ওরা খালপাড়ে থাকে
কৃষ্ণা দ্বাদশীর চাঁদ তখন মধ্যগগনে --কুয়াশামাখা রাতের আদুল গায়ে হিমেল পরশ ,
বহুদিনের দাবদাহের জ্বালার অবসান ,
দু'হাত ছড়িয়ে উপভোগ করছে সময় ......
খালপাড়ের বস্তিতে একটুকরো বিছানায়
জ্বরে পুড়ছে সাত বছরের শিশুপুত্র ,
শিয়রে বড় বোন -- বছর আটের ।
সন্ধ্যার অন্ধকারে গা ঢাকা দিয়ে
মা গিয়েছে কাজে --- অন্ধকার গলিপথে ,
যে পথে শহরের বিত্তবান বাবুরা
দু'চোখে কামনার আগুন ছড়িয়ে দাঁড়ায় ,
তাদের ঠোঁটের কোন বেয়ে গড়িয়ে পড়ে কষাটে লালসা ,
শরীর পেতে শুষে নিতে হয় তাদের ধর্ষকাম পৌরুষ
তারপর সন্তানধারণের যন্ত্রনায় ছুটে যেতে হয় বস্তিতে --
একফালি চাঁদের আলো তাদের জীবনে
পূর্ণিমা হয়ে আসেনা কখনো ,
পিতৃহীন অনাথ তর্পণে তাদের আহুতি হয় ,
রাতের অন্ধকারেই মিলিয়ে যায় তাদের পরিচয় ,
সভ্যতার আগুনের স্পর্শ
উষ্ণতার আবেশ বয়ে আনে না তাদের জন্য
ভাঙা চালের ফাঁক দিয়ে পিছলে আসে
একফালি আকাঙ্ক্ষার রোদ্দুর ।
তাকেই আঁকড়ে ধরে শিশুমন ,
ভবিষ্যতের কল্পনায় বাড়ে ।
মায়ের মমতা আসে দিনান্তে ভাতের সুঘ্রাণে ।
একমুঠো ভাত , একটু রোদ্দুর তাদের প্রত্যাশার দর্পণ ।
ওরা যে খালপাড়ে থাকে ।
No comments:
Post a Comment