Tuesday, June 22, 2021

জামাই ষষ্ঠী

জামাই ষষ্ঠী 
----------------
ধীরেন গোস্বামী 
--------------------
মনটা পড়ে আছে শ্বশুর ঘরে
গিন্নি গেছে বাপের বাড়ি,
শ্বশুর বাড়ি যাবে হারাধন
মিষ্টি নিয়েছে এক হাঁড়ি।

বিছানায় শুয়ে ঘুম ধরে না
রেখে ঘড়িতে দৃষ্টি,
কতক্ষণে যে সকাল হবে
কাল জামাই ষষ্ঠী।

গিন্নি বলেছে ছুটি করিয়ে
আসবে শশুর ঘরে, 
সবাই মিলে বেড়াতে যাবো
বাঁকুড়া মুকুটমণিপুরে।

সকালে কাজ গুছিয়ে জামাই
নিয়ে মিষ্টির হাঁড়ি,
স্টেশনে এসে চাপলো ট্রেনে
যাবে শ্বশুর বাড়ি।

জামাই ষষ্ঠীতে শ্বশুর বাড়ি
পৌঁছে গেলো হারাধন,
শাশুড়ি মায়ের খুব আনন্দ 
বিরাট খুশি মন।

জামাইষষ্ঠীর ধুম

জামাইষষ্ঠীর ধুম
------------------------
 তপন কুমার পাল
 -------------------------
 জামাইষষ্ঠী মধুমাসে
 আবেগ ভরা পরব,
 ইহা নিয়ে বাঙ্গালীদের
 আছে অনেক গরব।

 নতুন জামাই আসবে বলে
 খুশির জোয়ার ঘরে,
 জামাইষষ্ঠীর আজকে যেনো
 আনন্দ না ধরে।

 ছোটো বড়ো সবাই মিলে
 আনন্দে যায় ভেসে,
 অবশেষে জামাই এলো
 খানিক মিষ্টি হেসে।

 শাশুড়ির মান রাখতে জামাই
 আনলো নতুন শাড়ি,
 শাড়ি পেয়ে শাশুড়ি মা
 হলেন খুশি ভারী।

 জামাই মেয়ে সবাই মিলে
 হবে ভারী মজা,
 জামাই তরে শাশুড়ি মা 
 বানায় মিষ্টি গজা।

জামাইষষ্ঠী


জামাই ষষ্ঠী
--------------
রঞ্জন ঘোষ
------------------
বৈশাখ গেলো জ্যৈষ্ঠ এলো 
জামাইরা সব মনমরা,
তাদের মনে দুঃখ এবার
শ্বশুরবাড়ির যাবার নেই তাড়া।

খরচা অনেক বাঁচবে এবার 
সব শ্বশুর মশাই দের,
করবেনা কেউ জামাই ষষ্ঠী‌
এবার জামাই বাবাদের।

ঘরে বসে থাকবে সবাই 
বাইরে যাওয়া মানা,
চুপচাপ সব থাকবে ঘরে 
শুনবে বসে ঘরে গানা।

বছরটা কি নীরস যাবে 
ভাবছে জামাই বাবা,
ভেবে ভেবে বুদ্ধি একটা
 মাথায় দিলো থাবা।

শ্বশুর মশাই অনলাইনে 
যদি খাবার অর্ডার দেন,
ঘরে বসে জামাই বাবা 
জামাইষষ্ঠী করে পালন।

খুকির জামাই


খুকির জামাই
--------------------
দীপক কুমার সিংহ
--------------------------
খুকির বড় আদরের জামাই
ষষ্টির দিনে নেই কামায় |
সকালে যত বাজারের বালায়
মাছ-মাংস,আম-কাঁঠালে তায় ||

শালা-শালীদের খুশীর অন্ত নাই
নতুন জামা শাড়ি চাই |
জামায়ের হাতে মিষ্টির বড় হাঁড়ি
শ্বশুর ঘরে খুশীর ছড়াছড়ি ||

খুকির জামাই মন্দ নয়
দিদিমা-স্বাশুড়ি সুমতির খুশীর অন্ত নাই |
নাতনি তার যতই করে মুখ
এক ধমকে করে তাকে চুপ ||

খুকির জামাই মুখে বাক্য নায়
পছন্দের তালিকায় সেরা তায় |
দাদু-শ্বশুর রঘুনাথের প্ৰিয় ভাই
বকর-বকর দুজনে করা চাই ||

মদন-খুকির আদরের বড় জামাই
খাওয়া-পরায় কোনো বাছ-বিচার নাই |
সাধারণের অতি সাধারণ মানুষ
ওড়ে না কখনো হয়ে ফানুস ||

জামাই ষষ্ঠী


জামাই ষষ্টী
-------------------
সঞ্জিত দিন্দা
--------------------
নতুন জামাই ষষ্ঠী খেতে
যাচ্ছে শ্বশুরবাড়ি,
আম কাঁঠালে ভর্তি গাড়ি  
হাতে মিষ্টির হাঁড়ি।

বেনারসি---ঢাকাই শাড়ি
নিয়েছে সে সাথে,
সম্মান স্বরূপ তুলে দেবে
ছয় শাশুড়ির হাতে।

তার ওপরে শালা শালী 
আছে দশটা নাকি,
মন যোগাতে জামাইবাবু
দেয় না কারো ফাঁকি।

হিন্দি ছবি--দেখার জন‍্য
বায়না ধরলে তারা,
জামাই হবে 'বলির পাঁঠা'
করবে খরচ সারা।

বড়ো বাড়ি করলে বিয়ে
থাকে শতেক জ্বালা,
জামাই শুনে আঁতকে ওঠে
পড়লে ষষ্টীর পালা।

জামাই এলো

জামাই এলো
-----------------
স্বপন দেবনাথ 
--------------------
শ্বশুর বাড়ি যাচ্ছে জামাই
মিষ্টির প্যাকেট ভরে, 
বৃষ্টি ভেজা গ্রামের পথে
বউকে সঙ্গে করে। 

গাঁয়ের পথটি বিরক্তিকর
কাদা এবং জলে, 
টোটো অটো যায় না বলে
জামাই হেঁটে চলে। 

ধুতি তোলে হাঁটুর উপর
ভরল তবু কাদা, 
শ্বশুর বাড়ির কাছে যেতেই
এলো বউয়ের দাদা। 

শ্বশুর বাড়ি ঢুকেই জামাই
হাঁফছেড়ে যে বাঁচে, 
দিদিকে আজ পেয়ে বোনটি
আনন্দেতে নাচে। 

আদরের জামাই কষ্ট করে
এলো শ্বশুর বাড়ি, 
শাশুড়ি মা আদর যত্নে
খাওয়ান তাড়াতাড়ি।

জামাই আদর

জামাই আদর
--------------------
পঙ্কজ প্রামাণিক 
***************
মজা করে হচ্ছে খাওয়া   জামাই ষষ্ঠীর ভোজ
শালী শ্বাশুড়ি  আছেন বসে   নেই শেলেজের  খোঁজ।

মন্ডা  মিঠাই      দই মিষ্টি          আরো কতো কি,
গরম ভাতে  দেয় শ্বাশুড়ি  পুরোনো গাওয়া ঘি।

আম জাম আর  কলা কাঁঠাল   সাথে মিষ্টি লিচু,
মনের সুখে খাচ্ছে জামাই  চায়না ফিরে পিছু।

চিংড়ি পোনার  সাথে আছে মাংস কচি পাঁঠার,
শ্বশুর বলে ভালোই হোলো পকেট খালি আমার।

গোগ্রাসে তে   খাচ্ছে জামাই  লাগছে ভীষণ গরম,
করছে বাতাস  শ্বাশুড়ী মা নেইকো লাজ আর শরম।

মনের সুখে  খেতে খেতে  হাঁপিয়ে ওঠেন তিনি,
নানারকম  পদের রান্না  যায়না ছাড়া জানি।

   খাচ্ছে জামাই  এদিক ওদিক  আড় চোখেতে চায়,
এদিক-ওদিক   শুধুই দেখে বউ তো কোথাও নাই।

লাজুক ভারী   বউটা তারি মিষ্টি হাসি মুখে,
ঘোমটা পরা  গ্রামের মেয়ে   কাজল  টানা চোখে।

খেয়ে দেয়ে জামাইবাবুর পেট ফুলে জয় ঢাঁক,
যাহোক করে মুখ হাত ধুয়ে হলো চিত পটাৎ।

পাশের ঘরে  ছিলো যে বউ শুনে ছুটে আসে,
অতি লোভে তাঁতি নষ্ট এবার বুঝেছে সে।।

                       

Sunday, June 6, 2021

চলবো প্রকৃতির পথে

চলবো প্রকৄতির পথে
সঞ্জয় বৈরাগ্য

আলো ছিল হাওয়া ছিল, ছিল অঝোর ধারায় বৄষ্টি
মাটি ছিল বীজ ছিল, হল অপত্য প্রাণ সৄষ্টি।
অরণ্যানী ও সবুজত্ব ছিল, ছিল নির্ভয়তা অতি
ছিল শান্ত নদী, নীল আকাশ আর সুন্দর এক প্রকৄতি।
এবার, অনন্য এ ধরণীতে এল মানব জাতি, এল প্রাণ শত শত
নিয়ে সাথে যত আবিলতা ও জটিলতা, পৄথ্বীকে করলো পদানত।
এলো যন্ত্র, কারখানা-কল, হল যান্ত্রিকতার জয়
নিয়ে এলো ধ্বংস, আধুনিক কংস --- শুরু হল পরিবেশের ক্ষয়।
সইল না আর পৄথিবী, এল দুঃসময়
বিবর্ণ হল আকাশ, কুঞ্চিত ফুল, হল বন্ধ পাখির কলরব
তবে এখনও আছে সময়, হবে মানবজাতির জয়।
আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবসে নিই শপথ, 'চলবো প্রকৄতির পথে'
দূষণ-দৈত্যের কবল থেকে বাঁচিয়ে পৄথিবীকে, একদিন ওড়াবো ঠিকই বিজয় নিশান, জীবনেরই রথে।



সবুজের কথা

  সবুজের কথা....
শুভ্রাংশু কুম্ভকার

ঘন ছায়া চেয়েছি, সাথে প্রাণবায়ু
সবুজের ছোঁয়া আর চোখের আরাম,
বেহিসেবি পাওনাটা দাবি থেকে বেশি
কষে কভু দেখিইনি কতোখানি দাম।

অঙ্কুর ছিল যবে মাটিতে লুকায়ে
সোহাগের সোনা জল দিইনি তো ঢেলে,
ভেদ করে বেঁচে থাকা কি কঠিন কাজ
মেলেছি আপন চোখ সব বাধা ঠেলে।

মাটির আদর আর শিকড়ের জোরে
রস শুষে বেঁচে আছি আজও কোনোমতে,
শীর্ণ দেহের শাখা দোলায় বাতাসে,
সূর্যের তেজ ঢাকি সবুজ পাতাতে।

মনোবলে বেড়ে চলা মহীরুহ পানে
খনিজের ঘাটতিতে কঠিন সংগ্ৰাম,
জীবজাত সারে মেটে ক্ষুধার আগুন
কীটনাশকের বিষ বাড়ায় ব‍্যারাম।

কালো ধোঁয়া কংক্রিট দূষণের বিষ,
সবুজের পরিধিও ক্রমে সংকুচিত,
নিঃশ্বাসে বিশ্বাস নেই বিশুদ্ধতার
অক্সিজেন ঘনত্ব কমে ক্রমাগত।

নীলকণ্ঠ সম শুষি দূষণের বিষ
বিশুদ্ধ করেছি বায়ু আবহমানকাল,
সুখে দুঃখে সাথী,শীতল সমীরণ
দখিনা মলয় করি এ মন মাতাল।

ঘরে বাইরে ছাদে বাগানে পথের ধারে
একটু যত্নে সহজেই বেড়ে উঠি,
যেটুকু দাও তার শতগুণ ফিরিয়ে দিই
হিসাব বাকীর সাক্ষী থাকে মাটি।

বৃক্ষরোপন

বৃক্ষরোপন 
নৃসিংহ মজুমদার 

মানবতার চারা পুঁতি ভাই অমানবিকতার ভাগাড় খুঁড়ে ,
চিল শকুনরা আসবে যাবে কুকুর শেয়ালও বেড়াবে ঘুরে ।

সত্যের জল সেচ দিয়েছি ন্যায় নীতির সূর্য তারায় 
সকাল দূপুর সন্ধ্যা রাতে পাবে বলে আলোক ঝর্নায় ।

পাখির গানে জেগে ওঠে দেখবে তারে শিশির সাজায় ,
রোদ ঝড় জলে সারাদিনটা খেলবে সে তো মেঘের ছায়ায় ।

সন্ধ্যা তারে সাজিয়ে দিলে ধ্রুবতারা সুখের গল্প শোনাবে 
চাঁদ পরীরা স্বপ্ন ভেলায় তারার দেশে তারে ঘোরাবে  । 

মেলবে পাতা মেলবে শাখা ভাগাড় গন্ধে দেবে সে ঢাকা ,
চিল শকুন যত লাফিয়ে ঝাঁপিয়ে দিতে চাক তারে মাটি চাপা ।

সারাদিন রাত বুকে আগলে রেখেছি তারে হয়ে পাহারাদার ,
দুচোখে স্বপ্ন ফুল ফল দিয়ে সাজিয়ে তুলবে নোংরা ভাগাড় ।

প্রাণ ভরে শ্বাস নেবে সবাই পেট ভরে খাবে ফুল ফল পাতা ,
ঝড় বাদলে সুখের ঘরে নিশ্চিন্তে পাতবে স্বপ্নের কাঁথা ।

নিজেকে উজাড় করে

নিজেকে উজাড় করে 
কৃত্তিবাস ওঝা 

বেহিসাবী নাগরিক সভ্যতার আগুনে 
প্রকৃতি পরিবেশ নিদ্রাহীন দাবানলে 
টিকটিক করে নিয়মিত জ্বলে 
অরণ্য জীবনের সবুজ 
অনুচ্চারিত শব্দের নীরব কান্না
স্পর্শ করে না কারোর চোখে কানে ।

পর্যটক-মন কখনও হিসাব করে না 
সবুজের আঁচল চাপা অক্সিজেনের মূল্যমান 
লাল চোখের পাতা ছেঁড়া ভালোবাসা
বিনোদন, আর আরও মুনাফার নেশায় 
ভালোবাসার করে অপমান ।

প্রতিটি ঝড়ঝঞ্জায় বুক চিতিয়ে দাঁড়ায় 
মন ভাঙ্গা দিনেরাতে নিজেকে উজাড় করে 
রক্ত ঝরা আঘাত সহ্য করে 
সাজিয়ে গুছিয়ে দেয় সমাজ সংসার,
তারই উপর আমরা চালাই নক্কাজনক বলৎকার ।

আমরা আমাদের কৃতকর্মের ফলভোগ 
করি আজ, -- হচ্ছি অতিমারীর শিকার 
উঠছে আত্মহত্যার হাহাকার ।

পরিবেশ আজ সংকটে


পরিবেশ আজ সংকটে
পবিত্র প্রসাদ গুহ


পরিবেশের কলিজায় আজ ঘুন ধরেছে,
চিত্তে অশান্তির ঝড়
থমথমে মনে কুঁড়ে কুঁড়ে খায় বিতৃষ্ণার হাতছানি।

অপ্রস্ফুটিত ফুলের প্রাণ ধূকছে -
অকালেই ঝরে পড়ে তারা,
সৌরভহীন দেহে মিশে যায় মাটিতে!
কেই রাখে না মনে ওদের।

চারিদিকে বিষক্রিয়া আর কালো কালো ধোঁয়া -
কল কারখানার উঁচু পাইপটা দিয়ে,
গনগনে আচের দৈত্যাকার কোঁকড়ানো ধোঁয়া,
চুম্বন খায় নীল নীলিমা লেপা আকাশটাকে,
মুহূর্তেই তাকে করে দেয় কালিমালিপ্ত।
পাখিগুলি দম বন্ধ হয়ে অচেতন,
গাছেদের কিশলয়ের শ্বাসরোধ হয়ে আসে।

অট্টালিকার কামড়ে কচি দুর্বাঘাসের জীবাশ্ম দশা!
ইঁট, বালি, পাথর গ্রাস করে জংলী লতাপাতাকে,
গলার টুটি চেপে ধরে কলমীলতার।

জলে খাবি খায় চঞ্চল মীন রাশি -
আতঙ্কে থাকে সর্বদা 
এই বুঝি জলে মিশবে কারখানার বর্জ্য,
প্রাণঘাতী আবর্জনা কেড়ে নেয় নিরীহ অবলা প্রাণীর জীবন।

চাই না আর প্রাণঘাতী নগরোন্নয়ন,
চাই না বিজ্ঞানের অপপ্রয়োগ,
চাই না বাঁচতে এই অট্টালিকার আতিশয্যে।
দাও ফিরিয়ে সবুজের সমারোহ,
দাও ফিরিয়ে কুসুমের সৌরভ।

পাখির কলতানে মুখরিত হোক ধরণী,
একবুক শ্বাস নিতে দাও হে আবার-
দাও ফিরায়ে বন বনানী, লহ এ নগর জীবন।