বৃষ্টিস্নাত রাত
মৃণাল কান্তি রায়
৩রা জুলাই,২০২৩ ইং
সে অনেকদিন আগেকার কথা
পুরোটা এখন আর ঠিক মনে করতে পারছিনা।
সারাদিন টিপ টিপ করে বৃষ্টি পড়ছিল
পাখিরা সব ভেজা চোখে যার যার আখড়ায়
চলে যাচ্ছিল তাদের প্রিয়জন নিয়ে
একত্রে হয়ত থাকবে বলে।
চেয়ে চেয়ে দেখছিলুম দূর ওই আকাশে
কালো মেঘের আনাগোনা আর বিজলির ঝিলিক।
বিকেল গড়িয়ে আসতেই প্রবল থেকে মাঝারি
ধরণের বৃষ্টি পড়ছিল।
প্রকৃতিকে যেন সুশীতল করে দিচ্ছে
তার স্বভাবসুলভ তীর্যক নাচের মধ্য দিয়ে।
চোখ পাকিয়ে পাকিয়ে কিছু কিছু কাজ
দেখতে পাচ্ছিলাম নিজের ভগ্নপ্রায় আচ্ছাদনের
নিচে উন্মুখ হয়ে নিজকে সংযত রেখে।
না না এ কোন কাহিনী কাব্য নয়
চোখে ভাসা এ এক বৈচিত্র্যময় রূপ
অন্যভাবে অন্যকোন স্থানে অন্য কোনখানে
হয়তবা কোন প্রয়োজন আয়োজনের
এক বিরল চোখে দেখা ইতিহাস।
কিছু লোকের গম্লনাগমন বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে
বুঝিনি কিছুই বুঝে আসেনি আজও যা।
শীতকালীন শীতের তীব্রতা বার বার অনুভব
করেছি নিজ ভগ্নপ্রায় আচ্ছাদনের ভেতরে-বাইরে থেকে।
বুঝে উঠতে কিংবা ঠাহর করতে পারিনি
সবকিছু অবোধ অসার ধীশক্তির কারণে।
যাহোক যেমনটা ভাবছিলাম বৃষ্টিস্নাত পড়ন্ত বিকেলে
সন্ধিগ্ধ ও অনুসন্ধিৎসু হয়ে নানা দিকে দৃষ্টিপাত
করেও কোন কূল-কিনারা বুঝে উঠতে পারিনি।
আর পারিনি বলেই নিজকে অশিক্ষিত জনদের
কাতারে নেয়া ছাড়া আর কোন উপায়ও ছিলনা!
একসময়ে এসে প্রভাকর পাটে বসতে যাবে
রংধনুর রঙের আভায় যেন সপ্তবর্ণা
হয়ে উঠেছে বেশ লাগছিল দেখছিল দেখতে।
আগন্তুকরা ক্রমশ চোখের আড়াল হয়ে গেল
যার যার তাগিদে নিজস্ব প্রয়োজনে।
ভগ্নপ্রায় ঘরের কাছাকাছি আছে আবাসন
যার যার সংসার আগলে।
এলো গোধূলির তীর্যক বর্ষণ প্রবল বেগে।
বাইরে নাক গলানো আর সম্ভব হয়ে উঠলোনা।
চোখে দেখা স্মৃতিগুলো হাতরিয়ে ফেরা
আর আকাশের তর্জন গর্জন দুকানেই
যেন শুধিয়ে যাচ্ছিলো বৃষ্টি স্নাত রাতের
এক নিদারুণ দৃশ্যপট।
খানিক পরে মালুম করলাম পুড়ো
বাড়িটা যেন ভুতুরে বাড়ি লাগছে
কেমন যেন ফাঁকা ফাঁকা!
কানে শুনতে পেলুম দূরে কোথাও
বাদক দলের ব্যাণ্ড বাজছে।
একটু খেয়াল করে বুঝলাম৷ এবং কিছু লোকের
শোরগোল শুনতে পেলাম।
এতে করে যা বুঝলাম কোথাও কোন
অনুষ্ঠান চলছে।
লক্ষ্য করলাম আশ-পাশে যারা তখন ছিল
তাদের আবাসনগুলোও যেন
ফাঁকা ফাঁকা বলে মনে হতে লাগল।
ভাবলুম হয়ত এসব যা ভাবছি তার কিছুই না!
আবার বিছানায় গা এলিয়ে দিলাম।
অন্য বিছানায় শুয়ে থাকা অপলকে চেয়ে থাকা
এক কল্পিত মহিলার স্মৃতি আজ অনেক
বছর পরে হৃদয় মাঝে খানিকটা নাড়া দিল।
নাড়া দেয়ার সংগত কারণও ছিল
সময়ের ব্যবধানে এসে আজ যে শুধুই স্মৃতি!
সারারাত ধরে বৃষ্টির নৃত্য। বেশ লাগছিলো।
এবার ভগ্ন আচ্ছাদনে যা কিছু জুটেছিল
তা খেয়ে নিয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিতে
কখন যে ঘুমিয়ে গেলাম
নিজে কিছুই আর বুঝে উঠতে পারলুম না।
এক স্মরণীয় বৃষ্টি স্নাত রাত এভাবেই কেটে গেল!
বছর তের পেরিয়ে হয়ত পেরিয়ে গেছে
আর কিছুই ভেবে উঠতে পারছিনা!
No comments:
Post a Comment