Friday, July 13, 2018

বিষাক্ত প্রেম



বিষ-ছায়া 



মাটিতে বিষাক্ত দূষণ
ডানা মেলে উড়ে চলে জলীয় বাষ্প ভরা আকাশ
তার ছায়া ঘনায় দুচোঁখ জুড়ে
কবেকার কাঙ্খিত প্রেম
নিমতেতো হয়

মাটিই তো চেয়েছিল সে
ইচ্ছে ছিল ভালোবাসার কুঁড়ি ফুটিয়ে করবে বাগান
অসংখ্য ইচ্ছাকীট গুটিপোকা থেকে
দেখেছিল কিভাবে শুঁয়োপোকা হয়
আশা ছিল - এইবার - প্রজাপতি হবে

মাটিতে বিষ - তাই
হারালো সবুজ - অবুঝ
কী দোষ যে ছিল তার

Tuesday, July 10, 2018

অস্তিত্ব


অস্তিত্ব




বাঁধ বাঁধে , বাঁধ ভাঙে বেপথু জীবন
আকাশে টাটটু ছোটে জলন্ধর মেঘ
আরো জোড়ে ছুটে চলা - পিচ্ছিল পথ
বীজের ভেতর অসীম শৈত্যের শপথ
বীজ ভাঙে বেড়ে ওঠে অঙকুর সজীব
আবার সমান্তরালে জড় আর জীব
আবার বাঁধ ভাঙে , বয়ে চলে জীবন নিঃসীম
বীজের ভেতরে জাগে হাজার শপথ

Sunday, July 8, 2018

তোমার প্রতীক্ষায় নির্বাসন


তোমার প্রতীক্ষায় নির্বাসন



স্বেচ্ছায় করে নেব আলিঙ্গন তোমায়
তবু যদি
মনে হয়
জীবন আশ্লেষে

বড় মধুর এ জীবন
একেঁ দিও অধরে একটি শুধু আশিষচুম্বন
তারপর
হেমন্তের ঝরা পাতা হিমেল বাতাসে উড়ে
যাবে জানি নিরুদ্দেশের পথে
নব প্রেম সন্ধানে
ধানের গুচ্ছ যেমন একটু করে সোনালি হয়
সোনা রঙে রাঙাবে তেমন তোমার সম্মোহন
কাঁচা রোদ ছড়িয়ে দেওয়া সোনালী ঊষা
আবার অনাবিল হবে
আমি নতুন পাতাঝরার দেশে
আবার মাতব খেলায় কুহেলিকা সাথে
তোমার প্রতীক্ষায় ।

দ্বন্দ্ব

দ্বন্দ্ব


ইচ্ছেটাতো আকাশ ছোয়া
                    আকাশ আবার অন্তহীন
ইচ্ছেরা তাই টুকরো হয়ে
                   মেঘে মেঘে হয় বিলীন ।

কখনো কাজল কালো মেঘ
                        বল্গাহারা অশ্ব এক
আকাশটাকে দুভাগ করে
                  ছড়িয়ে পরে দিগ্বিদিক ।

পেঁজাতুলোর স্নিগ্ধ ছটাও
               ছড়িয়ে থাকে আকাশ জুড়ে
হালকা নরম স্পর্শ দিয়ে
                দিব্যি কেমন আপন করে ।

আপন করে আপন করে
                        ইচ্ছে শুধু আপন হতে
আকাশটাকে নামিয়ে এনে
                   জমির সাথে মিলিয়ে দিতে ।

ইচ্ছে এমন নদীর বেগে
                          এগিয়ে চলে যেথায় সাগর
ছন্দবিহীন লুপ্তপ্রায়
                                বা দূরন্ত , নীল উজাগর ।

সাধ্য তবু সঙ্গীহারা 
                                       সাধ হৃদয়ে চির অমল 
মিলবে না হায় , কোনদিনও
                                         কারন তারা সমান্তরাল ।

Saturday, July 7, 2018

তোমার জন্য ছন্দ

তোমার জন্য ছন্দ


ছন্দ , তোমার পায়ের নুপূর
রূদ্ধ কেন আজ
ছন্দ আমার রাজেশ্বরী
কোথায় মাথার তাজ
কোথায় তোমার খিলখিলানো
খরস্রোতা হাসি
উদাস পথিক স্তব্ধ যে আজ
হাসে না তার বাঁশি
ছন্দ তোমার দুচোখ বেয়ে
ঝরছে অশ্রুধারা
আঃ ! কি বেদনায় আকুল , হৃদয় 
হল প্রাণহারা
ছন্দ , তোমার পাতায় পাতায়
বেওয়ারিশ লাশ
ফুলের শিশু ঘুমিয়ে আছে
স্বজনহারা পাশ
ঘুম ভাঙে না , ঘুম ভাঙে না
হায় , নব ঈশ্বর
সোহাগ আমার ডুকরে কাঁদে
ঝরবে কার ওপর
ছন্দরে তোর রুক্ষ কেশে
জটাজালের ঘোর
অমাবস্যার আঁধার ঘনায়
স্নিগ্ধ মুখে তোর
প্রাণের মাঝে ছন্দ আমার 
মনের মাঝেও তুই
তোর ডাকেতেই ঘুম ভাঙতো
তোর বিহনে শুই
ঘুম আসেনা বিরহে তোর
মাথায় কঠোর আগ
বর্ষা ঘনায় বর্ষা বিদায়
বিদায় নিয়েছে ফাগ
গ্রীষ্ম প্রখর সারা দুপুর
কি অসহ্য তাত
এসো হে ছন্দ , চিরানন্দ
হাতে রাখ তোর হাত
আবার আমায় মানুষ করো
ভাঙো কঠিন দ্বার
প্রাণের বন্যায় ভাসিয়ে চলো
স্রোত দু্র্নিবার ।

Friday, July 6, 2018

গল্প - ভূত না ভৌতিক

  
গল্প - ভূত না ভৌতিক


     


কদিন ধরেই ভাবছি একটা গল্প লিখব । বেশ কতগুলি প্লট মাথার মধ্যে ঘুরঘুর করছে । সেদিন আষাঢ়ের বর্ষণমুখর সন্ধ্যায় সহধর্মিনীর হাতের সুস্বাদু তেলেভাজার সঙ্গে সুপেয় চা পান করে যেইমাত্র খাতাকলম গুছিয়ে বসেছি অমনি আমার সাত বছরের কন্যারত্নটি কোথা থেকে ছুটে এসে বলল , ' কি করবে , বাপি , খাতাকলম দিয়ে ? ' আমি ওর গালটা আস্তে করে টিপে দিয়ে বললাম , ' গল্প লিখব মাগো । ' 'কিসের গল্প বাপি ? ভূতের ? ' এইটুকু মেয়ের মাথায় ভূতের প্রসঙ্গ কিকরে এল জানি না । তবে আমি মনে মনে ভাবলাম আজকের এই আবহাওয়া ভূতের গল্প লেখা ও শোনার  জন্য  সত্যিই খুব উপযোগী বটে । 

             কিন্তু দুপাতা ইংরেজি পড়া এবং একটি নামজাদা প্রাইভেট কোম্পানীর উচ্চপদে কর্মরত অফিসার হয়ে এই একবিংশ শতাব্দীতে দাঁড়িয়ে কিকরে আমি ভূতের অস্তিত্বে বিশ্বাস করি । তাই হেসে বললাম , ' না মা , ভূতের গল্প নয় , আর ভূত বলে কিছু আছে নাকি ? ' যেই না বলা আর অমনি কোথা থেকে খুক খুকে কাসির আওয়াজ হল আর সঙ্গে সঙ্গে পাওয়ার অফ হয়ে গেল । সেই নিকষ কালো অন্ধকারে মনে হল কেউ যেন আমার গালটা আলতো করে ছুয়ে গেল । মাত্র একটা মুহূর্ত । এক ঝলক ঠান্ডা হাওয়ায় আমাকে যেন কাঁপিয়ে গিয়ে গেল । ভাবলাম হয়ত মেয়ের মা অন্ধকারে হাতরে হাতরে এদিকে আসতে  গিয়ে আমার গালে ছোয়া লেগে গেছে। মোবাইলটাও খুঁজে পাচ্ছিনা যে জ্বেলে কিছুটা অন্ধকার তাড়াবো । কিন্তু গিন্নীর কোনো সাড়া না পেয়ে উচ্চস্বরে ডেকেই ফেললাম । আর তক্ষুনি পাওয়ার চলে এল । দেখি গিন্নীও রান্নাঘর থেকে আঁচলে হাত মুছতে মুছতে বের হয়ে আসছে ।  কিছুটা দ্বিধা নিয়ে বললাম , ' এইতো এদিকে এলে আবার কখন রান্নাঘরে গেলে । 'সে অবাক হয়ে বলল , ' আমি আবার কখন এদিকে এলাম ? সেই  থেকে তো রান্না ঘরেই ছিলাম । ভর সন্ধ্যেবেলা ভূত দেখেছ বোধহয় ।' ' অবাক হয়ে মেয়ের দিকে তাকালাম । সেও দেখি আমার দিকেই তাকিয়ে আছে । কিছু একটা হয়েছে ভেবে জানতে চাইল , ' কি হয়েছে বাপি ? ' আমি এ কথার কোনো জবাব দিতে পারলাম না । কেননা অনুভূতিটা তখন আমার মেরুদন্ড বেয়ে নামতে শুরু করেছে ।

Wednesday, July 4, 2018

কান্না ভেজা বিকেল



কান্না ভেজা বিকেল 


কান্না ছাড়া আর কি আছে দেবার
কান্না আম়ার উজান টানে বয়
কান্না ভেজা ধূসর পৃথিবী আমার
অবহেলায় আরো ধূসর হয়

সোনাঝরা সেই শান্ত বিকেলবেলা
হঠাত্ করে কালো মেঘের মোড়ক
দমকা হাওয়ায় ওলট পালট সব
তোমার চোঁখে বিদ্যুতের ঝলক

প্রশ্ন যখন অধিকারের হয়
সব ঠিকানা নিমেষে মিলায়
অবাক চোখে দেখি বিশ্বখানা
প্রেম আমার মরিচীকা হয় ।

Tuesday, July 3, 2018

আলো-আঁধারি


আলো-আঁধারি



আমার আকাশে আজ ঘন কালো মেঘ
একলাই বয়ে চলি নিঃশব্দ ভার
গোধুলি আলোর বিকেল তোমাকে দিলাম
নিলাম জলছবি , আবছায়া আর ঘষাকাঁচ

রামধনু রঙে আঁকি অপার সুখ
মোহময় প্যাষ্টেলও হার মানে তাতে
জানালায় ঝুলে থাকা একখন্ড বিকেল
মনের চোরাপথে উঁকি দিয়ে যায়

মেঘ ভাসে , রোদ হাসে আলো - ছায়ার খেলায় ।

Monday, July 2, 2018

হাতছানি

হাতছানি





মাঝরাতে ঘুম ভাঙে , গোঙানিয়া সুর
দূরে দূরে কালপেঁচার তীক্ষ্ণ বিলাপ
রাত্রির নিস্তব্ধতা ছিন্নভিন্ন হয়
চারিদিকে সুসজ্জিত স্বপ্নবাসর
ভীমরুলের তীক্ষ্ণ দংশন হৃদয়কোনে
পথহারা সঙ্গীহারা অবলা পাখি
আতঙ্কে আতঙ্কে ফেরে বনে বনে 
ঘুমহীন ক্লান্তি নামে শরীর জুড়ে
ডানায় তার হাজার যুগের ভার
চোখে আসে অন্ধকার কুয়াশা শুধু
কোন পথে এসেছিল , যাবে কোথায় আর
অনেকদিন পায়নি সে মাটির ঘ্রাণ
কত দূর , আর কত দূর -
সুমিষ্ট আহারও যেন নিমতেতো
ময়ূরকন্ঠী আশা হাতছানি দেয় ।

Sunday, July 1, 2018

আত্মজ



আত্মজ


অন্ধকারে গুটিসুটি মেরে
কোন গহ্বরে রয়েছ আবিষ্ট , সাধনা আমার , 
তখনও বুঝিনি প্রেম , 'ভালোবাসা কারে কয়'
দিন়ভোর খড়কুটো কুড়ানোর খেলা
জমে যায় খড়কুটো , ধুলো জমে ওঠে
তখনও অপেক্ষা তোমার - প্রেম !

তারপর আসে একদিন , নক্ষত্রের দীপ্তিসম - 
নায়ক তরুন , রক্তিম রাত্রিও বিষাক্ত নীল
তবু আহ্বান , নবাগত , পূর্ণ কর
এসো সঙ্গোপনে , নিভৃতে , একান্ত আপনার ঘরে
অনুভব করি তোমায়
দিনে দিনে বেড়ে ওঠো , সাধনা আমার
তারপর - সাড়ম্বরে ঘোষনা তোমার - 
দৃপ্ত চক্ষু মেলে -
তুমি শাশ্বত সাধনার ধন
আবাল্য পরিচিত শরীরের
শুধু একটি কণা
আমার সন্তান ।।

পথহারা


পথহারা 




অনেকটা পথ পেরিয়ে এলাম
ছোট-বড় শিরা-উপশিরায় চিত্রলেখ সব
আড়ি দিয়ে গেছে আমায় এক টুকরো রোদ
অলস মধ্যাহ্ন পরে আছে নিঝুম নিরালায়
জানালায় ঝুলে আছে আস্ত বিকেল


হাতছানি দিয়ে যায় প্রজাপতির পাখা
শীত আসে শীত যায় , খড়ি ওঠা হাত
মসৃন হয়ে আসে সময়ের সাথে


নিক্তিতে ওজন করি চাওয়া-পাওয়ার
চুলচেরা বিশ্লেষণে মনের পতন
হারিয়ে গেছে কবে জলছবি দিন
দুচোঁখে বাষ্প ঘনায় , অদূর সাগর ।

Friday, June 29, 2018

অবুঝ প্রেম


অবুঝ প্রেম 


চুপিসারে বৃষ্টি নামে আমার শিরায়
অথবা অঝোরে কেঁদে চলে আমার রোমান্টিক মন
পরিষ্কার শূণ্য দেখি হৃদয়ের তলদেশ
কবিতাও শূণ্য করে চলে গেছে কবে

হাত খোঁজে হাত বাড়ায় অবুঝ হৃদয়
সেতারে ওঠে না সুর , কন্ঠে নেই গান
অনুভবে ঢেড়া মেলে প্রেমের ঘরে
আমার প্রেম এমন দিনে পাশ ফিরে শোয় ।

ভালোবাসারা কাঁদে


ভালোবাসারা  কাঁদে 



অন্ধকারের হিমকুঞ্চন গহ্বর থেকে উঠে এসে
ভালোবাসতে চেয়েছিল সে
এক আকাশ ভালোবাসা ছিল তার

হল না -
ভালোবাসারা কি এক চুম্বকটানে
পদস্খলিত হয়ে পড়ল অপাত্রে
সত্ত্বা হারালো তাই - 
জলবত্ তরলং ভালোবাসার আকার তাই অপাত্র

এখন এতে শুধুই আঁচরের দাগ আর অজস্র ফাটল
আর ফাটল বেয়ে উঁকি দেয় চীনে বট
অনাকাঙ্খিত অনধিকার প্রবেশ
তবুও দাপট তার
ভালোবাসা গুমরে গুমরে কাঁদে

তোমার অজান্তে তাই নদী কান্না হয়ে বয় ।

হারানো সুর

                                                              হারানো সুর                                                                                                                                                                                                                                                   




 মনের  পাথরে একটুখানি ক্ষয় ধরেছে  
        তাই, আজ কৃষ্ণচূড়ায় রং ধরেছে 
      রং যদি হয় কমলা লাল 
তবে বুঝি 
এ ক্ষয় চলবে অনন্তকাল 
কিংবা যদি হয় আগুন রাঙা 
মনের কোন যেন আছে 
উদাস করা গল্পখানা 
এক যে ছিল রাজকন্যে 
না,না, রাজকন্যা নয়  সে মেয়ে 
সে ছিল এক দুরন্ত বিকেল 
কখন আসে , কখন যায় 
কেউ জানে না 


তখন বুঝি সন্ধ্যা হলো 
রাত্রি নামে - রাত্রি নামে 
হারিয়ে গেলো 
আর তো তারে কেউ পেলো না

Wednesday, June 27, 2018

আরাধিকা

আরাধিকা

প্রাণের ঠাকুর রবি ঠাকুর,ভাষার ঠাকুরও তুমি
স্বপ্ন দেখিতোমার ভাষায়,জাগরণেও তুমি
তোমার কথায় হেসে উঠি আর তোমাতেই খুঁজি সুখ
একি মন্থন ! করি রোমন্থন ভুলে যাই যত দুঃখ
যতই পরি রঙীন কাজল , অলীক ফানুস ওড়াই
কুড়িয়ে পাওয়া নুড়িগুলি দিনশেষে যদি মেলাই
শূণ্য সবই,শূণ্য যে পাই,বিশ্বাসে নেই ভিত
রবি ঠাকুর,তুমি,এ কি করেছ,জীবনে তুমি কি মিথ!
তোমার পাগলা মেহের আলি এসে একবার যদি বলে
'সব ঝুট হ্যায়,তফাত্ যাওগো,তফাত্চ যাওগো চলে'
মনে হয় যেন আর জন্মেও 'ঝুট' থেকে যাব সরে
বিশ্বাস কর ঠাকুর তুমি মর্মে রয়েছি মরে
মর্মবেদনা কাকে বলি আর দিনশেষে তোমার পূজায়
আরাধনা করি - দয়া কর ঠাকুর,জাগ্রত কর চেতনায় ।