Thursday, December 24, 2020

ওরা খালপাড়ে থাকে

ওরা খালপাড়ে থাকে


কৃষ্ণা দ্বাদশীর চাঁদ তখন মধ্যগগনে --
কুয়াশামাখা রাতের আদুল গায়ে হিমেল পরশ ,
বহুদিনের দাবদাহের জ্বালার অবসান ,
দু'হাত ছড়িয়ে উপভোগ করছে সময় ......

খালপাড়ের বস্তিতে একটুকরো বিছানায় 
জ্বরে পুড়ছে সাত বছরের শিশুপুত্র ,
শিয়রে বড় বোন -- বছর আটের ।
সন্ধ্যার অন্ধকারে গা ঢাকা দিয়ে
মা গিয়েছে কাজে --- অন্ধকার গলিপথে ,
যে পথে শহরের বিত্তবান বাবুরা
দু'চোখে কামনার আগুন ছড়িয়ে দাঁড়ায় ,
তাদের ঠোঁটের কোন বেয়ে গড়িয়ে পড়ে কষাটে লালসা ,
শরীর পেতে শুষে নিতে হয় তাদের ধর্ষকাম পৌরুষ
তারপর সন্তানধারণের যন্ত্রনায় ছুটে যেতে হয় বস্তিতে --

একফালি চাঁদের আলো তাদের জীবনে
পূর্ণিমা হয়ে আসেনা কখনো ,
পিতৃহীন অনাথ তর্পণে তাদের আহুতি হয় ,
রাতের অন্ধকারেই মিলিয়ে যায় তাদের পরিচয় ,
সভ্যতার আগুনের স্পর্শ 
উষ্ণতার আবেশ বয়ে আনে না তাদের জন্য

ভাঙা চালের ফাঁক দিয়ে পিছলে আসে
একফালি আকাঙ্ক্ষার রোদ্দুর ।
তাকেই আঁকড়ে ধরে শিশুমন ,
ভবিষ্যতের কল্পনায় বাড়ে ।

মায়ের মমতা আসে দিনান্তে ভাতের সুঘ্রাণে ।
একমুঠো ভাত , একটু রোদ্দুর তাদের প্রত্যাশার দর্পণ ।

ওরা যে খালপাড়ে থাকে ।

Wednesday, December 16, 2020

ভালোবাসার চাদর


ভালোবাসার চাদর

ভালোবাসায় মোড়া চাদর পেয়েছি এক
আরোহণ করেছি তাতে --
নীল আকাশে সাদা মেঘের মত
চাদর চলেছে আমাকে ভাসিয়ে নিয়ে ---
কত মাঠ-ঘাট , নদী-সাগর , পাহাড়-পর্বত ডিঙিয়ে
চাদর পৌছেছে এক মায়াবি জগতে
স্বর্ণালী আভায় পূর্ণ সে জগৎ ।

বর্তমানের কোলাহল-ক্রন্দন-বঞ্চনা-জিঘাংসা
স্তিমিত হচ্ছে ক্রমে ---
না-পাওয়ারা পূর্ণ হচ্ছে সব পেয়েছির দেশে ,
নিরাশার অন্ধকার ডুবে যাচ্ছে আশার আলোকে ,
মাঠ উপছে পড়ছে গর্ভবতী সোনালী ধানে ,
দু'হাতে গ্রহণ করছি অমৃত-প্রদায়ী কল্লোলিনীর অঞ্জলি ,
পাখির কুজনে কলরিত আত্মার সুজন ,
নিষ্পাপ ফুলের হাসিতে ঝরছে শিশুর সারল্য ,

ভাষাহীন ভাসমান ভেলা ভাসিয়ে চলেছে দূরে ---
অন্তহীন আশার খেয়াল-খুশির খুনশুঁটি গায়ে মেখে

সে যে আশার জগৎ , ভালোবাসার জগৎ
সীমাহীন ভালো লাগা হৃদয় জুড়ে ।