Saturday, July 6, 2024

বৃষ্টি এলো ঝেঁপে -- নিকাশ মালিক

বৃষ্টি এলো ঝেঁপে 
  নিকাশ মালিক 
   ০৫/০৭/২০২৪


সূর্য ঢেকে আঁধার আসে 
বাদল হয়েছে শুরু,
ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি পড়ে 
মেঘ করে গুরু গুরু।

সারাটা দিন মেঘলা আকাশ 
বৃষ্টি স্রোতে স্রোতে,
এমন দিনে মন ছুঁটে যায় 
একটুখানি ভিজতে।

গাছের পাতা হাওয়ায় নাচে
খুশির জোয়ারে,
হাঁসগুলো চেঁচামেচি 
 করে পুকুরে।

সাদা সাদা বক গুলো 
আকাশেতে উড়ে,
 মাছরাঙা মাছের নেশায় 
পুকুর ধারে ঘুরে।

চাঁদের দেখা পাবে না আজ
কালো মেঘের জন্য,
পেয়েছে প্রাণ এই বৃষ্টিতে 
শুকিয়ে যাওয়া অরণ্য ।

রোদেলা সকাল -- মোঃ আমিরুল ইসলাম

 রোদেলা সকাল
 মোঃ আমিরুল ইসলাম
 ০৪/০৭/২৪ ইং
আমার সারাটা সকাল তোমাকে দিলাম
তুমি এতটুকু কথা দাও আমাকে।
ভোরের আলোটুকু ডাকে ইশারায়
মিটিমিটি ফোটা ঐ কাননে।

যে তুমি আমার ছিলে হৃদয় গগনে
চাঁদ তারকার অসীম নীলিমায়,
সুরে সুরে বারে বারে গেয়ে যেতে নিরবে
সে তুমি আজ কেন এতো দূরে?
বুঝিনা কেন চায় এ পোড়া মন
কেঁদে কেঁদে ঐ দূর আকাশে।

জীবনের যে পথ চলা একই মোহনায়
সে পথ কেন গেল অযথা বেঁকে?
শান্ত মনের এ গহীনে জমেছে
অশান্ত বেদনার রাশি রাশি ঢেউ
তুমি আর কাঁদাওনা এ মন ওগো
মরে যাবো পাবেনা কোথাও তো কেউ।

ঐ দূর সীমানায় অসীম তেপান্তর
রংধনু এঁকে যায় নিরবে,
প্রজাপতির ডানা বেশতো আঁকাবাঁকা
হারিয়ে যায় মন সরবে।
কে যেন কানেকানে ফিসিফিসি হেসে বলে
আজ আর নেই বেশি দূর,
ওগো প্রিয়া হাত ধরো 
কবিতার খাতা খোলো
লিখে দাও মম নামে কবিতা,
সময়ের নীল খামে কোমল প্রেম জালে
বেঁধে নাও তুমি আমাকে।

স্বভাব দোষ -- দিলীপ ঘোষ

স্বভাব দোষ
দিলীপ ঘোষ
০৩/০৭/২৪

নিজেকে কষ্টি পাথরে ফেলে দেখতে না শিখলে
আয়নায় নিজের মুখ বারবার না দেখলে
নিজেকে ভুল ত্রুটির উর্দ্ধে রেখে এঁড়ে তর্ক করবে
উচিত কথার নামে অপরের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে
অতিমানব মনে করে কার্যত্ব নিজের দোষ ঢাকবে

গরু মরলে উপরওলা, ফুল গাছ পুতলে আমি
এমন আমিত্বের রোগ ধরা পড়ে
                ‌                কিছু মানুষের চাল চলনে
কম্পাসে ফেলে ভুল ধরতে পারে না তারা
আনাড়ির মত অপরের সমালোচনা করে

নীতির রেলে গাড়ি চালিয়ে দেখার অভ্যাস হারালে
পছন্দ অপছন্দের চোখে ঠিক ভুল দেখবে
যাকে না দেখতে পারো তাকে মুরগি করে
মনগড়া ছুরিতে কেটে সুপ্ত জ্বালা মেটাবে

আমার কোন ভুল নেই, ত্রুটি নেই
যাবতীয় অধঃপতন,-  এর ওর জন্য
যারা মনে করে প্রচার করে
তারা কখনোই নিজেকে করতে পারে না সংশোধন।

গোপনে -- দেবাশীষ চ্যাটার্জী

গোপনে 
 দেবাশীষ চ্যাটার্জী 
03/07/2024 
-------------------------------------

ভালো আছি বলি প্রশ্নের কাছে  
উত্তরেরা তাই খুশি 
ভালো থাকাটা অভিনয় শুধু  
জমা ক্ষোভ  রাশি রাশি |

বুকে জমা যত অভিমান সবই 
গোপনে গুমরে কাঁদে 
মনের দুয়ার হাট করে খুলে 
সে কথা বলি আর কাকে  ?

সব-ই সবার ভাগ্যে থাকেনা 
কিছুটা রহস্যে ঘেরা 
পাওয়া না পাওয়ার দোলায় দুলেছে
জীবন আজ দিশেহারা  |

পথ হারিয়ে বেপথে চলেছে 
পথিক আজ  শত শত
সবার মুখেতে মুখোশের হাসি
বুকে জমা শুধু ক্ষত |

হাসি মুখে আজ বিষের বাঁশরী  
হলাহলে ভরা মনের দ্বার 
হৃদয়পুরে বসবাস করে   
হিংসুটে এক অহংকার |

Friday, July 5, 2024

ভরা থাক -- নিবারণ চন্দ্র দাস

ভরা থাক 
নিবারণ চন্দ্র দাস 
০৪/০৭/২০২৪
সম্পর্কের ভাঙাগড়া জীবনের অঙ্গ,
পরাজয় আশঙ্কায় রণে দেব ভঙ্গ?
যুঝিতে যুঝিতে যবে জীবন যাপন,
যুদ্ধ দাঙ্গা ছেড়ে করি বসে আলাপন।

সংসার পারাবার কারাগার নয়,
সন্তরণ জানো যদি নাই কোন ভয়।
বাসন কোসনে হয় কত ঠোকাঠুকি,
সূর্য বিনা ফোটে বুঝি কভু সূর্যমুখী?

মনোজনে কষ্ট যদি দিই অবিরত,
উবে যায় শান্তি স্থিতি জীবনের মত।
দূরত্ব সে দূর নয় মানসিক বোধ,
সম্পর্কের মাঝে গড়ে লক্ষ অবরোধ।

লভিনু মানব প্রাণ ধরণীর 'পরে,
আনন্দ হাসি গান থাক চিরতরে।
জীব সেবা করে যাই সমগ্র জীবন,
পাষাণের বুকে করি প্রাণ সঞ্জীবন।
                   :::-:::

Thursday, July 4, 2024

বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব -- মোঃ নূরুল ইসলাম

  বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব
  মো: নূরুল ইসলাম
   ০৩/০৭/২০২৪
    মৃত্যুরে নাহি করি ভয়,
    আসুক প্রলয়।
    ধুয়ে মুছে যাক হিংসা দ্বেষ,
    যত সব ভেদাভেদ জাতি বিদ্বেষ।
    মানুষের রূপ ধরি দাঁড়ায়ে শয়তান,
    বিরাজিছে বিশ্বময় ভাবে বলীয়ান।
    দেশ দেশান্তরে দাঁড়ায়ে হিংস্ররূপে,
    লোভ লালসা উঁকি দেয় বিদ্রুপে।
    ধ্বংস যজ্ঞ ঘৃত দ্রব্য আরও কতো,
    প্রস্তুত রয়েছে শত শত।
    ধ্বংসের উল্লাসে বিপুলা আয়োজন,
    মৃত্যূকে ভয় তার নাহি প্রয়োজন।
    জাগ্রত হোক বিশ্ব মাতা,
    বিনিদ্রিতা শুনি মিষ্টভাষ।
    কহিবে না উচ্চ রবে ঘৃণ্য ভাবে,
    ছাড়ি সব পরিহাস।
    সকলের তরে আপনারে লয়ে,
    মানব রূপে সকলকে দেখে দাঁড়ায়ে।
    সামনে দেখে তার ভাই,
    করে হানাহানি মত্ততা,
    জেগে ওঠে মানবতা পবিত্রতা।
    প্রেম ভালোবাসা ছাড়া,
    এ জগতে বাকি কিছু নাই।

  

আষাঢ়ে বৃষ্টি -- বেবি মন্ডল

 আষাঢ়ে বৃষ্টি 
 মহারানী ( বেবী মন্ডল ) 
  ০৩ / ০৭ / ২০২৪.
 
অবশেষে বৃষ্টির ইস্তেহার বয়ে নিয়ে এলো আষাঢ়!
বৃষ্টি এলেই ভিতরটা ফুলে ফেঁপে ওঠে ,
যেন কোনো রোশনাই ঘিরে রয়েছে জীবন,
সারাদিনের প্রচণ্ড দাবদাহের পর অচেনা ইস্তেহার ,
বিদ্যুৎ চমকালে ফিরে যাই মাতৃ ক্রোড়ে ,
ফিরে আসে চঞ্চল শৈশব,
এভাবে রাত্রি আসে , দিনের পর রাত
বিকেল বলে কিছু নেই আমার সময়ে,
 পরিচয় বলতে নাটকের গুরুত্বপূর্ণ রোল,
মন দিয়ে শুনতে চেষ্টা করি জানতে চাই আর কতোটা ভিজেছে কে কোথায়!
আলোকবর্ষ ছুটে এসেছি এতো ঘাম এতো ক্লান্তি,
বহুদূরের গ্যালাক্সি আমার খোঁজ -
আর ব্ল্যাকহোলে মিলেছে প্রত্যয়,
আমার হারিয়ে যাওয়া সবকিছু - 
কখনও কি ফিরে আসবে না কোথাও?
 কিংবা অপেক্ষা করবে না ঝিনুকের ভিতরে যেভাবে অপেক্ষা করে দেহ,
খোলসটুকু আছে,
অচেনা মন যেন নিরেট প্রতিনিধি,
পৃথিবীর ভালো থাকায় আমার ফিরে আসা লেখা নেই,
ঠিকানা হারিয়ে আমি বিন্দু হতে চেয়েছি অবকাশে ।

মানুষকে ঠিকানা খুঁজে নিতে হয়। 
যেভাবে বৃষ্টি আমাকে খুঁজে পায় ....

Wednesday, July 3, 2024

বাবু মশাই -- কল্যাণী ব্যানার্জ্জী


বাবু মশাই 
কল্যানী ব্যানার্জ্জী 
২.৭.২৪
শুনছো নাকি বাবু মশাই
আমরাও তো মানুষ।
নেই আমাদের গাড়ি ঘোড়া ;নেই তো ভালো পোষাক জোড়া
রোজ খেটে যে খাই গো মোরা ;দিনের শেষে এসে ;
তাইতো মোদের জামা কাপড় যায় যে ঘামে ভিজে।
ঘাম ঝরিয়ে খেতে যে হয় ;সংসার চলে তাতে।
কোথায় পাবো ভালো পোষাক
সুগন্ধির সাথে।
আর আমি? আমার কথা কি বলব
থাকি ফুটপাথেতে পড়ে
মানুষ বলে ভাবেনা কেউ যায় যে লাথি মেরে।
বিরক্ত হয় যে সবাই সেটাও তো বুঝি
কি করব বলো আমরা মাথার উপর নেই তো ছাদ
পলিথিনকেই মানি।
আজকে এখানে কাল ওখানে এমনি করেই বাঁচি।
তবুও যে মানুষ আমরা ;তোমরা বোঝনা
মানুষ বলে তোমরা আমায় মনেই কর না।
জন্ম হোলো গরীব ঘরে খেটে খেতে হবে
পড়াশোনা জানিনাতো খাটি খালি গায়ে।
কারোর বা জন্ম হোলো ফুটপাথের ধারে
কেযে তার পিতা কেউ প্রশ্ন নাহি করে
সেখানেই যে বেড়ে ওঠা জীবন যাপন।
নামকরণ ও হয়না আমার অনামি যে আমি
এই ভাবতেই থাকি বেঁচে জানেন অন্তর্জামি।
আমাদের ও আছে কষ্ট ;আছে সুখ দুঃখ যন্ত্রণা
স্বপ্ন যে আমাদেরও আছে
আছে ঝুপড়িতে শুয়েও কল্পনা।
উপর থেকে দেখে শুধু বিচার কোরোনা।
হয়তো সুযোগ পেলে আমিও হতাম তোমার মত বাবু।
ভাগ্য মোদের করে রেখেছে সব কিছুতেই কাবু।

ভাঙা গড়ার খেলা -- মোঃ বদরুল হুদা

 ভাঙা গড়ার খেলা
মোঃ বদরুল হুদা
০২-০৭-২৪
ভাঙা গড়ার খেলার মাঝে
কাটছে সবার জীবন কাল,
দুখ সাগরে ভাসছে কেহ
ভাঙছে কারো সুখের ডাল।

শান্তি মনে রয় না সেথায়
দুখ যেখানে করে বাস,
কষ্ট জ্বালায় জ্বলে জীবন
তিলে তিলে হয়ে যে নাশ।

ভাঙা গড়ার এই জীবনে
কারো জীবন পায় না কূল,
হতাশাতে জীবন কাটে
দুঃখ হলো তারই মূল।

কারো জীবন সাগরেতে
উঠে কভু প্রবল ঝড়,
মনের শান্তি নষ্ট করে
ভাঙে কারো সুখের ঘর।

আঁধার কেটে কারো জীবন
দেখে কভু আলোর মুখ,
দুঃখ কষ্ট দূর হয়ে সব
বিরাজ করে সেথায় সুখ।

জীবন চলা থামে না তো
ভাঙা গড়া তাতে রয়,
কেউ তো হাসে কেউ তো কাঁদে
কান্না হাসি সঙ্গী হয়।

Tuesday, July 2, 2024

বুক জুড়ে হাত ছানি -- প্রাণেশ রঞ্জন গোস্বামী

 বুক জুড়ে হাতছানি 
 প্রাণেশ রঞ্জন গোস্বামী 
 ১/০৭/২০২৪ 
বুক জুড়ে হাতছানি ছটা নিশ্বাস টানি, 
প্রিয়র চোখে প্রিয়ার মুখের সুপ্ত বাণী।
আধ খানা চাঁদ মেঘের ফাঁকে হাসে ঘুমটা টানি, 
সরল মন গরল হয় এইতো বিধিলিপির কাহানী।

চেতনার উন্মেষ বুক ভরা ভালোবাসা, 
বুকের উঠানে নিত্য যার যাওয়া আসা।
নিত্য টানে নিত্য উচাটন সেই সুদূর আশা, 
বক্ষের ক্ষত ভরাট করার শুধু একটু মীমাংসা। 

সব স্বার্থে অন্ধ চারিদিকে ছড়িয়ে প্রেমের দুর্গন্ধ, 
তবুও বুক জুড়ে বসে কোমল মনের প্রেমে যার দ্বন্দ্ব। 
অলীক স্বপ্ন অসীম কল্পনা বহে সম্পর্কের জোয়ার, 
আবার নীড় ভাঙা ঢেউএ বন্ধ হয় বুক ভরা কারবার। 

অযাচিত প্রেমের জোয়ার  সরোবর উতাল পাতাল, 
গায়ে হলুদের দারুণ স্বপ্ন বাসনাকে করছে বেসামাল। 
আনুষঙ্গিক প্রতীক্রিয়ায় বাহ্যিক মন হয়েছে উদাস, 
বুক জুড়ে হাতছানি এটাই তার আভ্বন্তরিক বহিঃপ্রকাশ।

মহাপরিনির্বাণ- এর পূর্বে বুদ্ধ -- বনানী সাহা

 মহাপরিনির্বাণ -এর পূর্বে বুদ্ধ 
 বনানী সাহা 
 ০১- ০৭- ২০২৪
যেতে দাও আমায়, বেঁধে রেখো না ।
এই রাজ প্রাসাদ, এই রাজ ঐশ্বর্য ,আমার জন্য না।

এই রাজ ঐশ্বর্য, রাজ প্রাসাদ, এই প্রাসাদের---
 উঁচু দেয়ালের বাইরেও একটা জগত আছে ---
যেখানে থাকে, দীন -দুঃখী- রোগী !
যেখানে আছে জরা -মৃত্যু -ব্যধি --
আছে ক্ষুধার যাতনা;
আমাকে যেতে হবে সেথা, আর বেঁধে রেখো না ।

এই স্ত্রী ,পুত্র  ,পরিবার এই সংসার---
 এ যে বড়োই মায়ার বাঁধন !
এ বাঁধন ছিন্ন করে ,যেতে হবে আমায় ।
ঐ শোনো, কত অসহায় মানুষের আর্তনাদ---
 আর বিষাদময় কান্না শোনা যায় !
আমাকে খুঁজতে হবে, সবার কষ্টের পরিত্রাণের উপায় !

এই ঐশ্বর্য আর ভোগের মধ্যে আটকে থেকে---
 কি লাভ ? জরা- ব্যাধি এসে গ্রাস করবে--
 যখন ,এই সাধের দেহ খানি!
মৃত্যুর করাল গ্রাস ,যখন ছিনিয়ে নিয়ে যাবে --
একদিন শত পাহারার মধ্যে থেকে--
 আপন জন দের কাছ থেকে !
না না, আর নয়---,।
 মিছে এই সংসারের মায়ায় ,আটকে থাকা!
যেতে দাও আমাকে, বেঁধে রেখো না ।

আমাকে খুঁজতেই হবে কোথায় মুক্তি ?
এই রোগ -শোক -জরা -ব্যাধি -মৃত্যুর থেকে,--- মানুষের মুক্তির উপায় ।
মানুষের দুঃখ -কষ্ট -পাপ -তাপ থেকে ---
 পরিত্রাণ পাওয়ার উপায়।
ঐ শোনো, আমি শুনতে পাচ্ছি---,
 শত শত লোকের কান্না !
যেতে দাও আমায়,আর বেঁধে রেখো না ।