বর্ষা অমঙ্গল
মধুসূদন লাটু
১০/০৭/২০২৩
আষাঢ়ের হাত ধরে নিয়মেই নামে বৃষ্টি
আকাশ জুড়ে মেঘেরও আনাগোনা ক্রূরদৃষ্টি
বজ্রের তাণ্ডব দশ বিশটা তরতাজা প্রাণ দেয় ঝলসে
ভাগ্যের দোষ কর্মের ফল বিধাতার রোষে
ঝড়ের ভ্রকুটি, চালাঘর লুটোপুটি,
কবরীতে কদম যুথিকা গুঁজে মহারানীর কলকলানি।
রুগ্ন কলেবরে চাষী তবুও ধান বোনে
অন্যের অন্ন জোগাতে নিজেই অভুক্ত থেকে।
জল থই থই খাল বিল নদী নালা, ব্যাঙের মকমক, সাপের কামড়, ঝিঁঝিঁর ডাক, নিশুতি রাত,
ক্ষুধার্ত শিয়ালের হাঁক, রাত জাগা চোখ,
বাংলা মায়াময় মোহময় ।
অট্টালিকায় রোদ উঁকি মারে জানালায়
কুঁড়ে ঘরে জলবন্দি আঙিনায়।
গফুরের ফুটো চাল বেয়ে জল ঝরে বিছানায়
আমিনার আমানি বাড়ে উৎকণ্ঠায়।
অবোধ বালকের কাগজের নৌকা চলে নালায়।
ভুখা মানুষের মিছিল জগন্নাথের রথের রশিতে মারে টান রসদের আশায়।
তবুও শ্রাবনী পূর্ণিমায় ঝুলনে মাতে বাঙালি।
ইলিশের টানে পাথারে পাড়ি দেয় মাঝি
জীবন মুঠোয় ধরি।
রাখীর সম্প্রীতি স্বাধীনতা দিবস ভাদু মনসার গান
বাদ যায় না উৎসব মেলা খেলা কিছু।
তালের বড়া নন্দের নাচন বাজন গাজন ও চলে পিছু পিছু।
অজয় রূপনারায়ণ দামোদর অপরূপ ভয়ংকর
আঁকে চিত্রকর, কবিতা লেখে কবি।
গঙ্গা পদ্মা তিস্তা তোর্সা কংসাবতী ভয়ঙ্করী
মুছে নিয়ে যায় খেলা ছলে ফকিরের ঘরবাড়ি।
কারও পোষমাস, কারও পোয়াবারো পকেট ভারী।
নবীনের ইনফ্লুয়েঞ্জা কাজ সারা সাতদিন
চাল নেই জ্বলে না চুলা গালে হাত রাতদিন।
তবু ও রানী ঝতুরানী মহারানী
এত ভীষণা ভয়ঙ্করী
জানি
তবুও জীবনদায়িনী
জয় জয় বরষা দিগম্বরী
গাই গান গাই গান
বর্ষামঙ্গল, বর্ষামঙ্গল বর্ষামঙ্গল।
No comments:
Post a Comment