আমি পেরেছি মা
শ্যামল কুমার মিশ্র
২৫-৮-২০২৩
ইটিন্ডাঘাটের পাশ দিয়ে প্রবহমান ইছামতি
ইছামতির তীরে ঘাসের উপর বসে আকাশের দিকে নিবিষ্ট চিত্তে চেয়ে রয়েছে একটি বালক
একটু একটু করে সূর্য ডুবে যাচ্ছে
আকাশ জুড়ে লাল রং ছড়িয়ে পড়ছে
ধীরে ধীরে রঙের গভীরে হারিয়ে যাচ্ছে ছেলেটি
নদীর বুক জুড়ে আঁধার নেমে আসছে
দূর আকাশে তারার মেলা
কখনও কখনও ছোট্ট ভাইটাকে ও তারা চেনাত
বলতো--ঐ দেখ সন্ধ্যাতারা, ঐ দূরে সপ্তর্ষিমণ্ডল
আকাশের গ্যালাক্সি চেনাতে চেনাতে হারিয়ে যেত ছেলেটি
মানসলোকে সে দেখতে পেত চাঁদ মঙ্গল আর বৃহস্পতিকে
মাকে বলতো-- সকল বাধা পেরিয়ে আমি একদিন আকাশ ছোঁব মা
মায়ের স্নেহের স্পর্শ ছুঁয়ে যেত মানসের চিবুক
চাঁদ,পৃথিবীর গল্প করতে করতে মানস যেন পৌঁছে যেত চাঁদের দেশে...
স্বপ্ন বোধ হয় এমনি করেই সত্যি হয়
উচ্চশিক্ষা শেষ করে ইটিন্ডাঘাটের সেই ছেলেটি একদিন চলে গেল ইসরো
ভারতের চন্দ্রযান-৩ এর সফল উৎক্ষেপনের অন্যতম কারিগর
ধীরে ধীরে চন্দ্রযান-৩ পৃথিবীর কক্ষপথ ছাড়িয়ে যাচ্ছে...
ইসরোর চেম্বারে বসে ছেলেটি আজও খুঁজে চলে খানিকটা আঁধার
ছোটবেলার সেই ইচ্ছামতির বুকে নেমে আসা আঁধার
কুল কুল স্বরে ইছামতি আজও বয়ে যায়
রাতের আঁধারের বুকে এক টুকরো আলো হয়ে নেমে আসে মানস
আর ফিসফিসিয়ে মাকে বলে--
আমি পেরেছি মা, সকল বাধা পেরিয়ে আমি চলেছি চাঁদের দেশে
মানসের কথাগুলো বুকে নিয়ে ইছামতি বয়ে যায় অনন্তের পথে...
--------------------------------------------------------------------
No comments:
Post a Comment