"আমার মা দশভূজা"
অরবিন্দ সরকার
০৯/১০/২০২৪
আমার মা দশভূজা,দু'হাতে দশভূজার সমান,
ধ্রুবতারা দেখে কাজ সম্পন্ন, অষ্টপ্রহর মেনে চলেছেন বিধির বিধান।
ভোরবেলায় ধান সেদ্ধ, তারপরে চান,
শীতকালে চান করা কঠিন নয় বুদ্ধিমান।
তারপর মুড়ি ভাজা, স্কুলের ভাত,অবসর মেলে না তাঁর,
সন্তানের লালন পালন,তার উপরে দায় দায়িত্ব সংসারের বোঝার চাপ মাথায় একাকার।
রাখাল বাগাল মুনিসের তরে হাতে গড়া রুটি তরকারি,
ময়দা ভিজিয়ে চাটু সহকারে তাদের জন্য গরম গরম তৈরি।
জামা কাপড় কাঁথা বিছানার চাদর পরিস্কার,
কাঠের পিঁড়ি ঘাড়ে পুকুর পাড়ে ধোপার মতো অবস্থা তাঁর।
সন্ধ্যাবেলায় তুলসী তলায় শঙ্খ বাজিয়ে প্রদীপ ধূপবাতি,
এলোচুলে শাড়ি পরিধানে মা আমার সাক্ষাৎ ভগবতী।
হ্যারিকেন কুপি জ্বেলে বাড়ীর কাটে অন্ধকার,
উঠোনে মাদুর পেতে হ্যারিকেনের আলোয় সন্তানের পড়াশোনার ভার।
মশা মাছির উপদ্রবে, হাতে তালপাতার পাখা,
গরম থেকে রক্ষা করতে সন্তানকে হাওয়া, মাথার সিঁথিতে লাল সিঁদুর, হাতে একজোড়া শাঁখা।
সবার খাওয়া দাওয়া শেষ হ'লে মায়ের অবশিষ্ট,
হয়তো কোনোদিন খাবার থাকে না,জল খেয়ে পেট ভরান ,সবই মায়ের মন্দ বরাত অদৃষ্ট।
খড়ের প্রতিমায় দশভূজার পূজা করি,গড় করি চরণে,
জীবন্ত দশভূজার পূজা ভুলে যাই, শুধু খাই খাই, মায়ের খাবার লাগে একথা কভু আসেনা স্মরণে?
প্রতিমায় নৈবেদ্য,মা মা বলে ডাকি, গড়াগড়ি খাই মন্দিরে,
গর্ভধারিণী ফলমূল চাননা,কেবল মা ডাকেই সন্তুষ্ট, আশীর্বাদ প্রতিনিয়ত আমাদের মঙ্গল ঘিরে।
-----------------------------------
No comments:
Post a Comment