Tuesday, April 30, 2024

তুমি আমার কবিতা হবে -- কল্যাণী ব্যানার্জ্জী

তুমি আমার কবিতা হবে?
কল্যানী ব্যানার্জ্জী ।
২৯.৪.২৪.
তুমি আমার কবিতা হবে
কথা গুলো সব ভাবনা গুলো ;অগোছালো বার্তা গুলো
ছন্দ মিলিয়ে খাতার পাতায় সুন্দর করে সাজিয়ে দেবে।
মনে আছে তোমার? ভরা বৈশাখে দুপুর বেলা
পুকুর ঘাটে শান বাঁধানো ঘাটের উপর বটগাছটার ছায়ায় বসে গল্প করা।
পুরানো বাড়ির চিলেকোঠা ঘরের কথা
কত গল্প মনের কথা ;হয়তো অনেক আবোল তাবল।
সন্ধ্যা বেলায় কৃষ্ণচূড়া গাছের নিচে
ফুল বিছানো লাল গালিচায় শুয়ে শুয়ে আকাশ দেখা।
ভোরের বেলা ফুল তোলার বাহানা করে
একগুচ্ছ কামীনি ফুল তোমায় দেওয়া।
গালটা টিপে দিতে তুমি দুহাত দিয়ে
লজ্জা পেয়ে যেতাম আমি ছুটে পালিয়ে।
বর্ষা তে তো ভীষণ খুশি আমরা দুজন
স্কুল ছুটির পরে বৃষ্টিতে ভিজব কতক্ষণ।
আরও অনেক অনেক কথা স্মৃতি হয়ে পোড়ায় মোরে।
সে সব কথা তুমি আমার কবিতা হয়ে দাওনা লিখে
পড়ব আমি বারে বারে।
হারিয়ে যাওয়া তোমার কথা আমার কাছে আসবে
আবার ফিরে ফিরে।
এসো আবার তুমি আমার কবিতা হয়ে।

Monday, April 29, 2024

ছেড়ে যেতে হবে -- কাকলি

ছেড়ে যেতে হবে
কাকলী
০৮/১১/২৩
ছেড়ে আসতে হয়, যখন পরিস্থিতি অচেনা হয়ে যায়,
ছেড়ে আসতে হয় যখন সময় বলে দেয়,
ছেড়ে আসতে হয়, তবু কিছু পিছুটান থেকে যায়,
ঝরে যাওয়া গাছের পাতায় স্মৃতির ছবি,
রঙওঠা দেওয়ালে ভাবনার আঁকিবুঁকি,
ছিঁড়ে যাওয়া ক্যালেন্ডারের পাতা,
পুরানো ভালোবাসা, তবুও ছেড়ে দিতে হয় তাকে,
ধূলোমাখা স্মৃতির পাহাড় থেকে যদি কোনো অনুভূতি জেগে ওঠে,
ছেড়ে দিতে হয় তখন সময়কে সময়ের হাতে,
যত বেশি আগলে রাখবো ভাববে ততবেশি দূরে চলে যাবে,
একটা সময়ের পর আলো নিভিয়ে আঁধারের অপেক্ষাতে,
ছেড়ে এলেও কিছু মুহূর্ত পিছন ছাড়েনা কিছুতেই,
ছাড়ে না তো অনেক কিছুই, বুকের ভিতর জমানো ক্ষত,
গভীর রাতের নীরব গল্প যত,
বলা নাবলা কথার পাহাড়, নিঃশব্দে ঝরে যায় বার বার,
বৃষ্টি ভেজা সন্ধ্যায় চোখের কাজল অপেক্ষায় ঘেঁটে যায়,
তারপরেও ঘুমন্ত রাতে যদি চাঁদ আসে বিছানাতে, চুমা এঁকে যায় কপালেতে,
বাকি কথা লেখা আছে চাঁদের আঁচলেতে,
নির্জন বনের আঁধারেতে যদি চাঁদ এসে বসে পাশে,
যদি নদী কথা বলে ঢেউয়ের সাথে,
যদি আকাশের তারারা আলো জ্বালে,
যদি ছাতিম ফুলের গন্ধ মাখা স্বপ্ন রাত হয়,
তবুও ছেড়ে আসতে হবে তাকে, মুছে ফেলতে হবে জীবন থেকে,
সময়ের সাথে সময়ের কাটা ছেঁড়া, সময় নিজেই যে বড়ো একলা,
তোমার আঁচলে ধুপছায়া রোদ খোঁজে কমলা বিকেল,
বুকের ভেতর যতই উঠুক ঢেউ, তবু তাকে ছেড়ে যেতে হবেই।

রক্তদান -- লিয়াকত শেখ

রক্তদান
লিয়াকত সেখ
০৭,১১,২৩
বাঁধলে দেহে রোগের বাসা
ভেঙে যাবে সকল আশা
নাহি পেলে রক্ত,
রক্ত দানে নেই যে ক্ষতি
থাকে যদি ধর্মে মতি
মনটা করো শক্ত ।

মানুষ হয়ে আসলে ভবে
মানবতা থাকতে হবে
তবেই জীবন ধন্য,
পরের বিপদ দেখে দূরে
যায় পালিয়ে মুখটি ঘুরে
স্বভাব তাদের বন্য ।

রক্তদানে খুশি মনে
জয়ী হলে রোগের রণে
সমাজ হবে আলো,
রক্তদানে বিমুখ যারা
আসল মানুষ নয় গো তারা
মনটা আঁধার কলো ।

সবাই মিলে এসো বলি
রক্ত দিতে ক্যাম্পে চলি
হাসি নিয়ে মুখে,
রক্তদানে নেকির খাতা
পূর্ণ হবে সকল পাতা
শান্তি পাবে বুকে ।

বৃষ্টির রানী -- সমীর মুখার্জি

      বৃষ্টি রানী 
       সমীর মুখার্জি 
        ২৮.৪.২৪
বলতে পারি না মাগো আমায় 
নৌকা বানিয়ে দাও ।
প্রকৃতির এই বৃষ্টি রানী 
আজ পালিয়ে উধাও।

টাপুর টুপুর বৃষ্টি এখন 
আসে না হঠাৎ করে।
বিষন্নতায় ভরে গেছে সব 
জমছে না মেঘ ওরে।

আকাশের ওই মেঘ টি দেখে
ছুটতো মোদের প্রাণ। 
আনন্দে মোরা হারিয়ে যেতাম
ছিল প্রকৃতির দান।

পরিবেশ বিচিত্র দেখি এখন 
ঘরে ঘরে অনাচার। 
ঠাকুর দেবতা মানুষগুলো সব
যেন কলির অবতার। 

চলছে এখন সব টেবিলে ঘুষ 
স্বার্থ ছাড়া নাহি চলে। 
গাছ লাগালে প্রাণ বাঁচবে ওগো 
সবাই একই কথা বলে।

একহাতে দাও একহাতে নাও
শুধুই চাওয়া পাওয়া।
ভাবমূর্তি বিকল হলে তখন
হঠাৎ করবে ধাওয়া।

কালবৈশাখী ঝড় আসলে পরে 
সকলে আছড়ে পড়ে। 
হোক না শীতল দেহখানি তবে 
মরুভূমি ধুধু করে।

Sunday, April 28, 2024

ভোকাট্টা -- মৌসুমী মুখার্জী

ভোকাট্টা 
মৌসুমী মুখার্জী
১৮/০৯/২৩
দিন আসে যায় কালের  প্রবাহে এটাই সমীচীন,
অবসাদ আজ পৃথিবী জুড়ে অবিশ্বাস্য সীমাহীন ।
লাটাই গুটোয়...   ছেড়ে দেওয়া সুতো তার,,,
মনাকাশে ভোকাট্টার .. জলদ বেদনভার।
কাল ছিল আশার ফলফুলে ডালখানি  ভরে,,
আজ খালি শাখা ...  বৃক্ষ শুকিয়ে মরে।
শিল্প নেই ,নেই কারবার , বন্ধ কলকারখানা,,
হাভাতে  হাঘরে শূন্য অর্থ, বন্ধ দিন খাওয়া দিন আনা।
 উৎসব আজ মলিন হয়েছে, শূন্য ব্যাংক ব্যালেন্স,
দুধের অভাবে শিশুর কান্না হত দরিদ্র দেশ।
মানুষ এখন মুখোশধারী পড়েছে  ছদ্মবেশ,
মানবিক হয়েও হেনস্থা হয়েছে ঠকে সে একশেষ।
কোথাও আবার সুগন্ধ আসে  বাসন্তী পোলাও মাংসের,
 সিটির আওয়াজে কান ঝালাপালা প্রেসার কুকারের।
লক্ষ লক্ষ ইঞ্জিনিয়ার ভুক্ত  বেকারত্ব যন্ত্রনায়,  মনে নেই ঝংকার,
দেবশিল্পী কারিগরী ঠাকুর তাকাও ওদের পানে  একবার।
লাল নীল সবুজ  কত স্বপ্ন ছিল ওই উড়ন্ত ঘুড়ির মতোই,
অসহায় মুখ  স্বপ্ন বিমুখ  ভোকাট্টা মনে ক্ষত।
 
 রাজা মন্ত্রী উজির সান্ত্রী,  সাজায় থালা শত শত পদে
বিপদ যত করছে ভোগ, গরীবই   নিরাপরাধে।


তুমি ডাকলে বলে -- বিজন রায়

তুমি ডাকলে বলে
বিজন রায়
৩/১/২০২৪
 তুমি ডাকলে বলে পেরিয়ে এসেছি
 হাজার মাইল পথ-
 পাহাড় ঝর্ণা কত গ্রাম শহর
 দুর্ভেদ্য জনপদ। 

 তুমি ডাকলে বলে গোলাপ বাগানে
 ফুটেছে নতুন কুঁড়ি-
 বাসন্তিকা খুলেছে দুয়ার
 গুমোট দিয়েছে আড়ি। 

 তুমি ডাকলে বলে বন্ধা নদীতে
 জুয়ার লেগেছে ক্ষীণ-
 আকাশ পারের আঁধার কেটেছে
 এ,মন হয়েছে রঙিন। 

 তুমি ডাকলে বলে অতীতটা আজ
 পেয়েছ নতুন জীবন-
 স্বপ্নেরা সব করে আনাগোনা
 মন হলো উচাটন। 

 তুমি ডাকলে বলে থিতুনো সময়ে
  সুপ্ত তারুন্য জাগে-
 নিরাশার মাঝে দীপ্ত আশারা
 তোমার পরশ মাগে।

 তুমি ডাকলে বলে হাজার মাইল
 কন্টক পথ ধরে-
 এগিয়ে চলেছি নব প্রেরণায় 
 তোমাকে স্মরণ করে। 

 তুমি ডাকলে বলে অস্ত্র রবি
 এখনো হয়নি ম্লান-
 তুমি ডাকলে বলে স্মৃতির অতলে
 জাগে তেইশের গান।

তোমাকেই খুঁজি -- প্রতাপ রাকসাম

 তোমাকেই খুঁজি
 প্রতাপ রাকসাম
 ২৭/০৪/২০২৪ ইং
আমি শুধু তোমাকেই খুঁজি।
পূর্বাকাশে উদীয়মান সূর্যের স্নিগ্ধ 
ভোরের আলোক রশ্মির আভায় 
আমি শুধু তোমাকেই খুঁজি।
পশ্চিমাকাশে সূর্যাস্তের শেষ গোধুলী 
বেলায় শরতের কাশফুলের কোমল 
ছোঁয়ায় আমি শুধু তোমাকেই খুঁজি।
নির্ঘুম চোখে নেশাচর পাখির মতো
কখনো বিভোর ঘুমে স্বপ্নের
মাঝে আমি শুধু তোমাকেই খুঁজি। 
ইট পাথরে ঘেরা ব্যস্ত শহরের অলিতে 
গলিতে কিম্বা সবুজে ঘেরা শ্যামলিমা 
গ্রাম বাংলায় আমি শুধু তোমাকেই খুঁজি।
পূর্ণিমা রাতের জোছনায় কিম্বা অমাবস্যার ঘোর আঁধারে জোনাকির আলোচ্ছটায় 
আমি শুধু তোমাকেই খুঁজি।
হাজারো জন অরণ্যের মাঝে কখনো জনমানব হীন গহীন বনে,অশ্রুভরা চোখে ক্লান্ত অবসাদে বিশাল সমুদ্রের তীরে আমি শুধু তোমাকেই খুঁজি। 
চলমান দুঃষহ নিঃষ্প্রভ সময়ে কিম্বা মধুমাখা
সেই স্বর্ণালী স্মৃতির পাতায় আনমনে আমি শুধু তোমাকেই খুঁজি। 
অসংখ্য কবির কাব্য গাঁথায় অনবদ্য
প্রেমের কবিতায় কিম্বা বিষাদে ভরা
বিরহ বেদনা উপন্যাসের পাতায়
আমি শুধু তোমাকেই খুঁজি।
বসন্তের ফোটা লাল, হলুদ অজস্র ফুলের মাঝে বেলী, গোলাপ, বকুলের সুগন্ধে রাতদুপুরে পিউ কুহু কোকিলের গানে সুরে
আমি শুধু তোমাকেই খুঁজি, তোমাকেই খুঁজি।

স্বপ্ন -- দেব মন্ডল

স্বপ্ন
দেব মন্ডল 
২৭/০৪/২০২৪
আমার সেই পুরানো শহরে আবার হবে দেখা। 
কোন এক কালবেলায় আমি এক ব্যস্ত রাস্তায় । 
অন্য কোন  সাজে, অন্য কোন কাজে। 
কোন এক নির্ভরতার হাত চেপে ধরবে আমার কাঁধে। 
বলবে আমি তো আছি তোমার পাশে। 
যে যাওয়ার সে গেছে, এসব নিয়ে এতো চিন্তা কিসের। 
আমি পুরনো দিনের ডাইরি খুলে,প্রাক্তনের স্মৃতি মুছে,
 নতুন করে লিখবো তাকে নিয়ে। 
সে হবে আমার উপন্যাসের এক নির্ভরতার অপ্সারী।
যাকে নিয়ে স্বপ্ন গাঁথবো একটু একটু করে। 
তাকে নিয়ে বাঁচবো আমি আজীবন ধরে। 
তার সাথে ঘুরবো আমি সারাদিন রাত। 
খুনসুটি দুষ্টুমিতে মিশে থাকবো আমারা আজীবন ভর। 
প্রতিদিন দিবো গোলাপ উপহার। 
সে নতুন করে সাজাবে আমায়। 
আমি মিশে থাকবো তার ভালোবাসায়।

সাধারণ আমি -- মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন

সাধারণ আমি
মোহাম্মদ জাহিদ হোসেন
২৭-০৪-২০২৪
আমার স্বপ্নগুলো খুব সাধারণ—
আমার কষ্টগুলোও খুব সাধারণ
আমার দেখার চোখও খুব সাধারণ।
মৃদু পদক্ষেপে তুমি যেদিন পাশে এসে দাঁড়ালে,
তোমাকে আমার খুব সাধারণ এক রমণী মনে হলো,
অথচ তুমি যে  সাধারণ কেউ ছিল না তা
জানতে জানতে কেটে গেল অনেক কাল।
এই সময়টুকুতে যা যা ঘটলো-,
আমাদের মাঝে চোখে চোখে কথা হলো,
আমরা একে অপরকে দেখে মুগ্ধতার ঘূর্ণিতে হারিয়ে গেলাম। 
এক নিঝুম সন্ধ্যায়—
আমরা পরস্পরের শয্যাসঙ্গী হওয়ার কথা ভাবলাম।
তবে ঠিক তার আগে আগে
আমরা বিয়ে নামক একটা আইনগত প্রথার আশ্রয়ও নিয়ে ফেললাম। 
আমাদের একটা ফুটফুটে সন্তান হলো।
তাকে আমরা প্রবল ভালোবাসায় বড়ো করতে লাগলাম।
আমাদের সন্তান বড়ো হতে না হতেই আমরা
সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেললাম, 
বড়ো ক্লান্ত হয়ে গেছি এক ছাদের নীচে একত্রে বসবাস করে পেরে উঠছি না।
আমরা আলাদা হওয়ার এক সপ্তাহের মাথায়
আবার এক নিঝুম সন্ধ্যায় বারের ঘোরলাগা আলো আঁধারিতে
মনে হল তুমি সাধারণ কেউ ছিল না।
আরো এক সপ্তাহের মাথায়
আবিষ্কার করলাম তুমি যে সাধারণ 
কেউ নয়, সেটা তুমি নিজেও জান না। 
কারণ তুমি আবারও আমার মত
সাধারণ আর একজন মানুষকে বিয়ে করে ফেলেছো।
প্রতি সন্ধ্যায় শুভ্র নেশায় চুমুক দিতে দিতে অতি সাধারণ আমি, 
অসাধারণ হওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যেতে লাগলাম।

Saturday, April 27, 2024

ব্যতিক্রমী -- প্রলয় কুমার সাঁতরা

ব্যতিক্রমী
প্রলয় কুমার সাঁতরা
২৫/০৪/২০২৪
দুর্নীতি বলে        লজ্জা দিওনা 
  টিচার নিয়োগে ব্যতিক্রমী,
অর্থ দিয়েই   পেয়েছে চাকরি 
তারা আগামীর যে অনুগামী। 

এই কথা নয়         বন্ধু আমার 
         বলেন মন্ত্রী ব্রাত্য, 
এ কোন আঁধারে ঢেকেছে বাংলা 
     চারিদিকে শুধু স্বার্থ।

ব্যতিক্রমী এ        ব্যবস্থাতেই
     ফেলছে সব নাভিশ্বাস, 
বলতে কী পারো ওরা সব কারা 
 জেলেতে বসেই খাচ্ছে ঘাস?

ব্যতিক্রমী এ       কেমন বাংলা
     বাংলা মানেই কি আঁধার?
সবার ভাগ্য    হাইকোর্টে কাঁদে 
    কোটের হাতেই  সেই ভার !

এটাই কি তবে      মুক্ত চেতনা? 
     কতো না মধুর অভ্যাস,
গাধা গুলো দেখো খাচ্ছে কেমন 
     এই বাংলার কচিঘাস! 

কতো না লজ্জা  দেবে যে তোমরা?
        লজ্জাহীন ও লজ্জাতে,
বন্ধু আজও         যারা ফুটপাতে
   মারলে যে লাথি সেই পাতে? 

জীবনটা আজ   যে ব্যতিক্রমী, 
       দিদিমণিরই প্রেরণাতে, 
আগামী দিনেতে দেখতে কি পাবো    
       এ পাঠক্রম ভবিষ্যতে? 

অসহিষ্ণু রাজা , রানী -- দিলীপ ঘোষ

অসহিষ্ণু রাজা, রাণি
দিলীপ ঘোষ
২৫/০৪/২৪
হল্লা রাজা
না সইতে পারে, না বইতে পারে
না খেতে পারে
বিরুদ্ধ মতের খাজা,
বিরুদ্ধ মতকে
সাবস্থ করে দেশবিরোধী অপরাধে
অন্যায়ভাবে দেয় সাজা।
ডানা ছাঁটে ভিন্ন মতের অধিকারে
নানান নামের আইন দিয়ে
অভিযোগ ছাড়াই আটক করে
জেলে পাঠায় নির্বিচারে।

হল্লা রাজা
খেতে ভালোবাসে তোষামোদের তেলে ভাজা
না সইতে পারে, না বইতে পারে
সত্য কথন, নিরপেক্ষ প্রতিবেদন।
আকাটের শরীর আনন্দে ফোলে
করলে তোষন, পেলে তৈলমর্দন
চাটুকারিতা আর আত্মসমর্পন
না পেলে, করে শত্রুর মত আচরণ।

নানান মতে নানান পথে চলা
সইতে পারে না হল্লা রাজা
স্বাধীনভাবে সম্মান নিয়ে চলে যারা
অভিযোগ তৈরি করে তাদের দেওয়া হয় সাজা।

হল্লা রাজার দেশে, রাজা রাণি দুই-ই আছে
নীতিহীনভাবে মাথা গরম করে দুজনে
সাধারণের সম্পদকে ভাবে ব্যক্তিগত সম্পত্তি
আমি দিচ্ছি, আমি করছি,- সদাই আওড়ায় ভাষনে
মেকি উন্নয়নের দাবি তোলে
                    প্রচার সুতোয় ঘুড়ি ওড়ায় গগনে।

Friday, April 26, 2024

তপ্ত কটাহ -- নিবারণ চন্দ্র দাস

তপ্ত কটাহ  
নিবারণ চন্দ্র দাস
২৬/০৪/২০২৪
তপ্ত দুপুর নাই কলরব
   নাই কোলাহল কেন,
টগবগিয়ে ফুটছে ঘিলু
   চায়ের কেটলি যেন।

যাচ্ছে যেন গুলিয়ে সকল
   ভাবনা চিন্তাগুলো,
যেদিক পানে তাকাই দেখি
    উড়ছে শুধুই ধুলো।

লেখাপড়া উঠলো লাটে
    বন্ধ হ'ল স্কুল,
হয়তো সঠিক,এ নিয়ে আর
     করব না হুলস্থুল।

ব্যক্তিগত স্কুলগুলো যে
     চলছে রমরমিয়ে,
ওদের বেলায় আলাদা নিয়ম
     প্রশ্ন তো তাই নিয়ে।

চাকরি বাকরি কিনব কিনা
     ভাবছি অনেক করে,
ওই ওরা ওঁত পেতে আছে
     ফ্যালে যদি ধরে?

দাবদাহ চলছে বিষম
    তপ্ত তপন জ্বলে,
আমরা বুঝি করিনি শেষ
    উন্নয়নের ছলে?
           :::-:::

আমার একলা চাওয়া -- মনিরা মাসিদ

আমার একলা চাওয়া
মনিরা মাসিদ 
26.4.2024
আমার একলা একটা আকাশ চাই। 
এককক...আকাশ একাকিত্ব চাই। 

আমার আস্ত একটা সমুদ্র চাই 
এক সমুদ্র বাতাস চাই 
বাতাসে ফিসফিস আমারই জন্য কথা চাই।। 

জঙ্গলের নির্জেস্ব ঝিঁ -ঝিঁ আওয়াজ ওঠা
আমার পুরো একটা জঙ্গল চাই।
চাঁদনি রাতে জঙ্গলের নির্জেস্ব 
সুরের মাঝে হারিয়ে যেতে চাই।।

চাঁদের আলোয় ভেসে যাওয়া
আমার নির্জন পুরো আস্ত একটা নদী চাই
বড়ো গাছ ওয়ালা সুন্দর খেয়া বাঁধা
নদীর একটা ঘাট চাই। 

খেয়া নৌকায় বসে থাকবো, সারারাত 
ধরে টুপটাপ শিশিরে ভিজবো ।আর কখন যেন 
নদীর ওপারে ভোরের সূর্য কুয়াশা সরিয়ে 
ঝলমলে সকাল নিয়ে আসবে, আমার ঐ রকম 
একটা সুন্দর সকাল চচাই.. চাইইই..

Thursday, April 25, 2024

শেষের সে দিন -- মলয় সরকার

 শেষের সে দিন 
  মলয় সরকার
   ২৪/০৪/২৪
 বজ্র বিদ্যুৎ ঝড়-বৃষ্টি আসুক ধেয়ে 
 আসুক তুমুল মাতাল দামাল হয়ে 
 ধর্ষিতা হওয়ার জ্বালা কে বুঝবে 
 উঠবেই তো জ্বলে প্রতিশোধের আগুন,
 করাতের আঘাতে রক্তাক্ত অসহ্য ব্যথা 
 বলতে পারেনি বোবা বলে 
 অনুভব করতে চাইনি কোনদিন,
 গরু ছাগলের মত কসাইয়ের হাতে তুলে দিয়েছি,
 কি দরকার ঠান্ডা মেশিন আছে তো,
 সির সির ঠান্ডার মৌতাতে।
 ঝলসে যাওয়া মাটি 
 জলস্তরের কৃপণতা মানবে কি করে,
 সভ্যতা বিকাশের উত্থানে 
 নিজেদের পায়ে মেরেছি কুড়ল।
 কোটি টাকার আলপনায় বিশ্ব রেকর্ড 
 ধুধু কালো পিচের প্রান্তরে,
 কোটি টাকায় কত গাছ প্রাণ পেতো 
 অবলীলায় সবুজ হতো চারিদিক।
 আফসোসকে বন্দী করে অপেক্ষা 
 শেষের সে দিনের অসহ্য যন্ত্রণায় 
 কাঁদার মত থাকবে না পাশে কেউ।
©মস

আমি ধর্মের নয় কর্মের -- স্বাধীন কুমার আচার্য্য

আমি ধর্মের নয় কর্মের 
 স্বাধীন কুমার আচার্য্য 
 ২৫/০৪/২০২৪ 
আমি কর্মের কবি ধর্মের নয় 
         কৃষকের আশ্বাস 
আমি হিন্দু নয় মুসলিমও নয় 
          শুধু শ্রমিকের বিশ্বাস ।।

আমি দেবদূত নয় নবী ও নয় 
        অনাথের ত্রাণকারি
আমি গীতাও নয় বাইবেল ও নয় 
           সত্য আখরে ভরি ।।

আমি  টিকিও রাখিনা টুপিও পরিনা
           মালা ঝুলি নেই কাঁধে 
আমি  নাঙল চালাই হাল ধরি ভাই 
            লোহাকে পেটাই সাধে ।।

আমি  রাজ্য চাই না চাইনা অর্থ 
          শুধুই মানুষ চাই 
আমি  বুভুক্ষু আর নীড় হারা দের
          বুকে দিতে চাই ঠাঁই ।।

আমি  হাপরের বুকে ঢেলে দিই শ্বাস
          মুটেদের বোঝা তুলি 
আমি   চর্মকারের মাথার উপর 
           ছায়ার ছত্র মেলি ।।

আমি  ভিখিরীর ফুটো থালায় জমানো 
           শুধুই একটি টাকা 
আমি   লজ্জা বস্ত্র ঢেকে দিতে চাই 
            শরীরটা যার ফাঁকা ।।

আমি  কর্মের দাস ধর্মের রিপু 
            সত্যের পথচারী 
আমি   মিথ্যার যবনিকা টেনে দিতে 
           হয়েছি কলমধারী ।।

এক মানুষের -- আমান

এক মানুষের
   আমান 
২৪-০৪-২০২৪
এক মানুষের সৎ সাহসেই
বদলে যেতে পারে জাতি, 
সমাজ থেকে মুছতে পারে 
অশনি সব অসংগতি। 
রুখতে পারে দূর্নীতিবাজ
দুশ্চরিত্রের রাঘব বোয়াল, 
গুড়িয়ে দিতে পারে সকল
মুখোশ ধারী'র মেকি চোয়াল। 
মূল উৎপাদন  করতে পারে
অনিয়ম আর অপরাধের,
দেশ সমাজকে গড়তে পারে 
শান্তি সুখের আবাস সাধের। 
এমন মানুষ চাইলে আমরা
নিজেই কিন্তু হইতে পারি,
কারো কাছে না করে তাই
নিজের কাছেই শপথ করি।
শপথ,
অসৎ পথে চলবো না,
কেউ চললে তা মানবো না
সৎ-সাহসে চলবো,
অকল্যাণকর দেখলে কিছু 
নিজের চেষ্টায় দলবো।

Wednesday, April 24, 2024

অপেক্ষার প্রহর -- প্রতাপ রাকসাম

অপেক্ষার প্রহর
প্রতাপ রাকসাম 
২৪/০৪/২০২৪ ইং
তোমার বিরহে আর কতকাল কাঁদলে আমার চোখের জল ফুরোবে আমার ঠিক জানা নেই..! শুধু-
এতটুকু জানি যখনি তোমার কথা মনে পড়ে তখনি ঐ নীল পাহাড়ি ঝর্ণার মতো দুচোখে অবিরত জল ঝরে।
তোমার-আমার অতীত বারবার আমাকে রোমন্থন করে।
সারাক্ষণ তাড়া করে গন্তব্যের নিশানা দিক্-বিদিক হারায়।
মুহূর্তগুলো বড্ড ফ্যাকাসে মন হারিয়ে যায় স্মৃতির পাতায়।
সেই কবে ফাগুনের স্নিগ্ধ ভোরে কোকিল জেগে উঠার আগে তুমি চলে গেছো আর ফিরে এলেনা..!
যাবার বেলায় বলেছিলে তোমার যোগ্য হয়ে আমি আবার ফিরে আসবো। 
সকলের সামনে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে চিৎকার করে বলবো আমি তোমাকে ভালোবাসি.....ভালোবাসি।
কতদিন কতকাল কেটে গেলো কত বসন্ত এলো গেলো তবু তুমি ফিরে এলেনা। 
ভুলেও তুমি একটি চিঠি দিলেনা।
চৌরাস্তার মোরে রোজ ডাক পিয়নের সাথে আমার দেখা হয় পিয়ন কাকা মন খারাপ করে বলে তোমার কোনো চিঠি নেই।
অপেক্ষার যন্ত্রণায় কষ্টগুলো শিশির কণার মতো জমে আজ বিষাদসিন্ধু হয়ে গেছে!
হয়তো তুমি ভালোবাসার প্রতিশ্রুতির কথা ভুলেই গেছো কে জানে!
কিন্তু, আমি ভুলিনি..
তোমাকে আপন করে পাওয়ার প্রয়াসে সকাল-সন্ধা চোখে জল নিয়ে এখনো আরাধনা করি।
আমার দৃঢ় বিশ্বাস তুমি আমার কাছে ফিরে আসবেই আসবে।
কখনো আধো রাতে ঘুম ভেঙে তোমার শুন্যতায় ছটফট করি তোমার ছবি বুকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়ি।
এখন আমার দিন কাটে তো রাত কাটেনা ধূসর জীবন ভরসাহীন, সান্ত্বনাহীন, নিঃষ্প্রভ প্রহর গুলো কেটে যায় গভীর দীর্ঘশ্বাসে!
জানিনা আর কত শ্রাবণ ধারার মতো চোখের জলে বন্যা হলে
তুমি সাঁতার কেটে আমার কাছে ফিরে আসবে....!!

বই দিবসে -- তরুণ কুমার ভট্টাচার্য

বই দিবসে
তরুণ কুমার ভট্টাচার্য্য 
বই কই     বই কই 
প'ড়ে  যায়  হৈ  চৈ 
হ'য়ে গেল বইমেলা দেশে
বই চিনে   বই কিনে
সাগ্রহে  বাড়ি   এনে
থরে থরে তুলে রাখে শেষে  ।

বই মেলা     বই মেলা
বই জোগাড়ের ভেলা
যে যা পারে বই কিনে রাখে
নানা কাজে   তার মাঝে
কাক ভোর   কিবা সাঁঝে
পালা ক'রে বই প'ড়ে দেখে  ।

বই ঘ্যাঁষা      পড়া নেশা
বই   পড়া     ভালোবাসা
এরাই তো বইয়ের পূজারী
পড়ে যত          চায় তত
জ্ঞানে    হয়  অবনত
বলা যায় জ্ঞান কান্ডারী  ।

জ্ঞানী জন      গুণী হন
বুঝে   শেষে   কথা  কন
এইটাই বই দেয় শিক্ষা
ভাবি তাই       1““““সুধী চাই 
বই ছাড়া কথা নাই
সে মানুষ লাগি এ প্রপ্রতীক্ষা  ।

বাংলা আমার প্রাণ -- দেব মন্ডল

কবিতা - বাংলা আমার প্রান 
কলমে - দেব মন্ডল 
তারিখ - ২৪/০৪/২০২৪
যেদিন রাজ হাঁসের ডাক থেমে যাবে, বন্ধ হবে চলাচল। 
ভোরের সুরে কোকিল গাইবে না আর গান। 
পুৃঁই শাকটি শুকিয়ে যাবে, গাছে ধরবে না আর  ফল।
এই দিন দেখার আগে আমার যেনো মৃত্যু হয় এই প্রিয়  সোনার বাংলায়। 
পাটনাই ধানের গন্ধ যদি নিঃশেষ হয়ে যায়। 
তার আগে যেনো আমার দেহ থেকে প্রান চলে যায়। 
লুঙ্গী, গামছা, ধুতি পাঞ্জাবী এসব পোশাক ভীষণ দামী। 
তোমাদের এই রং বাহারি, এসব আমি তুচ্ছ দেখি। 
কারণ আমি খাঁটি বাঙালী ঘরের সন্তান। 
চাতক যেদিন জল বিনে রইবে অপেক্ষাতে। 
প্রভু এক টুকরো জল দিয়ো এই বাংলার প্রান্তরে। 
কুমড়া শাকটা কতো শুকিয়ে গেছে জল বিনে।
কতো চাষীর জীবন চলে এই সবজি চাষ করে।
চাষীর চাকা চলছে শহরে, হচ্ছে বড় লোক। 
তাহলে বাংলার চাষী অনাহারী, এ কেমন বিচার বলো তো।
যদি পদ্ম আর না ফোটে জলে,
আমি  বাঁচবো না আর এই বাংলার মাঠে। 
চির অমর অক্ষয় থাক আমার সোনার বাংলা। 
আমি দেখবো দুচোখ ভরে।

Tuesday, April 23, 2024

ফেরার বেলায় -- মনোজ দত্ত

 ফেরার বেলায়
 মনোজ দত্ত
 ২৩/০৪/২৪
 ফেরার ঘরে ডাকছে আমায়
 আয় আয় রে আয়,
 ধান রোপণ হয় নি সারা
 এখন কি যাওয়া যায়?

 মাটি গুলি শুকনো ভারি
 করছি যত তাড়াতাড়ি,
 শঙ্খ দূরে বাজায় ভেরি
 বলছে এসো কর্ম সারি।

 বলাকা পাখায় লাল আভা টি
 উঁকি দিয়ে যায়,
 কাজলা তরু বপু মেলে
 আঁধার কায়ে ছায় ।

 বক্ষ বাজে দুরুদুরু
 নীহার পড়া হলো সুরু,
 ঘরে ফিরতে হবে এবার
 এখন কি উপায়?
 মাঠের মায়া ছাড়াই আমার
 হলো ই ভীষণ দায় ।

 রোদে পোড়া আবাদ খানি
 ঘর্ম ঝরা আদরিনী,
 ভালবাসার সে যে আমার
 প্রাণের প্রেমের রাণী।

 মায়ার আধার সহজে কি
  তারে ছাড়া যায়?
 ঘরে যাবো একটু সবুর
 চক্ষে আঁধার ছায় ।

 পথের দিশার শৃগাল টি
 ঐ দিচ্ছে উঁকি,
 গুছিয়ে নিয়ে যাবো আমি
 তারে সমুখে রাখি।

 জীর্ণ বসন উড়ছে কেমন
 মৃদু দখিনা হাওয়ায়,
 সবাই ব্যাকুল আমায় নিয়ে
 দাও গো এবার বিদায়।

Monday, April 22, 2024

নীড় ভাঙ্গা পাখি -- কল্যাণী ব্যানার্জ্জী

নীড় ভাঙ্গা পাখি ।
কলমে - কল্যানী ব্যানার্জ্জী ।
১৯.৩.২৪.
ডাকবনা আর তোমায় আমি
আমার জীবনে জীবন মিলাতে
ডাকবনা আর তোমায় আমি ;দখিনা হাওয়ায়
কৃষ্ণচূড়ার এই খেলাতে।
তোমায় আমি ডাকবনা আর ;নদীর কিনারে বসে পাশাপাশি গোধূলি রংএ তে রাঙ্গাতে।
ডাকবো গো আর শ্রাবণ ধারায়
একসাথে মিলে ভিজতে।
নিশীথ রাতেতে ডাকবনা আর রাত জেগে তারা গুনতে।
আমার আঁধার ঘরেতে আর ডাকবনা তোমার প্রেমের প্রদীপ জ্বালতে।
তুমি যেগো আজ দুরের অথিতি ;
হারিয়ে গেছো যে পাল ছেঁড়া কোনো নৌকায়।
কোন ঘাটে গিয়ে ভিড়েছে যে নাও ;জানিনা তো তার ঠিকানা।
আমি পড়ে আছি নীড় ভাঙ্গা পাখি ;একা একা আর
স্বপ্নের জাল বুনিনা।
যে প্রেমের ছোঁয়া দিয়েছিলে মনে
জানিনা গো তা ভুলবো কেমনে
জানি গো তুমি আর আসবেনা ফিরে
বেলা শেষের এই ঠিকানায়।
যেথা আছো সেথা ভালো থেকো তুমি
এইটুকু মোর কামনা।
আমার স্মৃতিতে অমলিন তুমি ;তাই নিয়ে ঠিক থেকে যাব আমি।
স্মৃতি তো আমায় যাবেনাকো ফেলে
আমার জীবন সন্ধ্যায়।

এক পাত্র জল রেখো -- সুমন

এক পাত্র জল রেখো
                       ---সুমন।
২১.০৪.২০২৪
০৮.০১.১৪৩১
বড্ড অসহায় আজকাল ওরা
তীব্র দাবদাহে,
বাড়িতে প্রবেশ নিষিদ্ধ এমনি
সীমান্ত আবহে।
আহার দুবেলা অমিল তাদের
উচ্ছিষ্ট ডাস্টবিনে,
উঁচু দেওয়ালে ঘরবাড়ি ঘেরা
কষ্টকর জীবনে।
সারাদিন পথে ঘুরেফিরে শুধু
খাওয়ার খোঁজে,
হোটেলে, বাজারে গন্ধ শোঁকে
আশাতীত লাজে।
ছ্যা-ছ্যা, ছিঃ-ছিঃ, দেখে ওদের
মানুষেরা তাড়ায়,
কখনও সখনও লেদনা, লাঠি
যন্ত্রণাই বাড়ায়।
রাজপথে বাচ্চা পড়ছে চাপা
চার-চাকার তলে,  
ছেঁচড়ে বেঁধে তুলে পুর-কর্মী 
ভাগাড়ে ফেলে।
সারমেয় তবু বিশ্বস্ত উপকারী
ইতিহাস দেখো,
ওদের জন্যও এক-পাত্র জল
সংরক্ষিত রেখো।

Sunday, April 21, 2024

নবীন স্বপন -- সূর্য্যোদয় রায়

 নবীন স্বপন
 সূর্য্যোদয় রায়
 ১৫/০৪/২০২৪
ওই দ্যাখো আজ জ্যোর্তিশিখায় তাহার অমল রূপ,
সমুজ্জ্বল ওই আলোক হাসিল বোধহয় অনুপ;
শুভ্রাঙ্গন নতুন আলোক বরনডালায়,
বিষাদ গীতের স্বর্ণমালায়;
সব নব নিন্দিত আলোক সিঞ্চণ ভুলে গিয়ে আমরাও হয়তো চুপ।

আবার নূতন আলোকশিখা জাগিল পরান মাঝে,
স্তূপ পদমূলে ওই কনক আভায় ঋদ্ধ নবিন সাঝে;
চির নূতনের এই সৃজন বানী,
মোর মননে দিব্য মানি;
বিধির বিধান নিত্য জীবনে কেমনে আজকে রাজে।

আসন্ন ওই সন্ধ্যা গীতের প্রত্যাশাতে আঁধার জীবন রাগ,
রেখে যাও সব ধরনীর তলে নব স্বপ্নরেখায় নূতন আলোক দাগ;
পাখির কূজন গীতের কুহুশিসে,
রিক্ত জীবন রঙিন হাসে;
কূজন ধ্বনির সৃজন মননে লাগুক না হয় ফাগ।

খানিক ভুল বুঝি আজ আমার হল ভুল বোঝে তাই সময়,
যে পাপের ভাগি আমি নই গো কখনও কেন লব তার দায়;
অধিক স্বপন রঙিন জীবনে,
কত যুগ আমি ক্ষয়েছি মণণে;
আর বরই বোধহয় ক্ষনিক আলোকে মৃত মানবের প্রায়।

আজকে আবার রাঙিছে পরান দিব্য স্বপন সুখে,
তাই বুঝি আজ নম্র আশায় পোড়ায় এ জীবন দুঃখ;
মহা প্রাণ আজ এই তো জীবন,
তোমার অমল হাওয়ায় দুঃখ গীতের লয়েছি স্মরণ;
আমার এই লাশ খানি আজ শুইয়ে দিও কবরের অধঃমুখে।

দায়িত্বটা কার -- তরুণ ভট্টাচার্য

দায়িত্বটা কার
তরুণ ভট্টাচার্য
১৭/০৪/২০২৪
কি হয়েছে ?   লোক জমেছে ?
বলছে   " রান ওভার "
জানালা থেকে    চালক দেখে
সিধে পগার পার
রয়েছে প'ড়ে     হাত পা নাড়ে
ক'রে চলে চিৎকার
ফটো খ্যাঁচে       যায় না কাছে
দায়িত্বটা কার  ?

মৈত্রী ভুলে              বৈরি তুলে
বিবাদ বাধে চরমে
বিবেক গুণে           কারো মনে
হয় নাতো  'যাই থেমে'
দূরেতে খালি         বাজায় তালি
উস্কানি শতবার
শিশু ও দুটি           বাগিয়ে ঝুঁটি,
দায়িত্বটা কার  ?

মাস পয়লা             যায় একেলা
রকের ছেলেরা জানে
পেনশন পায়      আরো বেশি ব্যয়
ঐটুকু তুলে আনে
মিটিয়ে দেনা               ওষুধ কেনা
হাতে কি থাকবে আর !
রক বাসি ছেলে     সব কেড়ে নিলে !
দায়িত্বটা কার  ?

দিনের শেষে             বাড়িতে আসে
মুখগুলি ঘন কালো
এত দৌড়ঝাঁপ     করেছে মেকআপ
স্বপ্ন কোথায় গেল  ?
আজ বাদে কাল            সংসার হাল
কিভাবে ফেরাবে আর !
বিবেক হানছে            নীতিরা টানছে ,
দায়িত্বটা কার  ?

প্রশ্ন কঠিন উত্তর সহজ -- দিলীপ ঘোষ

প্রশ্ন কঠিন উত্তর সহজ
দিলীপ ঘোষ
২০/০৪/২৪
পাশের বাড়ির ছেলেটা
হন্তদন্ত হয়ে ছুটতে ছুটতে এলো, বললো --
কাকু, বাবা বড় অসুস্থ, মৃত্যুর সাথে লড়ছে
খুঁজছে আপনাকে
হারুবাবু বললেন, বাথরুম যাব, স্নান করব,
অফিস যাব, অফিস থেকে ফিরে
দেখা করব সন্ধ্যায়
লোকটা মারা গেলো সেদিন দুপুরে

একদিন সন্ধ্যায়, অফিস থেকে ফিরেছেন হারুবাবু
এক ভদ্রমহিলা বাড়ীতে এলো, জিজ্ঞাসা করলো,-
ছেলেটাকে কোন বিষয়ে পড়াই বলুন তো
হারুবাবু  বললেন, এইমাত্র ফিরেছি
এখন হাত পা ধোব, একটু বিশ্রাম নেব, পরে বলবো

পাশের বাড়ির অল্প বয়সী ছেলেটা মারা গেলো
কান্নার রোল, যে শুনছে সেই যাচ্ছে দেখতে
বাড়ি থেকে বের হতে যাচ্ছে হারুবাবু, গিন্নি বললো, 
দূরারোগ্য রোগে মরেছে, যেও না, 
                                  এনো না অসুখ ডেকে
দুঃখের সময় পাশে থাকা লাটে উঠলো
সুবোধ বালকের মত থেকে গেলো ঘরে

পাড়া প্রতিবেশীদের দায় বিপদে
পাশে থাকেন না হারু
লোকের জন্য সময় ব্যয় করতে
হারুবাবু বড় হিসেবি
বউ, ছেলে, মেয়ে নিয়ে তার পৃথিবী
তিনি নাকি ভদ্রলোক, বনেদী
হারুবাবু কি মানুষ, তিনি কি সামাজিক?

চল না হারিয়ে যাই -- প্রতাপ রাকসাম

চলনা হারিয়ে যাই
প্রতাপ রাকসাম
২১/০৪/২০২৪ ইং
ফাগুনের স্নিগ্ধ ভোরে তুমি হঠাৎ 
নীল শাড়ি পড়ে এসে আমায় মুগ্ধ করলে
চঞ্চলা উদাসী হাওয়ায় ভেসে এসে বললেঃ
এই... চলনা আনমনে কোথাও 
হারিয়ে যাই! 
পাখীর কলতানে জনমানবহীন 
সবুজে ঘেরা গভীর অরণ্যে অচেনা 
কোনো মধুুবনে!
আবীর রাঙা নীলাকাশে
সাদা কালো মেঘের ঘনঘটায় আমরাও
রংধুর মতো ভেসে উঠবো!
আমি এক পশলা বৃষ্টি হয়ে তোমার
উতপ্ত হৃদয় ভিজিয়ে দেবো।
আমার আলতো ছোঁয়ায় তুমি স্বস্তির 
নিঃশ্বাস ফেলবে।
ঐ নীল পাহাড়ের ঝর্ণার কলধ্বনি শুনে
মন যদি মাতোয়ারা হয় তখন আমিও তোমায় জড়িয়ে ধরবো।
চলনা প্রিয় আজ হারিয়ে যাই।
আমি সাঁঝবাতি হয়ে তোমার আধাঁর ভূবনে
অনন্তকাল জ্বলবো।
স্রোতস্বিনীর মতো মিশে যাবো 
তোমার হৃদয়ের অথৈ সমুদ্রে।
তুমি ঢেউ হয়ে আমায় ভাসিয়ে নিয়ে 
যাবে স্বপ্নমুখর দেশে।
তুমি আমার জীবনে এসে শিখালে প্রেম ভালোবাসা তুমিই আমার স্বপ্নিল আশা।
হৃদয়ে এঁকেছো নব জীবনের আল্পনা
তুমিই আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রেরণা।
আমার নীলাকাশে মুক্ত বিহঙ্গ; চলনা 
প্রিয়তম আজ হারিয়ে যাই অজানায়...।

সারে চমৎকার -- মীরঃ নাজমুল

সারে চমৎকার
মীর নাজমুল
১৮।০৪।২০২৪ ইং
লোকে বলে.... 
যার কিছুই নেই, 
তার আবার হারাবার ভয় কিসের। 
অশান্তির চেয়ে তো...
একলা থাকাই ভালো, 
তবে আবার জ্বালা কিসের।  

প্রতিক্ষার প্রহর,হয় যদি কষ্টের.. 
তবে আর প্রত্যাশা করে লাভ কি। 
আশার প্রদীপ যদি....
নিরাশার অন্ধকারেই রয়ে যায়, 
তবে আর অপেক্ষা কিসের। 

কবির বর্ননায়
ঘর পোড়া গরু,লাল মেঘে ভয় পায়। 
তবু কাটেনা তার মনের অনুভুতি 
থামেনা আবেগ। 

আমি বলি.... 
কিসের এতো ভালোবাসা.. 
কিসের ই বা এতো আবেগ। 
লাল মেঘ,সাদা মেঘ যাই বলি 
ও গরু নেই আর রাখালের। 

ওরে নির্লজ্জ বেহায়া মন 
আজ সে অন্য কারো......
একথা আবার বুঝবি কবে 
........কোন জনমে,কখন। 

তার চেয়ে সেই ভালো, 
ভুলে যাও তারে। 
নইলে পিরিতের অনল 
অভাগা জাতের......... 
পোরাবে অবিরত,জনম,জনমে। 

             ................ মীরঃ নাজমুল।

বসন্ত কাল -- বনানী সাহা

 বসন্ত কাল 
 বনানী সাহা 
১৯/০৪/২০২৪
ভ্রমরের গুনগুন --
নূপুরের রুনঝুন --
শুনে শুনে, দিন কাটে --
বসন্ত কাল টা তে ।

ফুলে ফুলে প্রজাপতি --
পাখা রঙ বাহারি --
রূপে রঙে ভরে দেয় ,
ফাগুনের বেলা টায়।

লাল শিমূল ,কৃষ্ণ চূড়ায় --
লালে লাল রঙ মাখায়।
যেন শুরু ফাগের খেলা ।
মনে করে দেয় এই বেলা ।

কোকিলের কলতান--
ভরে দেয় মন প্রাণ ।
দক্ষিণা বাতাস আর সুনীল আকাশ --
দেখে মনে আসে, কল্পনা একরাশ !

হৃদয়ে লাগে রঙের পরশ !
মনময়ূরী পাখনা মেলে হরষ --
হৃদয়ের বিচরণ কল্পনায় ---
বাস্তবের সাথে যেন ,এক রেখায় মিলায় !

হায়রে ভকতি -- খসরু ভাস্কর

হায়রে ভকতি!
খসরু  ভাস্কর 
১৬/০৪/ ২০২৪ খৃঃ 
ইট পাথর ও খড়কুটোর মাঝে বেঁধেছো ঈশ্বর 
লতাপাতায় গড়ে তোলো বিশ্বাস-স্বপ্নের-ঘর ! 

দামী খাবার ভালো আসন রেখে দাও কার তরে, 
সর্বশক্তিমান শ্মশান-গোরস্থানে রয় কেমন করে ? 

ঘোড়া হাতিতে রথে দেবতা! পুজারী চড়েন গাড়ি, 
কলার ভেলায় চড়েন দেবী যান নাকি শশুর বাড়ি! 

চৌদ্দ তলার প্রাসাদে থেকে মাথা নত করো নীচে
রাজাধিরাজ ত্রিজগৎ পতি, জীবন করলে মিছে।

রাস্তায় ঘুমায় বিশ্ববিধাতা ভাবলোকে রয় প্রাসাদে, 
পানশালায় ওড়ে অর্থ, কেউ ক্ষুধার জ্বালায় কাঁদে! 

এই যদি হয় সভ্যতার সমাজ--- ঝেঁটিয়ে দূর করো
ধর্ম শিক্ষা বিস্তার করেও আজিকে যুদ্ধ করে মরো।

Sunday, April 14, 2024

আচ্ছা ভাবুন তো -- প্রণব চৌধুরী

আচ্ছা ভাবুন তো ?
প্রণব চৌধুরী
০৬, ০৪, ২০২৪,
আচ্ছা ভাবুন তো ?
মিথ্যাবাদী মিথ্যুক রা যদি,
মিছে, মিছে দেয় মিশিয়ে মিশ্রির মিশ্রনে বালি,
তবু মানুষ, ফিরে না হুঁস,
মানের মর্যাদা তে লাগিয়ে মলম,
মনের মরমের মন মন্দিরের মসনদে,
মলিন মশারি বিছিয়ে,
তারা সকলেই নতজানুতে মানসিংহ,
মনে করে মলয়ে তাদের মন্ত্র আজও মহীয়ান !

ভেবো না,
ইতিহাস কিন্তু প্রতাপাদিত্য কেই পরম পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছে পারদের উচ্চতায় ৷
পরশুরাম মাতৃহন্তা হয়েও
এই পৃথিবীকে পনেরো বার পরাস্ত করেছিল,
পুরাণের পুঁথি তাই বলে প্রতিবার,
প্রতিজ্ঞা ও প্রতিভাকে যতই পৃথক করে রাখুক না কেনো,
প্রতিবাদী দের প্রতিশ্রুতির প্রখরতার প্রতিবিম্ব,
প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেছে যে প্রকোষ্ঠে প্রকোষ্ঠে,
ওহে প্রতিকুর,
আনতে পারবে না প্রলয় এই মিথ্যার প্রাচীর কে ভেঙ্গে দিয়ে ?
পরিজনরা যে আজ পর্যুদস্ত,
প্রতীক্ষায় পলে পলে ৷

আগুনের অগ্নিত্ব যদি হয় অচ্ছুত,
আশমানে অবলোকনে অশণী তবে,
আগামীতে আগাম বার্তার আগমনের আগমনি গানে আনবে না অসীমের আহ্বান ?
অপমানের অন্ন তো আসন্ন তে হবে কি অবগাহন ?
কি বলো অনির্বাণ ?
আসলে,
আশার অসিতে আলস্যের অবশতা নয় তো অমলিন আজ ?
আকাশকুসুমের ধরেছে আজ অনিদ্রা,
তাই আজ কে তার অতীত মনে হয় ৷
অবণী তো রীতিমত অবাক,
বলে কোনটা অভিনয়,
কোনটা আসল,
অভিনেতা রা যখন নেতার আসনের অভিপ্রায়ে আসীন |

সত্যি সেলুকাস !
সবে তো সকাল,
শত সহশ্র অর্কবিন্দু যখন হবে সপ্রতিভ,
তখন সর্যের ফুলে সখা ও সখীদ্বয় ঝুলন যাত্রায় ঝুলবে না তো  ?
সবিশেষে সর্বনাশ তার সলতে গুটিয়ে নিয়ে,
সবকিছু শুকিয়ে,
সেলুট মেরে বলবে না তো,
সবিণয়ে নিবেদন,
সত্যি সত্যি সেলুকাস,
এইটাই তো স্বাধীন ভারত ৷

ক্ষুদ্র বিন্দু -- চন্দনা কুন্ডু

 ক্ষুদ্র বিন্দু
চন্দনা কুন্ডু 
১০/০৪/২০২৪
কী আছে,  ঠাকুর ‌ তোমার হাতের মুঠোয় !
হৃদয়ে আমার ডানা ভাঙার ছটফটানি ।
এত‌ সুখ আছে, এত আনন্দ ‌আছে 
সে আনন্দ চিরস্থায়ী নয়, সব অস্থায়ী সঞ্চয় ।
তবু যে সুখের পনে মন যেতে চায় !
হাজার প্রশ্নের ভিড়ে লেখা দয়াল তোমার সুমুখে ।
কি, আছে তোমার মুঠো করা‌ হাতে ?
ঠিক যেন তীর ছুঁড়ে পথের গভীরে যাওয়া আসা ।
একের পর এক অসংখ্যবার, এরই উত্তর হাতড়াই ।
সকাল সন্ধ্যা পথের পথিক হব ক্লান্তিহীন পায়ে,
আবার তোমার সঙ্গী হব সূর্য অস্ত গেলে 
আত্মদীপ আলোকিত করো, অন্ধকার দূরে রেখে ।
কী আছে তোমার মুঠোয় ! সযতনে রাখো ধরে বুকে
মন করে তোলপাড়,হাজার বছরের অপেক্ষা ।
বিমূর্ত উজ্জ্বলজ্যোতি, এ তোমারই আভা 
ধীরে ধীরে সেই অনির্বাণ দ্যুতির প্রকাশ ।
কোথা থেকে এত আলোয় উদয় হয়
কান্নাভেজা কন্ঠে অস্ফুট উচ্চারণে আমার  প্রার্থনা 
ওই হাতের মুঠো থেকে এক মুঠো আশীর্বাদ দিও প্রভু ।

ভিন্ন তাল -- কথাবিচিত্রিক অসীম

ভিন্ন তাল! 
কথাবিচিত্রক অসীম
১১/৪/২০২৪
নিপু মালাকার! 
মনে প্রাণে ভালবেসে, 
রোমাঞ্চিত হয়ে শেষে!
তপস্যার গিরি খাঁদে,
নিজেকে বন্দী করে নিয়েছে,
নিয়তির সংশোধনে। 
দাড়ি চুলে খুর না তুলে,
ধুতি পড়ে, সাদা কাপড়, 
জরায় সারা গায়ে! 
ভালোবাসার পূজা, 
করে গেছে আজীবন মন মন্দিরে। 
ধূপের মতন জ্বলে পুড়ে ক্ষয়ে ক্ষয়ে,
একলা একাকী! 
নিঃশেষ হয়ে গেছে, 
নিশ্চিহ্নের চির বিদায়ে।
মলিনা থেকে গেছে আজো।।
মালবিকা,- হলো বিধবা! 
শুভ পরিণয় ঘটেছিল, 
ভালোবাসার প্রেমিকের সাথে।
খ্রিস্টের ব্রত কথা টেনে নেয়, 
জীবন যুদ্ধের পরিনামে।
"ঈশ্বর যা যোগ করে, 
মনুষ্য তা বিয়োগ না করুক "
নিয়তির কথা সুরে, 
চিরদিন চিরদূরে! 
বিয়োগের বসবাসের থেকে গেছে, 
বাকি জীবন একলা,- মালবিকা।।
এখন প্রেম আর জীবন সঙ্গী, 
মডেল অনুপাতে আপডেট হয়ে চলে,
খেয়াল খুশিতে হয় পরিবর্তন! 
আর যদি নিয়তির বিষাদ প্রবণতা, 
কখনো কাউকে তুলে নেই চিরতরে! 
বাকিজন একদন্ড অপেক্ষা করে না,
স্মৃতিগুলো মুছে ফেলে, 
আগুনেতে জ্বালায়ে ছাইয়ে।
নতুন বন্ধনের আবদ্ধ হতে,
কৃপণতা করে না সময় বিনষ্টতায়। 
এখন প্রেম বুঝি জোয়ার ভাটার,
অনুকূলে হয়েছে বিলীন।
শোক তাপ বলে কিছু নেই,
এখন শুধু আবেগের দৈন্যতায়, 
আয়োজনে পালনের খেলা।।
স্মৃতি হ্রাস।

একটুখানি ছায়া -- কল্যাণী ব্যানার্জি

একটু খানি ছায়া
কল্যানী ব্যানার্জ্জী 
১০.৪.২৪.
একটু ছায়া দেবে আমায়
ভীষণ ক্লান্ত আমি।
ক্লান্ত স্থলিত চরণ আর চলতে চায়না
একটু ছায়া চাই ;শান্তির ছায়া।
জীবনের সারাটা পথ ;তপ্ত রোদ্দুরে শুধু ছুটে গেছি
এমন একটু ছায়া পাইনি ;যার নিচে দাঁড়িয়ে একটু
বিশ্রাম নেব।
কোথায় গেল সেই পাতা ভরা গাছগুলো
যাদের ছায়ায় দাঁড়িয়ে একটু শান্তি পেতাম।
নেই ;নেই জীবনেও নেই সেই মহীরুহ গুলি
ছায়ার আশ্রয় নিয়ে দাঁড়িয়ে
পথের দু পাশেও নেই একটু বিশ্রাম নেবার মতো ছায়া।
পুরো রাস্তাটা অজগরের পিঠের মতো
রোদ্দুরে চক চক করছে।
পুড়িয়ে দিচ্ছে পথচারীদের
নেই একটু ছায়া ঘেরা বিশ্রামের জায়গা।
তাইতো মানুষ এখন এই তপ্ত জীবনে বা তপ্ত পথে
চলতে চলতে একটু ছায়া না পেয়ে ;
মুখ থুবড়ে পড়ছে আর উঠতে পারছেনা
হসপিটালে তাদের মৃত বলে ঘোষণা করছে।
দেবে একটু ছায়া? বড় প্রয়োজন চলতে চলতে
একটু ছায়ার নিচে বিশ্রামের।
জীবনের পথেই হোক বা চলার পথে
বড় প্রয়োজন একটু শান্তির ছায়া।

Sunday, March 31, 2024

প্রতিবাদী শব্দেরা তালাবন্ধ -- পরেশ চন্দ্র সরকার।

প্রতিবাদী শব্দেরা তালাবন্ধ
পরেশ চন্দ্র সরকার
২২_০৩_২০২৪_ইং

গতানুগতিক সৃজনীশক্তিরা মেরুদণ্ডে অন্ধ
প্রতিবাদী শব্দেরা 'বধির' জেলে তালাবন্ধ।

এক অর্থে বাহাদুরি
চলছে তাই সবসময়ই জ্ঞানদার জ্ঞান বাণী।
তুমি অচ্ছুৎ, ভীতু, কমজুরি,
কিছু ব'লেছো তো ঠুকে দেবো মানহানি।

ঝুঁকে যাওয়া বর্তমান
বিনষ্টের শেষ সোপানে দাঁড়িয়ে ঠায়,
এদের মধ্যে প্রচুর আছে শক্তিমান
অথচ একদা দাপুটে সর্বশক্তি গেছে কোমায়।

কে আর জড়াতে চায়
মৃত্যু থেকে উটকো যাবতীয় ঝামেলায়,
বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধার দায়
আমার নয় অন্যের, কেনো শুধু জড়ানো মামলায়?

এসময় আয়েসি, আয়েস ক'রার
ঘুরে বেড়াচ্ছি, জ্ঞান দিচ্ছি, খাচ্ছি ঘুমোচ্ছি দিব্যি!
মূষিক উপাধি খারাপ কিছু কি জীবনধারার?
মার্জার থাকুক স্বভাবসিদ্ধ, আমি তো আছি হেব্বি!

জীবনতরীর মাঝি -- দেব মন্ডল

  জীবনতরীর মাঝি
  দেব মন্ডল 
  ২২/০৩/২০২৪
কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে, জীবন তরী দিক হারিয়ে লাগছে  কোন কিনারায়। 
এখন আকাশে মেঘ আছে, কবে আবার সূর্য উঠবে আমি কিন্তু জানি না। 
মাঝির হাতে বৈঠা দড়ি, যেমন চালায় তেমন চলি। 
কালো মেয়ে নৃত্য করে তাহার তালে জগত মাতে। 
সে যেমন চালায় তেমনি চলি, মা যে আমার রক্ষা কালি। 
সবাই বলে মাটির কালি আমি দেখি সে জীবন তরীর বড় মাঝি। 
চালাচ্ছে নৌকা দিবারাত্রি ভীষণ ভালো কলাকৌশালি। 
কারও ডুবিয়ে বাঁচায়, ডুবিয়ে মারে, পাপের ক্ষমা নাই করে। 
সন্তানের মতো রাখেন আগলে, খ্যাত তিনি জগত মাতা নামে। 
কালো দিয়ে হয় না বিচার, মায়ের কাছে রূপের  আছে কি  দাম। 
বিশ্বাস হারিয়ে ভুল নদীতে তুলেছিলাম  পাল। 
মাঝ নদাীতে ডুবে গেলো আমার সোনার নাও।
সে যেমনে নাচায় তেমনি নাচি অসৎতের সব সঙ্গ ছাড়ি, হিংসাবৃত্তি দূরে ফেলে, সকল ধর্ম সমান দেখে সামনে আগাই পা।  
ভাবি এখন, মানুষ আমি, মানুষের মাঝে বাঁচতে হবে, প্রকৃতিকে ভালোবাসতে হবে। 
ফিরতে হবে  বাংলার বুকে, রাখতে হবে শ্যামনগর, সাতক্ষীরার মান। 
তবেই জন্ম সার্থক হবে আমার।

খেলাঘর -- তপন চট্টোপাধ্যায়

খেলাঘর 
তপন চট্টোপাধ্যায় 
28.03.24   
    
 কতো কাল পর দেখলাম তোমার মুখ ,       
মেঘে ঢাকা শীর্ণ চাঁদের মতো নিস্প্রভ,
অঘ্রাণের ফসল কাটা মাঠের মতো রিক্ত,..                      অশ্বত্থের ডালে বসা রাতের আঁধার মাখা 
সাথীহারা পাখিটির বিহ্বল চোখের মতো ছিল 
তোমার চোখ ,মৃত নক্ষত্রের মতো আলোহীন শীতল,নিস্তেজ...,    
দেখলাম ব্যস্ততম শহরের চলমান জনতার স্রোতের মাঝে তুমি একাকিনী নিঃসঙ্গ বসে আছ যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে,                                        
তোমার বিষণ্ণ মুখে দেখি  দীর্ঘ ক্লান্তির ছায়া--  
আষাঢ়ের শেষ বিকেলের কাজল কালো মেঘের মতো... মুখ মন্ডলে  এখনো লেগে আছে উৎকণ্ঠার  প্রলেপ , উপেক্ষা নয় আজ আর, হা-হুতোশ করারও কিছু নেই তবুও এক পরম অনুকম্পায় চোখের কোণ ভিজে উঠেছে  নিজের অজান্তেই ...                                        এরকমই হয়তো হবার ছিল , 
অদৃষ্টের কী নির্মম  পরিহাস!   
এই ব্যস্ততার জন অরণ্যে, দুই প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা দু'জন  মানুষ অথচ যেন  কতো আলোকবর্ষ দূরে আছি , আজ আর কেউ কারোর খোঁজ রাখে না ,
অথচ একদিন  ...,  থাক সে কথা,
নিষ্ঠুর সময়ের সংঘাতে পৃথিবীর ভাঙাগড়ার খেলায় এমনিভাবেই হয়তো ভেঙে যায় কারো কারোর জীবনের খেলাঘর!!

Sunday, March 17, 2024

তোমার নামে বসন্ত -- জয়া গোস্বামী


তোমার নামে বসন্ত
জয়া গোস্বামী
০৭-০৩-২০২৪
তোমার নামেই প্রতি বার যেন এ ঊষর মনে ,
বাসন্তিকা আসে বারেবারে কৃষ্ণচূড়া বনে।
তোমার জন্য চুপকথারা আবার কথা কয়,
কৃষ্ণচূড়া ফুলের রেণু ওদের অঙ্গে লেগে রয়। 

যৌবনের উদ্দামতায় বয়ে এসেছে  বসন্ত,
তোমাকে দেখে হারিয়ে ফেলি আমি আদি অন্ত।
মন-প্রাণ কেড়ে নেওয়া এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত, 
কৃষ্ণচূড়া ফুলে কেশ সজ্জিত  মন কেন তবে অশান্ত?

তোমার জন্য সেজেছি আমি অপরূপার বেশে,
জোছনার ঝরনা ধারায় চন্দ্রিমা  দেখে আজ হাসে।
কবির গানে বসন্ত ধারায় ফিরে নিজেই আসে,
ধ্বনি ওঠে"এসো হে এসো হে" বসন্ত দখিনা বাতাসে।

এই আনমনা মন, মনের ভেতর  উঠেছে তরঙ্গ,
বাসন্তিকার প্রেমে গোধূলির রঙে দেখি কতোই রঙ্গ। 
তোমার জন্য  এনেছি আবির বাসন্তিকার থেকে,
যদি তোমার জন্য বসন্ত আসে কোকিলের ডাকে।

তোমার জন্য পুষ্পকাননে ভ্রমরের  সকালে গুঞ্জন,
প্রিয়তম বসন্তে করবো কেন বলো মানভঞ্জন ?
নব পল্লবে বৃক্ষরাজি আবার হয়েছে  আচ্ছাদিত, 
ঝরা পাতারা ঝরে আজ দেখো ভূমিতে শায়িত। 

তোমার জন্য তন্দ্রার ঘোর কেটেছে নিশীথ রাতে,
বাসন্তিকার  উষ্ণতা ছোঁয়া তোমার থেকে পেতে।
আমি তো দুরন্ত ফাল্গুন গোটা গায়ে তোমার পরশ মাখি,
কৃষ্ণচূড়া বনে কাঁদে কোকিল তাকে কোথায় রাখি।

Saturday, March 16, 2024

বসন্ত যাপন -- উজ্জ্বল বিশ্বাস

বসন্ত যাপন
উজ্জ্বল বিশ্বাস
 ১৬  / ০৩ / ২০২৪
বসন্ত কে ঘিরে ভাষার শরীরে
কবিরা মাখায় রঙ,
আঙিনার মাঝে নব প্রেম রাজে
শালিকের সমাগম ।

মধুর বাঁশরী কানাইয়া বাজায়
আজও রাধিকার তরে,
রঙের মাধুরী হৃদয়ে চাতুরী
সখারা ঘিরে ধরে ।

প্রেম আলাপন চকিত নয়ন
হৃদয় ফুটন্ত জুঁই,
ভালোবাসি তারে প্রেম বাহুডোরে
প্রেমের পরশে ছুঁই ।

বসন্তের ক্ষণে প্রেমিকের মনে
প্রেমের দোলা লাগে,
আম্র মুকুলের মাতালি ঘ্রাণে
হৃদয়ে বাসনা জাগে ।

রঙের ফাগুনে প্রেমিক যতনে
রাঙায় হৃদয় মন,
ভালোবাসা যার হৃদয় জুড়ে
সে বোঝে এ যতন  ।

নবপত্রাঞ্জলি প্রেমিকের বুলি
সবুজে প্রাণবন্ত,
হৃদয় কানন ফুল সমাগম
প্রেমিক সেজেছে সন্ত  ।

যা কিছু তার আছে আপনার
উজাড় করে দিতে চায়,
দেওয়ার মাঝে সব সুখ তার
হৃদয় খুঁজে পায়  ।

আমিও যতনে প্রেমিকের মনের
মাধুরী কুড়ায়ে আজি,
বসন্ত যাপনে ফাগুনের ক্ষণে
ভরিলাম কবিতার সাজি ।

Wednesday, March 6, 2024

অমর আমার একুশ -- সুখের ঘোড়ই

অমর  আমার একুশ 
সুখেন্দু  ঘোড়ই 
২১/২/২০২৪ 
মিষ্টি ছন্দ বৃষ্টি গন্ধ শুদ্ধ মুগ্ধ ভরসা 
মুক্তি শক্তি কৃষ্টি সৃষ্টি বাংলা মোদের মাতৃভাষা । 
বাংলা আমার বুকের ভাষা আমার মায়ের স্নেহ 
মরণ বাঁচন জীবন যাপন ভুলিতে পারিনা কেহ । 
এপারে গঙ্গা ওপারে পদ্মা দুই বাংলার টান 
নজরুল সুরে মোরা ভাই ভাই হিন্দু- মুসলমান । 
রিক্ত হস্ত সিক্ত করে ভাষার সুধা ধারায় 
তীব্র প্রতিবাদের কথায় শত্রু তাহার শক্তি হারায় । 
গভীর দুখে সুখের বাণী শুনি হৃদে কানাকানি 
বাংলা আমার মায়ের ছোঁয়া যতই করো হানাহানি । 
সেই ভাষাকে রক্ষার তরে দামাল ছেলেরা বিদ্রোহ করে 
শতবাধা উপেক্ষা করে মনে অদম্য সাহস ভরে । 
বাংলা মোদের মাতৃভাষা তাই হবে সে "রাষ্ট্রভাষা"
ফাগুন রাতে দামাল মাতে যতই হোক সর্বনাশা । 
একুশে ফেব্রুয়ারী হয় জোরদারী বাংলা স্বীকৃতি আন্দোলন 
অন্ধ বিচারে নির্বিচারে সিপাহী করিল গুলি বর্ষণ । 
কৃষ্ণচূড়া রঙে রাঙিল ভাসিয়া রাস্তা তাজা খুন 
করুণ কান্নায় ভোলা নাহি যায় সেই আটই ফাগুন । 
রক্ত বৃষ্টি ঝরিল ধরায় সালাম বরকত নিধনে 
রসিক জব্বার সফিক সাথে যায়না দেখা নয়নে । 
জ্বলিল আগুন চোখে মুখে সজন হারা ক্রন্দনে 
শহর নগর গ্রাম প্রান্তর ন্যায় অধিকার আন্দোলনে । 
শহীদ তোমায় শ্রদ্ধা জানায় ঢাকা কলকাতা পাশাপাশি 
গাহে"আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি" ।।

Thursday, February 1, 2024

বিকেলের কান্না -- প্রদীপ কুমার বর

 বিকেলের কান্না
 প্রদীপ কুমার বর
 ০৬/০১/২০২৪


বিষণ্ণ বিকেল চেষ্টা করে খুঁজে পেতে
সকালের এক গুচ্ছ গোলাপের রং!
ইচ্ছে ছিল দিগন্তের নীল ক্যানভাসে,
ছোট্ট মৌটুসীর পাখনায় আঁকি
শান্তির এক পৃথিবী! প্রস্ফুটিত কুসুমের
মিষ্টি ইশারায় মধু-মক্ষিকার অবাধ বিচরণ;
দোয়েল,শ্যামা, কোকিলের মুক্তির মন্ত্র,
যন্ত্র সভ্যতার হাল হকিকত ছেড়ে
শ্যামলিমা প্রকৃতি-মায়ের সকালের ছবি!
সময় শোনে না বারণ,মারণ ব্যাধির 
কঠিন কলম বাধ্য করে আঁকতে হবে
 অন্য কোনো ছবি!

আঁকি, দেবদারু'র 
ডানা কাটার নির্বাক যন্ত্রণা, গন্ধহীন পলাশের অস্ফুট বেদনা,
সাগর কূলে আছড়ে পড়া তরঙ্গের
সকরুণ কান্না!
প্রাচীন জনজাতির অবলুপ্তির কাহিনী,
লুপ্তপ্রায় বন্য পাখপাখালির মৃত্যুরহস্য!

নিম্নচাপ,পার্শ্ব চাপ ক্রমশ মারে টান --
সন্ধ্যার শীতল দেশে! ফেঁসে যাওয়া
টায়ার পারেনা তার উর্দ্ধাংশের  
ভার‌ সহ্য করতে। সকালের সজীবতা 
দিয়েছে হারিয়ে হেলায়। সে যেন
এক বয়স! মানে না বাঁধন,
দূরন্ত ঘূর্ণিঝড়ের দাপুটে চেহারা
হুড়মুড় করে দেয় গুঁড়িয়ে গোপনীয়তার
সমস্ত গ্যালারি।খরচের বহর শহর থেকে দূরে
সরিয়ে দেয় শনিবারের বারবেলায়!
হায়! শিল্পী, তোমার সৃষ্টি আজ
 সুখের উল্লাস হারিয়ে গোধূলির
রক্ত মিশ্রিত অশ্রুজলে আঁকে
   নিরুত্তাপের নষ্টালজিক 
ধূসর পাণ্ডুলিপি।

অন্ধকারের আত্মাহুতি -- প্রদীপ কুমার বর

 অন্ধকারের  আত্মাহুতি
 প্রদীপ কুমার বর
 ২১/০১/২০২৪


বন্ধ্যা রাত্রির আবর্জনা ঠেলে জ্যোতির উদয়,
ইঙ্গিত দেয় অনন্ত প্রসারিত স্নিগ্ধ সামিয়ানায়
প্রতিভাত হবে উষ্ণতার জীবন্ত কিংবদন্তি।
ইতিউতি অন্ধত্বের প্রগাঢ় চুম্বন..
মিথ্যে আস্ফালনের ভোঁতা অস্ত্র মুখ লুকায়
চরম শীতলতার গহন অন্ধকারে!
অঙ্গ প্রত্যঙ্গে বিষাক্ত কীট গোপনে দংশায়,
নেশায় পেশায় বীরত্বের দাবিদার
অহংবোধের সমাধিস্থলে ঢাকা পড়ে।

রাকার নিন্দায় রক্তবীজের বংশ,
ধ্বংসের প্রকট চক্রান্ত করেও‌ ব্যর্থ।
অনর্থক ব্যস্ততা ত্রস্ত হরিণীর পিছনে ধাবমান,
কুস্তির প্যাঁচে ধাঁধা লাগে রশির  বাইরে থাকা
উৎসুক জনতার, বহুল চর্বিত চতুরতা
চঞ্চলের অঞ্চল ছেড়ে বঞ্চনার বেসাতি লয়ে
ধুঁকে মরে শুকতারার বিপরীতে!
আজানুলম্বিত হস্ত যুগল উচ্ছৃঙ্খলতার 
ডিগ্রি অর্জনে সক্ষম, কিন্তু শৃঙ্খলার শিকলে 
বন্দী হতে বুদ্ধির পাঠশালায় প্রয়োজন 
বোধোদয়ের শিক্ষা।

দীক্ষা গ্রহণকারীর হম্বিতম্বি রূপ --
হাসির উদ্রেক ঘটায় অন্ত্যোদয় শ্রেণীর! 
অন্ত্যে উদয় কি আদি সে বিচারের ভার
আগত দিনমণির,যার এক হস্তে কমণ্ডলু ,
অপরাপর হস্তে চক্র,মুদগর, অশান্ত অশনি
ও বরাভয় ! বিষয়ের বিভীষিকা 
যার কলমের কালি --সে মহাজন 
নিন্দুকের গালি, তালি দিয়ে উড়িয়ে দেয়
দিনের বিচ্ছিন্নতাবাদী লোভাতুর রাত্রির 
পরাকাষ্ঠা থেকে। 

শূন্য আরণ্যক জীবন 
পূর্ণতার কোলাহলে মুখরিত হয়ে ওঠে
লাল, নীল , সবুজের মুক্ত আবাসনে।
পিছুটান ক্ষণিকের অতিথি হিসেবে
হৃদয় তরঙ্গে ছোট্ট একটি ঢিল ছুঁড়ে মারে।
সমুদ্র তট-সদৃশ্য দৃশ্যমান মরণ আর্তনাদ
চির প্রস্থানের বেদি মূলে আছড়ে পড়ে।
ভবিতব্য হয়তো তাই, রাত্রির অনন্ত সলিলে
শোক মালার বিদায় লগ্নে নব রূপে 
আবির্ভূত নিত্য নতুন বেশে নবীন সূর্য।

বধ্যভূমির ত্রাতা হয়ে -- বিজয়া মিশ্র

 বধ্যভূমির ত্রাতা হয়ে
 বিজয়া মিশ্র
 ২৩.০১.২০২৪


জলন্ত আগ্নেয়গিরির মতোই 
একদা আছড়ে পড়েছিলে তুমি নেতাজী সুভাষ
ঘুমন্ত পরপদানত জাতির শিয়রে,
অচিরেই শব্দে বাক্যে উচ্চারণে 
আর সাংগঠনিক দক্ষতায়
তোমায় ঘিরে নির্মিত হয়েছিল
আকাশচুম্বী প্রত্যাশা।
দুর্বলতার ক্ষয়রোগ নিমেষে বিলীন হয়ে
দুর্ভেদী মানববন্ধন গড়ে উঠেছিল প্রত্যয়ে প্রতিজ্ঞায়
পরপদলেহনের অসুখ ভুলে।
তুমি প্রমাণ করেছিলে ন্যায়ের শক্তি কী দুর্ণিবার...
তাইতো আসমুদ্র হিমাচল নয় শুধু
বিদেশের মাটিতেও সাগ্ৰহে অভিনন্দিত হলে অচিরেই।
তাইতো তোমার সাম্যের ইঙ্গিতেই সংগ্ৰামী ঐক্য
কী নিপুণ শৃঙ্খলায় সর্বস্ব বিলিয়ে দিতে উন্মুখ হয়েছিল! 
সে প্রত্যয়ের কেবল জন্মদিন থাকে
কেবল অপেক্ষা থাকে শতবার পুনর্বার প্রতিপলে...
একটি সে নাম অনিবার্য হয়ে ওঠে
দুর্বহ সমাজ নামক জগদ্দলটা
আবার নবসজ্জার গড়ার প্রয়োজনে।
আশাহীন আলোকস্পর্শহীন আদিমতার দুচোখে
প্রজ্ঞাগ্নি প্রজ্জলনের প্রয়োজনে
নামের মন্ত্রোচ্চারণে শুদ্ধ হোক নিস্পন্দ এ বধ্যভূমি

স্মরণে ফেব্রুয়ারি -- শান্তি পদ মাহান্তি

  স্মরণে ফেব্রুয়ারি
  শান্তি পদ মাহান্তী
   ০১/০২/২০২৪


ভুলতে নারি ফেব্রুয়ারি
ভোলা ভারি শক্ত,
কষ্ট ভারি ফেব্রুয়ারি
ভোলা ভায়ের রক্ত।

তোমার টানে অশ্রু আনে
জাগে ব‍্যথার স্মৃতি,
অনুরাগে সাহস জাগে
ভয়ে পালায় ভীতি।

হৃদয় ভাঙা রক্ত রাঙা
ফেব্রুয়ারি তুমি,
তোমার কথা অমর গাথা
রইবে আবেগ চুমি।

আজ স্মরণে বীর বরণে
আবেগ তুমি ঢালো,
একুশ ভোরে মনের দ্বোরে
চেতন শিখা জ্বালো।

তুমি এলে পাঁপড়ি মেলে
মনের কুসুম কলি,
বুকের তলে জোনাক জ্বলে
আলোর দীপাবলি।

আমরা পারি ফেব্রুয়ারি
বুলেট নিতে বুকে,
আঘাত এলে রক্ত ঢেলে
শত্রুকে দি রুখে।

অশ্রু মায়ের রক্ত ভায়ের
শ‍্যামল মাটি সিক্ত,
বাংলা জাগে সগৌরবে
স্বমহিমায় দীপ্ত।

Wednesday, January 24, 2024

ফিরে এসো নেতাজি -- শ্যামল কুমার মিশ্র

 ফিরে এসো নেতাজি
 শ্যামল কুমার মিশ্র 
 ২৪.১.২০২৪ 
আজো চোখ বন্ধ করলে দেখতে পায় খোকন 
আলের পাশ দিয়ে দৌড়ে চলেছে এক বালক 
দূরে মিছিল বেরিয়েছে 
নেতাজির জন্মদিনের মিছিল
ওর বয়েসী কত ছেলে মেয়ে 
মুখেমুখে ফিরছে সেই গান---
" কদম কদম বঢ়ায়ে জা 
খুশিকে গীত গায়ে জা..."
ভেতর থেকে কে যেন বলে ওঠে-- 
আরও জোরে পা চালাও খোকা... 

ছেলেটির গতি আরো বেড়ে যায়
আর মাত্র কয়েক গজ 
হঠাৎ হোঁচট খেয়ে পড়ে যায় ছেলেটি
হাতে উঁচু করে ধরা সুভাষের ছবি 
মিছিল থেকে দৌড়ে আসে ছেলেমেয়েরা 
ধুলো মাখা ছেলেটিকে তুলে ধরে রশিদ ভাই
নির্মল হাসি ঝরে পড়ছে তখনও ওর মুখে 
অপলকে তাকিয়ে রয়েছে সুভাষের দিকে 
ধীরে ধীরে মিছিলে সবার মাঝে মিশে যায় ছেলেটি... 

জীবনের অপরাহ্ণে নানা ছবি ফিরে ফিরে আসে 
আজ তোমার জন্মদিনে সব কিছু বড় ম্লান মনে হয় 
তোমার স্বপ্নের ভারতবর্ষ আজ বেনিয়াদের হাতে 
ধর্মের বেনিয়া, ভোটের বেনিয়া, ক্ষমতার বেনিয়া 
২২-শের ভোরে তোমার ভারতবর্ষে হারিয়ে গেছে ধর্মের ঘূর্ণাবর্তে
সহস্র দিয়া আজ সরযূর প্রান্ত জুড়ে...

খোকনের মনে পড়ে এমনি এক ২২-শের কথা 
২২-শের শীতার্ত রাত 
গ্রাহাম স্টেনসকে পুড়িয়ে মেরেছিল একদল মানুষ 
মুখে ছিল এক বিশেষ ঈশ্বর-ধ্বনি
তারও ২৫ টা বছর পেরিয়ে গেছে...

২২-আসে, ২২-যায় 
গ্রাহাম স্টেনস হারিয়ে যায় স্মৃতির পাতায় 
সরযূর দিয়ার আলোক সব শুষে নেয় 
স্টেনসকেও নেয়,অভয়াকেও নেয়...

রাত্রি শেষে  ভোর হয়                
প্রতিবারের মতো তুমি আসো নীরবে নিভৃতে 
গানে, কথায়, অনৃত ভাষণে 
আর সরযূতে ফেলে দেওয়া ফুলের মালায় হয়তো বা তুমি চর্চিত হও 
তুমি নীরব অভিমানে হেঁটে যাও 
একেবারে নিঃশব্দে ধীর পায়ে 
খোকন চিৎকার করে ওঠে---
তুমি যেও না, যেও না নেতাজি 
এখনো কিছু মানুষ তোমারেই চায় 
তুমি তাকিয়ে দেখো নেতাজি 
ওই ছেলেটি এখনো দৌড়চ্ছে 
ওর হাঁটু থেকে রক্ত ঝরছে 
ও দৌড়চ্ছে..দৌড়চ্ছে 
সবার সাথে গলা মিলিয়ে ও গাইছে--
"তোমার আসন শূন্য আজি, হে বীর পূর্ণ কর..."

Tuesday, January 9, 2024

ডাকার মত ডাক পেলে -- দিলীপ ঘোষ


ডাকার মত ডাক পেলে
দিলীপ ঘোষ
০৮/০১/২৪
ডাকার মত ডাক পেলে
সাড়া না-দিয়ে কি থাকা যায়
মনের ঘরে কড়া নাড়লে
দরজা না-খুলে কি থাকা যায়

যে ডাক, হৃদয়েতে আগুন জ্বালায়
যে ডাক, মিলনমেলার বার্তা জানায়
যে ডাকতে, ফুল ভ্রমরের স্পর্শ থাকে
যে ডাকে, আগামীদিনের দিশা থাকে
সে ডাকেতে, সাড়া না-দিয়ে, থাকা যায়

যে ডাকের আওয়াজ ঘরে ঘরে পৌঁছে যায়
যে ডাক, দেহ মনের জড়তা কাটায়
যে ডাক শুনে, অলস পা-ও হাঁটতে চায়
সে ডাক শুনে, সবার সাথে না-হেঁটে কি থাকা যায়

যে ডাক, আগামীদিনের আশা জাগায়
যে ডাক, সূর্যদয়ের পতাকা ওড়ায়
সে ডাক শুনে, ঘরে কি আর থাকা যায়?

Saturday, January 6, 2024

গুপী রামের চাকরি -- তুষার মন্ডল

গুপী রামের চাকরি 
তুষার মণ্ডল
০৪//০১/২০২৪
আরে আরে চুপি চুপি কর কি হে গুপীরাম গুপ্ত,
এ কি শুনি তুমি নাকি পেয়ে গেছ মাছি মারা স্বত্ব?
সরকারি রীতি নীতি জেনেছ কি লেখা আছে বইটায়?
সাবধানে থেকো ভায়া মশা মাছি মারা ঘোরতর অন্যায়।
এইতো কদিন আগে ও পাড়ার ছোঁড়া প্যালারাম বিটকেল,
থাপ্পড়ে মশা মেরে বাঁধালো সে আহা কি দারুন খিটকেল।
তার দাদা ভূতনাথ দিগগজ পণ্ডিত আইনের বড় আমলা,
হায়!পাইনি রেহাই তবু, বেঁধে যায় সে কি বিদঘুটে ঝামলা।

বাপরে কি কটমটে ভয়ানক বিদঘুটে ঘটনাটা ঘটলো,
গুনধর ছাইপাকা পুলিশের ঠ্যাঙানিটা কপালেতে জুটলো।
মিটে তবু যায়নিকো দড়ি দিয়ে বেঁধে নিয়ে গিয়েছিল এজলাস
বেচারা আইনের প্যাঁচে পড়ে, করাবাস করে এলো দু-বছর দশমাস।
দুঃতেরি কি যে বলো?মাছিগুলো ভন ভন বসে কেন বাবুদের খাবারে,
চাকরিটা পেয়ে তাই বসে বসে সারাদিন মাছি মারি ভাঁড়ারে।
শুনেছ কি এই যেন সেইদিন, বাঁকুদের ছোট ছেলে ছকু্রায়
নোংরা খাবার খেয়ে বেচারি যে মারা ওই গেল কলেরায়।।

ছেলে মেয়ে হলো ভায়া মেরে কেটে হাতে গোনা আটটি
চাকরিটা পেয়ে তাই খেয়ে পড়ে বাঁচছি, হাতে কিছু পাচ্ছি।।
দুঃতেরি তার চেয়ে পারো যদি মারো তবে বড়োসড়ো গণ্ডার,
নিশ্চিন্তে জীবনটা কেটে যাবে হাতে পাবে বড়সড়ো ভাণ্ডার।
গুঁজে দিও সেপাইয়ের হাতে কিছু আইনের মুখ হবে বন্ধ,
তাই বলি শোনো ভায়া গণ্ডার মারা নয় একেবারেই মন্দ।
আইনেতে আছে নীতি আর আছে ভীমরতি জানো নিশ্চয়
তাই বলি মশা মাছি মেরোনাকো,এতে ঘটেবেই বিপর্যয়।