রূপার মা
ধীরেন গোস্বামী
--------------------------
রানুর মায়ের সাথে রূপার মায়ের খুব ভাব
রানু আর রূপা একই স্কুলে একই ক্লাসে দুজনে পড়ে
তাই স্কুলে যাতায়াত করে মায়েদের মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে
কিন্তু আজ কদিন হলো রূপার মা রূপাকে নিয়ে
আর স্কুলে আসছে না দেখে
রানুর মা খুব চিন্তায় পড়ে যায়,
তাই রবিবার দিন রানু কে সঙ্গে নিয়ে রানুর মা রূপাদের ঘরে খোঁজ খবর নিতে আসেন
রূপার মা রানুর মাকে দেখে বললো আর বোলো না ভাই
যা ঝড় গেলো,
রানুর মা বললো কি রকম ?
রূপার মা বললো বসো বসো আগে চা করি
চা খেতে খেতে সব কথা হবে
রানুর হাতে একটা বাটিতে কতকটা চাঁছি দিয়ে বললো এটা তুই খা এটা ঘরের দুধের চাঁছিরে
খুব সুন্দর খেতে দারুণ স্বাদ,
রানুর মা বললো বা ঘরে গরুও আছে দেখছি
রূপার মা বললো চা করে নিয়ে আসি
এসেই সব বলছি
কিন্তু এই কথা ভাই আর পাঁচ কান
করা চলবে না
নইলে আমি সমস্যায় পড়ে যাব
বলেই চা বানাতে চলে গেল,
চা নিয়ে এসে বললো এই চা খাও
ঘরের খাঁটি দুধের চা
রানুর মা বললো এবার কথা টা কি বলুন শুনি,
রূপার মা বললো বলছি বলছি চা টা খাও
গল্প আরম্ভ করলো
আর বোলো না ভাই তোমাকে তো আগেই
বলে ছিলাম যে আমার স্বামী ছোট থেকেই
স্টেশনের পাশে ডাক্তার বাবুর চেম্বারে কাজ করে ডাক্তার বাবু খুব ভালো মনের মানুষ গো
আমার স্বামী কে খুউব ভালো বাসে
বলেই এক চুমুক চা খেলো
রানুর মা ও এক চুমুক চা খেয়ে বললো তার পর কাজ এখন করছে তো ?
রূপার মা বললো বলছি চায়ের কাপ টা শেষ করে পাশে নামিয়ে রেখে বললো জানো তো আমার স্বামীর মনটা খুব দয়ালু
এই যে আমার ঘরে এতো দুধ হয় ও বলে সবাই কে খাওয়াও প্রতিদিন ডাক্তার বাবুর জন্য চেম্বারে যাওয়ার সময় এই দুধ দিয়ে কিছু না কিছু খাবার করে নিয়ে যাবেই ডাক্তার বাবুর জন্য
রানুর মা অধৈর্য হয়ে বললো এতো দিন স্কুল কামাই হলো রূপা স্কুলে যাচ্ছে না
এর সঙ্গে তো স্কুল কামাই এর কোন যোগ নেই
রূপার মা বললো, আছে গো আছে বিরাট এক্সিটেণ্ড ওই উপর ওয়ালা মানে ভগবানের করুনা
আর ডাক্তার বাবুর পাকা হাত যশ
আমার স্বামী ডাক্তার বাবুর চেম্বারে যাওয়ার সময় দেখতে পায় লাইন উপরে একটা বড়ো দুধেল গাই চরে বেড়াচ্ছে, এদিকে রেড সিগন্যাল হয়ে আছে
ওর তো দয়ার শরীর আর কি বলবো ভাই যেই গাই টার লেঁজ টা ধরে তাড়াতে গেল ওমনি আনাড়ি লোক দেখে গাই টা জোরে মারল
এক চাঁটি ব্যস্,
রানুর মা বললো তারপর ?
রূপার মা গভীর দীর্ঘনিশ্বাস ফেলে বললো তারপর, ভগবান যা করেন মঙ্গলের জন্যেই করেন,
রানুর মা বললো, দিয়ে কি হলো,
আর কি বলবো ভাই লাইনের উপরেই দড়াম করে পড়ে গেল
রানুর মা বললো যাক কোনো বিপদ হয় নাই তো ?
রূপার মা বললো, বিপদ বলে বিপদ এক্সপ্রেস ট্রেন ঝাঁ করে পার হয়ে চলে গেলো
রানুর মা বললো, ও মাগো দাদার কিছু হয় নাই তো
রূপার মা বললো হয়ে ছিলো ট্রেন টা চলে যেতেই প্রচুর ভিড় হয়ে ছিলো
রানুর মা বললো ভিড় হোক
দাদার কিছু হয় নাই তো,
রূপার মা বললো না তেমন কিছু হয় নাই
শুধু গাই টার সামনের দিক টা
আর আমার স্বামীর কোমর পর্যন্ত গুড়ো করে
দিয়ে চলে গেলো-
-ডাক্তার বাবু ভাগ্যিস ওই সময় ওই খানে পৌছে যায় আমার স্বামীকে চিনতে পেরে স্বামী কে আর ওই গাভী টিকে তুলে নিয়ে গিয়ে অপারেশন টেবিলে রেখে গাভীর পিছনটা আর আমার স্বামীর সামনেটা জুড়ে দেন ডাক্তার বাবু
রানুর মা বললো তারপর
রূপার মা বললো
কি সুন্দর সেলাই করেছে গো
কিচ্ছু বোঝার উপায় নাই
এখন সম্পূর্ণ সুস্থ প্রতিদিন কাজে ও যায়
সকালে বিকেলে মিলে পাঁচ ছয় সের দুধ ও দেয়
রানুর মা বললো বাবাঃ তোমার কি ভাগ্য গো দিদি
আমার স্বামীটা তো কুড়ের বাদশা,
রূপার মা বললো চাইলে তুমি প্রতিদিন দুধ এখান থেকে নিয়ে যেতে পারো
এমন সময় রূপা ও রূপার বাবা বাজার করে বাড়ি ডুকতেই
রানু র মা বললো, কি দাদা কেমন আছেন আপনি
এখন আর পায়ের কোন অসুবিধা নেই তো
পায়ের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো আপনার ধুতিটা একটু উপর দিকে তুলুন তো দাদা
আমি আপনার পা দুটো একবার দেখবো,
রূপার বাবা অবাক হয়ে বললো তার মানে,
রূপার মা হো হো করে হেসে উঠলো, বললো তুমি ভাই স্কুলে অনেক হাসি মজার গল্প শোনাও
তাই আজ তোমাকে ঘরে একা পেয়ে
ফাঁকা সময়ে
একটা ছোট্ট নমুনা দিলাম মাত্র দেখলে তো
বানিয়ে গল্প বলতে আমি ও জানি।
No comments:
Post a Comment