ঘটনাটা জানালাম।

শোনো গিন্নি, তোমার সঙ্গে প্রেমালাপ করার ইচ্ছে বা সময় কোনটাই আমার নেই। তবে সাবধান করে দিচ্ছি, আগামী দশ দিনের মধ্যে তোমার ফিরে আসার খবর যদি না পাই তবে আমি প্রেশারের ওষুধ খাওয়া বন্ধ করে দেব এই বলে রাখলাম।তোমাকে জব্দ করার উপায় আমার জানা আছে।
একটা কথা বড় জানতে ইচ্ছে করছে। বাবলি তো এখন চাকরি করছে না। ওদের রাতদিনের একটি কাজের মেয়ে রয়েছে.....তবুও তোমাকে এতো প্রয়োজন ? নাকি দিল্লিতে তুমি নতুন কোন প্রেমিকের সন্ধান পেয়েছ?

সন্ধ্যে হয়ে এল। তোমার জন্য দুটি পুজোসংখ্যাও কিনে রেখেছি। বাবলি, জামাই ও ছোট্ট দিদিভাইকে আমার আশীর্বাদ দিও।

ইতি___
বাবলির বাবা

Saturday, April 8, 2023

বিবেকানন্দ রায় বর্ধন -- সাদা কাগজ

সাদা কাগজ
বিবেকানন্দ রায় বর্ধন 
০৪-০৪-২০২৩
চৈত্রের শুরুতেই যেন বর্ষা এসে গেছে, শিউলি জানালার দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে ভাবছে ওর বাবার বোধহয় আজও বাজারে যাওয়া হলনা,গতকাল ও যেতে পারেনি।ভাবতে ভাবতেই বৃষ্টি থেমে গেছে, শিউলির মনে একটুখানি স্বস্তি,দৌড়ে রান্নাঘরে গিয়ে
দেখে মা রান্না ঘরে নেই।উনুনের দিকে তাকিয়ে দেখে আগুন জ্বলছে না,তাহলে!
— মা ওমা তুমিকোথায়!
পাশের ঘর থেকে ওর মা বলছে,'কেনরে সোনা,কি হয়েছে।
— মা বৃষ্টি তো থেমেছে বাবা বাজারে যাবে না?
— না রে কিনিয়ে যাবে,দুপুর থেকেই তো বৃষ্টি হচ্ছিল, তাইতো কিছুই তৈরী করিনি।
— এখন থেমেছে,তাহলে এখন তৈরী করে দাওনা যাহয় অল্পকরে কিছু বানিয়ে দাওনা মা!
— এই অল্প সময়ের মধ্যে মটর ভিজবেনা,আমি তরকারি বানাব কিভাবে!
— মা গরম জল দিলেতো তাড়াতাড়ি হয়,দেখনা মা অল্প করে হলেও একটু করে দাওনা মা।
— আচ্ছা তোর বাবাকে গিয়ে জিজ্ঞেস কর এক ঘন্টার মধ্যে তৈরী করে দিলে যাবে কিনা।
— ঠিক আছে, আমি যাচ্ছি তুমি সব রেডি কর।
— বাবা ওবাবা এক ঘন্টার মধ্যে তোমাকে মা সব রেডি করে দিলে তুমি বাজারে যাবে।যাওনা বাবা আমার কাগজ লাগবে আমার খাতা শেষ হয়ে গেছে। 
— অনেক দেরি  হয়ে যাবে তো মা?
— যাওনা বাবা,শুক্রবার থেকে আমার পরীক্ষা, আমিও যাচ্ছি মাকে যাহায্য করতে।
— আচ্ছা তাহলে যা মা।
শিউলি দৌড়ে রান্নাঘরে গিয়ে মাকে বলে,'মা বাবা যাবে বলেছে, চল তাড়াতাড়ি বানিয়ে দেই,বলেই শিউলির ময়দা নিয়ে বসে পড়ে ময়াম তৈরী করার জন্য।
দুইজনে মিলে তাড়াহুড়ো করে তৈরী করে দিলে ওর বাবা রওনা হয়ে যায় বাজারের দিকে।
কিন্ত ওর বাবা বাজারে রওনা দেবার একটু পরেই আরার বৃষ্টি নামে, কখনো ঝিরঝির কখনো আবার জোরে বৃষ্টি পড়তে থাকে।শিউলির মনে আশঙ্কা বাবা কি দোকান খুলে বসতে পেরেছে!নাহলে এতো গুলো তরকারি ময়দা মাখা সবতো নষ্ট হবে,আমার জন্য কতগুলো টাকা লোকসান হবে,ভাবতে ভাততে কখন যে ঘুমিয়ে পরে,হঠাৎ জাগন হয়ে ধড়মড় করে উঠে বসে ঘড়ির দিকে তাকিয়ে দেখে রাত নয়টা। 
— মা ওমা বাবা এখনো আসেনি,বাইরে তখনও ঝিরঝির করে বৃষ্টি পড়ছে।
— নারে মা তোর বাবাতো এখনো আসেনি,আসবেই বা কি করে,বৃষ্টই তো থামছেনা।আজ বোধহয় কিছুই বিক্রি করতে পারেনি,সবই ফেরত আসবে!
রাত্রি তখন দশটা সাড়ে বাজে শিউলির বাবা ভিজে ভিজে বাড়ি আসে, বাবা বাড়ি ফিরলে শিউলি বাবার কাছে আসেনি ও জোর করেছিল বলেই ওর বাবা বাজারে গিয়েছিল তাই ওর মন খারাপ। 
এদিকে শিউলির বাবা বাড়িতে এসে গামছা দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে মেয়েকে ডাকে। শিউলি কাছে আসতেই জামার নিচ দিয়ে বুকের পাশ থেকে এক দিস্তা সাদা কাগজ বের করে মেয়ের হাতে দেয়!

Friday, April 7, 2023

মনোজ দত্ত -- চৈত্র বেলায়

  চৈত্র বেলায়
 মনোজ দত্ত
তারিখ  ০৬/০৪/২৩
ঘন মেঘে ফুলকি চিড়িক
চৈত্রের খর বিকাল বেলায়,
দখিনা মলয় চামর বুলায়।
অশ্বথ শুকনো পাতার হিড়িক
উড়ছে কেমন হাওয়ায় হাওয়ায়।

ধুলির ঝড়ে দিক বালিকা
ভ্রান্ত পথের পথিক হয়ে,
 দিক হারিয়ে পাখায় বয়ে
ঘুরিছে ডেকে হারিয়ে দিশা,
অসীম শুন্যে উড়ে গিয়ে।

ভেড়ির পথে গাভীর সারি
চলছে তেড়ে ডেকে হেঁকে,
রাখাল বালক আকাশ দেখি
 গাইছে বেতাল গানের সারি।

নদীর সীমা ছাড়িয়ে এলো
ঝিরিঝিরিয়ে হালকা বাদল,
তপ্ত মাঠে ভাসিয়ে দিল
শিশির নাওয়া জলের আঁচল।

সবুজ মাঠে হাত ছড়িয়ে
 বরষা গানের পাল তুলেছি,
দমকা হাওয়ায় মেঘের রাশি
এলো ছুটে দখিনা হয়ে।

Thursday, April 6, 2023

রেজাউল করিম বিশ্বাস -- যাযাবর

 যাযাবর 
 রেজাউল করিম বিশ্বাস 
০৫.০৪.২৩
শুনেছ তুমি গরিবের কান্না।দেখেছো অনাথ শিশু।
সব হারাবার ভয় নাই তার।
 তারা যে সবার পিছু।

মশা মাছি বর্ষায় কেমন চলে
যমের সাথে লড়াই  দু'বেলা
তারাও আমাদের দেশের সন্তান।

কেউ যায় আকাশ ছুঁয়ে বিদেশ বিভুঁই
বেলুন চোড়ে হাওয়ার দেশে
খোঁজ রাখেনি পদতলের দূর্বা ঘাসের।

কান পেতে শুনো আজ তোমাদের ও হবে অকালবোধন।
লাটিমের সুতোর মাথায় তোমরা 
লাটিম যে তাদেরই হাতে।

পরিচয়হীনদের পরিচয় পাবে
দেখবে তোমাদের সর্বনাশ
তাঁরা আজ যাযাবর।

চোয়া,, হরিহর পাড়া,, মুর্শিদাবাদ।

Wednesday, April 5, 2023

 নির্বাসন
সঞ্জীব চক্রবর্ত্তী
৪/৪/২০২৩
নির্বাসন দেবে আজ             দেরি করা নয়
দেহে সৈনিকের সাজ          দেখছ এখন
রণক্ষেত্রে মৃত্যু দেখা           ভাঙ্গিনি তখন
চলো রাজি আছি আমি ‌    নেই মনে ভয়।

রক্তপাত দেখা চোখে        যুদ্ধে এটা হয়
আর্তনাদ শুনি কানে         ছুটছি যখন
গোলা ছুটে আসে ঘাড়ে    ভাবিনি কখন
বীর থাকে নিজ কাজে      দেখে যত ক্ষয়।

আমার রক্তে লেখনী ‌      শক্ত হাত ধরে
রাতদিন একাকার           জন্ম নেয় ঘরে।

আবার আসব ফিরে     তোমাদের হয়ে
সময় চলছে ঠিক         চলো যেতে হবে
নদীর বাঁকে আছড়ে     জল যায় বয়ে
শপথ নিলাম আমি       কিছু চিহ্ন রবে।

Tuesday, April 4, 2023

সুজন দাস -- মুখোশের আঁড়ালে


"মুখোশের আঁড়ালে .."
 কবি শ্রী সুজন 
 ০৩/০৪/২০২৩
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
রাতজাগা দুটি চোখ ,
চোখের ভাষায় মুখোশের আঁড়ালে অন্য মুখ |
এই মুখের ভাঁজে আজ বৈপরীত্যের অসুখ,
বিপথগামিতার কংকালসার অবয়ব |
হাসির মাঝে হীরক রাজার অট্টহাস্যময় কলরব,
মুখের বলিরেখায় স্পষ্ট পিশাচসম সংশ্রব |
শয়তানি মস্তিষ্কে জিঘাংসার তান্ডব,
নৈতিকতা বিসর্জনে অনৈতিকতার চোরাবালিময় পরাভব |
অপমানবিদ্ধ সাগরে আজ চোয়ালচাপা বিক্ষোভ,
ক্রোধাগ্নির দহনে ভিসুভিয়াসের অগ্নুৎপাতী দেহসৌষ্ঠব |
নিজের প্রতি নিজেই ঘৃনার জ্বালাময়ী উৎসব,
কি ভেবেছিলি আর কি হলো হায় রে বিধি কি তোর বৈভব ?
সময়ের মানদন্ডে আজ তুই মহান হতে শয়তান পদবাচ্য দানব,
'বেলাশেষে' 'শেষের কবিতা'য় 'বিষের বাঁশি'র অসহায় সুরোৎসব |
বিষেশ্বরীর মধুভান্ডে বিষরসের জ্বলনোৎসব,
তবে আর বিলম্ব কিসের ? কিসের অপেক্ষায় তুই হে অভাগা মানব ?
এগিয়ে চল সীমাহীন নীলদিগন্তপানে পিছুটানহীন মুক্তির কলরব,
সেথায় রবে না আপন-পর বা উচচ-নীচ ভেদাভেদের গরব ;
রবে শুধু "শান্তি ওম,শান্তি ওম,হরি ওম, তৎ  সৎ"চিরশান্তির মহোৎসব..|

*********************************

Monday, April 3, 2023

দীপ্তি চৌধুরী ঘোষ -- ঝড়ের তান্ডব

ঝড়ের তাণ্ডব
 কবি দীপ্তি চৌধুরী ঘোষ
০২/০৪/২৩
 নীল আকাশে মেঘের ভেলা
 দমকা হাওয়া বইছে মেলা
 আসবে বুঝি ঝড়,
 নৌকা বাঁধা নদীর ঘাটে
 সূর্যি মামা যাচ্ছে পাটে
 লাগছে ভীষণ ডর |

 ও মাঝি রে দেখ না চেয়ে
 কালবৈশাখী আসছে ধেয়ে
 বাড়ি ফিরে চল,
 সাঁঝের আঁধার ধরল ঘিরে
 কেমন করে ফিরবে নীড়ে
 বল রে মাঝির দল |

 মুষলধারে বৃষ্টি পড়ে
 টাপুর টুপুর শব্দ করে
 টিনের চালের 'পর,
 গাছের পাতা পড়ছে ঝরে
 বৃষ্টির সাথে শীল যে পড়ে
 মনে লাগছে ডর |

 চৈত্র থেকে বৈশাখ মাসে
 যখন-তখন ঝড় যে আসে
 আকাশ ধরে সাজ,
 ঝড়ের কূপে পড়ে গেলে
 হাওয়ার গতি নেবে ঠেলে
 কখন পড়বে বাজ |

Sunday, April 2, 2023

মৃত্যুঞ্জয় সরকার -- আয় না ফিরে

 আয় না ফিরে
মৃত্যুঞ্জয় সরকার
২৮/০৩/২০২৩
তুই আসবি বলেও আসলিনাতো
আমার সজল ঘন ছায়া বনে,
আমার হৃদয় জোড়া উপল রেণুর
দরাজ আলিঙ্গনে।

তবু তুই কী আমার কষ্ট হবি
শিউরে উঠে আসবি পাশে
হারিয়ে যাবার মুহূর্ততে?

চৈত্র মেঘে তীব্র দহন
ছন্নছাড়া আমার আকাশ,
বৃষ্টি হয়ে আয়নারে তুই
চাতক মনে তপ্ত বুকে।

ওলি তো চায়,পরাগ খুশি
বন বনানী মত্ত,
হাওয়ায় দোলে উষ্ণ আবেগ
হৃদ যমুনায় ঢেউ।

আমার নয়ন তারা উদাস বাউল
বুকের ভিতর মরু ঝড়,
পারবি বৃষ্টি মেঘে স্বস্তি দিতে
হৃদ জোয়ারের অন্ধকূপে।

বসন্ত রঙ রাঙায়না মন
দেয়না মনে বাউল সুর,
হৃদয় পুড়ে,হৃদয় জ্বলে
পলাশ ফাগুন ব্যাভিচারে!

হারিয়ে যাবার মুহূর্ততে
আসবি বৃষ্টি হয়ে আমার কাছে,
কষ্ট বুকে হৃদয় দিয়ে হৃদয় পেতে.....

বিজয়া মিশ্র -- পারফিউম


পারফিউম
 বিজয়া মিশ্র
২৯.০৩.২০২৩
বৃষ্টিতে বাইরে থাকলেই তৃষার চোখে ভাসে সেদিনের কথা।  সেদিন ও ছিল সারাদিন মেঘের ঘনঘটা।বৃষ্টি হবো হবো ক'রেও হচ্ছিল না। এভাবেই চলছিল আগের দুদিন।সেদিনের সকালটা কখনো মেঘ কখনো রোদ্দুর। তৃষা সেদিন একটু সকাল সকাল অফিস থেকে বেরোবে ভেবে রেখেছিল। ঠিক চারটে নাগাদ শুরু হল বৃষ্টি। ঐতিহ্য অপেক্ষা করবে। ভেতরে ভেতরে ছটফট করছিল তৃষা। ছাতাটাও ছিলনা সঙ্গে। 
সব প্ল্যান মাটি করে একনাগাড়ে বৃষ্টি হচ্ছিল। ফোনে ম্যাসেজ চলছিল দুজনের মধ্যে। পরিস্থিতি খারাপ বুঝে ঐতিহ্য গাড়ি নিয়ে চলে এসেছিল অফিসের সামনে। ড্রাইভার থাকলে তৃষা ওদের গাড়ি এড়িয়ে চলে। অগত্যা ঐতিহ্য ড্রাইভার ছেড়ে দিয়ে নিজেই ড্রাইভ ক'রে এসেছিল। সেদিন তৃষা গেট পর্যন্ত আসতে আসতেই কাক ভেজা। কিছুটা দূরের মার্কেটিং কমপ্লেক্স থেকে ছাতা এবং তৃষার পছন্দমতো একসেট পোশাক কিনে চেঞ্জ ক'রে ওরা রেষ্টুরেন্টে গিয়ে টেবিলে বসলো।বৃষ্টি বাড়ছে ক্রমশঃ। খাওয়া দাওয়া সেরে বেরোতে যাবে এমন সময় শুনলো রাস্তা জলে জলময়। গাড়ি চলাচল প্রায় বন্ধ। পরিস্থিতি ক্রমশ খারাপ হচ্ছিল সঙ্গে ঝড়ো হাওয়া। ছাতা খুলতেই উড়ে যাচ্ছিল। কিছুক্ষণ বাদে ঝড়বৃষ্টির দাপট কমলেই বেরোবে ভেবে রেস্টুরেন্টেই
অপেক্ষা করছিল ওরা। অনেকদিন পর  ওদের দেখা হয়েছে।কত কী প্ল্যান করেছিল । সব মাটি। এফ এম চালিয়ে কিছু কিছু খবর শোনা যাচ্ছিল। রাত্রি ক্রমশ বাড়ছে। বাড়ির লোকজন উদ্বিগ্ন।বারবার ফোন করছে। এখন বেরোনোর উপায় নেই। রেষ্টুরেন্ট থেকে একটু দূরের জমা জলে বিদ্যুতের শক লেগে একটি কম বয়সী ছেলে মারা গেছে। এলাকা বিদ্যুৎ বিহীন । 
ট্রাফিক পুলিশ রাস্তার বিবরণ এবং যানচলাচলের নিষেধাজ্ঞা ঘোষণা করে চলেছে। রেষ্টুরেন্টের মালিক
নিজে কাউকে চলে যেতে বলতে না পারলেও রেষ্টুরেন্ট বন্ধের তোড়জোড় করছিলেন। ভাগ্যিস ঐতিহ্য সঙ্গে আছে, নইলে...। তৃষা উদ্বিগ্ন। সমস্ত দিনের আবেগোচ্ছ্বল সুন্দর ভাবনাগুলো এলোমেলো লাগছে। রেষ্টুরেন্টের জানালার পর্দা সরিয়ে বাইরের দিকটা দেখতে চাইছিল তৃষা। বৃষ্টির ছাট এসে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে ঘষা কাঁচের গায়ে। নিঃশব্দে ঐতিহ্য এসে দাঁড়িয়েছে গা ঘেঁষে। তৃষা চোখ বন্ধ করে অনুভব করছে পারফিউমের মিষ্টি গন্ধ। বৃষ্টির শব্দ শোনা যাচ্ছিল না শুধু কিছু দূরের গাছের শাখাগুলোর প্রবল আন্দোলন আর বন্ধ জানালার কাঁচে প্রথম বৃষ্টির পরশে যেন তারই হৃদয়ের কথা ব্যক্ত ক'রে চলছিল সেই বর্ষনশিক্ত রাতে। সমস্ত নিষধাজ্ঞা উড়িয়ে দিয়ে প্রায় মধ্যরাতে বাড়ি ফেরার সময় একটি গাছের ডাল ভেঙে পড়েছিল গাড়ির উপর। ব্যাস। মাথায় চোট পেয়ে ঐতিহ্য চিরতরে দৃষ্টিশক্তি হারায়। তৃষাও গুরুতর আহত হয়েছিল কিন্তু শেষপর্যন্ত সেরে উঠেছিল। 
      সেদিনের পর ঐতিহ্যের বাড়ির লোকজন তৃষা কে পুত্রবধূ হিসেবে গ্ৰহণ করতে চায়নি। তৃষা দায় এড়ায়নি। ঐতিহ্য নিজেও  চায়নি তৃষার অনিশ্চিত,কষ্টকর জীবন। নাছোড় তৃষা দুই বাড়ির অমতেও নিজে ঐতিহ্যের দায়িত্ব নিয়ে সংসার বেঁধেছে, ভালো রাখতে অনেক শ্রম করে। শুধু প্রথম বৃষ্টি জানলার কাঁচে আছড়ে পড়ে  ধারাপাতের নিরন্তর আল্পনা আঁকা সময়ে ঐতিহ্য তার গা ঘেঁষে  দাঁড়ালে আজও তৃষা যেন সেই পারফিউমের টাটকা গন্ধে বেঁচে থাকার মানে খুঁজে পায়, পূর্ণতা অনুভব করে।

Saturday, April 1, 2023

রানু বর্মন -- রুদ্ধশ্বাস স্মৃতিচারণ

রুদ্ধশ্বাস স্মৃতিচারণ 
রাণু বর্মণ
তারিখ-৩১/০৩/২৩
আর কিছুটা সময় ——
তোমার স্মৃতির আবরণে ঢাকা মুহূর্ত
 ছুঁয়ে আছে গভীর হৃদয়ের তলদেশ।
 সঞ্চিত প্রেম পুটুলি ভরে 
নৌকা পাড়ি দেবে অজানার ডাকে।
 যেতে যেতে বিক্ষিপ্ত ঢেউয়ের মাঝে 
ডুবে যাবে স্মৃতির সম্ভার ;
উদ্দেশ্যহীন যাত্রা পথে সমুদ্র গর্ভে 
অশ্রু জলে নিমগ্ন হবে দেহ ।
শ্বাস রুদ্ধ বাকরুদ্ধ জলমগ্ন হৃদয় প্রকোষ্ঠ
 কিছুক্ষণ অনুভব করবে সেই রাতের পরশ ।
একান্ত ক্ষণ শরীরের তাপে ঘর্মাক্ত দেহ 
শুষ্ক কণ্ঠে দ্রুতলয়ে হৃদস্পন্দনের 
অবর্ণনীয় অনুভূতি —
তলিয়ে যেতে যেতে আরো একবার রোমন্থন।
 কি অপূর্ব তোমার বুক্ষযুগল
 দীঘল নয়নে ওষ্ঠ চুম্বনে এক পার্থিব সুখ।
তখনও তোমরা শরীরের গন্ধ ভেসে আসছে নাকে,
  ভালোবাসার সঙ্গম তীর্থে
 তুমি দুহাত বাড়িয়ে আছো। 
কেউ তার প্রিয় মানুষকে ফেলে যেতে চায় না
 তবুও যেতে হয় ।
শরীর ক্রমশ নিথর হয়ে আসছে
 মস্তিষ্কের স্মৃতিচারণ ধোঁয়াচ্ছন্ন,
 হৃদস্পন্দনের অনুভূতির দরজা বন্ধ
 জলতলে হারিয়ে গেল সব —
সৃষ্টিতে রয়ে গেলে প্রেমের প্রতি মূর্তি তুমি।

Friday, March 31, 2023

নিবারণ চন্দ্র দাস

 স্বজন   
নিবারণ চন্দ্র দাস
৩০/০৩/২০২৩
কাঁটাতারের এপার ওপার আমার বাংলা মা,
আয় রে তোরা আমার মায়ের স্বরূপ দেখে যা।
হেথায় সাগর নদী পাহাড় সবুজ ঘেরা গাঁ,
বিভাজ্য নয়,বিনি সুতোয় বাঁধা ঠিকানা।

ভাইয়ে ভাইয়ে বিভেদ বাঁধায় ওই যে কাঁটাতার,
ভাই বোনে তে হয় না মিলন,এপার আর ওপার।
নদী সাগর আকাশ পাহাড় সবুজ বনলতা,
মিলন সুরে যায় যে বলে হৃদয় কথকতা।

ওপারে মোর রইলো স্বজন,এপারে রই পড়ে,
মনে ভাবি এই দূরত্ব ঘুচবে কেমন করে।
কে দিলো রে ওই কাঁটাতার আত্ম বিভাজন,
ওপারে তে ভাই যে আমার,চায় যেতে এই মন।

ওই পারে তে মা যে আমার এই পারেও মা,
দুই পারেতেই আছে মোদের খুশির ঠিকানা।
আম কাঁঠাল আর শিমুল পলাশ এপার ওপার জুড়ে,
পাই না যেতে ওই পারে তে মন যে আমার পুড়ে।

ওরাও বলে বাংলাভাষা আমরা বলি তাই,
মোদের মায়ের মুখের ভাষার নাই তুলনা নাই।
এই পারে তে যে নদী তার যোগায় প্রাণের সুধা,
সেই নদীটা ওপারেও মেটায় প্রাণের ক্ষুধা।

হেথায় চাষী যেমন করে ফলায় ফসল আজও,
ওই পারে তে তেমনি চলে চাষাবাদের কাজও।
হেথায় ফলে সোনার ফসল,হোথায় ফলে তাই,
এপার ওপার দু'পার মিলে আমরা বোন আর ভাই।
                               :::-:::

Thursday, March 30, 2023

ডি. সি. মন্ডল



"আশায় মনটা বাঁচে"
               ডি, সি, মন্ডল
               ২৮/০৪/২৪/খ্রিঃ
সবুজ শ্যামল বিছায় আঁচল
বাংলা মায়ের চোখের কাঁজল
কত সুন্দর শোভা,
চারদিকেতে ফুটছে যে ফুল
রঙের আলোয় ভরছে সে কূল
হৃদয় মনোলোভা।

ভাসছে যে মেঘ আকাশ তলে
পড়ছে বৃষ্টি ভাসছে জলে
মাটির যে ঘ্রাণ আসে,
গাছ- গাছালির নানান বর্ণে
ভরছে যে মন  অরূপ স্বর্ণে
পাখ- পাখালি হাসে।

নানান রূপে  গড়ছে ধরা
ফসলে আজ দেশটি ভরা
স্বস্তি মনে লাগে,
প্রাণ যে সকল দিচ্ছে সাড়া
সৃষ্টির  এমন  সুদূর  ধারা
রইছে মোদের ভাগে।

পরাণ মাঝে বইছে সে সুখ
নতুন বছর কাটছে যে দুখ
আশায় মনটি বাঁচে,
তুলছে ফসল আনছে ঘরে
উঠান  বাড়ি  সকল  ভরে
জীবনটা যে সাচে।

দিলীপ ঘোষ -- সেভেন পয়েন্টে দাঁড়িয়ে জীবন

সেভেন পয়েন্টে দাঁড়িয়ে  জীবন 
দিলীপ  ঘোষ 
২৯/০৩/২৩
আশার উঁচু নীচু পথে রাগী হাঁটা  হেঁটে
ক্লান্ত নিখিলেশ,
পার্ক সার্কাসের সেভেন পয়েন্টে দাঁড়িয়ে
পথ খুঁজছে  পথ হারিয়ে 
সাথীরা ফিরে গেছে নিজস্ব  ঠিকানায়
মধু রাত কাটিয়ে ।

অনেকগুলো ছোট গল্প সাজিয়ে
লেখা উপন্যাস, হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে 
জীবন্ত  কিছু প্রশ্নের উত্তর  খুঁজছে  বারেবারে
স্মৃতির  অপারেশন চলছে, সুমুদ্র তটে দাঁড়িয়ে ।

নিখিলেশের আকাশে নীম্নচাপের ঝড় বৃষ্টি 
ঝড়ের তান্ডব মনে প্রানে
কনকনে শীতের মত কতকগুলি জিজ্ঞাসা 
দুপুরের রোদ্দুর খোঁজে 
সাথীরা তখন চলে গেছে আসব বলে ।

নিখিলেশ দাঁড়িয়ে  উত্তরহীন প্রশ্ন  নিয়ে
দাঁড়ি কামায় ভোঁতা  ব্লেড দিয়ে
যেন এক পরাজিত সৈনিক 
যুদ্ধে জয়ী সেনাপতির দুয়ারে
সেভেন পয়েন্টে হাঁটছে জীবন , হামাগুড়ি দিয়ে ।

Tuesday, March 28, 2023

মানব মিশ্র

 অশ্রু ঝরায় আশা
 মানব মিশ্র
২৭/০৩/২০২৩
প্রকৃতি পরমা - এ কোন উপমা
ছিন্নভিন্ন রূপে,
সঞ্চিত আশা - হয়ে নিরাশা
অশ্রু ঝরায় নিশ্চুপে।
গোধূলি লগনে - খুশির পবনে
পরাণে দিল যে দোলা,
প্রেমের পরশে - মধুর আবেশে
হৃদয়ের দ্বার খোলা।
কমল কলি - ডাকিয়া অলি
তারে মধুর সম্ভাষণে,
বলে আগামী ভোরে - এসো মোর দ্বারে
মধু আহরণে।
রজনীর দ্বারে রজনীগন্ধা
শুভ্র পাঁপড়ি মেলে,
সোনালী কিরণ - করবে বরণ
রূপের আলো জ্বেলে।
অমাবশ্যা তিথি - গায় ভক্তিগীতি
আর জনমে জবা হবো,
রক্তিম পাঁপড়ি মেলে - বিকশিত জবা বলে
কখন মায়ের চরণ ছোঁবো !
ঐ তরুলতা - মেলে কচি পাতা
আঁকড়ে ধরে অবলম্বনে,
ছিল যত চাওয়া - হলো আজি পাওয়া
এ মধুর প্রেম আলিঙ্গনে।
ঐ কালো আঁখি - সর্বনাশী বৈশাখী
ভয়ঙ্করী রূপ ধরে,
অশান্ত চিত্ত - তাণ্ডব নৃত্য
নাচিবে প্রকৃতি পরে।
অশনির ঝলকানি - বিকট বজ্রধ্বনি
নাচে বৈশাখী প্রলয়ঙ্করী রূপে,
সঞ্চিত আশা - হয়ে নিরাশা
অশ্রু ঝরায় নীরবে নিশ্চুপে।
প্রকৃতি পরমা - এ কোন উপমা
ছিন্নভিন্ন রূপে,
সঞ্চিত আশা - হয়ে নিরাশা
অশ্রু ঝরায় নিশ্চুপে।
গোধূলি লগনে - খুশির পবনে
পরাণে দিল যে দোলা,
প্রেমের পরশে - মধুর আবেশে
হৃদয়ের দ্বার খোলা।
কমল কলি - ডাকিয়া অলি
তারে মধুর সম্ভাষণে,
বলে আগামী ভোরে - এসো মোর দ্বারে
মধু আহরণে।
রজনীর দ্বারে রজনীগন্ধা
শুভ্র পাঁপড়ি মেলে,
সোনালী কিরণ - করবে বরণ
রূপের আলো জ্বেলে।
অমাবশ্যা তিথি - গায় ভক্তিগীতি
আর জনমে জবা হবো,
রক্তিম পাঁপড়ি মেলে - বিকশিত জবা বলে
কখন মায়ের চরণ ছোঁবো !
ঐ তরুলতা - মেলে কচি পাতা
আঁকড়ে ধরে অবলম্বনে,
ছিল যত চাওয়া - হলো আজি পাওয়া
এ মধুর প্রেম আলিঙ্গনে।
ঐ কালো আঁখি - সর্বনাশী বৈশাখী
ভয়ঙ্করী রূপ ধরে,
অশান্ত চিত্ত - তাণ্ডব নৃত্য
নাচিবে প্রকৃতি পরে।
অশনির ঝলকানি - বিকট বজ্রধ্বনি
নাচে বৈশাখী প্রলয়ঙ্করী রূপে,
সঞ্চিত আশা - হয়ে নিরাশা
অশ্রু ঝরায় নীরবে নিশ্চুপে।

Friday, March 24, 2023

 যদি হতেম নদী
শান্তি পদ মাহান্তী
২৩/০৩/২০২৩

আমি যদি হতেম নদী
স্বচ্ছ জলে ভরা,
মরুর বুকে যেতাম ঢুকে
লয়ে জলের ধারা।

আমার পলি ঢাকতো বালি
জমতো মরুর বুকে,
আমার জলে ফুলে ফলে
দুলতো সবুজ সুখে।

ভাটার টানে নিতাম টেনে
চোখের যতো পানি,
ভর জোয়ারে দিতাম ভরে
শুষ্ক হৃদয় খানি।

যেতাম ছুটে পাহাড় টুটে
ফেনা তুলে বাঁকে,
মোহনাতে মিশে যেতে
নীল সাগরের ডাকে।

সব অহঙ্কার গর্ব আমার
মিথ্যা সকল ছেড়ে,
সব দীনতা মলিনতা
দিতাম উজাড় করে।

সাগর জলে দিতাম ঢেলে
আমার বুকের ধারা,
ক্ষুদ্র আমি সাগর চুমি
হয়ে যেতাম হারা।

Thursday, March 23, 2023

দিলীপ ঘোষ


উদাসীন
দিলীপ  ঘোষ
২২/০৩/২৩
শরীরহীন কিছু আশা হাঁটে রাজপথে
রাস্তা পারাপার করতে গিয়ে
আটকে যায় সিগন্যালে
জীবন্ত অভিজ্ঞতা  বলে, --
আশা মারা গেছে কোনকালে ।

তুলোর বীজের মত মন ওড়ে আকাশে
দীর্ঘশ্বাস লাগে শরৎকালে
ফাগুন যখন জন্ম নেয় হৃদয়ে 
বসন্ত তখন  পৃথিবী  ছেড়ে গেছে পরকালে ।

একটা অভিমানী পিপাসার গর্ভে
জন্ম নেয় অবৈধ  সন্তান
হতাশার শক্ত পাথরে কপাল ঠোকে
ধ্রুপদী  অহংকারের সম্মান ।

Wednesday, March 22, 2023

কবিতারা
কাকলী
২০/০৩/২৩



যখন আগুন জ্বলে বসন্তের বুকে,
যখন ফাগুন উড়ে শিমুলের ডালে,
নিভে আসা সূর্যকে সাক্ষী করে,
কিছু কথা ঠোঁটে নিয়ে উড়ে যায় পাখিরা ঘরে,
ঠিক তখনই ঠিক তখনই আসে কবিতারা,
ধীর পায়ে মেঘের কোল ঘেঁসে,
রাত বাড়লে শহর যখন গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন,
ঠিক তখনই কবিতারা জেগে ওঠে চাঁদের আলোর সাথে,
দূর বহুদূর থেকে ভেসে আসা সঙ্গীতের মূর্ছনায় সাথে,
শিরায় শিরায় প্রবাহিত হয় রক্তস্রোতের সাথে,
আবার কখনো হারিয়ে যায় কুয়াশা ঘেরা পাহাড়ি পথে,
ধাপে ধাপে কুয়াশা রেখে যায় সূর্যের অপেক্ষাতে,
যদি কখনো বৃষ্টি হয় মাঝরাতে,
জলের আলপনা কাঁচের শার্শিতে,
কবিতা তখন ঘুম ভেঙে জেগে ওঠে,
হাজার বছরের জমে থাকা যন্ত্রণার সাথে,
উড়ে যায় শুকনো পাতার মতো ঝড়ের বুকে,
অস্তিত্বহীন কাঠামোয় নিজের অস্তিত্ব খুঁজে নিতে,
ভিজে যাওয়া অনুভূতি গুলো শব্দের বাঁধনে বেঁধে,
জেগে ওঠে কবিতারা জ্বলন্ত হৃদয় থেকে,
শত সহস্র বছরের কল্পনার জাল ভেদ করে,
ভাঙ্গা ঘরের ভাঙ্গা জানলায় জোৎস্নায় ভিজে ভিজে,
আবার কবিতারা হারিয়েও যায়, জীবন পথের বাঁকে,
কোনো এক অচেনা রাস্তাতে হাত ছেড়ে দেওয়া স্বপ্নের ডাকে,
হারিয়ে যায় জীবন থেকে নোনা জলে ভেসে ভেসে,
ঘুমিয়ে পড়ে কবরে গভীর নিদ্রাতে চিরকালের তরে।

Thursday, October 20, 2022

পাহাড়িয়া প্রেম

পাহাড়িয়া প্রে


স্পর্শহীন প্রেম জাগানিয়া ভোর ,
কুয়াশামাখা উৎসুক চোখে গভীর আবেদন ,
অনাস্বাদিত অধর-রস-সুধা ,
সবই তোমার অপেক্ষায় --- 
এসো , বাস্তবের কাঠিন্য ভেদ করে --
শিশিরে হাত ভিজিয়ে নিই --
হিমের শীতল পরশে সিক্ত হৃদয়
পুনরায় করি অর্পণ -- " যদিদং হৃদয়ং তব ...."

হাতে হাত রাখো -- আসবে অকাল বসন্ত ,
চোখে চোখ রাখো -- কোকিল গাইবে সুরে ,
মনে মন রাখো -- হাজার সমুদ্রের উচ্ছ্বাস বাজবে বুকে ,

কঠিন পাহাড়ের বুকেও ফুল ফোটে ,
সবুজের সুবাস ভাসে বাতাসে ,
মাথা তুলে দাঁড়ায় যে ঋজু পাইন , 
বহুকাল --- বহুদূর থেকে ডাকে ।

অজস্র ঝিঁঝিঁর সমাবেশ --
পাহাড়িয়া ভেজা ভেজা পথ --
অপেক্ষায় -- অপেক্ষায় তোমার --
ওপারে সূর্যোদয় -- এপারে গভীর গিরিখাত 
কি মায়াময় ভোর -- সকলই তোমার

ঝরণার কলতানে হৃদয়ের সুর ,
চোখে মুখে আদরের ছোঁয়া ,
ঠিক যেন মায়াময় ষোড়শী কন্যা ,
ঠিক যেন অর্ধস্ফুটিত উদ্ভিন্ন যৌবনা 

বাঁক পেরিয়ে এসো নতুন বাঁকে ,
বাঁকে হারাক মন --
সাথে আছে একমুঠো পাহাড়ী রোদ্দুর ,
রডোড্রেনড্রনের নরম মায়া কিংবা গোলাপী চেরীর আবেশ ,
আর থাক স্পর্শিল প্রেম জাগানিয়া ভোর ,
আমরণ প্রাণ জাগানিয়া ভোর ।

Thursday, September 29, 2022

চুপকথার আবেদন

চুপকথার আবেদন


রূপকথারা হারিয়ে গেছে অনেক দিন
এখন শুধুই চুপকথারা আছে মনে ,
সন্ধ্যার গোধূলি বা ভোরের রক্তিম 
চুপকথার অভিসার চলে গোপনে গোপনে ।

চুপকথারাও গল্প সাজায় মনে
অনেক দিনের না বলা কথার বুনন ,
চুপকথারাও কান পেতে কিছু শোনে
চুপ কথারও আছে সবুজ মন ।

চুপকথারাও ভাবতে ভালোবাসে 
চুপকথারাও স্বপ্ন দেখে জেগে ,
চুপকথারও দুচোখ ভিজে ওঠে
তোমার দারুন কঠিন কথার বেগে।

যতই তুমি বাঁধো কঠিন কথায় 
চুপকথাদের মুখটি চেপে ধরো ,
ততই জেনো বাষ্প ওঠে জমে
চুপকথারা কাঁপে থরোথরো।

চুপকথা কি তোমার আমার মনে
আনে না কোনো নতুন প্রাণের ঢেউ , 
আমার মনে আছে যে চুপকথা
আমিই জানি, জানে না আর কেউ।

তোমার মনে ডুব দিয়েছো কখনো
খোঁজ নিয়েছো নতুন চুপকথার ,
না বলা কথাটা বলেই ফেলো আমায়
দেখবে নতুন জন্ম হবে রূপকথার ।

Wednesday, September 28, 2022

হে মোর প্রিয়

যাকে পৃথিবী ভাবি , সে ই দূরে চলে যায়
যাকে মরণ ভাবি , সে ই এসে পাশে দাঁড়ায় 

তোমাকে প্রশ্ন করি ভোরের কামিনী ---
তোমার শুভ্রতা এত ক্ষণস্থায়ী ---
তোমারও তো একটাই হৃদয় , তাই
ভোরের ছোঁয়ায় তুমি হয়ে পর ম্রিয়মান 
যে আলতো ছোঁয়া প্রেম জাগানিয়া ,
ভোরের স্নিগ্ধতার মত , নরম আলোয় ,
তীক্ষ্ণ শেল হানে বুকে , আঘাতে আঘাত করে ,
আমি নিষ্পলক চেয়ে থাকি তোমার দিকে

অবাক পৃথিবী আমার , ‌‌‌‌‌‌বারে বারে চোখ রাঙাও,
তবুও বেনেবৌ ' বৌ কথা কও ' বলে ডাকে ,
ভুলে যাই তোমার স্বাধীনতা , ভুলে যাই তোমার পরার্থপ্রিয়তা , ভুলে যাই তোমার ক্ষমতা ,
আমি একা পড়ে থাকি শুস্ক মৃতবৎ ।

যে কথা যায় না বলা কাকেও ,
আমার পৃথিবী ভুলে গেছে তাকেও ,
যে প্রেম মালা চায় সতেজ , রঙীন ,
তার ভাষা কেঁদে মরে অন্ধকার বাঁকে ।

তুমি তো ছিলে প্রিয় প্রেরণা আমার ,
তুমি তো ছিলে আমার সুখ জাগানিয়া ,
তুমি তো এনেছিলে ভোরের শিশির ,
আজ শুধু এক বুক ব্যথার পাহাড় ।

আবার হারিয়ে যাই অসীম অন্ধকারে ,
কান পেতে শুনি শুধু মরণের ডাক ,
এসেছে আবার আমার ঘুম পাড়ানিয়া পাখি , 
থাক তবে , হাসিটুকু শুধু তোমার থাক।
আমার তো আছে প্রিয় ব্যথার সাগর ,
কান্নার বাষ্প জমা আমার আকাশ ,
এক সমুদ্র অনেক ঘেউ তোমায় দিলাম , 
আর বালুকাবেলায় দিলাম মুক্তির শিহরণ ।



Thursday, September 15, 2022

একলা জীবন


বয়ে চলা নদী , স্তব্ধ হয় যদি
হঠাৎ কোনো বাঁকে ,
ক্লান্তিবিহীন ,  তবু নিশিদিন
জীবন আমায় ডাকে।

উদাসীন মন , ভাবে অনুক্ষণ
এ কেমন হাতছানি,
যত ছাড়ি তারে, কিছুতে না ছাড়ে
বেঁধে রাখে হাতখানি ।

আকাশের কাছে , ঢের প্রমাণ আছে
কত প্রেম , কত অনুরাগে ,
ছিলে পাশেপাশে , নানান আবেশে
কত ফুল নিয়ে ফুলবাগে ।

দায় নিয়ে হায় , বেলা বয়ে যায়
এখন বসে শুধু ভাবি ,
দিনের আলো , সত্যি নিভে গেল
হারালো সুখের চাবি !

ভাবনারা বলে , সাথে সাথে চলে
সবই কি তবে ভুল ,
জীবন হারায় , আঁধার ঘনায়
ভেঙেছে নদীর কূল ।

সব বাধা ভয় , নিয়ে পরাজয়
একলা হলাম তবে ,
তার যত আশা , কোরো না নিরাশা
প্রার্থনা এই রবে ।

Monday, September 12, 2022

খোকনের বায়না

খোকনের বায়না



খোকন সোনা রাগ করেছে
ভাত খাবেনা রাতে,
মাছটা দেয়না , মাংস তো না ,
শুধু আলু ভাতে ।

পাশের বাড়ির হেঁসেল থেকে
সুবাস আসে কত ---
জিভেতে তার জল এসে যায় ,
নাকে আসে যত ।

মাছ বা মাংস কিনতে গেলে
লাগে অনেক টাকা ,
খোকন সোনা জানেনা তার
বাবার পকেট ফাঁকা ।

কাজ গিয়েছে -- ছ'মাস হল
দেনার পাল্লা ভারি ,
ইলিশ খাওয়া মুখের কথা ,
আমরা কি তা পারি ?

বাছা আমার , লক্ষ্মী সোনা
মানিক আমার ওরে ---
সাত রাজার ধন , মানিক তোকে
রাখবো বুকে করে ।

আর ক'টা দিন সবুর কর না
ইলিশ দেবো পাতে ,
আঁধার রাতটা কাটবে ঠিকই
সূর্য উঠবে প্রাতে ।

Sunday, January 23, 2022

ফিরে এসো সুভাষ

ফিরে এসো সুভাষ
          শিপ্রা বসাক 


বাঙালি আজও অপেক্ষার প্রহর গোনে ,
তোমার জন্য প্রিয় ---
শূন্য সিংহাসন ডুকরে কাঁদে ,
অপেক্ষায় ম্লান অভিষেকের নৈবেদ্য ,
 
ফিরে এসো প্রিয় ---
যে অঙ্গুলি নির্দেশে সমস্ত ভারতভূমি
হয়েছিল কম্পমান ,
স্বপ্নে খুঁজে ফিরি সেই ভরসার আঙ্গুল ,
হাতরে ফিরি আঁধার পথ ,
কোন পথে তোমার অন্তর্ধান ---

বাতাসে কান পেতে রই ,
দিগন্তে ওই যে ধুলোর ঝড় ---
কঠিন অশ্বক্ষুরের ধ্বনি --- 
তবে কি সময় হলো ---

আবার উঠবে ঝড় ,
আসবে প্লাবন ,
রক্তের চোরাস্রোতে ঘটবে সুনামি ,
দিগ্বিদিক মুখরিত হবে তোমার জয়গানে ,
আকাশে বাতাসে শোনা যাবে আনন্দবার্তা ,
নদী হাসবে খরস্রোতে ,
ফুল ফল পুষ্পাচারে তোমার আবাহন ---

ফিরে এসো সুভাষ ---
অভিমানী সুভাষ , ফিরে এসো ।



Wednesday, October 6, 2021

মানস স্বামী--- দেবী চৌধুরী

মানস স্বামী
দেবী চৌধুরী
--------------------



মন মন্দিরে যতন করে রাখা তোমার ছবি,
তুমি আমার স্মরণ করা প্রথম প্রণাম রবি।
ঘুম ভেঙ্গে মোর হাসি ফুটে তোমায় মনে পড়ে,
এলোকেশে ছুটি বাগে তোমার নামটি ধরে ।

হৃদ মাঝারে দিবানিশি থাকো মনের সাজে,
ভালোবাসার আসন নিয়ে ভুলাও আপন কাজে।
নয়ন জলে করি পূজা প্রেমের আসন পেতে,
পুষ্প লয়ে অঞ্জলিতে থাকি সদাই মেতে।

মনে মনে ভালোবাসি মনের ক্রন্দন সুরে,
মনের ঘরে কাব্য পাতায় আছো মালার ডোরে।
হিয়ার মাঝে বাজাও বাঁশি প্রেম রাগিনী তানে,
ভেসে বেড়াই তোমার প্রেমে ভাসি প্রেমের বানে।

মনেপ্রাণে চেয়েছি গো তোমায় ভালোবেসে,
তোমার হাসির গানের লিপি প্রাণে বাঁধে শেষে ।
সারাদিবস মনের দ্বারে বেড়াও হেসে খেলে,
তোমার কথা ভেবে চলি আঁখি দুটি মেলে।

ফুল তুলিতে তোমায় ভাবি কাঁটাই ফুলের বাগে,
মনের স্বামীর ভালবাসা জাগে অসীম রাগে।
মনে পড়ে শাসন বারণ মধুর প্রীতির কথা,
মন মন্দিরে থাকবে সদা থাকো যথা তথা।

সঙ্গে গণেশ" (রম্যরচনা) -- অরবিন্দ সরকার



                  "সঙ্গে গণেশ"
                    (রম্যরচনা)
             অরবিন্দ সরকার
           -----------------------------





হ্যাঁরে গণেশ! তোকে নিয়ে এসে তো বিপদে পড়লাম। অতশত খাস না? ভূড়ি কমা। গোগ্রাসে গিলে চলেছিস্ সর্বত্র।
গণেশ-  মা তুমি বাংলা ব্যকরণ জান? গণ+ঈশ=গণেশ । তাহলে কি দাঁড়ালো, জনগণের ভগবান আমি। যতবার পূজা শুরু হয় শুধু সবকিছুই আমাকেই নিবেদন করছে,বলছে ঔম্ গণেশায় নমঃ। তাহলে আমি কি করতে পারি? না খেলে তো প্রসাদ হবে না।তাই খেয়েই যাচ্ছি যতক্ষণ না বমি হয়।বমন না হলে তো উপযুক্ত প্রসাদ তৈরি হবে না। উচ্ছিষ্ট খাবারের নামই তো প্রসাদ।দেখো না চাল ডাল কলা মূলা মিষ্টি বাতাসা সব উগড়িয়ে দিয়েছি।সব পেট থেকে মাখাজোখা অবস্থায় বের করেছি। আহারের সময় ব্যাঘাত করতে নেই জানো তো মা।

মা- তাই বলে সব খাবি।আদেখ্লার বেটা বলবে? সবাই বলবে বাপ কোনোদিন কিছুই খাওয়ায় নি আর বাপের জন্মে দেখেওনি! আমাদের দেবকূলের বদনাম হবে।আখ নারকেল এগুলোও সব খাচ্ছিস।

গণেশ- হাতির মুখ আমার ।তাও তো রয়ে সয়ে খাচ্ছি।হাতি গোটা নারকেল খেয়ে নেয়, আমি ছোবড়া ছাড়ানো ভেঙে ভেঙে খাচ্ছি।হাতি পশু আর আমি দেব।তফাৎ অনেকটাই, শুধুমাত্র মুণ্ডটা হাতির আর সব বাবার। বাবার ভূড়ি আছে আমারও আছে।বাবা সদাশিব, উনি সবসময় চুপচাপ থাকেন।আর তুমি? ধমক দিয়ে বকেই চলেছো আমাকে। 
কার্তিককে আর  তোমার  গুনধর মেয়ে দুটিকে সামলাও এবার?
মা-- ওরা আবার কি করেছে? শুধু শুধু ওদের বকতে যাব কেন!

গণেশ- তোমার চোখ নাই? তুমি আবার ত্রিনয়নী! কার্তিক যার তার বাড়িতে যাচ্ছে আর তাকে সবাই শালো কার্তিক বলছে , শুনতে পাও না? তোমার লক্ষ্মী সবার দুয়ারে দুয়ারে যাচ্ছে, হয়তো ঘরেই ঢুকে যাবে? ভাঁড়ে ভবানী,  তাও আবার লক্ষ্মীর ভাঁড়ার গড়বে?  তোমার মুখে চুনকালি পরবে দেখো।
আর সরস্বতী পড়াশোনা ছেড়ে প্রেম করছে।বই খাতার সঙ্গে যোগাযোগ নাই।বলছে নাকি অনলাইনে ক্লাস। লাইন মেরে মেরে ঘরে ফেরে ! অনলাইনে পরীক্ষা শতকরা হিসাবে পাশফেল।ফেল কথাটি অভিধান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। শুধু পাশ। তোমার মেয়ের জানাশোনা যদি প্রেমিক থাকে তাহলে শতকরা ছাড়িয়ে একশত'র মধ্যে দেড়শত পেতেও পারে? একটু ওদের দিকে নজর দাও। আমার দিকে তাকিয়ো না মা! আমি যথেষ্ট ভদ্র সন্তান তোমার। ভালো না হলে সর্বপ্রথম আমাকে কেউ পূজা করে? দেখি এবার ইঁদুর গুলো মর্ত্যে ছেড়ে দিয়েই স্বর্গপুরের রাজধানীতে যাব!মর্ত্যকে সাফসূতরো করে দেবে আমার বাহিনী। কিছু মার খেয়ে মরবে , কিছু বিষ খেয়ে মরবে , তারপর সামনে বছর এসে যারা বেঁচে থাকবে তাদের নিয়ে যাব। স্বর্গের হাহাকার হতে দেওয়া যায় না।বুলাদি এখন স্বর্গে আছেন তাই রক্ষা!স্বর্গে আর দেবদেবীর সংখ্যা বাড়ছে না। জন্ম এবার নিয়ন্ত্রণে এসেছে ! আর মর্ত্যে মারামারি, ধ্বংস লীলা করেও জনসংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েই পাচ্ছে। বোমা পিস্তল তারাও বেড়ে চলে যাচ্ছে ক্রমাগত সমানতালে। ওদের নিয়ন্ত্রণ কর তুমি মা! তোমার ত্রিশূল তৈরীর কারখানা কোথায়? সেখানে গিয়ে বল অস্ত্র তৈরিতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। অস্ত্র তৈরি ও অস্ত্র পাচার - দুটোই বেআইনি।

মা - এবার তুই থাম্ ! আরতি হবে ও বলিদান হবে। লাইনে সব কেলে পাঁঠারা দাঁড়িয়ে আছে। আমার নামে বলি দিয়ে কি হচ্ছে দেখ্ চেয়ে।বলির মাংস নিয়ে কাড়াকাড়ি হবে কুকুরের মতো।যে যেমনে পারবে ছাল ছাড়িয়ে নেবে! তুই এবার পাবি নাকি দেখ্ ? ফলমূল গণেশায় নমঃ  কিন্তু পাঁঠার মাংসে ধরায়ঃ মানবায় দানবায় নমঃ। ওদের বিচার কে করবে ! আমি না তুই?

প্রেতাত্মা লোকালয় — শ্রী বিষ্ণু দেব

প্রেতাত্মা লোকালয়
 শ্রী বিষ্ণু দেব
-------------------------



হৃদাকাশে অজানা ভূমিকম্পের অনুভূতি
নোনা শরীরে আহ্বান জানালো আলিঙ্গন,
ঝাঁপিয়ে পড়ছে অক্টোপাসের কল্পনা রূপ,
মূর্তিমান নিজ পরিমণ্ডলের বাহিরে ৷

চারদিকে উচ্ছৃঙ্খল বিশৃঙ্খলতার দ্বার,
মানুষ খুঁজে বেড়ায় সত্যিকার মানুষের সঙ্গ,
প্রেতাত্মারা লোকালয় প্রান্তরে দিব্যি ঠাঁই,
একাকীত্ব বোবাস্বরে স্থিরতায় করে আঘাত ৷

চলমান পৃথিবী অন্ধকার স্তম্ভিত ভয় বিষাদে,
একের পর এক সহস্র জন ভুল পথের পথিক,
অসুর পথে ক্রমে বিবেক বুদ্ধির বীভৎস রূপ,
বিবেকের অকাল ধরায় ধোঁয়াময় চারদিক ৷

চলমান মনুষ্যত্বের তপ্ত গগন ঘেষি হাহাকার,
জ্বালাতনে বিদীর্ণ মানবতার রূপ জৌলুস,
গুরুগম্ভীর আওয়াজ বজ্র বিদ্যুৎ শ্রীভূমি পতিত,
দ্বিমুখী স্বার্থান্বেষী পূর্ণ ধরা অসুর বাহক ৷

নারী শক্তিই দেবী শক্তি .......সুব্রত চক্রবর্ত্তী

নারী শক্তিই দেবী শক্তি 
সুব্রত চক্রবর্ত্তী
----------------------


আজ শরতের নীলাকাশে
সাদা মেঘের ভেলা,
মেঘের কোলে রোদের হাসি 
করছে শুধু খেলা।।

আগমনীর বার্তা আনে
পূবালী হিমেল বাতাস
শুভ্র কাশ ফুলের সাথে
শিউলি  ছড়ায় সুবাস।।

দেবী শক্তির আরাধনায়
মুখরিত এই ধরা,হবি
বাচ্চা বুড়ো নব আনন্দে
মত্ত পাগল হারা।

নারী শক্তিই দেবী শক্তি
দেবী দুর্গার প্রতীক,
নারীর মান দেয় না যারা
তাদের জানাই ধিক্ ।

নারী সম্মানেই দেবীর বোধন
তাহাই সঠিক পূজা,
নারী শক্তির অবমাননায়
দেবীই দেবেন সাজা।

সসাগরা বসুন্ধরা আজ
সুখ শান্তি মাগে ---
অসুর নিধন করতে তাই
নারী শক্তিই জাগে ।

এই ধরণীর সুন্দর যত
সুর লয় ছন্দ --
শয়তান আর পাপিষ্ঠরা
করতে চায় মন্দ।

দেবী শক্তির আগমনী
বোধনের এই প্রাক্কালে
নারী শক্তিরও বোধন হোক
জাগো নারী সক্কলে।।

বিনাশ হোক অসুর কূল
হবেই ওদের ক্ষয় ---
দেবী শক্তির আবাহনেই
নারী শক্তির জয়।।

            ********

স্বত্ব@সুঃচঃ

বাসনার পদাবলি ।। ------------------মোহাম্মদ ইলইয়াছ


বাসনার পদাবলি 
মোহাম্মদ ইলইয়াছ 
 --------------------------


তুমি আদুল গায়ের কোন রূপকুমারী নও,নও একালের ঐশ্বরিয়া
তুমি সাতসাগরের ওপার থেকে ভেসে আসা মর্মর ভেনাস 
তিনশ বছর আগে পাল খাটানো জাহাজে এসেছিলে কলকাতায় 
তখন ছিলে আড়ালে-আবড়ালে শ্বেতপাথরের ভাস্কর্য এক কন্যে।

তোমাকে গড়েনি মাইকেল এ্যাঞ্জেলা কিংবা আমাদের যোগেন-বিজন
খিদিরপুরের ডকে নেমে ভারতমাতার চরণ ছুঁইয়েছিলে ভেনাস
তারপর সরাসরি ঢুকে গেলে রাসমনির ঘরে, ঠাকুর পরিবারের অন্দরে
মল্লিক পরিবারের অন্তঃপুরে। নিন্দুকেরা বললো-শিল্পের নামে ভন্ডামি।

তুমি নও গোলাপ সুন্দরী-আমাদের গোয়ালন্দের আফ্রেদিতি
কিংবা রবীন্দ্রনাথের উর্বশী,হেমেনের-জলরঙের সিক্তবসনা
কালিঘাটের পটের বিবিরা তোমার সন্দর্শনে লুকিয়েছিলো একদা
তুমি আজো সাইপ্রাস ও গ্রিক নিদর্শনের পাশ্চাত্য কন্যে।

বত্তিচেল্লির বার্থ অব নেশান আর দ্যা ভিঞ্চির মোনালিশা
তোমার গল্প শুনে বন্দি ছিলো লজ্জায়-শরমে এবং হারার ভয়ে
তোমাকে নিয়ে লেখেনি কবিগুরু, নজরুল, জসীম, শা-রাহমান
আমি এক পান্থ কবি তোমার দেহে ছড়িয়ে দিলাম বাসনার পদাবলি। 
                             -

মন কলমে = অঞ্জন চক্রবর্তী

মন 
অঞ্জন চক্রবর্তী 
===========


মনের আমি না
আমার মন
ভেবে ভেবে
মরে সারাক্ষণ
কোথায় পাবে সে
তার আপনজন
নিজের মনের মতন l
সে তো লুকিয়ে বেড়ায়
কোথায় পালায়
যায় না তাকে ধরা
হন্যে হয়ে খুঁজি তারে
আমি ছন্নছাড়া
মন আমার পাখির মত
মেলে দিয়ে ডানা
উড়ে বেড়ায় ঘুরে বেড়ায়
নেই কোন সীমানা l
মন আমার ঘুরে বেড়ায়
খুঁজে বেড়ায়
একটা মনের আশায়
যার সাথে মনের
দুটো কথা বলা যায়
খুঁজে যদিও বা পাওয়া
গেল এক মনের ঠিকানা
সে তো আমার মনের
কথাই বোঝে না l
মন তাই বড় শ্রান্ত
বড় ক্লান্ত
হয়ে নিরুপায়
আপনমনে বসে
শুধু গুমরায় l

রূপার মা -- ধীরেন গোস্বামী

রূপার মা
ধীরেন গোস্বামী
--------------------------


রানুর মায়ের সাথে রূপার মায়ের খুব ভাব
রানু আর রূপা একই স্কুলে একই ক্লাসে দুজনে পড়ে
তাই স্কুলে যাতায়াত করে মায়েদের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে
কিন্তু আজ কদিন হলো রূপার মা রূপাকে নিয়ে 
আর স্কুলে আসছে না দেখে
রানুর মা খুব চিন্তায় পড়ে যায়, 
তাই রবিবার দিন রানু কে সঙ্গে নিয়ে রানুর মা রূপাদের ঘরে খোঁজ খবর নিতে আসেন 
রূপার মা রানুর মাকে দেখে বললো আর বোলো না ভাই 
যা ঝড় গেলো, 
রানুর মা বললো কি রকম ?
রূপার মা বললো বসো বসো আগে চা করি
চা খেতে খেতে সব কথা হবে
রানুর হাতে একটা বাটিতে কতকটা চাঁছি দিয়ে বললো এটা তুই খা এটা ঘরের দুধের চাঁছিরে
খুব সুন্দর খেতে দারুণ স্বাদ,
রানুর মা বললো বা ঘরে গরুও আছে দেখছি 
রূপার মা বললো চা করে নিয়ে আসি
এসেই সব বলছি 
কিন্তু এই কথা ভাই আর পাঁচ কান
করা চলবে না
নইলে আমি সমস্যায় পড়ে যাব
বলেই চা বানাতে চলে গেল,
চা নিয়ে এসে বললো এই চা খাও
ঘরের খাঁটি দুধের চা
রানুর মা বললো এবার কথা টা কি বলুন শুনি,
রূপার মা বললো বলছি বলছি চা টা খাও
গল্প আরম্ভ করলো
আর বোলো না ভাই তোমাকে তো আগেই
বলে ছিলাম যে আমার স্বামী ছোট থেকেই 
স্টেশনের পাশে ডাক্তার বাবুর চেম্বারে কাজ করে ডাক্তার বাবু খুব ভালো মনের মানুষ গো
আমার স্বামী কে খুউব ভালো বাসে
বলেই এক চুমুক চা খেলো
রানুর মা ও এক চুমুক চা খেয়ে বললো তার পর কাজ এখন করছে তো ?
রূপার মা বললো বলছি চায়ের কাপ টা শেষ করে পাশে নামিয়ে রেখে বললো জানো তো আমার স্বামীর মনটা খুব দয়ালু 
এই যে আমার ঘরে এতো দুধ হয় ও বলে সবাই কে খাওয়াও প্রতিদিন ডাক্তার বাবুর জন্য চেম্বারে যাওয়ার সময় এই দুধ দিয়ে কিছু না কিছু খাবার করে নিয়ে যাবেই ডাক্তার বাবুর জন্য
রানুর মা অধৈর্য হয়ে বললো এতো দিন স্কুল কামাই হলো রূপা স্কুলে যাচ্ছে না 
এর সঙ্গে তো স্কুল কামাই এর কোন যোগ নেই
রূপার মা বললো, আছে গো আছে বিরাট এক্সিটেণ্ড ওই উপর ওয়ালা মানে ভগবানের করুনা
আর ডাক্তার বাবুর পাকা হাত যশ
আমার স্বামী ডাক্তার বাবুর চেম্বারে যাওয়ার সময় দেখতে পায় লাইন উপরে একটা বড়ো দুধেল গাই চরে বেড়াচ্ছে, এদিকে রেড সিগন্যাল হয়ে আছে
ওর তো দয়ার শরীর আর কি বলবো ভাই যেই গাই টার লেঁজ টা ধরে তাড়াতে গেল ওমনি আনাড়ি লোক দেখে গাই টা জোরে মারল
এক চাঁটি ব্যস্, 
রানুর মা বললো তারপর ?
রূপার মা গভীর দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বললো তারপর, ভগবান যা করেন মঙ্গলের জন্যেই করেন,
রানুর মা বললো, দিয়ে কি হলো, 
আর কি বলবো ভাই লাইনের উপরেই দড়াম করে পড়ে গেল
রানুর মা বললো যাক কোনো বিপদ হয় নাই তো ?
রূপার মা বললো, বিপদ বলে বিপদ এক্সপ্রেস ট্রেন ঝাঁ করে পার হয়ে চলে গেলো
রানুর মা বললো, ও মাগো দাদার কিছু হয় নাই তো 
রূপার মা বললো হয়ে ছিলো ট্রেন টা চলে যেতেই প্রচুর ভিড় হয়ে ছিলো
রানুর মা বললো ভিড় হোক
দাদার কিছু হয় নাই তো, 
রূপার মা বললো না তেমন কিছু হয় নাই
শুধু গাই টার সামনের দিক টা
আর আমার স্বামীর কোমর পর্যন্ত গুড়ো করে
দিয়ে চলে গেলো-
-ডাক্তার বাবু ভাগ্যিস ওই সময় ওই খানে পৌছে যায় আমার স্বামীকে চিনতে পেরে স্বামী কে আর ওই গাভী টিকে তুলে নিয়ে গিয়ে অপারেশন টেবিলে রেখে গাভীর পিছনটা আর আমার স্বামীর সামনেটা জুড়ে দেন ডাক্তার বাবু 
রানুর মা বললো তারপর
রূপার মা বললো 
কি সুন্দর সেলাই করেছে গো
কিচ্ছু বোঝার উপায় নাই 
এখন সম্পূর্ণ সুস্থ প্রতিদিন কাজে ও যায়
সকালে বিকেলে মিলে পাঁচ ছয় সের দুধ ও দেয় 
রানুর মা বললো বাবাঃ তোমার কি ভাগ্য গো দিদি 
আমার স্বামীটা তো কুড়ের বাদশা,
রূপার মা বললো চাইলে তুমি প্রতিদিন দুধ এখান থেকে নিয়ে যেতে পারো
এমন সময় রূপা ও রূপার বাবা বাজার করে বাড়ি ডুকতেই
রানু র মা বললো, কি দাদা কেমন আছেন আপনি 
এখন আর পায়ের কোন অসুবিধা নেই তো
পায়ের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো আপনার ধুতিটা একটু উপর দিকে তুলুন তো দাদা 
আমি আপনার পা দুটো একবার দেখবো,
রূপার বাবা অবাক হয়ে বললো তার মানে,
রূপার মা হো হো করে হেসে উঠলো, বললো তুমি ভাই স্কুলে অনেক হাসি মজার গল্প শোনাও
তাই আজ তোমাকে ঘরে একা পেয়ে
ফাঁকা সময়ে 
একটা ছোট্ট নমুনা দিলাম মাত্র দেখলে তো
বানিয়ে গল্প বলতে আমি ও জানি।