Showing posts with label কবিতা. Show all posts
Showing posts with label কবিতা. Show all posts

Sunday, April 21, 2024

নবীন স্বপন -- সূর্য্যোদয় রায়

 নবীন স্বপন
 সূর্য্যোদয় রায়
 ১৫/০৪/২০২৪
ওই দ্যাখো আজ জ্যোর্তিশিখায় তাহার অমল রূপ,
সমুজ্জ্বল ওই আলোক হাসিল বোধহয় অনুপ;
শুভ্রাঙ্গন নতুন আলোক বরনডালায়,
বিষাদ গীতের স্বর্ণমালায়;
সব নব নিন্দিত আলোক সিঞ্চণ ভুলে গিয়ে আমরাও হয়তো চুপ।

আবার নূতন আলোকশিখা জাগিল পরান মাঝে,
স্তূপ পদমূলে ওই কনক আভায় ঋদ্ধ নবিন সাঝে;
চির নূতনের এই সৃজন বানী,
মোর মননে দিব্য মানি;
বিধির বিধান নিত্য জীবনে কেমনে আজকে রাজে।

আসন্ন ওই সন্ধ্যা গীতের প্রত্যাশাতে আঁধার জীবন রাগ,
রেখে যাও সব ধরনীর তলে নব স্বপ্নরেখায় নূতন আলোক দাগ;
পাখির কূজন গীতের কুহুশিসে,
রিক্ত জীবন রঙিন হাসে;
কূজন ধ্বনির সৃজন মননে লাগুক না হয় ফাগ।

খানিক ভুল বুঝি আজ আমার হল ভুল বোঝে তাই সময়,
যে পাপের ভাগি আমি নই গো কখনও কেন লব তার দায়;
অধিক স্বপন রঙিন জীবনে,
কত যুগ আমি ক্ষয়েছি মণণে;
আর বরই বোধহয় ক্ষনিক আলোকে মৃত মানবের প্রায়।

আজকে আবার রাঙিছে পরান দিব্য স্বপন সুখে,
তাই বুঝি আজ নম্র আশায় পোড়ায় এ জীবন দুঃখ;
মহা প্রাণ আজ এই তো জীবন,
তোমার অমল হাওয়ায় দুঃখ গীতের লয়েছি স্মরণ;
আমার এই লাশ খানি আজ শুইয়ে দিও কবরের অধঃমুখে।

দায়িত্বটা কার -- তরুণ ভট্টাচার্য

দায়িত্বটা কার
তরুণ ভট্টাচার্য
১৭/০৪/২০২৪
কি হয়েছে ?   লোক জমেছে ?
বলছে   " রান ওভার "
জানালা থেকে    চালক দেখে
সিধে পগার পার
রয়েছে প'ড়ে     হাত পা নাড়ে
ক'রে চলে চিৎকার
ফটো খ্যাঁচে       যায় না কাছে
দায়িত্বটা কার  ?

মৈত্রী ভুলে              বৈরি তুলে
বিবাদ বাধে চরমে
বিবেক গুণে           কারো মনে
হয় নাতো  'যাই থেমে'
দূরেতে খালি         বাজায় তালি
উস্কানি শতবার
শিশু ও দুটি           বাগিয়ে ঝুঁটি,
দায়িত্বটা কার  ?

মাস পয়লা             যায় একেলা
রকের ছেলেরা জানে
পেনশন পায়      আরো বেশি ব্যয়
ঐটুকু তুলে আনে
মিটিয়ে দেনা               ওষুধ কেনা
হাতে কি থাকবে আর !
রক বাসি ছেলে     সব কেড়ে নিলে !
দায়িত্বটা কার  ?

দিনের শেষে             বাড়িতে আসে
মুখগুলি ঘন কালো
এত দৌড়ঝাঁপ     করেছে মেকআপ
স্বপ্ন কোথায় গেল  ?
আজ বাদে কাল            সংসার হাল
কিভাবে ফেরাবে আর !
বিবেক হানছে            নীতিরা টানছে ,
দায়িত্বটা কার  ?

প্রশ্ন কঠিন উত্তর সহজ -- দিলীপ ঘোষ

প্রশ্ন কঠিন উত্তর সহজ
দিলীপ ঘোষ
২০/০৪/২৪
পাশের বাড়ির ছেলেটা
হন্তদন্ত হয়ে ছুটতে ছুটতে এলো, বললো --
কাকু, বাবা বড় অসুস্থ, মৃত্যুর সাথে লড়ছে
খুঁজছে আপনাকে
হারুবাবু বললেন, বাথরুম যাব, স্নান করব,
অফিস যাব, অফিস থেকে ফিরে
দেখা করব সন্ধ্যায়
লোকটা মারা গেলো সেদিন দুপুরে

একদিন সন্ধ্যায়, অফিস থেকে ফিরেছেন হারুবাবু
এক ভদ্রমহিলা বাড়ীতে এলো, জিজ্ঞাসা করলো,-
ছেলেটাকে কোন বিষয়ে পড়াই বলুন তো
হারুবাবু  বললেন, এইমাত্র ফিরেছি
এখন হাত পা ধোব, একটু বিশ্রাম নেব, পরে বলবো

পাশের বাড়ির অল্প বয়সী ছেলেটা মারা গেলো
কান্নার রোল, যে শুনছে সেই যাচ্ছে দেখতে
বাড়ি থেকে বের হতে যাচ্ছে হারুবাবু, গিন্নি বললো, 
দূরারোগ্য রোগে মরেছে, যেও না, 
                                  এনো না অসুখ ডেকে
দুঃখের সময় পাশে থাকা লাটে উঠলো
সুবোধ বালকের মত থেকে গেলো ঘরে

পাড়া প্রতিবেশীদের দায় বিপদে
পাশে থাকেন না হারু
লোকের জন্য সময় ব্যয় করতে
হারুবাবু বড় হিসেবি
বউ, ছেলে, মেয়ে নিয়ে তার পৃথিবী
তিনি নাকি ভদ্রলোক, বনেদী
হারুবাবু কি মানুষ, তিনি কি সামাজিক?

চল না হারিয়ে যাই -- প্রতাপ রাকসাম

চলনা হারিয়ে যাই
প্রতাপ রাকসাম
২১/০৪/২০২৪ ইং
ফাগুনের স্নিগ্ধ ভোরে তুমি হঠাৎ 
নীল শাড়ি পড়ে এসে আমায় মুগ্ধ করলে
চঞ্চলা উদাসী হাওয়ায় ভেসে এসে বললেঃ
এই... চলনা আনমনে কোথাও 
হারিয়ে যাই! 
পাখীর কলতানে জনমানবহীন 
সবুজে ঘেরা গভীর অরণ্যে অচেনা 
কোনো মধুুবনে!
আবীর রাঙা নীলাকাশে
সাদা কালো মেঘের ঘনঘটায় আমরাও
রংধুর মতো ভেসে উঠবো!
আমি এক পশলা বৃষ্টি হয়ে তোমার
উতপ্ত হৃদয় ভিজিয়ে দেবো।
আমার আলতো ছোঁয়ায় তুমি স্বস্তির 
নিঃশ্বাস ফেলবে।
ঐ নীল পাহাড়ের ঝর্ণার কলধ্বনি শুনে
মন যদি মাতোয়ারা হয় তখন আমিও তোমায় জড়িয়ে ধরবো।
চলনা প্রিয় আজ হারিয়ে যাই।
আমি সাঁঝবাতি হয়ে তোমার আধাঁর ভূবনে
অনন্তকাল জ্বলবো।
স্রোতস্বিনীর মতো মিশে যাবো 
তোমার হৃদয়ের অথৈ সমুদ্রে।
তুমি ঢেউ হয়ে আমায় ভাসিয়ে নিয়ে 
যাবে স্বপ্নমুখর দেশে।
তুমি আমার জীবনে এসে শিখালে প্রেম ভালোবাসা তুমিই আমার স্বপ্নিল আশা।
হৃদয়ে এঁকেছো নব জীবনের আল্পনা
তুমিই আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ প্রেরণা।
আমার নীলাকাশে মুক্ত বিহঙ্গ; চলনা 
প্রিয়তম আজ হারিয়ে যাই অজানায়...।

সারে চমৎকার -- মীরঃ নাজমুল

সারে চমৎকার
মীর নাজমুল
১৮।০৪।২০২৪ ইং
লোকে বলে.... 
যার কিছুই নেই, 
তার আবার হারাবার ভয় কিসের। 
অশান্তির চেয়ে তো...
একলা থাকাই ভালো, 
তবে আবার জ্বালা কিসের।  

প্রতিক্ষার প্রহর,হয় যদি কষ্টের.. 
তবে আর প্রত্যাশা করে লাভ কি। 
আশার প্রদীপ যদি....
নিরাশার অন্ধকারেই রয়ে যায়, 
তবে আর অপেক্ষা কিসের। 

কবির বর্ননায়
ঘর পোড়া গরু,লাল মেঘে ভয় পায়। 
তবু কাটেনা তার মনের অনুভুতি 
থামেনা আবেগ। 

আমি বলি.... 
কিসের এতো ভালোবাসা.. 
কিসের ই বা এতো আবেগ। 
লাল মেঘ,সাদা মেঘ যাই বলি 
ও গরু নেই আর রাখালের। 

ওরে নির্লজ্জ বেহায়া মন 
আজ সে অন্য কারো......
একথা আবার বুঝবি কবে 
........কোন জনমে,কখন। 

তার চেয়ে সেই ভালো, 
ভুলে যাও তারে। 
নইলে পিরিতের অনল 
অভাগা জাতের......... 
পোরাবে অবিরত,জনম,জনমে। 

             ................ মীরঃ নাজমুল।

বসন্ত কাল -- বনানী সাহা

 বসন্ত কাল 
 বনানী সাহা 
১৯/০৪/২০২৪
ভ্রমরের গুনগুন --
নূপুরের রুনঝুন --
শুনে শুনে, দিন কাটে --
বসন্ত কাল টা তে ।

ফুলে ফুলে প্রজাপতি --
পাখা রঙ বাহারি --
রূপে রঙে ভরে দেয় ,
ফাগুনের বেলা টায়।

লাল শিমূল ,কৃষ্ণ চূড়ায় --
লালে লাল রঙ মাখায়।
যেন শুরু ফাগের খেলা ।
মনে করে দেয় এই বেলা ।

কোকিলের কলতান--
ভরে দেয় মন প্রাণ ।
দক্ষিণা বাতাস আর সুনীল আকাশ --
দেখে মনে আসে, কল্পনা একরাশ !

হৃদয়ে লাগে রঙের পরশ !
মনময়ূরী পাখনা মেলে হরষ --
হৃদয়ের বিচরণ কল্পনায় ---
বাস্তবের সাথে যেন ,এক রেখায় মিলায় !

হায়রে ভকতি -- খসরু ভাস্কর

হায়রে ভকতি!
খসরু  ভাস্কর 
১৬/০৪/ ২০২৪ খৃঃ 
ইট পাথর ও খড়কুটোর মাঝে বেঁধেছো ঈশ্বর 
লতাপাতায় গড়ে তোলো বিশ্বাস-স্বপ্নের-ঘর ! 

দামী খাবার ভালো আসন রেখে দাও কার তরে, 
সর্বশক্তিমান শ্মশান-গোরস্থানে রয় কেমন করে ? 

ঘোড়া হাতিতে রথে দেবতা! পুজারী চড়েন গাড়ি, 
কলার ভেলায় চড়েন দেবী যান নাকি শশুর বাড়ি! 

চৌদ্দ তলার প্রাসাদে থেকে মাথা নত করো নীচে
রাজাধিরাজ ত্রিজগৎ পতি, জীবন করলে মিছে।

রাস্তায় ঘুমায় বিশ্ববিধাতা ভাবলোকে রয় প্রাসাদে, 
পানশালায় ওড়ে অর্থ, কেউ ক্ষুধার জ্বালায় কাঁদে! 

এই যদি হয় সভ্যতার সমাজ--- ঝেঁটিয়ে দূর করো
ধর্ম শিক্ষা বিস্তার করেও আজিকে যুদ্ধ করে মরো।

Sunday, April 14, 2024

আচ্ছা ভাবুন তো -- প্রণব চৌধুরী

আচ্ছা ভাবুন তো ?
প্রণব চৌধুরী
০৬, ০৪, ২০২৪,
আচ্ছা ভাবুন তো ?
মিথ্যাবাদী মিথ্যুক রা যদি,
মিছে, মিছে দেয় মিশিয়ে মিশ্রির মিশ্রনে বালি,
তবু মানুষ, ফিরে না হুঁস,
মানের মর্যাদা তে লাগিয়ে মলম,
মনের মরমের মন মন্দিরের মসনদে,
মলিন মশারি বিছিয়ে,
তারা সকলেই নতজানুতে মানসিংহ,
মনে করে মলয়ে তাদের মন্ত্র আজও মহীয়ান !

ভেবো না,
ইতিহাস কিন্তু প্রতাপাদিত্য কেই পরম পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছে পারদের উচ্চতায় ৷
পরশুরাম মাতৃহন্তা হয়েও
এই পৃথিবীকে পনেরো বার পরাস্ত করেছিল,
পুরাণের পুঁথি তাই বলে প্রতিবার,
প্রতিজ্ঞা ও প্রতিভাকে যতই পৃথক করে রাখুক না কেনো,
প্রতিবাদী দের প্রতিশ্রুতির প্রখরতার প্রতিবিম্ব,
প্রাণ প্রতিষ্ঠা করেছে যে প্রকোষ্ঠে প্রকোষ্ঠে,
ওহে প্রতিকুর,
আনতে পারবে না প্রলয় এই মিথ্যার প্রাচীর কে ভেঙ্গে দিয়ে ?
পরিজনরা যে আজ পর্যুদস্ত,
প্রতীক্ষায় পলে পলে ৷

আগুনের অগ্নিত্ব যদি হয় অচ্ছুত,
আশমানে অবলোকনে অশণী তবে,
আগামীতে আগাম বার্তার আগমনের আগমনি গানে আনবে না অসীমের আহ্বান ?
অপমানের অন্ন তো আসন্ন তে হবে কি অবগাহন ?
কি বলো অনির্বাণ ?
আসলে,
আশার অসিতে আলস্যের অবশতা নয় তো অমলিন আজ ?
আকাশকুসুমের ধরেছে আজ অনিদ্রা,
তাই আজ কে তার অতীত মনে হয় ৷
অবণী তো রীতিমত অবাক,
বলে কোনটা অভিনয়,
কোনটা আসল,
অভিনেতা রা যখন নেতার আসনের অভিপ্রায়ে আসীন |

সত্যি সেলুকাস !
সবে তো সকাল,
শত সহশ্র অর্কবিন্দু যখন হবে সপ্রতিভ,
তখন সর্যের ফুলে সখা ও সখীদ্বয় ঝুলন যাত্রায় ঝুলবে না তো  ?
সবিশেষে সর্বনাশ তার সলতে গুটিয়ে নিয়ে,
সবকিছু শুকিয়ে,
সেলুট মেরে বলবে না তো,
সবিণয়ে নিবেদন,
সত্যি সত্যি সেলুকাস,
এইটাই তো স্বাধীন ভারত ৷

ক্ষুদ্র বিন্দু -- চন্দনা কুন্ডু

 ক্ষুদ্র বিন্দু
চন্দনা কুন্ডু 
১০/০৪/২০২৪
কী আছে,  ঠাকুর ‌ তোমার হাতের মুঠোয় !
হৃদয়ে আমার ডানা ভাঙার ছটফটানি ।
এত‌ সুখ আছে, এত আনন্দ ‌আছে 
সে আনন্দ চিরস্থায়ী নয়, সব অস্থায়ী সঞ্চয় ।
তবু যে সুখের পনে মন যেতে চায় !
হাজার প্রশ্নের ভিড়ে লেখা দয়াল তোমার সুমুখে ।
কি, আছে তোমার মুঠো করা‌ হাতে ?
ঠিক যেন তীর ছুঁড়ে পথের গভীরে যাওয়া আসা ।
একের পর এক অসংখ্যবার, এরই উত্তর হাতড়াই ।
সকাল সন্ধ্যা পথের পথিক হব ক্লান্তিহীন পায়ে,
আবার তোমার সঙ্গী হব সূর্য অস্ত গেলে 
আত্মদীপ আলোকিত করো, অন্ধকার দূরে রেখে ।
কী আছে তোমার মুঠোয় ! সযতনে রাখো ধরে বুকে
মন করে তোলপাড়,হাজার বছরের অপেক্ষা ।
বিমূর্ত উজ্জ্বলজ্যোতি, এ তোমারই আভা 
ধীরে ধীরে সেই অনির্বাণ দ্যুতির প্রকাশ ।
কোথা থেকে এত আলোয় উদয় হয়
কান্নাভেজা কন্ঠে অস্ফুট উচ্চারণে আমার  প্রার্থনা 
ওই হাতের মুঠো থেকে এক মুঠো আশীর্বাদ দিও প্রভু ।

ভিন্ন তাল -- কথাবিচিত্রিক অসীম

ভিন্ন তাল! 
কথাবিচিত্রক অসীম
১১/৪/২০২৪
নিপু মালাকার! 
মনে প্রাণে ভালবেসে, 
রোমাঞ্চিত হয়ে শেষে!
তপস্যার গিরি খাঁদে,
নিজেকে বন্দী করে নিয়েছে,
নিয়তির সংশোধনে। 
দাড়ি চুলে খুর না তুলে,
ধুতি পড়ে, সাদা কাপড়, 
জরায় সারা গায়ে! 
ভালোবাসার পূজা, 
করে গেছে আজীবন মন মন্দিরে। 
ধূপের মতন জ্বলে পুড়ে ক্ষয়ে ক্ষয়ে,
একলা একাকী! 
নিঃশেষ হয়ে গেছে, 
নিশ্চিহ্নের চির বিদায়ে।
মলিনা থেকে গেছে আজো।।
মালবিকা,- হলো বিধবা! 
শুভ পরিণয় ঘটেছিল, 
ভালোবাসার প্রেমিকের সাথে।
খ্রিস্টের ব্রত কথা টেনে নেয়, 
জীবন যুদ্ধের পরিনামে।
"ঈশ্বর যা যোগ করে, 
মনুষ্য তা বিয়োগ না করুক "
নিয়তির কথা সুরে, 
চিরদিন চিরদূরে! 
বিয়োগের বসবাসের থেকে গেছে, 
বাকি জীবন একলা,- মালবিকা।।
এখন প্রেম আর জীবন সঙ্গী, 
মডেল অনুপাতে আপডেট হয়ে চলে,
খেয়াল খুশিতে হয় পরিবর্তন! 
আর যদি নিয়তির বিষাদ প্রবণতা, 
কখনো কাউকে তুলে নেই চিরতরে! 
বাকিজন একদন্ড অপেক্ষা করে না,
স্মৃতিগুলো মুছে ফেলে, 
আগুনেতে জ্বালায়ে ছাইয়ে।
নতুন বন্ধনের আবদ্ধ হতে,
কৃপণতা করে না সময় বিনষ্টতায়। 
এখন প্রেম বুঝি জোয়ার ভাটার,
অনুকূলে হয়েছে বিলীন।
শোক তাপ বলে কিছু নেই,
এখন শুধু আবেগের দৈন্যতায়, 
আয়োজনে পালনের খেলা।।
স্মৃতি হ্রাস।

একটুখানি ছায়া -- কল্যাণী ব্যানার্জি

একটু খানি ছায়া
কল্যানী ব্যানার্জ্জী 
১০.৪.২৪.
একটু ছায়া দেবে আমায়
ভীষণ ক্লান্ত আমি।
ক্লান্ত স্থলিত চরণ আর চলতে চায়না
একটু ছায়া চাই ;শান্তির ছায়া।
জীবনের সারাটা পথ ;তপ্ত রোদ্দুরে শুধু ছুটে গেছি
এমন একটু ছায়া পাইনি ;যার নিচে দাঁড়িয়ে একটু
বিশ্রাম নেব।
কোথায় গেল সেই পাতা ভরা গাছগুলো
যাদের ছায়ায় দাঁড়িয়ে একটু শান্তি পেতাম।
নেই ;নেই জীবনেও নেই সেই মহীরুহ গুলি
ছায়ার আশ্রয় নিয়ে দাঁড়িয়ে
পথের দু পাশেও নেই একটু বিশ্রাম নেবার মতো ছায়া।
পুরো রাস্তাটা অজগরের পিঠের মতো
রোদ্দুরে চক চক করছে।
পুড়িয়ে দিচ্ছে পথচারীদের
নেই একটু ছায়া ঘেরা বিশ্রামের জায়গা।
তাইতো মানুষ এখন এই তপ্ত জীবনে বা তপ্ত পথে
চলতে চলতে একটু ছায়া না পেয়ে ;
মুখ থুবড়ে পড়ছে আর উঠতে পারছেনা
হসপিটালে তাদের মৃত বলে ঘোষণা করছে।
দেবে একটু ছায়া? বড় প্রয়োজন চলতে চলতে
একটু ছায়ার নিচে বিশ্রামের।
জীবনের পথেই হোক বা চলার পথে
বড় প্রয়োজন একটু শান্তির ছায়া।

Sunday, March 31, 2024

প্রতিবাদী শব্দেরা তালাবন্ধ -- পরেশ চন্দ্র সরকার।

প্রতিবাদী শব্দেরা তালাবন্ধ
পরেশ চন্দ্র সরকার
২২_০৩_২০২৪_ইং

গতানুগতিক সৃজনীশক্তিরা মেরুদণ্ডে অন্ধ
প্রতিবাদী শব্দেরা 'বধির' জেলে তালাবন্ধ।

এক অর্থে বাহাদুরি
চলছে তাই সবসময়ই জ্ঞানদার জ্ঞান বাণী।
তুমি অচ্ছুৎ, ভীতু, কমজুরি,
কিছু ব'লেছো তো ঠুকে দেবো মানহানি।

ঝুঁকে যাওয়া বর্তমান
বিনষ্টের শেষ সোপানে দাঁড়িয়ে ঠায়,
এদের মধ্যে প্রচুর আছে শক্তিমান
অথচ একদা দাপুটে সর্বশক্তি গেছে কোমায়।

কে আর জড়াতে চায়
মৃত্যু থেকে উটকো যাবতীয় ঝামেলায়,
বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধার দায়
আমার নয় অন্যের, কেনো শুধু জড়ানো মামলায়?

এসময় আয়েসি, আয়েস ক'রার
ঘুরে বেড়াচ্ছি, জ্ঞান দিচ্ছি, খাচ্ছি ঘুমোচ্ছি দিব্যি!
মূষিক উপাধি খারাপ কিছু কি জীবনধারার?
মার্জার থাকুক স্বভাবসিদ্ধ, আমি তো আছি হেব্বি!

জীবনতরীর মাঝি -- দেব মন্ডল

  জীবনতরীর মাঝি
  দেব মন্ডল 
  ২২/০৩/২০২৪
কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে, জীবন তরী দিক হারিয়ে লাগছে  কোন কিনারায়। 
এখন আকাশে মেঘ আছে, কবে আবার সূর্য উঠবে আমি কিন্তু জানি না। 
মাঝির হাতে বৈঠা দড়ি, যেমন চালায় তেমন চলি। 
কালো মেয়ে নৃত্য করে তাহার তালে জগত মাতে। 
সে যেমন চালায় তেমনি চলি, মা যে আমার রক্ষা কালি। 
সবাই বলে মাটির কালি আমি দেখি সে জীবন তরীর বড় মাঝি। 
চালাচ্ছে নৌকা দিবারাত্রি ভীষণ ভালো কলাকৌশালি। 
কারও ডুবিয়ে বাঁচায়, ডুবিয়ে মারে, পাপের ক্ষমা নাই করে। 
সন্তানের মতো রাখেন আগলে, খ্যাত তিনি জগত মাতা নামে। 
কালো দিয়ে হয় না বিচার, মায়ের কাছে রূপের  আছে কি  দাম। 
বিশ্বাস হারিয়ে ভুল নদীতে তুলেছিলাম  পাল। 
মাঝ নদাীতে ডুবে গেলো আমার সোনার নাও।
সে যেমনে নাচায় তেমনি নাচি অসৎতের সব সঙ্গ ছাড়ি, হিংসাবৃত্তি দূরে ফেলে, সকল ধর্ম সমান দেখে সামনে আগাই পা।  
ভাবি এখন, মানুষ আমি, মানুষের মাঝে বাঁচতে হবে, প্রকৃতিকে ভালোবাসতে হবে। 
ফিরতে হবে  বাংলার বুকে, রাখতে হবে শ্যামনগর, সাতক্ষীরার মান। 
তবেই জন্ম সার্থক হবে আমার।

খেলাঘর -- তপন চট্টোপাধ্যায়

খেলাঘর 
তপন চট্টোপাধ্যায় 
28.03.24   
    
 কতো কাল পর দেখলাম তোমার মুখ ,       
মেঘে ঢাকা শীর্ণ চাঁদের মতো নিস্প্রভ,
অঘ্রাণের ফসল কাটা মাঠের মতো রিক্ত,..                      অশ্বত্থের ডালে বসা রাতের আঁধার মাখা 
সাথীহারা পাখিটির বিহ্বল চোখের মতো ছিল 
তোমার চোখ ,মৃত নক্ষত্রের মতো আলোহীন শীতল,নিস্তেজ...,    
দেখলাম ব্যস্ততম শহরের চলমান জনতার স্রোতের মাঝে তুমি একাকিনী নিঃসঙ্গ বসে আছ যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে,                                        
তোমার বিষণ্ণ মুখে দেখি  দীর্ঘ ক্লান্তির ছায়া--  
আষাঢ়ের শেষ বিকেলের কাজল কালো মেঘের মতো... মুখ মন্ডলে  এখনো লেগে আছে উৎকণ্ঠার  প্রলেপ , উপেক্ষা নয় আজ আর, হা-হুতোশ করারও কিছু নেই তবুও এক পরম অনুকম্পায় চোখের কোণ ভিজে উঠেছে  নিজের অজান্তেই ...                                        এরকমই হয়তো হবার ছিল , 
অদৃষ্টের কী নির্মম  পরিহাস!   
এই ব্যস্ততার জন অরণ্যে, দুই প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা দু'জন  মানুষ অথচ যেন  কতো আলোকবর্ষ দূরে আছি , আজ আর কেউ কারোর খোঁজ রাখে না ,
অথচ একদিন  ...,  থাক সে কথা,
নিষ্ঠুর সময়ের সংঘাতে পৃথিবীর ভাঙাগড়ার খেলায় এমনিভাবেই হয়তো ভেঙে যায় কারো কারোর জীবনের খেলাঘর!!

Sunday, March 17, 2024

তোমার নামে বসন্ত -- জয়া গোস্বামী


তোমার নামে বসন্ত
জয়া গোস্বামী
০৭-০৩-২০২৪
তোমার নামেই প্রতি বার যেন এ ঊষর মনে ,
বাসন্তিকা আসে বারেবারে কৃষ্ণচূড়া বনে।
তোমার জন্য চুপকথারা আবার কথা কয়,
কৃষ্ণচূড়া ফুলের রেণু ওদের অঙ্গে লেগে রয়। 

যৌবনের উদ্দামতায় বয়ে এসেছে  বসন্ত,
তোমাকে দেখে হারিয়ে ফেলি আমি আদি অন্ত।
মন-প্রাণ কেড়ে নেওয়া এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত, 
কৃষ্ণচূড়া ফুলে কেশ সজ্জিত  মন কেন তবে অশান্ত?

তোমার জন্য সেজেছি আমি অপরূপার বেশে,
জোছনার ঝরনা ধারায় চন্দ্রিমা  দেখে আজ হাসে।
কবির গানে বসন্ত ধারায় ফিরে নিজেই আসে,
ধ্বনি ওঠে"এসো হে এসো হে" বসন্ত দখিনা বাতাসে।

এই আনমনা মন, মনের ভেতর  উঠেছে তরঙ্গ,
বাসন্তিকার প্রেমে গোধূলির রঙে দেখি কতোই রঙ্গ। 
তোমার জন্য  এনেছি আবির বাসন্তিকার থেকে,
যদি তোমার জন্য বসন্ত আসে কোকিলের ডাকে।

তোমার জন্য পুষ্পকাননে ভ্রমরের  সকালে গুঞ্জন,
প্রিয়তম বসন্তে করবো কেন বলো মানভঞ্জন ?
নব পল্লবে বৃক্ষরাজি আবার হয়েছে  আচ্ছাদিত, 
ঝরা পাতারা ঝরে আজ দেখো ভূমিতে শায়িত। 

তোমার জন্য তন্দ্রার ঘোর কেটেছে নিশীথ রাতে,
বাসন্তিকার  উষ্ণতা ছোঁয়া তোমার থেকে পেতে।
আমি তো দুরন্ত ফাল্গুন গোটা গায়ে তোমার পরশ মাখি,
কৃষ্ণচূড়া বনে কাঁদে কোকিল তাকে কোথায় রাখি।

Saturday, March 16, 2024

বসন্ত যাপন -- উজ্জ্বল বিশ্বাস

বসন্ত যাপন
উজ্জ্বল বিশ্বাস
 ১৬  / ০৩ / ২০২৪
বসন্ত কে ঘিরে ভাষার শরীরে
কবিরা মাখায় রঙ,
আঙিনার মাঝে নব প্রেম রাজে
শালিকের সমাগম ।

মধুর বাঁশরী কানাইয়া বাজায়
আজও রাধিকার তরে,
রঙের মাধুরী হৃদয়ে চাতুরী
সখারা ঘিরে ধরে ।

প্রেম আলাপন চকিত নয়ন
হৃদয় ফুটন্ত জুঁই,
ভালোবাসি তারে প্রেম বাহুডোরে
প্রেমের পরশে ছুঁই ।

বসন্তের ক্ষণে প্রেমিকের মনে
প্রেমের দোলা লাগে,
আম্র মুকুলের মাতালি ঘ্রাণে
হৃদয়ে বাসনা জাগে ।

রঙের ফাগুনে প্রেমিক যতনে
রাঙায় হৃদয় মন,
ভালোবাসা যার হৃদয় জুড়ে
সে বোঝে এ যতন  ।

নবপত্রাঞ্জলি প্রেমিকের বুলি
সবুজে প্রাণবন্ত,
হৃদয় কানন ফুল সমাগম
প্রেমিক সেজেছে সন্ত  ।

যা কিছু তার আছে আপনার
উজাড় করে দিতে চায়,
দেওয়ার মাঝে সব সুখ তার
হৃদয় খুঁজে পায়  ।

আমিও যতনে প্রেমিকের মনের
মাধুরী কুড়ায়ে আজি,
বসন্ত যাপনে ফাগুনের ক্ষণে
ভরিলাম কবিতার সাজি ।

Wednesday, March 6, 2024

অমর আমার একুশ -- সুখের ঘোড়ই

অমর  আমার একুশ 
সুখেন্দু  ঘোড়ই 
২১/২/২০২৪ 
মিষ্টি ছন্দ বৃষ্টি গন্ধ শুদ্ধ মুগ্ধ ভরসা 
মুক্তি শক্তি কৃষ্টি সৃষ্টি বাংলা মোদের মাতৃভাষা । 
বাংলা আমার বুকের ভাষা আমার মায়ের স্নেহ 
মরণ বাঁচন জীবন যাপন ভুলিতে পারিনা কেহ । 
এপারে গঙ্গা ওপারে পদ্মা দুই বাংলার টান 
নজরুল সুরে মোরা ভাই ভাই হিন্দু- মুসলমান । 
রিক্ত হস্ত সিক্ত করে ভাষার সুধা ধারায় 
তীব্র প্রতিবাদের কথায় শত্রু তাহার শক্তি হারায় । 
গভীর দুখে সুখের বাণী শুনি হৃদে কানাকানি 
বাংলা আমার মায়ের ছোঁয়া যতই করো হানাহানি । 
সেই ভাষাকে রক্ষার তরে দামাল ছেলেরা বিদ্রোহ করে 
শতবাধা উপেক্ষা করে মনে অদম্য সাহস ভরে । 
বাংলা মোদের মাতৃভাষা তাই হবে সে "রাষ্ট্রভাষা"
ফাগুন রাতে দামাল মাতে যতই হোক সর্বনাশা । 
একুশে ফেব্রুয়ারী হয় জোরদারী বাংলা স্বীকৃতি আন্দোলন 
অন্ধ বিচারে নির্বিচারে সিপাহী করিল গুলি বর্ষণ । 
কৃষ্ণচূড়া রঙে রাঙিল ভাসিয়া রাস্তা তাজা খুন 
করুণ কান্নায় ভোলা নাহি যায় সেই আটই ফাগুন । 
রক্ত বৃষ্টি ঝরিল ধরায় সালাম বরকত নিধনে 
রসিক জব্বার সফিক সাথে যায়না দেখা নয়নে । 
জ্বলিল আগুন চোখে মুখে সজন হারা ক্রন্দনে 
শহর নগর গ্রাম প্রান্তর ন্যায় অধিকার আন্দোলনে । 
শহীদ তোমায় শ্রদ্ধা জানায় ঢাকা কলকাতা পাশাপাশি 
গাহে"আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি" ।।

Thursday, February 1, 2024

বিকেলের কান্না -- প্রদীপ কুমার বর

 বিকেলের কান্না
 প্রদীপ কুমার বর
 ০৬/০১/২০২৪


বিষণ্ণ বিকেল চেষ্টা করে খুঁজে পেতে
সকালের এক গুচ্ছ গোলাপের রং!
ইচ্ছে ছিল দিগন্তের নীল ক্যানভাসে,
ছোট্ট মৌটুসীর পাখনায় আঁকি
শান্তির এক পৃথিবী! প্রস্ফুটিত কুসুমের
মিষ্টি ইশারায় মধু-মক্ষিকার অবাধ বিচরণ;
দোয়েল,শ্যামা, কোকিলের মুক্তির মন্ত্র,
যন্ত্র সভ্যতার হাল হকিকত ছেড়ে
শ্যামলিমা প্রকৃতি-মায়ের সকালের ছবি!
সময় শোনে না বারণ,মারণ ব্যাধির 
কঠিন কলম বাধ্য করে আঁকতে হবে
 অন্য কোনো ছবি!

আঁকি, দেবদারু'র 
ডানা কাটার নির্বাক যন্ত্রণা, গন্ধহীন পলাশের অস্ফুট বেদনা,
সাগর কূলে আছড়ে পড়া তরঙ্গের
সকরুণ কান্না!
প্রাচীন জনজাতির অবলুপ্তির কাহিনী,
লুপ্তপ্রায় বন্য পাখপাখালির মৃত্যুরহস্য!

নিম্নচাপ,পার্শ্ব চাপ ক্রমশ মারে টান --
সন্ধ্যার শীতল দেশে! ফেঁসে যাওয়া
টায়ার পারেনা তার উর্দ্ধাংশের  
ভার‌ সহ্য করতে। সকালের সজীবতা 
দিয়েছে হারিয়ে হেলায়। সে যেন
এক বয়স! মানে না বাঁধন,
দূরন্ত ঘূর্ণিঝড়ের দাপুটে চেহারা
হুড়মুড় করে দেয় গুঁড়িয়ে গোপনীয়তার
সমস্ত গ্যালারি।খরচের বহর শহর থেকে দূরে
সরিয়ে দেয় শনিবারের বারবেলায়!
হায়! শিল্পী, তোমার সৃষ্টি আজ
 সুখের উল্লাস হারিয়ে গোধূলির
রক্ত মিশ্রিত অশ্রুজলে আঁকে
   নিরুত্তাপের নষ্টালজিক 
ধূসর পাণ্ডুলিপি।

অন্ধকারের আত্মাহুতি -- প্রদীপ কুমার বর

 অন্ধকারের  আত্মাহুতি
 প্রদীপ কুমার বর
 ২১/০১/২০২৪


বন্ধ্যা রাত্রির আবর্জনা ঠেলে জ্যোতির উদয়,
ইঙ্গিত দেয় অনন্ত প্রসারিত স্নিগ্ধ সামিয়ানায়
প্রতিভাত হবে উষ্ণতার জীবন্ত কিংবদন্তি।
ইতিউতি অন্ধত্বের প্রগাঢ় চুম্বন..
মিথ্যে আস্ফালনের ভোঁতা অস্ত্র মুখ লুকায়
চরম শীতলতার গহন অন্ধকারে!
অঙ্গ প্রত্যঙ্গে বিষাক্ত কীট গোপনে দংশায়,
নেশায় পেশায় বীরত্বের দাবিদার
অহংবোধের সমাধিস্থলে ঢাকা পড়ে।

রাকার নিন্দায় রক্তবীজের বংশ,
ধ্বংসের প্রকট চক্রান্ত করেও‌ ব্যর্থ।
অনর্থক ব্যস্ততা ত্রস্ত হরিণীর পিছনে ধাবমান,
কুস্তির প্যাঁচে ধাঁধা লাগে রশির  বাইরে থাকা
উৎসুক জনতার, বহুল চর্বিত চতুরতা
চঞ্চলের অঞ্চল ছেড়ে বঞ্চনার বেসাতি লয়ে
ধুঁকে মরে শুকতারার বিপরীতে!
আজানুলম্বিত হস্ত যুগল উচ্ছৃঙ্খলতার 
ডিগ্রি অর্জনে সক্ষম, কিন্তু শৃঙ্খলার শিকলে 
বন্দী হতে বুদ্ধির পাঠশালায় প্রয়োজন 
বোধোদয়ের শিক্ষা।

দীক্ষা গ্রহণকারীর হম্বিতম্বি রূপ --
হাসির উদ্রেক ঘটায় অন্ত্যোদয় শ্রেণীর! 
অন্ত্যে উদয় কি আদি সে বিচারের ভার
আগত দিনমণির,যার এক হস্তে কমণ্ডলু ,
অপরাপর হস্তে চক্র,মুদগর, অশান্ত অশনি
ও বরাভয় ! বিষয়ের বিভীষিকা 
যার কলমের কালি --সে মহাজন 
নিন্দুকের গালি, তালি দিয়ে উড়িয়ে দেয়
দিনের বিচ্ছিন্নতাবাদী লোভাতুর রাত্রির 
পরাকাষ্ঠা থেকে। 

শূন্য আরণ্যক জীবন 
পূর্ণতার কোলাহলে মুখরিত হয়ে ওঠে
লাল, নীল , সবুজের মুক্ত আবাসনে।
পিছুটান ক্ষণিকের অতিথি হিসেবে
হৃদয় তরঙ্গে ছোট্ট একটি ঢিল ছুঁড়ে মারে।
সমুদ্র তট-সদৃশ্য দৃশ্যমান মরণ আর্তনাদ
চির প্রস্থানের বেদি মূলে আছড়ে পড়ে।
ভবিতব্য হয়তো তাই, রাত্রির অনন্ত সলিলে
শোক মালার বিদায় লগ্নে নব রূপে 
আবির্ভূত নিত্য নতুন বেশে নবীন সূর্য।

বধ্যভূমির ত্রাতা হয়ে -- বিজয়া মিশ্র

 বধ্যভূমির ত্রাতা হয়ে
 বিজয়া মিশ্র
 ২৩.০১.২০২৪


জলন্ত আগ্নেয়গিরির মতোই 
একদা আছড়ে পড়েছিলে তুমি নেতাজী সুভাষ
ঘুমন্ত পরপদানত জাতির শিয়রে,
অচিরেই শব্দে বাক্যে উচ্চারণে 
আর সাংগঠনিক দক্ষতায়
তোমায় ঘিরে নির্মিত হয়েছিল
আকাশচুম্বী প্রত্যাশা।
দুর্বলতার ক্ষয়রোগ নিমেষে বিলীন হয়ে
দুর্ভেদী মানববন্ধন গড়ে উঠেছিল প্রত্যয়ে প্রতিজ্ঞায়
পরপদলেহনের অসুখ ভুলে।
তুমি প্রমাণ করেছিলে ন্যায়ের শক্তি কী দুর্ণিবার...
তাইতো আসমুদ্র হিমাচল নয় শুধু
বিদেশের মাটিতেও সাগ্ৰহে অভিনন্দিত হলে অচিরেই।
তাইতো তোমার সাম্যের ইঙ্গিতেই সংগ্ৰামী ঐক্য
কী নিপুণ শৃঙ্খলায় সর্বস্ব বিলিয়ে দিতে উন্মুখ হয়েছিল! 
সে প্রত্যয়ের কেবল জন্মদিন থাকে
কেবল অপেক্ষা থাকে শতবার পুনর্বার প্রতিপলে...
একটি সে নাম অনিবার্য হয়ে ওঠে
দুর্বহ সমাজ নামক জগদ্দলটা
আবার নবসজ্জার গড়ার প্রয়োজনে।
আশাহীন আলোকস্পর্শহীন আদিমতার দুচোখে
প্রজ্ঞাগ্নি প্রজ্জলনের প্রয়োজনে
নামের মন্ত্রোচ্চারণে শুদ্ধ হোক নিস্পন্দ এ বধ্যভূমি