Sunday, May 19, 2024

মনোরমা বসুন্ধরা -- নিবারণ চন্দ্র দাস

মনোরমা বসুন্ধরা
নিবারণ চন্দ্র দাস 
১৪/০৫/২০২৪
এমন একটা জগৎ গড়ি
   হিংসা বিবাদ হীন,
এমন একটা ধরিত্রী মা
   উন্নত দিন দিন।

হোক না এমন জীবন যাপন
   নয়কো বিসম্বাদ,
করবে না কেউ ইচ্ছে মতন
   জীবনটা বরবাদ।

এমন একটা উঠুক না ঝড়
   বিশ্বজগৎ ময়,
মন্দ সকল ধুয়ে মুছে
   পবিত্র সঞ্চয়।

একটা এমন প্রদোষকাল
   সঞ্জীবনী ভরা,
সুসজ্জিত শ্যামলিমায়
    আবার বসুন্ধরা।

লহর আসুক এমন একটা
    নিমজ্জিত গ্লানি,
আবার "মানুষ" হোক না মানুষ
    কিই বা এমন হানি।

হয়তো এমন একটা দিন
   সবার হাতে কাজ,
আসছে হয়তো সেই সুদিন
    ভুলেই লজ্জা লাজ।
            

আজ কবিতার ছুটি -- চিত্তরঞ্জন সাঁতরা

আজ কবিতার ছুটি 
চিত্তরঞ্জন সাঁতরা 
১৫/০৫/২০২৪
এখন কবিতা লেখালেখি আপাতত 
বন্ধ রেখেছি।
ভাবনাগুলোকে বিশ্রাম দিয়েছি মনের 
অন্তরালে।
এখন আর কল্পনা নয়। ওগুলোকে
গুটিয়ে রেখেছি ভাবনার কোনে।
এখন আর কবিতা নিয়ে বেশি কিছু 
ভাবি না।
কল্পনা ও ভাবনাগুলোকে দিয়েছি ছুটি।
ওরা থাক নিরিবিলে খোশ মেজাজে।
এখন শান্ত মেজাজে কাটাতে চাই আয়েসি 
জীবন।
এখন আর উদাসীন ভাবনায় উড়ে যেতে
চাই না।
হারাতে চাই না নিজেকে নিরুদ্দেশে।
কবিতা লিখে এখন আর অযথা সময় 
কাটাতে চাই না।
একটু রোমান্টিক জীবন নিয়ে নাড়াচাড়া 
করতে চাই।
তুমি এস আমার পাশে। বস একান্ত 
নিরিবিলিতে দেহ ছুঁয়ে হৃদয়ের গভীরে।
কিছু কথা বল আবেগী উচ্ছ্বাসে নয়ত
আলিঙ্গনে শত চুম্বনে।

প্রায়শ্চিত্ত -- বরুণ কুমার বিশ্বাস

প্রায়শ্চিত্ত"
বরুন কুমার বিশ্বাস
১৬/৫/২০২৪
এই অবেলায় হিসাবের খাতাখানি দেখি
শুধু ভরে আছে কত সব গরমিলে,
কখন যে পেরিয়ে গেছে দিনগুলো চুপিচুপি
ভেবেছি বেশ তো আছি হেসে খেলে।

এতকাল যারা যোগালো জীবনে বাঁচার রসদ
ভাবিনি বিনিময়ে কি পেয়েছে তারা,
যোগফলই মেলাতে চেয়েছি শুধু বারে বারে
আজ দেখি জীবনটা শুধু বিয়োগে ভরা।

শেষ বেলাটুকু পোহালে ঠিকানা বদলে যাবে
সেই তারাদের দেশে নীল নীলিমায়,
মত সব মান-অভিমান পড়ে রবে অবহেলে
আপনও হবে পর এক লহমায়।

কোনদিন বুঝিনি কত কাজ রয়ে গেছে বাকি
কত কথা হয়নি এখনো বলা,
অভিমানে সরে আছি যাদের থেকে বহু দূরে
হবে কি আর একসাথে পথ চলা!

জীবনের প্রতি ক্ষণে যত সাথী হয়েছিলে পরিচিত
আছো দূরে কেউ করে অভিমান,
সব ভুলে আজ এ মিলনের আহবানে দিও সাড়া
বড় সাধ জাগে পেতে এই শেষ দান।

মিলন চাই -- মানিক চন্দ্র দাস

মিলন চাই 
মানিক চন্দ্র দাস  
১৬|০৫|২০২৫ 
মিলন চাই     ভাই ভাই 
মিলন কার?  তোমার আমার 
মুসলিম-হিন্দু    একই রক্তবিন্দু 
জাতে জাতে      রক্তে রক্তে 
ব্রাহ্মণ চণ্ডালে    ঐক্য তালে 
গলে গলে           দলে দলে 
এই ভারতে        একই মতে 
প্রাণে প্রাণে        মায়ার টানে 
চলবে সবে          এইতো হবে 
আমাদের পণ    আমাদের মন ।

মিলন কার?       তোমার আমার 
ভাষায় ভাষায়     ভ্রাতায় ভ্রাতায় 
ভারত জনে         মনে মনে 
ভারত মাতা        তুলবে মাথা 
তাঁর সন্তানে        প্রাণে প্রাণে 
মিলন দেখে        যাবে রেখে 
এইনা স্মৃতি        মানবপ্রীতি 
এই ভাবনায়      ভারত মাতায় 
ভুলবে দুঃখ        ফুলবে বুক 
ঐক্য রক্ষায়       এগিয়ে আয় 
ভারতবাসী          ফুটবে হাসি 
মুখে সবার         ব্যথা কি আর?

Tuesday, May 14, 2024

কবির ভাবনা -- স্বপন আহাম্মেদ

কবির ভাবনা
কবি স্বপন আহাম্মেদ 
১৫/৫/২৪
দুঃখ কষ্ট বুকে নিয়ে
বাস করে সব কবি। 
তবু তাদের লেখায় থাকে
বেঁচে থাকার ছবি। 

কবি হয় না স্বপ্ন হারা 
ভাবে আপন মনে 
প্রজাপতির পাখা মেলে
পুষ্প ফোটা বনে।

যদিও অভাব বারো মাসই
থাকে কবির ঘরে
ক্ষুধা পেটে কাব্য লিখে
বিলায় মানব তরে।

কবির মনে কূট মানুষের 
থাকে নানান ক্ষত
তবু কবি করে না তো
লেখায় মাথা নত।

বাস্তবতা মেনে নিয়ে
স্বপ্নের মিনার গড়ে
কবিরা তাই আলোর বাতি
মানবতার তরে।

ছোটগল্প -- সুমন

ছোটগল্প
  সুমন
১৩.০৫.২০২৪
তোমার ছবিতে একটা ছোটগল্পের রসদ খুঁজে পেয়েছি,
যেখানে তোমার আমার জীবনের হিসেবে মিল দেখেছি,
অতঃপর, যেদিন প্রথম সমুখে অকস্মাৎ এসে দাঁড়ালে,
মুখোমুখি, চোখের ইশারায় পবিত্র প্রেমের জোয়ারে ভাসালে।
তোমার দু'চোখে আরেকটা আস্ত পৃথিবীর দিশা পেয়েছি,
উথালি পাথালি প্রেমময়ী উষ্ণতার পারদে হৃদয় মেলেছি,
চাহনি টেনেছে সমুদ্রতটে আছাড়ি বিছারি সাঁতারে উথলি,
নৌকা বিহারে হৃদয়ের অলিন্দে ভুলিয়েছো মান সকলি।
সেদিনই তোমার জীবনের উপাখ্যান আকুলতা নিয়ে শুনেছি,
হৃদয় উজাড়ি উদ্বেলিত মনপ্রাণ তোমাতেই আমি সঁপেছি,
খানিকটা ঋণের বোঝাও হয়তোবা আপনার করে বুঝেছি,
প্রাণপ্রিয়া তোমায় অন্তরের অন্তঃস্থলে পবিত্র আসনে বসিয়েছি। 
তোমারই পরশে উদ্ভ্রান্ত পাগলপারা প্রেমের আগুন জ্বেলেছি,‌
পাহাড়িয়া শীতলতা উপেক্ষা করেই সারারাত আমি জেগেছি,
আঁধারি নিশীথে জোনাকির আলোয় প্রেমের সাহিত্যে ভেসেছি,
লায়লা মজনুর রূপকথার ন্যায়, ছোটগল্পে কলম ধরেছি।
ছোটগল্পের বৈশিষ্ট্যে যেমনটা ভাবা, তেমনই থামতে শিখেছি,
ডাইরির পাতায় শেষাংশে তথাপি তোমারই কবিতা লিখেছি,
'শেষ-হয়েও-যেন-হইলো-না-শেষ', এমনই যবনিকা টেনেছি,
ক্ষমিও আমারে, ওগো সুচরিতা, ছোটগল্পের গান গেয়েছি,
আগামীর পথে, রেখো মোরে সাথে, তেমনই আস্থা রেখেছি।

একা আমি -- সুরজিৎ পাল

 একা আমি 
 সুরজিৎ পাল 
 ১৩.৫.২০২৪
একা আমি অপেক্ষায় মানি,
চলে এসো....
মন মন্দির করে আলো।
তোমায় আমি খুঁজে চলি,
আঁধার চোখে সবই দেখি কালো।
 অন্ধকারে হাতড়ে চলি,
মন তো শুধু কেঁদে গেলো।
কোথায় আওয়াজ দেব তোমায়?
মন কি বোঝে সেতু বন্ধনের সময়?
 বিরহের এই করুন বাঁধন ,
ছাড়বে কবে আমার রোদন?
একা আমি...
নজর দাও তুমি....
যেখানে থাক সেখান থেকে দেখো।
না জীবনকে আনন্দ চেপে ধরে  - 
না মৃত্যু হাতছানিতে নরে।
চোখে ঝরে মুক্ত ধারা,
গলা চেপে হতাশ কায়া।
খুঁজে চলি করুন হিয়া,
কাটবে কবে এ মায়া?
আমি বসা আপন মনে,
দিন ঢলে যায় সংগোপনে ।
হৃদয়ের এ কেমন ভাষা,
কাটবে কবে আমার দশা?
বলতে আমি অপারগ জানি ,
আপনারা বলুন আমি কি  করি  ????

মাতৃ দিবস -- সুজিত শর্মা বিশ্বাস

 মাতৃ দিবস 
 সুজিত শর্মা বিশ্বাস 
১২/০৫/২০২৪
সিংহাসনে অনেক মুর্তি আছে সারে সার, 
নাইকো সেথায় জগন্মাতা মুর্তি আসল মা'র ?
কষ্ট করে করলো ধারণ আপন গর্ভে তার,
সেই মায়েরে অবহেলা করিস না ভাই আর।
খায় না নিজে খোকার তরে দেয় বিলিয়ে সব
তিনিই শিশুর জগৎ প্রভু তিনিই মহান রব।
ছোট্ট থেকে মানুষ করেন, গড়েন মানব রূপ 
তাঁর ছোঁয়াতেই আঁধার কেটে প্রকাশ মনের ধূপ।
তাঁর কথাতেই কথা বলে সেটাই মুখের ভাষ 
মাতৃভাষা  মাতৃদুগ্ধ  মেটায়  মনের  আশ।
মা মা বলে ডাকতে শেখা শিশুর প্রথম বাক
মায়ের ভাষার ভান্ডারেতে শব্দ মালার চাক।
তাঁর হাত ধরেই চলার শুরু, শক্ত কঠিন মাঠ,
এই জীবনের প্রথম গুরু তাঁর কাছে নিই পাঠ।
তিলে তিলে গড়ে তোলেন মা যে আমার তাই
তার কোনো দোষ না হয় বিচার সেটাই আমি চাই।
পাথর মাটি দেব-দেবীদের পূজন করে লোক 
জ্যান্ত মায়ের হয় না পুজো তাইতো মনে শোক।
"মাতৃ দিবস" পালন করে কতোই ঘটা হায় !
বৃদ্ধাশ্রমে কাঁদছে মা যে দেখার কেহ নাই।

প্যালার খেলা -- উত্তম গোস্বামী

প্যালার খেলা
উত্তম গোস্বামী 
১৩/০৫/২০২৪
দাসপুরের ওই কলোড়াতে
আছে খেলার দল 
ট্রফি পেয়ে বাড়ছে তাদের 
দারুন মনোবল। 

গোপালপুরে ক্রিকেটের 
কালকে আছে ম্যাচ 
বলছে প্যালা করব আউট 
ধরব সবার ক্যাচ। 

শুনরে প্যালা খেলতে গেলে 
বুকে চাইতো বল 
ভরসা রেখে খেললে পরে 
এগিয়ে যাবে দল। 

কোচের কথা শুনেই প্যালার 
 ঘুম ধরে না রাতে 
বুকেতে বল যায় কি রাখা?
খেলার সাথে সাথে।

খেলার মাঠে নামলো প্যালা
মাঠে দারুণ কাদা 
প্যালার বুকেতে দড়ি দিয়ে কষে 
আছে ফুটবল বাঁধা।

'মাথায় আছে ভর্তি ওরে
গোবর পোকা তোর 
'বল' মানে কি ফুটবল ওরে?
শক্তি-মনের জোর।'

মায়ের জন্য -- রেজাউল করিম বিশ্বাস

মায়ের জন্য
রেজাউল করিম বিশ্বাস
১৩ / ০৫ / ২০২৪
মাতৃহারা সন্তানের আজ মাতৃ দিবস পালন 
অভিমানে গেছো চলে আমি ও  অভিমানী
চোখের জল ঝর্ণা হয়ে বহে চলে নদে।

ঐ যে তুমি চিরশান্তিতে চিরনিদ্রায় শায়িত মাঠের 'পরে 
তেঁতুল তলে ভাটপিটুলি কত রকম গাছে ঘেরা 
কাঠ মল্লিকা সুবাস ছড়ায় দু'বেলা তোমার চারণতলে।

পাখিরা গান গেয়ে  যায় মনের আনন্দে সেথায় তুমি
মা ডাকতে মন করে ছট্ফট্ ব্যথায় ব্যথায় দিন যায়
তোমার পরশ পেতে ব্যকুল হৃদয় করে আনচান।

আমরা নিয়মে বাঁধা সবাই নিয়ম মেনে চলি তবুও ---
ভাঙ্গা হৃদয় গুমরে ওঠে একটুখানি দেখাবো বলে
হাজারো ডাকে হাজারো স্বপ্নে মনভরে না মাগো।

জানো 'মা' আমাদের মন ক্ষুদ্র হতে অতি ক্ষুদ্র হয়েছে আজ
তোমাকে বেঁধেছি তিনশত পঁয়ষট্টি দিনের মাত্র একটি দিনে 
তুমি  আছো অন্তরের অন্তরে প্রতিটা স্পন্দনে সুখে দুঃখে।

পারিনি হয়তো তোমাকে মূল্য দিতে চিনিনি তখন আমি 
 তুমি যেখানেই থাকো ভালো থেকো শান্তিতে থেকো  
তোমার অনাথ সন্তানদের কথা ভেবো ত্রুটি মার্জনীয়।

রোমানা ডাকে দাদি দাদি চোখের জলে ভাসে রিজওয়ান
পুবের ঘরে জানালা খুলে আজও তোমায় খুঁজি সারা বেলা
ইজি চেয়ারটা শুন্য আজ  তুমি বিহীন  বড্ড একা একা।

 

Sunday, May 12, 2024

বিশ্রাম বালুকাবেলায় -- সূর্য্যোদয় রায়

বিশ্রাম বালুকাবেলায়
সূর্য্যোদয় রায়
১১/০৫/২০২৪
এখনও বহুদূর চলে যাবার পর হয়তো আলো দেখা যাবে,
এখনও অনেকগুলো ক্লান্ত সমাধি,
অকূল মাটির বক্ষে ফিরে আসে যদি;
তারা চির জন্মের মতো এ সংসার হতে বিশ্রাম খুঁজে পাবে?

এখনও বহুদূর চলে যাবার পর হয়তো আলো দেখা যাবে,
এখন আর কত যুদ্ধের পর,
মানুষ থামাবে হিংসার স্বর;
ঢেউ গুলো সব অস্ত পাথারে তাদের চির বিশ্রাম খুঁজে নেবে?

কোথায় বাদল মেঘের কোলে ভেসে আছে সেই উত্তর
কোথায় বাদল মেঘের কোলে ভেসে আছে সেই উত্তর

বহুকাল মনে ওই গগনে উঠেছে কি কোনও ঢেউ?
আলোকনয়ন তরঙ্গমালায় ফিরে আসে যদি কেউ।

নিজের ব্যাপারে ভেবেছ কি কখনও বলেছ কি কোনও কথা?
ক্লান্ত জলধি শিখরে অটল পাহাড়ে আর নাই বা পেলে স্বাধীনতা।

তুমিতো জান আরও আরও বহুবার
চুপ করা ভান কিছু না শোনার 
সব দেখে শুনে তাইতো আবার নামিয়ে নিচ্ছ মাথা!

সাত সাগরের ঢেউয়ে নাচ্ছে সেই আলাপ মনে রেখ চির দিনে
সাত সাগরের ঢেউয়ে নাচ্ছে সেই আলাপ মনে রেখ চির দিনে

তোমায় আমায় মরতেই হবে সেটা কি বুঝতে পারো,
এই পথে অনেকটা কাল হয়েছে বিগত,
তাইতো বোধহয় দেখি সকলে নিহত;
আমাদের ই সাথে আর কত মানুষ মরবেই যে আরও?

কোন হাওয়ার শৃঙ্গে দেখেছ এর উত্তর আজ
কোন বাদল দিনের অশ্রু তিমিরে শুনেছ এর আওয়াজ,
কবেই শুনেছ কবেই শুনেছ কবেই শুনেছ 
কবেই শুনেছ সেই মত্ত হাওয়ার আওয়াজ ;
পারো যদি আর একবার সব ছেড়ে ছুড়ে এর উত্তর 
খোঁজো তবে।

এখনও বহুদূর চলে যাবার পর হয়তো আলো দেখা যাবে।।

হৃদয়ে অর্গল -- অমি রেজা

হৃদয়ে অর্গল
অমি রেজা
১১-০৫-২০২৪
আমি প্রতিনিয়ত ভাবি 
একদিন তোমার মুখোমুখি দাঁড়াব 
চোখের তরে চোখ রেখে শুধাইব-
কেমন করে পারলে? 
বেমালুম ভুলে গিয়ে
অনেক প্রেমের অনেক জ্বালা চুকিয়ে দিয়ে 
আপন হৃদয়ে অর্গল দিতে? 

হে পাথরী একবারও কি পড়ে না মনে?
শ্রাবণের টিপটিপ বৃষ্টির কথা
বাবুই পাখির বাসা ঝড়ে লণ্ডভণ্ড হওয়ার কথা
কৃষ্ণচূড়ার রক্ত বর্ণ ফুলের কথা
নদীর বুকে উত্তাল ঢেউয়ের কথা
ডানামেলা একঝাক গাঙচিলের আকাশ সাতঁরাবার কথা
সবুজ ধানের বুকে বাতাসের শিহরণের কথা
হাতে হাত রেখে মেঠো পথ ধরে অবিরাম ছুটে চলার কথা।

আমি প্রতিনিয়ত ভাবি
একদিন তোমার মুখোমুখি দাঁড়াব
সমুদ্র অবগাহনে আবার আমি যুবা হবো
পাহাড়ের আলিঙ্গনে আমি ইস্পাত কঠিন হবো
আগুনের অগ্নিস্ফুলিঙ্গে আমি বিদ্রোহী হবো
বিরহের নীল বেদনা জমিয়ে জমিয়ে আমি পাথর হবো -

তারপর আমি তোমার মুখোমুখি দাঁড়াব
চোখের তরে চোখ রেখে শুধাইব 
হে পাথরী কেমন করে পারলে,
বেমালুম ভুলে গিয়ে
আপন হৃদয়ে অর্গল দিতে?

হৃদয়ার্তনাদ -- শাহীনুর ইসলাম

হৃদয়ার্তনাদ
শাহীনুর ইসলাম 
১০/০৫/২৪
প্রাণের পেয়ারি প্রাণের দোসর হয়ে এলো না ফিরে 
দিবস রজনী কেঁদে 
মর্সিয়া গীতি সেধে
অকালে আকুল নয়ন ভাসিল শোকের নীরে।
প্রাণ পাখি মোর এলো না ফিরে প্রাণের নীড়ে।

দিন যায় মাস যায় কত শত কাল গুনে 
নাহি হয় চোখাচোখি 
বসে তব মুখোমুখি 
মধু বসন্ত ঋতুর এই মধু ফাল্গুনে। 
কিত শত কাল গুনে। 

অকারণে অনাদরে ফিরায়ে দিয়াছে মোরে
যার তরে বাঁধি গান
সকলই করিনু দান
সযতনে আপন মনে বাধি প্রণয়ের ডোরে।
অনাদরে ফিরায়ে দিয়াছে মোরে।

কামনার কামিনী কুসুম বাগে অনুরাগে ফোটে 
ফুলদল এলায়
গন্ধ বেলায় 
সন্ধ্যার ক্ষণে অভিমানে সে ভূতলে লুটে।
কুসুম বাগে অনুরাগে ফোটে। 

হৃদয় ভরা বাসনা লয়ে নিত্য একাকী কাঁদি
সারা দুনিয়া খুঁজিয়া 
নয়ন আসে বুজিয়া 
কামনা বাসনার প্রদীপ জ্বালিনু সারা রাতি।
নিত্য একাকী কাঁদি। 

মোর জীবনের আঙিনা জুড়ে ঘিরে ঘোর যামিনী 
শ্রাবণ ধারা বরষায়
মেঘদূত পাঠানো ভরসায়
যদি গো বারতা লয়ে আসে কেমন আছে কামিনী। 
ঘিরে ঘোর যামিনী। 

তপ্ত মরু সাহারার বুকে জাগে অসীম পিয়াসা 
একি নিদারুণ হাহাকার 
নাহি বুঝি পারাবার 
দিনে দিনে ক্লান্তি আনে জাগে প্রাণে তিয়াসা।
জাগে অসীম পিয়াসা। 

মালা গেঁথে বৃথাই মোর দিন গেল বয়ে
নিরাশে শুকায় ফুল 
প্রেম প্রণয় সবই  ভুল 
তাহার ভাবনায় জীবন গেল ক্ষয়ে।
মোর দিন গেল বয়ে।

হারিয়ে গেছ কোন অকুল পাথার অন্ধকারে 
কোন সে সূদুর দূরে
কোন সে বাঁশীর সুরে
আমি এপারে কাঁদি তুমি কোন অলকাপারে।
অকুল পাথার অন্ধকারে। 

কত না হাজার স্বপ্নের জাল বুনি মনে প্রাণে 
সে স্বপ্নের ভাষা
যেন ভালোবাসা 
নিরবে নিভৃতে শুনাই উদাসী বাতাসের কানে।
স্বপ্নের জাল বুনি মনে। 

কত গানের কলি দিনু অঞ্জলি নয়নের জলে 
আসিলে না প্রিয়তম 
শুনিলে না গান ম-ম
হৃদয়ার্তনাদ গুমরে মরিল পাষাণ বেদীর তলে। 
দিনু অঞ্জলি নয়নের জলে। 

মোর দ্বারে আসিবে বলিয়া দ্বার খুলিয়া রহিনু বসে
সার্ধক করিতে চোখ 
চেয়ে আছি অপলক 
বৃথা হলো চাওয়া মোর এ কোন কপাল দোষে।
দ্বার খুলিয়া রহিনু বসে। 

 তব প্রেমের সিন্ধু হতে বিন্দু বারি যেচে কাঁদে মন
হরষ প্রাণের পরশ মাগে 
নিত্য পথ চেয়ে থাকে 
বিষাদ আঁধারে মৃৃত্যু নিসাদক্রুর দিচ্ছে দরশন। 
বিন্দু বারি যেচে কাঁদে মন। 

হৃদয়ার্তনাদ হৃদয়ে রহিলো গোপনে শুনিলোনা কেহ
শত ব্যথা বেদনায় 
এ জীবন চলে যায় 
আসিয়া কাঁদিয়া ফিরিবে যবে ধূলিসাৎ হবে সোনার দেহ।
গোপন কথাটি শুনিলোনা কেহ।

অস্তাচলের রবি -- রবিন রায়

অস্তাচলের রবি
রবিন রায় 
২৮ শে, বৈশাখ,,১৪৩১

হারায় গেছো ভালোবাসা, 
কাল স্রোতের পাক টানে,
               স্মৃতি ভরাই ছবি ;
ডুবে গেছো অতল তলে,
বৃথা আশে খুঁজে ফিরে -
                কেঁদে ভাসে রবি।

খুঁজতে খুঁজতে সময় গেছে,
দেখতে দেখতে বেলা বাড়ে;
                যৌবন হলো নিঃসাড় ;
বার্ধক্যে এসে জীবন ঠেকে,
অপূর্ণ থাকলো অভিসার, 
                     ভাঙে বাঁধন মায়ার। 

তোমার গায়ের জানা ঘ্রাণটা,
ভুলে গেছে আমার নাসা;
                 তুমি নেই যে পাশে।
কতদিন হলো বলো প্রিয়া,
তোমার থেকে আমি দূরে;
                     সরে আছি শেষে।

কত কাল যে আমার কর্ণ,
শ্রুত হয়নি তোমার হাতে-
                বাজা কাঁকন ধ্বনি ;
শুনতে পায় কই চলার তালে -
পদ মলের নাচন কোদন -
                রিনিঝিনির রুনি? 

আমি ভুলে গেছি তোমার
আলতো ছোঁয়ার অনুভবটা, 
              শীতল হৃদয় স্পর্শি ;
স্পর্শ দূরে থাক এখন তো-
ভাগ্য দোষে দূরত্ব জেরে -
                 আঁখিতেও না দর্শি!

সোহাগ ভরে বলতে কথা-
মিষ্টি ঠোঁট দুটি নেড়ে, 
               লাগতো যে মধুর;
আজ যেন তা ভোলার জোগাড়, 
বিদায় নিলো বসন্ত কোকিল,
                   সাথে বাসন্তীক সুর।

আমার স্পৃহা থমকে গেছে,
গতি হারা সাবেক আবেগ,
              অসাড় পরেই আছি;
তোমার প্রেমের শক্তি হীনে,
আবেশ গুলো মরে গেলো,
                     বৃথাই আমি বাঁচি।

আমি সেইদিনই মরে গেছি, 
নিজের মুখে বললে তুমি,
                  অন্য জন মনে ;
তিক্ত আত্মা ছুটি চায়, 
বিষের ঢোক গিলতে চায়,
                  জীবিত কি কারণে!

তোমার হৃদয় সাগর সমান,
দিলে নোনা জলের ঝাপটা, 
                 ধরে নয়নে জ্বালা ;
রাখো না ধরে বুকে কিছু, 
পাড়ে তুলে দাও মরা,
                উতল লহরি খেলা। 

আমি ঘাটের মরা শক্ত,
নোনা ভরে পচি না তো;
                 গরম বালি পুড়ায় ;
জীর্ণ দেহ চূর্ণ হবে,
হাঁড় মাষ ঝরে ক্ষয়ে, 
                 জীবাশ্মতা হারায়। 

Friday, May 10, 2024

অবহেলিত রবিঠাকুর -- সুরজিৎ পাল

অবহেলিত রবিঠাকুর
সুরজিৎ পাল 
১০.৫.২০২৪
রাস্তার মোড়ে পক্ষী বিষ্ঠায় লিপ্ত-
অবহেলিত তোমার আবক্ষ মূর্তি,
তোমার চোখে মুখে মাথায় ত্যাগে পায় ফুর্তি।
হেঁটে যেতে যেতে ভিক্ষুক থমকে দাঁড়ায় পাশে,
এক ঝলক দেখে ফিক করে হাসে।
গুরুদেব তোমার যদি এই অবস্থা হয়,
তবে আমার অবস্থা কি তোমায় ভাবায় ?
পূর্বজন্মের কথা ধার্মিক প্রবচনে শুনি,
দুঃখ থেকে হাসি নির্গত হয় জানি।
ভাবনায় নবজন্ম পেয়ে তুমি কি আমার সমগোত্রীয়?
 হেঁটে চলেছো দিগন্ত হীন সমাজে হয়ে অযাচিত ক্ষত্রিয়।
দেহ থেকে শতছিন্ন জামা খুলে-
পাশের গাছটিতে উঠে পরিষ্কার করি রবিঠাকুরের মুর্তি।
নীচে লোকের ভিড় -
আলোচনার সারমর্ম - পাগলের রবীন্দ্র প্রেম ।
রবি ঠাকুর নূতন রূপে নিজেকে পাও,
গান্ধীর তিন বাঁদরের মতো চোখ,কান,মুখ বন্ধ করে শুধু দেখে যাও।
নব্য সমাজের ভিক্ষুকের স্মৃতিভ্রম প্রচেষ্টা , 
পেলাম কি শিক্ষায় নিষ্ঠা?

ভাঙা মন -- রায় শর্মা

ভাঙা মন 
রায় শর্মা
১০◆৫◆২০২৪
মনটা যখন বড্ড ভেঙে পড়ে 
রং তুলিতে ভরিয়ে তুলি মন
দুটি বাহুর বিশেষ নরম ছোঁয়া 
তখন বুঝি একটু প্রয়োজন।

হালকা হাতে রংয়ের প্রলেপ আঁকি
হারিয়ে যাওয়া পুরনো সেই মুখ
তুলির টানে তোমার মুখের ছবি
বুকের মাঝে ভরিয়ে তোলে দুখ।

নীলের প্রলেপ ভরিয়ে কেনভাসে
হারিয়ে যাই মেঘের দেশে যেন 
প্রশ্ন করে তোমার কালো আঁখি 
ভালোবাসো তুমি আমায় কেন।

তুলির টানে আঁকি তোমার ছবি
আকাশ পানে উড়িয়ে গাঙচিল
ঠোটের কোনে মিষ্ট মধুর হাসি
গালের পরে ছোট্ট কালো তিল।

তোমার কালো চোখে আমি চেয়ে
হারিয়ে ফেলি মনের যত বল
কাজল মেঘে বাষ্প জমা দেখি
গড়িয়ে পড়ে হয়ে চোখের জল।

প্রেম -- দেবাশীষ চ্যাটার্জি

প্রেম  
দেবাশিষ  চ্যাটার্জী    
10/05/2024 
একটু না হয় থাক না কাছে 
এই  কষ্টের দিনে  
মন বাজারে যত কিছু দুখ 
সব নেবো আজ কিনে  | 

কর না ফেরি প্রেমের হাটে 
যা কিছু তোর আছে
নিঃস্ব আমি  ধন্য হবো 
ক্রেতা হয়ে তোর কাছে |

কি হারালি কি আর পেলি 
কি লাভ এই সব বলে  
যত্ন করে শুধরে নিবি 
ভুলগুলি চোখ খুলে  |

মন আকাশে উড়বে ঘুড়ি   
দুই পাখনার ভারে
নীল গগনে  হারিয়ে যাবো 
আঁচল খানি ধরে  |

নিন্দুকেরা তুলবে আঙ্গুল  
বলবে কলঙ্কিনী 
ভালোবাসায় ভাসে যারা  
তারাই  বিরহিনী  |

মানবাত্মার পদধ্বনি -- খসরু ভাস্কর

মানবাত্মার পদধ্বনি
খসরু ভাস্কর 
০৯/০৫/২০২৪ খৃঃ 
কবিতা গল্প গানের সুর জাগালে বাঙালির প্রাণে
অন্ধকার ভেদ করে বাঙালিকে আলো দেখালে। 
সহজ বাংলা শব্দমালায় আধুনিকতম কবিতায়,
 তুমি কবিগুরু, সেখান থেকেই একটি যুগের শুরু। 
 ' আগুন আমার ভাই আমি তোমারই জয় গাই ',
আবর্জনা পুড়িয়ে নতুন সূর্যের আভা দেখতে পাই। 
 " আলো আমার আলো ওগো আলোয়ে ভুবন ভরা "
রবির কিরণে যেমন দূর হয়ে যায় সকল দুঃখ-জরা ! 

সকল বাঙালিকে ঐক্যে গেঁথেছো প্রাণে নব নব রূপে।
যত ভাইবোন ঐকতানের বন্ধনে সম্মিলিত হোক ---
এ বাণী ঘুণেধরা সমাজের কেউ মানলো,
আবার কেউবা মানে নিকো কোনো দিন,
তোমার বাণী আজো তবু জীবন্ত ---- অমলিন। 

ঝড়কে সাথে নিয়ে গ্লানি ঘোচাতে চেয়েছিলে, 
কেউ তোমাকে চিনেছে, কেউ বা চিনেনি !
' চিনিলে না আমারে কী চিনিলে না '
ষড়ঋতুর সাথে মিলে মিশে ছিলে, কেউ দেখেনি। 
 কেবল বাহির পানে চোখ মেলেছে
তারা অন্তর পানে কেউ চায়নি হৃদয় দেবতায়,গানে কবিতায়। 
কেবল পূজার ছলে কবির বাণীকে 
ভক্তির নামে আড়ালে আবডালে রাখে। 

বাংলা সংস্কৃতি বিবর্জিত বাঙালিরা বিদেশি হয়েছে ! 
যদিও বিশ্ব চিনেছে কবিকে, জানতে পেরেছে 
কবি ! তুমি'র অসাম্প্রদায়িককে -
সম্প্রদায়ভেদে তীর ছোড়া হয় সংস্কৃতির বুকে।

চল্লিশ পেরোনো মেয়েগুলো -- হাসান ফরিদ

চল্লিশ পেরোনো মেয়েগুলো 
হাসান ফরিদ
১০/০৫/২৪
চল্লিশ পেরোনো মেয়েগুলো; ভুল সাবানে ধোয় ভুল গতর...ভিড়ভাট্টায় নিজের ছায়ায় খোঁজে নিজেরই  শতরঞ্চ ছতর...
কেমন হয়ে যায় মনহারা মনভুলো...অভিমানঝরা চৈত্রের কড়কড়া দ্বিপ্রহরের তালরস মাতাল করা—সময়ের চাবুক অনবরত মারে; এক্কাদোক্কা কি যাত্রাদলের লে-ছক্কা বলা মেয়ের উদোম পিঠে-ঘাড়ে...

চল্লিশ পেরোনো মেয়েগুলো; পলাতক সময়ের ফেরারি বসন্তগুলো...
লুডুর কোটের সাপের মতো; সার্কাসদলের ভাঁড়ের মতো গুটিয়ে নেয় বয়সের ঘুঁটি;
সংসারের উদাসী বাউডি চুল; জট বাধিয়ে হয়ে যায় পুলসিরাতের পুল; পার হতেই কাটে সাফা-মারওয়া দৌড়ানো পা—ফোঁটা ফোঁটা রক্ত আরক্ত জারকে জমে যায়—আর ঘামের দামে কেনা হয় লবণখেত চালচিত্র ;

আকালের  খরায় যৌবনের বাইস্কোপ পোড়ে পরম অবহেলায়; জুটি ভাঙার হিরিকে  ভাসে একাকিত্ব মেঘ; কালোবিড়াল চেটেপুটে খায় নুনহীন অন্ধকার বিকেলের লেক; যে যার মতো লেপে রাখে ক্ষত—তবু সেজেগুজে নাট্যমঞ্চের  ঝাড়ুদার; যেন অভিনয় ঝেড়েঝুড়েই বহুরূপী  একাঙ্কিকা করে যায় নিঃশব্দে পার...

চল্লিশ পেরোনো মেয়েগুলো; অবেলার ছাদে রোদে দেওয়া অনাদরের না-তোলা কাপড়গুলো—চিলেকোঠার জমে থাকা অনেকদিনের ঝুলগুলো; ঠিক গোধূলির আগেভাগের অম্লমধুর এই ভুলগুলোর ছাড়াভিটায় উদ্দাম লুটোপুটি ...তবু দেয় না তাকে কেউই  একরত্তি ছুটি;

Thursday, May 9, 2024

রবি প্রণাম -- তপন চ্যাটার্জি।

 রবিপ্রণাম
 তপন চট্টোপাধ্যায়
  ***************                       
আজ পঁচিশে বৈশাখ, আজ তোমার শুভ জন্মদিন ,                     আকাশে, বাতাসে, পথে প্রান্তরে, নদীতটে খেয়াঘাটে, বনচ্ছায়ে, তরুশাখে, নগরের কোলাহলে  ,শান্তির নীড় ছোট ছোট গাঁয়ের নিবিড় শ্যামলিমায় ,-লতায়,পাতায়, ফলে, ফুলে, দিনের প্রথম আলোর স্নেহধন্য দুর্বাদলশ্যামের 'পরে  ছোট ছোট শিশিরবিন্দুর বর্ণিল রামধনুরঙের ভেতর আজ জেগে উঠেছে আমার প্রাণের ঠাকুরের জন্মদিনের  জয়গান  ।  বাতাসে বাতাসে ভেসে আসছে  সুগন্ধী ধূপের গন্ধ, নারীদের শঙ্খনাদে  ,উলুধ্বনিতে আসমুদ্রহিমাচল মুখরিত তোমার বন্দনা গানে, আলোর গানের আনন্দ ধারায়  উৎসারিত হোক আমাদের দেহ, মন  ...,                                    বৈশাখের খর তাপে তোমার সুশীতল বটচ্ছায়ে জুড়িয়ে দাও ঠাকুর তোমার ভক্তকুলের তনুপ্রাণমন ,শীতল হৃদয়ে তোমার পাদপদ্মে নিবেদন করি সশ্রদ্ধ প্রণাম  । তোমার জন্মদিনের আলোকে আমাদের চেতনার শুভবুদ্ধি হোক।।

বিস্ময় বাতি -- মীর নাজমুল

বিস্ময় বাতি 
মীর নাজমুল। 
 ০৮।০৫।২০২৪
এক গুচ্ছ  হাহাকারে 
এক চিলতে অনুদান 
রাখবেনা অবদান বদনাম বৈকি। 
করুণার পাত্রে জোটে না কখনো
সোনার ঘটির জল। 
সে যেই হোক তুমি কিবা আমি । 

এ যে ধূসর বিবরণে মোড়া পৃথিবীর
গোলকধাঁধা শিরোনাম । 
জীবন হেতু জীবনের তরে 
সময় গড়িয়ে অসময়ের বেলা। 
কর্ম দিয়ে কেনা অসম্মান। 

তুমি অন্য কোথাও যাও, 
আমি অন্য কোথাও খুঁজে আসি 
দেখে আসি,জীবনের সাতরং
গোধূলি রাঙা বিকেল 
নানান রঙের দিনগুলি। 

এই পৃথিবীর তল্লাটে,আর কি হবে দেখা ? 
আমার অজানার চাঁদ মুখখানি। 
আজ জীবন যেখানে যেমন
সেখানেই ম্লান কবির নিরব হাসি। 

জীবন বিষন্নতায় কাঁদবে কি মন,
আজীবন । 
ফোরাবে না- কি বিষাদের সুর,
কষ্টের দিন গুলি ? 

জীবন মানেই যুদ্ধ যখন
তখন কি হবে ভেবে আর অহর্নিশি। 
শান্ত প্রদীপ জ্বেলে অশান্ত মনে 
নির্বাক নিলিমায় খুঁজে নাও ... 
জীবনের প্রেম,জীবনানন্দের ধ্বনি।    

ওহে জীবন পরগাছা 
ঢাকা কিবা কোলকাতা 
কি হবে ভেবে সফলতা,এ কথা মিছে। 

আমি রাজপথে দেখেছি জাগ্রত 
চেতনার মৌমাছি। 
দিক হারা পথিকের কন্ঠে শুনেছি 
মধু মাখা সুর।    

দেখেছি দুরন্ত বিবাগী মানব 
খরস্রোতে বয়ে চলা নিরবধি নদী।  
আমি দেখেছি কষ্টের নির্মমতা 
অন্ধ মানবতায় উন্নয়নের স্রোত। 
আমি দেখেছি সফলতা 
উন্নয়নের পারদ,যুদ্ধ মানব।

তবে আবার কবে জয়ী হবি জীবন ? 
নীল জোৎস্নার পরশে 
হাসবে কবে মেঘ রাশি। 
আমি ডাকি তুমি ঘুমাও
তবে আর রবনা আমি ঘরে বসি..।

অর্ধ নিমজ্জিত পতাকার মতো 
আপামর পৃথিবীর বুকচিরে । 
আর কতো নোয়াবি মাথা 
ওহে পথিক পথ  ভোলা
দুরন্তর মানব জাতি। 

ভিক্ষা নই,অনুদান নই,নই কারো শাসন, 
নই জীবনের কলঙ্কিত পূর্বাপরে চেয়ে থাকা। 
সেই নিশীথের কালরাত্রি বেয়ে 
আজ যে হয়েছে স্বপ্নের ফেরিওয়ালা 
পেখম মেলেছে ধরি। 
সে জন চিরন্তন মানব,বাস্তববাদী। 

এ হাত তোর প্রভুর দেওয়া নেয়ামত   
কর্মের বাহু যোগ,শ্রেষ্ঠ মনিহার। 
এবার তবে উচ্চ কর শির,
ধরাশায়ী জীবনের বারমাসি জাতি।
কালবৈশাখীর মোকাবেলায়....
তুমি নহে একলা সমুদ্র রচিত
দারিদ্র্য অতি। 

কবির বর্ণনায়ঃ
আমি শৃঙ্খলার কথা বলি, 
ভাবি ভিন্ন কিছু দেবো উপহার।   
উত্তরণের পথে খোলা হাওয়ার আবির্ভাব 
মুক্ত মনের ভালোলাগা- বৈকি । 
তোমরা সদা সত্যের পথে চলো,
কর্মের পথে হও দূর্বার। 
যেথাই মঙ্গল সেথাই হোক বিনিয়োগ 
তোমাদের সময় কিবা সম্পদ। 

কেমন আছে শান্তিনিকেতন -- বেবি মন্ডল

 কেমন আছে শান্তিনিকেতন 
  মহারানী ( বেবী মন্ডল ) 
   ০৮ / ০৫ / ২০২৪.
             ২৫ শে বৈশাখ ....

এ ভরা বসন্ত পার করে আজ বৈশাখের ছবি  
কেমন আছে শান্তিনিকেতন ভাবছো বসে কবি  
দিন-রাতের মালা গেথে যাও শান্তিনিকেতনে এসে। 
কতো কবিতা কাব্যগাঁথা মনে এসে ভিড় করে
উদার কন্ঠে গেয়ে উঠি গান পাখিদের কলরবে
চমক ভেঙে চোখ মেলে দেখি সন্ধ্যা হবে হবে
ভিড় করে আসে মনের কোণে রবি ঠাকুরের সৃষ্টি  
আকাস বাতাস হরষিত প্রেম এক পশলা বৃষ্টি
ধুয়ে দিয়ে গেল মনের ময়লা চোখের কোনে জল
রবী ঠাকুরে মজিয়াছে প্রেম চলরে ভুবন চল। 
এক মুখ দাঁড়ি কাছে এসে বলে রবীন্দ্রনাথকে চেনো
তাকিয়ে দেখি দাঁড়িয়ে আছে রবী ঠাকুরই যেন
আজকালকার ছেলেমেয়েরা রবীন্দ্রনাথকে পড়ে
রাশিরাশি লেখা গল্প কবিতা লিখেছেন কাহাদের তরে।
শান্তিনিকেতন আজ ভালো নেই অশান্তির ঢেউ খেলে
গল্প-কবিতা-গানে ভরা দেশ শুকনো মুখে যেনো
ওদের বল আমি এসেছিলাম আমার জন্মদিনে
 চিনতে পারেনি শান্তিনিকেতন গেলাম বিষন্ন মনে। 
তুমি যদি পারো দেশে দেশে ঘোরো 
 রবীঠাকুরের গান গাও  
 আজ শুভ জন্মদিনে দু'একটি লাইন 
 কবিতা পাঠ করে যাও। 

 লুপ্ত করেছে আমার ভুবন দুঃস্বপ্নের তলে, 
তাইতো তোমায় শুধাই অশ্রু জলে ....
 যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু  
        নিভাইছে তব আলো, 
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছো, 
      তুমি কি বেসেছ ভালো? 
                         (কবিগুরু) 

বিষন্ন মনে গগনে গগনে ঘন বর্ষার বৃষ্টি
 যতো কিছু সব বাংলা ভাষার রবি ঠাকুরের সৃষ্টি  
রবীঠাকুরের শান্তিনিকেতনে এ কি অনাসৃষ্টি। 
মম মম মম সুন্দরীতম শান্তিনিকেতন
বাউল বাতাস মন কেড়ে নেয় উদাস বাউল মন
বেরিয়ে পড়লেন কাঁধে ঝোলা নিয়ে দেশ হতে দেশান্তর
পড়লেম রবী শোনালেম সবে রবীন্দ্রনাথ নিরন্তর 
শেষ করে ফেলি রচনাবলী তবুও হয় নি জানা
 রবীন্দ্রনাথ তুমি মহাসাগর অনন্ত ঠিকানা 
আমি অতি সাধারণ কি করে বুঝিব তোমায় বিশ্বকবি!!
তোমার আশীষ ঝরে পড়ুক শিরে হে পূর্ণ রবি।

কবি প্রণামে -- মনিরা মাসিদ

কবি প্রণামে ( রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর )
মনিরা মাসিদ 
২৫.১.১৪৩১
 আমার ছোটো বেলার স্মৃতিতে জড়িয়ে থাকা এক কাহিনী যে কাহিনীতে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে আছে এক করুন প্রেম কাহিনী ও কবির কবিতা " এক গাঁয়ে " -------
   আমার ছোট বেলায় আমাদের বাড়িতে বাংলাদেশ
থেকে মাঝেমাঝে আমার দাদুর এক বন্ধু আসত
ওনার নাম ছিল সুকুমার ঘোষাল। ছোট বড় সবাই
ওনাকে ভবঘুরে দাদু বলে ডাকত  কারণ উঁনি যখন 
আসতেন তখনই উঁনি দূরে দূরে গ্রাম _শহর _ মেলা
ঘুরে ঘুরে বেড়াতেন তারপর আবার নিজের দেশে চলে যেতেন। বছরে দুই তিনবার আসত আমাদের বাড়িতে থাকত। একবার আমারা ভাই বোনেরা
পড়ছি আর ভবঘুরে দাদু বসে আছে, আমি একটা কবিতা শুর করে করে পড়ছি, কবিতাটা পড়া শেষ হলে
দাদু বলে আর একবার পড়, বারবার পড় তারপর
দেখি আমি পড়েই যাচ্ছি আর দাদু কেঁদেই যাচ্ছে।
তারপর থেকে দাদু যখনি আসত তার ব্যাগ থেকে একটা বই বার করে সেই কবিতাটি দেখিয়ে বলত  পড় আমি পড়ি আর দাদু কাঁদে ।  ।আমি যতবার দাদু কে জিজ্ঞেস করি এই কবিতা পড়লে তুমি কাঁদো কেন ?
 দাদু বলে দিদিভাই তুমি এখন বুঝবে না। যখন 
তুমি বড় হবে তখন তুমি ঠিক বুঝতে পারবে, 
শুধু হয়তো সেদিন আর আমি এই পৃথিবীতে থাকবো না।আর সত্যিই যখন বুঝতে পারলাম দাদু কেন কাঁদত, কেন দাদু সারাজীবন বিয়ে করেননি তখন সত্যিই পৃথিবীতে দাদু আর নেই।
দাদু কাঁদত তার ছোট্ট বেলার প্রেম রঞ্জনার জন্য,
যে রঞ্জনা দেশভাগের সময় তার বাবার সঙ্গে এই দেশে
চলে এসেছিল।  সেই রঞ্জনাকে খুঁজতেই দাদু বারবার এই দেশে ছুটে ছুটে আসত আর গ্রামে, শহরে , মেলায়  দাদু তার রঞ্জনা কে খুজে বেড়াতো ।বারো - তের বছর বয়সে মনের মধ্যে এক অদ্ভুত কষ্ট হত আর সেই কষ্টটা
বেশ অনেক দিন ছিল আমার মনের মধ্যে। তারপর
আস্তে আস্তে কবে যেন ভুলেই গিয়েছিলাম।
আর এখন এই বয়সে এসে যখন স্মার্টফোন হাতে
পেলাম তখন দেখলাম, পৃথিবীটা আজ বড়ই ছোটো, এখন আর কেউ হারায় না। কোনো না কোনো ভাবে তার বর্তমান অবস্থান ঠিকই জানা যায় ।আজ খুবই আফসোস হয় দাদু যদি সেই যুগে না জন্মে এই যুগে জন্মাত তবে দাদু কে আর এত কষ্ট পেতে হতো না। আরকিছু না হোক জানতে তো পারত তার রঞ্জনা কেমন আছে।_____
    আজ সেই কবিতাটা সব্বাই কে পড়াতে ইচ্ছে
করছে, আমার দাদুর স্মৃতির উদ্দেশ্যে ।
_________________________________________
                  এক  গাঁয়ে
               রবীন্দ্রনাথ  ঠাকুর
                     ________
   আমরা দুজন একটি গাঁয়ে থাকি ,
                সেই আমাদের একটি মাত্র সুখ।
      তাদের গাছে গায় যে দোয়েল পাখি
               তাহার গানে আমার নাচে বুক।
তাহার দুটি পালন - করা ভেড়া
               চড়ে বেড়ায় মোদের বটমূলে,
   যদি ভাঙে আমার ক্ষেতের বেড়া
                কোলের ' পরে নিই তাহারে তুলে।

    আমাদের এই গ্রামের নামটি খঞ্জনা
আমাদের এই নদীর নামটি অঞ্জনা,
আমার নাম তো জানে গাঁয়ের পাঁচজনে,
আমাদের সেই তাহার নামটি রঞ্জনা।।

দুইটি পাড়ায় বড়োই কাছাকাছি,
            মাঝে শুধু একটি মাঠের ফাঁক।
তাদের বনের অনেক মধুমাছি
           মোদের বনে বাঁধে মধুর চাক।
তাদের ঘাটে পূজার জবামালা
           ভেসে আসে মোদের বাঁধা ঘাটে,
তাদের পাড়ার কুসুম - ফুলের ডালা
           বেচতে আসে মোদের পাড়ার হাটে।
         
         আমাদের এই গ্রামের নামটি খঞ্জনা,
         আমাদের এই নদীর নামটি অঞ্জনা,
          আমার নাম তো জানে গাঁয়ের পাঁচজনে,
          আমাদের সেই তাহার নামটি রঞ্জনা।।

  আমাদের এই গ্রামের গলির '- পরে
                আমের বোলে ভরে আমের বন।
  তাদের ক্ষেতে যখন তিসি ধরে
             মোদের ক্ষেতে তখন ফোটে শণ।
 তাদের ছাদে যখন ওঠে তারা
               আমার ছাদে দখিন হাওয়া ছোটে।
  তাদের বনে ঝরে শ্রাবণ - ধারা,
                       আমার বনে কদম ফুটে ওঠে।

      আমাদের এই গ্রামের নামটি খঞ্জনা,
     আমাদের এই নদীর নামটি অঞ্জনা,
       আমার নাম তো জানে গাঁয়ের পাঁচজনে,
         আমাদের সেই তাহার নামটি রঞ্জনা।।

Tuesday, May 7, 2024

রহস্যময় সাঁঝবাতি -- সারস

 রহস‍্যময় সাঁঝবাতি
  সারস
  4th May 2024
সাঁঝবাতিটা জ্বালিয়ে দাও
গোধূলির ধূলা চোখের আড়ে,
সময় হয়েছে নীড়ে ফেরার।
টুনটুনি মালতীলতায় গীত ধরেছে
আজি প্রখর তপ্ত দিনের শেষে,
বিশ্বাস লয়ে মালতীলতা বেশে
আশ্রয় লবো রাতের বিশ্রামে।
কাঁঠালীচাঁপা সুবাস ছড়ায় মনের সুখে,
বকুল আমায় সাথ দেবে মালা গেঁথে;
টুনটুনি বলে এরাত বয়ে যাবে বাসর জেগে
জোনাকি সাথে রোষনায় আলো ভরে দেবে।
ঝিঝিপোকা সানায়ে পো-ধরবে জেনে
মজবুত মহল্লায় প্রবেশ অবাধ সাড়ম্বরে,
পেঁচা কুবো নিশাচর আমন্ত্রিত অতিথি।
আহারে পঞ্চব‍্যঞ্জন যোগে পিঁপীলীকা লার্ভা
অর্ধজাগ্রত পিঁপড়ে জানেনা কে করবে সাবাড়,
পেঁচা কুবোও জানে না মৃত‍্যুর পর
এ পিঁপড়ে ছানা কুঁড়েকুঁড়ে খাবে
কি অদ্ভুত জীবন চক্র তাই না !
সাঁঝবাতিটা জ্বলিয়ে দাও,
আঁধার ঘনায় দিনের শেষে
মহল্লা আলোকিত করো জোনাকির জোরে,
নহবতি ধুমমাচাও বাসর জাগাতে।
বাবুই শিল্পের ছোঁয়ায় বাসর সাজে
এরাত দিনের চেয়েও ভয়ঙ্কর।
এখানে ধর্মের কোন স্থান নেই
আছে জীবন চক্রের শুভ শৈলী,
বাঁচার তাগিদে হাঁকুপাঁকুর হাতছানি
ধর্ম বলতে আহার আশ্রয়ের বিলাপ,
সঞ্চয় নেই চিন্তা ও রোগমুক্ত সমাজ
সাবলম্বনে আছে মায়ামমতা ক্ষণিকের।
তপ্ত দুপুর পুড়ে খাগ হচ্ছে ধরা
মেঘেরা ভুলে গেছে পথের দিশা,
লু-বয়ছে ক্ষিপ্ত বায়ু প্রবাহ শিখা
আঁয়ঢায় করছে দিনের আলো
খাঁপি খাওয়া জীবকুল অসহায়।
সাঁঝবাতিটা জ্বালিয়ে দাও,
তিমিরাচ্ছন্ন নব ভুবন
আলোর বড় অভাব সমাজে;
দিনে শরীর মন পোড়ে রাতের
অন্ধকার ফ‍্যাকাশে ম্লান সব মানে
শীতল হাওয়া বয়লেও দুর্বোধ‍্য এরাত
তাই সাঁঝবাতিটা জ্বালিয়ে দাও।

হে কাব্যজগতের রবি -- শেখ সাখাওয়াত আলী

হে  কাব্য জগতের রবি
শেখ শাখাওয়াত আলী
 05/05/2024.
হে বিশ্ব কবি ,কাব্য জগতের রবি,বাংলা সাহিত্য গগনে
তোমার কবিতা,গল্প,গানের সুর,আছে বাঙালীর মননে।

"জন গন মন",তোমার লেখা ভারতের জাতীয় সংঁগীত,
একই গানে ভারতকে বেঁধেছ, দৃঢ় করেছ জাতীয় ভিত।

আমার সোনার বাংলা আমি তোমায়  ভালোবাসি,গান
বাংলা দেশের জাতীয় সংগীত সেতো তোমারই অবদান,

অজস্র গান কবিতা গল্পে মোহিত করেছ বাঙালীর মন,
সুরের দোলায় হৃদয় দোলে, দৃঢ় করেছ প্রেমের বাঁধন।

তোমার কবিতা,তোমার গান,দুঃখ সুখে দোলায় প্রাণ।
যুগে যুগে তুমি বিরাজ করবে, তোমার কর্ম হবেনা ম্লান।

তুমিতো চির স্মরণীয় হয়েছ গীতাঞ্জলি কাব্যগ্রন্থ লিখে
তুমি নোবেল পুরস্কার এনেছ বিশ্ব সাহিত্য সভা থেকে।

তুমি ছিলে স্বদেশ প্রেমী,দেশের প্রতি ছিল হৃদয় ভরা অনুরাগ,
জালিওয়ালানবাগ কান্ডের প্রতিবাদে করছিলে নাইট উপাধি ত্যাগ।
শান্তি নিকেতনের  বিশ্ব ভারতী তোমার পবিত্র কর্ম ক্ষেত্র,
জোড়ার সাঁকোর ঠাকুর বাড়ী বাঙালী জাতীর তীর্থ ক্ষেত্র।.

স্বাভাবিকতা হারিয়ে নিখিলেশ -- দিলীপ ঘোষ

স্বাভাবিকতা হারিয়ে নিখিলেশ
দিলীপ ঘোষ
০৬/০৫/২৪
নিখিলেশ আগে ছিলো বেহিসেবী
নদীর মত ছিলো তার স্রোত
বাধা পেলে বাঁধ ভেঙে খুঁজে নিতো পথ
এখন সে সূর্যের মত
সকালে উদয় হয়, হারিয়ে যায় সন্ধ্যায়
নিয়ম মেনে চলা এখন তার অভিমত।

বাতাসের মত আর নেই নিখিলেশ
চলে না এখন মনের টানে
থমকে দাঁড়ায়, ভাবে প্রয়োজন অপ্রয়োজনে।
চলার  আগে অঙ্ক কষে নেয় এখন
পা ফেলে হিসাব করে
কথা বলে অভিধান মেনে।

নিখিলেশ পূর্বের মত স্বাভাবিক নেই
এখন যান্ত্রিক, যেন কলের পুতুল
পীরের ধার শোধার মত যোগাযোগ করে
খুলে গেছে সম্পর্কের মজবুত হাফসুল।

Sunday, May 5, 2024

প্রেম যমুনা -- সুমন কান্তি বড়ুয়া

প্রেম যমুনা
সুমন কান্তি বড়ুয়া
১৫/০৯/২০২৩
প্রেম যমুনা এখন মৃত প্রায়______
অপরূপ শরৎ যেন হারিয়েছে মহিমা,
আপন মনে দিচ্ছি পাড়ি বিষাদ মহাসিন্ধু
আমি তোমাকে ভুল করে ভেবেছি,প্রেম প্রতিমা। 
কুড়ি বসন্ত পেরিয়ে এসেছি_____
নীল বিস্মৃতি আঁকড়ে ধরেছি বুকে,
আজও ডুকরে উঠি মাঝরাতে আনমনে
তোমার নতুন ঠিকানায় বসতি দারুণ মহাসুখে।
সুখের ও নাকি অসুখ আসে_____
হঠাৎ ঋতু পরিবর্তনে প্রভাব ফেলে,
আমার চির অসুখী প্রেম আহ্লাদী মনটা
পাওয়ার তীব্র বাসনায় প্রতিনিয়ত ডানা মেলে।
হ্যালো তোমাকেই বলছি_____
আমাদের প্রেমের ইতিকথা থাকুক,
বাতিল হওয়া ডাইরির ধূসর বিষন্ন পাতায়
মন থেকে চাই তোমার আকাশ মেঘে না-ঢাকুক।
জোছনার ফুল ফুটুক তোমার আঙিনায়,
আমার অপেক্ষা থাকুক চির অবিনাশী।
মৃত যমুনাকে কে আর বলবে?
প্রিয় তোমায় ভালোবাসি!

আয় বৃষ্টি স্বস্তি নিয়ে -- আমান

আয় বৃষ্টি স্বস্তি নিয়ে
আমান 
০৪-০৫-২০২৪
আর করবো না বৃক্ষ শূন্য 
বসুন্ধরার বনভূমি, 
কথা দিলম বৃষ্টি তোমায়
রাগ করোনা আর তুমি।

খরতাপে পুড়ছে মাটি
ঝড়ছে বৃক্ষের ফল কলি,
আয় বৃষ্টি স্বস্তি নিয়ে
আয়রে চলে মান ভুলি।

বৃষ্টি তুমি এসেই দেখ
আমরা সারা দেশ জুড়ে, 
কোটি কোটি বৃক্ষ রোপণ
করছি সবাই দেশ ঘুরে।

রোপণ করেই সাঙ্গ দেবে
এই প্রজন্ম তেমন নয়,
বৃক্ষ রোপণ অভিযানকে
পরিচর্যায় করবো জয়।

আর অভিযোগ নেই -- বন্দনা বড়ুয়া

আর অভিযোগ নেই 
বন্দনা বড়ুয়া 
04/05/2024
সুদীর্ঘ প্রতিক্ষার পর 
অবশেষে এলে
মেঘ রঙা বসন পরিধান করে 
মহা সমারোহে... বিরাট পরিসরে 
মাদলের পিঠে তাল বাজিয়ে 
নিসর্গের অসহনীয় নিরবতা ভেঙ্গে,
তীব্র প্রদাহের ব্যাথা সরিয়ে,
প্রশস্ত এক শান্ত সকালে শান্তির পরশ বুলিয়ে 
ভরিয়ে দিলে আমার তৃষিত বুক 
ভরিয়ে দিলে প্রচণ্ড দাবদাহে অতিষ্ঠ সবুজাভ প্রান্তর।

কত দরদে ভরা খামে শব্দের ডালি সাজিয়ে,
আবেগঘন অজস্র শব্দের মিশ্রণে,
 কাব্যিক নিমন্ত্রণ পত্র পাঠিয়েছি বসন্তের শেষে,
বিরহী এক তপ্ত বৈশাখের তপ্ত দুপুরে।

অবশেষে এলে 
আম্রকাননে রাশি রাশি আনন্দ হয়ে, 
অপেক্ষমান সবুজ ফসলে মৌসুমী হিল্লোল হয়ে, 
ধুয়ে দিলে পথিকের ঘর্মাক্ত কলেবর, 
আকণ্ঠ ভরে পান করে নিল তৃষ্ণার্ত চাতক ।

আর অভিযোগ নেই 
ওই জ্বলন্ত নির্দয় সূর্যের বিরুদ্ধে 
আজ পরতে পরতে কবিতারা ফুটে উঠেছে 
চাঁপা ও গন্ধরাজের ডালে ডালে আশ্চর্যরকম ভাবে।

আজ নির্ভয়ে পুঁতে দিলাম 
নির্ভরযোগ্য বিশ্বস্ত বন্ধু তরু বীজ 
শীতল হোক মরুর দহন 
লাবণ্যে আর সুগভীর প্রেমে ভরে উঠুক ধরণীর বুক
তারপর প্রাণ ভরে নেব নির্মল শ্বাস। 

জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি -- এস আকরাম হোসেন

জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি 
এস আকরাম হোসেন 
০৫/০৫/২৪
তপ্ত লু হাওয়ায় অবিরাম দগ্ধ দেশ
জনমনে আজ চাতক পাখির বেশ
মমতায় মোড়ানো মাটি দগ্ধ আজ
মাথায় পড়েছে যেন আগুনের তাজ।

দিবানিশি আগ্নেয়গিরিতে বসবাস,
বাতাসে শুনি নাগিনীর ফোসফাস
রুদ্ররোষে গর্জনে বিধাতা বিমুখ;
অনলপ্রবাহে তাই শুন্য মনের সুখ।

ছায়াহীন মাঠঘাট পানিবিহীন নদী, 
ভালোবাসা হারামন খা খা নিষুন্দী।
এরই মাঝে বেঁচে আছি যাই যাই প্রাণ
দয়াময় দেয় যেন রহমতের ত্রাণ।

সারাদেশ মরুভূমি জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি 
জনজীবন খুঁজে ফিরে শান্তির সিঁড়ি, 
পাপের পাহাড় নিয়ে করি ফরিয়াদ 
এক পশলা বৃষ্টির লাগি এত আর্তনাদ।

Saturday, May 4, 2024

নির্বিকার কবিরা -- চিত্তরঞ্জন সাঁতরা


নির্বিকার কবিরা
চিত্তরঞ্জন সাঁতরা 
০১/০৫/২০২৪
বৈশাখী তাপদাহে কবিদের গরম 
লাগে না।
ভাবনার গরমে ফুটতে থাকে মন।
নোনা জলে ভিজে যায় শব্দকোষ
উত্তপ্ত হয় ভাবনা।
কবিরা গরমে হাহুতাশ করে না।
কল্পনার গরমে হাহুতাশ করে সৃষ্টিতে।
হারিয়ে যায় অতলে কোন্ ঠান্ডার
জগতে।
কবিরা বোঝে না ঘাম ঝরা সকাল।
বোঝে না সারাদিনের পোড়া রোদের 
 বারুদের গন্ধ।
কবিদের গরমের জ্বালা নেই অসহ্য নেই।
স্পর্শের অনুভূতিতে গরমের গুমট বোঝে
না।
কল্পনার গুমটে ভেসে চলে সৃষ্টির আনন্দে।
কবিদের গরমের মাথা ব্যাথা নেই।
মাথা ব্যাথা ভাবনায় তালে ছন্দে উপকরণে।
তাই কবিরা নির্বিকার ও অসাড় মানুষ।

হাসরের ময়দান -- মোঃ নুরুল ইসলাম

      হাসরের ময়দান"
     মো: নূরুল ইসলাম
      ২৯/০৪/২০২৪
    আসিবে ধরায় লয়ে অভিশাপ,
            ধ্বংসের যজ্ঞ রোজ কিয়ামত।
    দোযখের আগুনে পুড়ে হবে ছাই,
            মনুষ্য জনম ইতি নিশ্চিত মত।

    দলে দলে পৃথিবীর লোকজন,
            জড়ো হবে হাসরের ময়দান।
    পৃথিবীর আদি আর অন্ত মিলে,
            নারী পুরুষ সকলে হও সাবধান।

    পৃথিবীতে এসেছে কত মহাজন,
            জ্ঞানী গুণী নবী পীর পয়গম্বর।
    জ্ঞান নির্দেশ করেছেন বিতরণ,
            কর্ণপাত করেনি যারা নাই নম্বর।

    পরীক্ষার পৃথিবীতে কতো লোক,
            খায় দায় স্ফূর্তি করে বড় হয়।
    পাপ পূণ্য বাছ বিচার নাই তার,
            জীবন কাটিয়ে দেয় ভোগ লালসায়।

    হতে হবে দেহ মন সব পরিষ্কার,
            নবীজীর উম্মত ভালো সব যার।
    পরীক্ষায় নিয়ে যায় ভালো নম্বর,
            বেহেস্তি ফিরদৌস তার হয় গুলজার।

                বহরমপুর মুর্শিদাবাদ

মননে স্মরণে বিভূতিভূষণ -- তপন চট্টোপাধ্যায়

মননে  স্মরণে বিভূতিভূষণ
তপন চট্টোপাধ্যায়
24-09-23                           
  আজ কতোদিন হোল তুমি নেই, অথচ মনশ্চক্ষে তোমাকে এখনো যেন দেখতে পাই-- এই তো তুমি, সেই নীলকলার ফাটা হাফশার্ট,তালিমারা ক্যাম্বিসের জুতো,,একটা আড়ময়লা মিলের ধুতি পরে তুমি ইছামতীর পাড়ে বসে রয়েছো।                                     শেযদিনের আলোটুকু  বাবলা বনের মাথার উপর যখন  নামে, বনকলমীর ফুলের উপর যখন ধীরে ধীরে সন্ধ্যা আদর ছড়ায়, তখন দেখতে পাই গোধূলির লাল আলো মেখে তুমি একমনে, একদৃষ্টে তাকিয়ে রয়েছো বন অপরাজিতার নীল ফুলে ছাওয়া নদীর বুকে!                       সেই সোনাড়াঙার মাঠ,পদ্মফুলময় মধুখালির বিল,নীলকুঠির সেই তুঁতেগাছের বন,কিংবা নীল নির্জনে গাঙচিলের ডাক তুমি মন্ত্রমুগ্ধের মতো শুনছো,শুনেই চলেছো...                                     মাস,বছর,মন্বন্তর,মহাযুগ পার হয়ে তুমি বসে রয়েছো যেন নিঃসঙ্গ, নির্লিপ্ত বিভূতিভূষণ আর তোমার চারিপাশে গজিয়ে উঠেছে মহাযুগের নাটা-কাঁটার ঝোপ, বনকলমীর গুচ্ছ গুচ্ছ ফিকে গোলাপী ফুল!                               তোমার জন্ম হয়েছিলো বোধ হয়' 'আরণ্যকের ''জন্যই !জানো,এখনো তোমার সেই ভাগলপুরের পূর্ণিয়ার জঙ্গল তোমাকে খুঁজে বেড়ায়,এখনো গভীর রাত্রে ফুলকিয়ার জঙ্গলে তোমার সেই প্রিয় ঘোড়া দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে  সেই স্বভাবসুলভ ভঙ্গিমায় চিঁহি চিঁহি রবে তোমাকে খুঁজে বেড়ায় !অথচ তুমি কেন আজ এতো নির্লিপ্ত, উদাসীন? ওই দ্যাখ দূরে ঐ কাশবন, শরতের নীলাকাশে সাদা মেঘেদের আনাগোনা,কাশবনের ঠিক ওপারে রেললাইন.. ,অপু,দুর্গা হাঁ করে দাঁড়িয়ে আছে রেলগাড়ি দেখবে বলে... ওই দূরে দেখা যাচ্ছে ঘন ঝোপে, গাছ-গাছালিতে ডুবে থাকা নিশ্চিন্দিপুর--অপু, দুর্গাদের গ্রাম--,আজও যেন সর্বজয়া বসে আছেন তেমনিভাবেই ভাঙা ঘরের দাওয়ায়, তোমার মুখে 'পথের পাঁচালির' আখ্যান শোনার অপেক্ষায়...,  শুধু তাই নয় --,ওই দ্যাখো 'বিপিনের সংসার ' ছায়া ছায়া হয়ে ধীর গতিতে এগিয়ে আসছে তোমার দিকে, তোমাকে খুঁজছে অপু,কাজল,বিপিন ,মতি,পাটোয়ারি লাল,জওহারি লাল,শঙ্কর .... তুমি কি এদের একেবারেই ভুলে গেলে? একবারও এদের কথা ভাবলে না???  আমরা সবাই খুঁজছি তোমাকে  । আর একটিবার বিভূতিভূষণ হয়ে ফিরে এসো আমাদের মাঝে !

জীবনের আকাঙ্ক্ষিত স্বাদ -- শরীফ নবাব হোসেন

 

জীবনের    আকাঙ্ক্ষিত    স্বাদ 
শরীফ    নবাব    হোসেন 
০১/০৫/২০২৪ 
জীবনটা হবে কাব্যিক ছন্দময় 
মনোরম গতিময়
অশেষ স্বপ্নময়
নিরবচ্ছিন্ন মায়া-মমতাময়
ইতিবাচক কর্মময় 
মিলেমিশে একাকারে প্রশান্তিময়  ! 

জীবনটা হবে প্রাণের উচ্ছ্বাসে  প্রাণবন্ত 
চলাফেরায় সবুজে দুর্দান্ত 
কাজকর্মে সৃষ্টিতে সুকান্ত 
দিয়ে যাবে অবিশ্রান্ত 
মহৎ অবদানে অনন্ত
হেসে খেলে উদ্দীপনায় অনন্য  । । 

জীবন নৌকা সবার জন্য 
ত্যাগে তিতিক্ষায় হবে ধন্য
পরস্পর বন্ধনে বন্ধুত্ব
বিলীন হবে কষ্ট 
আশার ময়ূখ জ্বলবে 
মনের আবেগের কথা বলবে  ! ! 

জীবনটা  - সামনের পানে এগোবে 
শুভ  প্রকৃষ্ট আকাঙ্ক্ষা জাগাবে 
সুচারু উত্তম কাজে ব্যস্ততা
চালিয়ে যাবে লক্ষ চেষ্টা 
মেটাবে হৃদয় বাসনার তেষ্টা 
বসন্তের নবীন  রঙে রাঙাবে জীবনটা  । 

জীবনটা হয় যাতে মধুময়
জীয়নকাঠির সুললিত যাদুময় 
সুধাকরের রমণীয়তায় স্নিগ্ধময়
ভোরের রাঙা রবির সৌরভময় 
পাখপাখালির কলতানে মুখরিত সুধাময়
পরতে পরতে জীবনটা ভরে উঠবে  -
                                                 নিবিড়  সুকর্মময়   ! !  

শরীফ   নবাব   হোসেন  ।

Thursday, May 2, 2024

মে দিবসের ইতিকথা -- শেখ শাখাওয়াত আলী

মে দিবসের ইতিকথা
শেখ শাখাওয়াত আলী
01/05/2024
এলো আবার সেই রক্তে রাঙা মে দিবস,
শ্রমজীবি মানুষের অধিকার রক্ষার দিন।
দীর্ঘদিনের কঠোর আন্দোলন সফল হল,
শ্রমিক আট ঘন্টা কাজ করবে প্রতিদিন।

1886 সালের পয়লা মে  আমেরিকার শিকাগো শহরে,
ধর্মঘট শুরু হল দৈনিক আট ঘন্টা কাজের দাবি নিয়ে।
 পয়লা মে ছিল শনিবার,নীরব ছিল আমেরিকা সরকার,
তৃতীয় দিনে সরকার ধর্মঘট ভাঙতে চাইল পুলিশ দিয়ে।

শ্রমিক শ্রেণী ভাঙল না ধর্মঘট,তীব্র হল আন্দোলন,
মালিক পক্ষের সমর্থনে পুলিশ শুরু করল নির্যাতন।
পুলিশের গুলিতে  নিহত হল চার জন  নিরীহ শ্রমিক,
ধৈয্য হারালো শ্রমিকের দল,শুরু করল পাথর বর্ষণ।

শ্রমিকের পাথরের আঘাতে অনেক পুলিশ আহত  হল,
অতিরিক্ত পুলিশ এসে শ্রমিক ধরপাকড় শুর করে দিল।
চতুর্থ দিন শ্রমিক আন্দোলন তীব্র আকার ধারন করল,
ভিড়ের মধ্যে মালিকের পোষা গুন্ডা বোমা বর্ষণ করল।
 
বোমার আঘাতে পুলিশ সহ অনেক মানুষ নিহত হল,
পুলিশ এসে শ্রমিক নেতাদের জেলে বন্দী করে দিল।
বন্দী শ্রমিক নেতাদের বিচারের নামে প্রহসন শুরু হল,
অবশেষে চার শ্রমিক নেতাকে ফাঁসিতে ঝালানো হল।

অন্যান্য নেতারা জোট বদ্ধ ভাবে আন্দোলন চালিয়ে গেল,
আমেরিকা সরকার বাধ্য হয়ে শ্রমিকের দাবি মেনে নিল ।
1887 সালের পয়লা মে প্রথম শ্রমিক দিবস পালিত হল।
1890 থেকে পয়লা মে  আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস হল।

আজকে আবার ফিরে এসেছে সেই শ্রমিক শোষণের দিন,
মালিক পক্ষ এখন 10- 12 ঘন্টা কাজ করাচ্ছে প্রতিদিন।
বর্তমান সরকার মালিকের দোসর শ্রমিকের দোসর নয়,
আবার জোট বদ্ধ আন্দোলন ছাড়া শ্রমিক বাঁচানো দায়

আমরা সামাজিক জীব -- পরেশ চন্দ্র সরকার


আমরা সামাজিক জীব 
পরেশ চন্দ্র সরকার
০১_০৫_২০২৪_ইং

আমরা দেখেও কিছু দেখবো না দু'নয়নে, শুধু পাশ কাটিয়ে যাবো,
পুুকুর ভরাট হ'য়ে যাচ্ছে চোখের সামনে আমার আপনার ধরাছোঁয়ায়...
শাখা-প্রশাখা ছড়িয়ে থাকা সবুজ পাতায় আচ্ছাদিত বিশাল বড়ো গাছ, মেসিনে একলহমায় কেটে সাফ ক'রে দিচ্ছে...
কংক্রিটের রাজত্ব গড়ে উঠেছে আবারও গড়ে উঠবে ব'লে...
আমরা দেখেও কিছু দেখবো না দু'নয়নে, শুধু পাশ কাটিয়ে যাবো,
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম লাগাম ছাড়া, সাধারণ মানুষের কষ্টার্জিত টাকাগুলো জলের মতো ব'য়ে চলেছে, জিনিস কিনতে পাচ্ছে না মুষ্টিরও সমতুল্য...
আমরা দেখেও কিছু দেখবো না দু'নয়নে, শুধু পাশ কাটিয়ে যাবো,
ছোটোয়, বড়োয় সম্মান খুইয়েছে সেতো আনেকটা কাল আগেই...
পরিধানের পোশাক-আশাকও আছে কি আর আগের মতোই...
বেহিসেবি কথাবার্তার ছিরি প্রবাহিত আঁকে নিত্যনতুনে অহরহ...
আমরা শুনে কিংবা দেখেও কিছু দেখবো না দু'নয়নে আর কানে, শুধু পাশ কাটিয়ে যাবো,
অর্ধাহারে কিংবা অনাহারে চলতি পথের ফুটপাতে নির্জীব হ'য়ে পড়ে র'য়েছে...
আমরা দেখেও কিছু দেখবো না দু'নয়নে, শুধু পাশ কাটিয়ে যাবো,
'যার কাল ছিল ডাল খালি আজ ফুলে যায় ভ'রে'... অথবা
চোখের সামনে দেখতে দেখতেই 'আঙুল ফুলে কলাগাছ'...
আমরা দেখেও কিছু দেখবো না দু'নয়নে, শুধু পাশ কাটিয়ে যাবো,
চোখের সামনে পথ-দুর্ঘটনায় দেখছি চেয়ে রক্তাক্ত তখনও প্রাণে বেঁচে, ছটফট ক'রছে...
অথবা
ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপরি আঘাত হেনে একজন, আরেকজন নিরস্ত্রকে খুন ক'রছে...
আমরা দেখেও কিছু দেখবো না দু'নয়নে, শুধু পাশ কাটিয়ে যাবো,
আমরা দেখেও কিছু দেখবো না দু'নয়নে, শুধু পাশ কাটিয়ে যাবো,
অথবা
মোবাইল ফোনে ভিডিও ক'রে ফেসবুকে পোস্ট ক'রে দেবো...
ব্যাস্ হ'য়ে গেলো! আমরা সামাজিক জীব, আমাদের দায়িত্ব আর কর্তব্য মাত্র এতটুকুই...

আপন- আপন কাজে -- মৃণাল কান্তি রায়

আপন-আপন কাজে
মৃণাল কান্তি রায় 
০১/০৫/২০২৪
ভিখ মাঙেন যিনি যখন
                       তিনি হলেন ভিক্ষুক, 
দীক্ষা দেন যিনি যখন
                      তিনি হলেন দীক্ষুক। 
দীক্ষার ধরণ বিভিন্ন হয়
                     কাজ মানেই বিচার,
দীক্ষিত জন যা কিছু করেন
                    তখন তা-ই  আচার। 
ভালো কাজে প্রলুব্ধ হলে
                   ফলটি থাকে ভালো,
খারাপ কাজে প্রলুব্ধ হলে
                  কাজটির ফল কালো। 
কেবল শুধু ধর্মই নয়
                 সব কাজেতেই দীক্ষা,
গুরু-গুর্বি তাইতো থাকেন
                   নিতে হয়তো শিক্ষা। 
সুপ্ত প্রতিভার বিকাশ সাধনে 
                     সকল শ্রেণীর পেশা,
যারা দেখান পথের স্বরূপ
                    তারাই দেখান দিশা। 
অকাজকে কাজ না বলে
                  অকাজ শেখান যারা,
তারাই হলেন ভবের ঘুঘু
                 খারাপ বানান তারা। 
পীর আউলিয়া দরবেশ ফকির
                    গোড়ায় ছিলেন যাঁরা,
তাঁদের নামে সিরণি চলে
                    পথের দিশায় তাঁরা। 
গুরু নামের যত অবদূত
                   এসেছিলেন এ ধরায়,
বর্ষপঞ্জি খুললে পরে
                    নাম ছবিগুলো দেখায়।
হালের চিত্র বদলে গেছে
                   কুজরামি যার প্রধান,
ডুব ঘাউ আর বোটকা নীতির
                       যত আদান-প্রদান। 
আগেকার দীক্ষায় পড়েছে ভাটা 
                    নগদের দীক্ষায় চতুরতা,
পীর-গুরুদের শিষ্য-মুরিদরা
                    স্বার্থের লেজগির প্রবণতা।
উদার  মন উদার চিন্তন
                    পুরোটাই উবে গিয়েছে,
মনের মাঝে সবার যেন
                    মরিচা ঠিক ধরেছে।
যে আছে যেমনি স্বভাবের
                  পরকেও ভাবে সাঁই,
দেশজুড়ে যেন স্বত্ব নীতির
                 প্রতাপ চলছে তা-ই! 
স্বত্ব বিলোপ স্বত্ব আরোপ
                যা-ই নিয়ে কাড়াকাড়ি,
সে-ই সুযোগে সুফির পালে
                মুক্তি পেল তাড়াতাড়ি। 
লেজগি পেজগি দিয়েই যারা
              মেতেছে যেন বন্দনায়,
চালাক-চতুর বুদ্ধিমত্তা 
              দেখ হালের জামানায়! 
কেউ কাউরে মানতে চায় না
                   নিজকে ভাবে সেরা,
বলতে গেলেই পল্টি মারায়
                বানিয়ে ফেলায় ভেরা। 
গাধার পিঠে বোচকা রেখে
                  সব সেয়ানারা মুক্ত,
দীক্ষা শিক্ষার ভিক্ষা নীতি
                  সব কাজেতেই উক্ত। 
ডুব ঘাউ আর বোটকা নীতির
                ফোল পোটকারা ফোল,
যত পারিস কুৎসা গীবত
                বাঁধাস যারাই গোল। 
যেদিন পড়বি যেটায় ফাঁদে
                     চরকা থেমে যাবে,
কাফন কাপড় ছাড়া কিছু
                    সাথে না কিছু পাবে! 
যারা দেখবি চলে গিয়েছে
                  কে কি নিয়ে গেলো,
ভালো-মন্দের মেশাল বুনে
                 যারা স্বার্থ তুলে নিল। 
এমন শিক্ষা এমন দীক্ষা 
                মুরিদ-শিষ্যদের মাঝে,
আপন প্রাণ বাঁচারে সবাই
                  আপন আপন কাজে। 

কথার দাম -- উত্তম গোস্বামী

 কথার দাম 
উত্তম গোস্বামী 
৩০/০৪/২০২৪
ভোট প্রচারের ময়দানেতে 
লড়িয়ে নেতা জান 
কেউ বা লুটেন টাকা পয়সা 
কেউ বা লুটেন মান। 

কেউবা বলেন ভোট টা দিলে 
গড়বো পাকা বাড়ি 
কেউ বা বলেন মা বোনেদের 
দেবো নতুন শাড়ি।

কেউবা বলেন চাকরি দেবো 
রাস্তা দেব গড়ে 
পানীয় জলের সমস্যা সব 
দেবো তো দূর করে। 

সব নেতারাই মুখে বাচাল
দেয়না জীবন মান
জনগণকে দেওয়া কথার
 রাখে না কোনো দাম।

মানুষ জীবন বড় জীবন 
কথার দামই বড়
কথা দিলে কথা রেখে 
 ভোটের জন্য লড়।

আসুন সবাই শপথ করি 
গাইবো প্রানের গান
কথা দিলে সবাই মোরা, 
 রাখবো কথার দাম ।

Tuesday, April 30, 2024

রূপকন্যা -- বাঃ অশোক খাঁড়া

রূপকন্যা
ডাঃ অশোক খাঁড়া 
24.9.2023
রূপকন্যা, আমি অপেক্ষায় তোমার জন্য 
রাতের শেষ ট্রেনটার মতো। 
রূপকন্যা, আমার হাতে আজ বন্দুক নেই ।
আমি বিশ্বাস করি না,
বন্দুকের নলই ক্ষমতার উৎস ।
আমার হাতে তোমার বড্ড প্রিয় রজনীগন্ধা। 
সেই কাকভোরে তুমি জাগতে সূর্যের হাত ধরে,
তুমি হতে অন্নপূর্ণা , ভাতের থালা হাতে বস্তির ঘরে ঘরে, ফুটপাতে- যেখানে আড্ডা জমতো পাখিদের সঙ্গে কুকুরের। 

সূর্য ডুবলে তুমি যে তখন সরস্বতী 
প্রদীপের আলোয়, বস্তির পাঠশালায়। 
রূপকন্যা, তুমি ছিলে বিপ্লবীদের অগ্নিকন্যা 
কৃষকের সাথি, শ্রমিকের দূত , মানুষের ঈশ্বর। 

আজ তুমি ফিরলে জীবনের শেষ ট্রেনে 
কফিনে ঢাকা নশ্বর দেহে , শহীদের পোষাকে ,
খসে পড়া নক্ষত্রের মতো। 
আমার আকাশের ক্যানভাসটা শুধুই সাদা ,
রামধনু নেই, রূপকন্যা নেই ।
আমি কন্যা বিহীন 
মানুষ মাতৃহারা।

তুষার বিদায় -- দেবাশীষ চ্যাটার্জি

ঊষার বিদায়  
দেবাশিষ  চ্যাটার্জী    
29/04/2024 
কাক ভোরেতে এক টি মেয়ে 
ঘুম ভাঙাতো রোজ 
সারা রাত্রি কেমন ছিলাম 
ফোনেই নিতে খোঁজ  |

ঠিক ঘড়িতে সময় যখন 
পাঁচ টা হয়ে এলো 
মুঠো ফোনের অস্থিরতা  
লাগতো কানে ভালো |

কোকিল কন্ঠী বলতো হ্যালো
প্রেম জড়ানো শুরে 
খুঁজে দেখো কাছেই আছি 
পথ টা হোক না দূরে |

পথিক পথে পাথর খোঁজেনা
খোঁজে চলার পথ 
জীবন যুদ্ধে লড়তেই হবে 
এই করেছে শপথ  |

একাই আসা একাই যাওয়া 
এই পৃথিবীর পাঠশালায়  
কারো প্রাপ্তি অনেক বেশি  
শূন্য হাতে কেউ ফিরে যায়  |

আপন স্বজন সবাই আছে 
তবু ও মনে ভয় 
জীবন যুদ্ধে লড়ার সময় 
একাই  লড়তে  হয় | 

ভালোবেসে সব ছেড়েছি 
পর করেছি আপন
আয়না মোরা প্রেম যমুনায়
গড়ি সুখের বৃন্দাবন |

সে সব কথা নেই মনে তার  
ফোন করতো রোজ  
আমি বেকার অর্থের অভাব 
তাই রাখেনা খোঁজ |  

শপথ কোথায় হারিয়ে গেছে 
লোভ লালসার ভিড়ে 
আর কোনোদিন চাইনা পেতে 
মিস কল  টা ভোরে  |