Sunday, March 31, 2024

প্রতিবাদী শব্দেরা তালাবন্ধ -- পরেশ চন্দ্র সরকার।

প্রতিবাদী শব্দেরা তালাবন্ধ
পরেশ চন্দ্র সরকার
২২_০৩_২০২৪_ইং

গতানুগতিক সৃজনীশক্তিরা মেরুদণ্ডে অন্ধ
প্রতিবাদী শব্দেরা 'বধির' জেলে তালাবন্ধ।

এক অর্থে বাহাদুরি
চলছে তাই সবসময়ই জ্ঞানদার জ্ঞান বাণী।
তুমি অচ্ছুৎ, ভীতু, কমজুরি,
কিছু ব'লেছো তো ঠুকে দেবো মানহানি।

ঝুঁকে যাওয়া বর্তমান
বিনষ্টের শেষ সোপানে দাঁড়িয়ে ঠায়,
এদের মধ্যে প্রচুর আছে শক্তিমান
অথচ একদা দাপুটে সর্বশক্তি গেছে কোমায়।

কে আর জড়াতে চায়
মৃত্যু থেকে উটকো যাবতীয় ঝামেলায়,
বেড়ালের গলায় ঘন্টা বাঁধার দায়
আমার নয় অন্যের, কেনো শুধু জড়ানো মামলায়?

এসময় আয়েসি, আয়েস ক'রার
ঘুরে বেড়াচ্ছি, জ্ঞান দিচ্ছি, খাচ্ছি ঘুমোচ্ছি দিব্যি!
মূষিক উপাধি খারাপ কিছু কি জীবনধারার?
মার্জার থাকুক স্বভাবসিদ্ধ, আমি তো আছি হেব্বি!

জীবনতরীর মাঝি -- দেব মন্ডল

  জীবনতরীর মাঝি
  দেব মন্ডল 
  ২২/০৩/২০২৪
কালবৈশাখী ঝড়ের কবলে, জীবন তরী দিক হারিয়ে লাগছে  কোন কিনারায়। 
এখন আকাশে মেঘ আছে, কবে আবার সূর্য উঠবে আমি কিন্তু জানি না। 
মাঝির হাতে বৈঠা দড়ি, যেমন চালায় তেমন চলি। 
কালো মেয়ে নৃত্য করে তাহার তালে জগত মাতে। 
সে যেমন চালায় তেমনি চলি, মা যে আমার রক্ষা কালি। 
সবাই বলে মাটির কালি আমি দেখি সে জীবন তরীর বড় মাঝি। 
চালাচ্ছে নৌকা দিবারাত্রি ভীষণ ভালো কলাকৌশালি। 
কারও ডুবিয়ে বাঁচায়, ডুবিয়ে মারে, পাপের ক্ষমা নাই করে। 
সন্তানের মতো রাখেন আগলে, খ্যাত তিনি জগত মাতা নামে। 
কালো দিয়ে হয় না বিচার, মায়ের কাছে রূপের  আছে কি  দাম। 
বিশ্বাস হারিয়ে ভুল নদীতে তুলেছিলাম  পাল। 
মাঝ নদাীতে ডুবে গেলো আমার সোনার নাও।
সে যেমনে নাচায় তেমনি নাচি অসৎতের সব সঙ্গ ছাড়ি, হিংসাবৃত্তি দূরে ফেলে, সকল ধর্ম সমান দেখে সামনে আগাই পা।  
ভাবি এখন, মানুষ আমি, মানুষের মাঝে বাঁচতে হবে, প্রকৃতিকে ভালোবাসতে হবে। 
ফিরতে হবে  বাংলার বুকে, রাখতে হবে শ্যামনগর, সাতক্ষীরার মান। 
তবেই জন্ম সার্থক হবে আমার।

খেলাঘর -- তপন চট্টোপাধ্যায়

খেলাঘর 
তপন চট্টোপাধ্যায় 
28.03.24   
    
 কতো কাল পর দেখলাম তোমার মুখ ,       
মেঘে ঢাকা শীর্ণ চাঁদের মতো নিস্প্রভ,
অঘ্রাণের ফসল কাটা মাঠের মতো রিক্ত,..                      অশ্বত্থের ডালে বসা রাতের আঁধার মাখা 
সাথীহারা পাখিটির বিহ্বল চোখের মতো ছিল 
তোমার চোখ ,মৃত নক্ষত্রের মতো আলোহীন শীতল,নিস্তেজ...,    
দেখলাম ব্যস্ততম শহরের চলমান জনতার স্রোতের মাঝে তুমি একাকিনী নিঃসঙ্গ বসে আছ যাত্রী প্রতীক্ষালয়ে,                                        
তোমার বিষণ্ণ মুখে দেখি  দীর্ঘ ক্লান্তির ছায়া--  
আষাঢ়ের শেষ বিকেলের কাজল কালো মেঘের মতো... মুখ মন্ডলে  এখনো লেগে আছে উৎকণ্ঠার  প্রলেপ , উপেক্ষা নয় আজ আর, হা-হুতোশ করারও কিছু নেই তবুও এক পরম অনুকম্পায় চোখের কোণ ভিজে উঠেছে  নিজের অজান্তেই ...                                        এরকমই হয়তো হবার ছিল , 
অদৃষ্টের কী নির্মম  পরিহাস!   
এই ব্যস্ততার জন অরণ্যে, দুই প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা দু'জন  মানুষ অথচ যেন  কতো আলোকবর্ষ দূরে আছি , আজ আর কেউ কারোর খোঁজ রাখে না ,
অথচ একদিন  ...,  থাক সে কথা,
নিষ্ঠুর সময়ের সংঘাতে পৃথিবীর ভাঙাগড়ার খেলায় এমনিভাবেই হয়তো ভেঙে যায় কারো কারোর জীবনের খেলাঘর!!

Sunday, March 17, 2024

তোমার নামে বসন্ত -- জয়া গোস্বামী


তোমার নামে বসন্ত
জয়া গোস্বামী
০৭-০৩-২০২৪
তোমার নামেই প্রতি বার যেন এ ঊষর মনে ,
বাসন্তিকা আসে বারেবারে কৃষ্ণচূড়া বনে।
তোমার জন্য চুপকথারা আবার কথা কয়,
কৃষ্ণচূড়া ফুলের রেণু ওদের অঙ্গে লেগে রয়। 

যৌবনের উদ্দামতায় বয়ে এসেছে  বসন্ত,
তোমাকে দেখে হারিয়ে ফেলি আমি আদি অন্ত।
মন-প্রাণ কেড়ে নেওয়া এসেছে ঋতুরাজ বসন্ত, 
কৃষ্ণচূড়া ফুলে কেশ সজ্জিত  মন কেন তবে অশান্ত?

তোমার জন্য সেজেছি আমি অপরূপার বেশে,
জোছনার ঝরনা ধারায় চন্দ্রিমা  দেখে আজ হাসে।
কবির গানে বসন্ত ধারায় ফিরে নিজেই আসে,
ধ্বনি ওঠে"এসো হে এসো হে" বসন্ত দখিনা বাতাসে।

এই আনমনা মন, মনের ভেতর  উঠেছে তরঙ্গ,
বাসন্তিকার প্রেমে গোধূলির রঙে দেখি কতোই রঙ্গ। 
তোমার জন্য  এনেছি আবির বাসন্তিকার থেকে,
যদি তোমার জন্য বসন্ত আসে কোকিলের ডাকে।

তোমার জন্য পুষ্পকাননে ভ্রমরের  সকালে গুঞ্জন,
প্রিয়তম বসন্তে করবো কেন বলো মানভঞ্জন ?
নব পল্লবে বৃক্ষরাজি আবার হয়েছে  আচ্ছাদিত, 
ঝরা পাতারা ঝরে আজ দেখো ভূমিতে শায়িত। 

তোমার জন্য তন্দ্রার ঘোর কেটেছে নিশীথ রাতে,
বাসন্তিকার  উষ্ণতা ছোঁয়া তোমার থেকে পেতে।
আমি তো দুরন্ত ফাল্গুন গোটা গায়ে তোমার পরশ মাখি,
কৃষ্ণচূড়া বনে কাঁদে কোকিল তাকে কোথায় রাখি।

Saturday, March 16, 2024

বসন্ত যাপন -- উজ্জ্বল বিশ্বাস

বসন্ত যাপন
উজ্জ্বল বিশ্বাস
 ১৬  / ০৩ / ২০২৪
বসন্ত কে ঘিরে ভাষার শরীরে
কবিরা মাখায় রঙ,
আঙিনার মাঝে নব প্রেম রাজে
শালিকের সমাগম ।

মধুর বাঁশরী কানাইয়া বাজায়
আজও রাধিকার তরে,
রঙের মাধুরী হৃদয়ে চাতুরী
সখারা ঘিরে ধরে ।

প্রেম আলাপন চকিত নয়ন
হৃদয় ফুটন্ত জুঁই,
ভালোবাসি তারে প্রেম বাহুডোরে
প্রেমের পরশে ছুঁই ।

বসন্তের ক্ষণে প্রেমিকের মনে
প্রেমের দোলা লাগে,
আম্র মুকুলের মাতালি ঘ্রাণে
হৃদয়ে বাসনা জাগে ।

রঙের ফাগুনে প্রেমিক যতনে
রাঙায় হৃদয় মন,
ভালোবাসা যার হৃদয় জুড়ে
সে বোঝে এ যতন  ।

নবপত্রাঞ্জলি প্রেমিকের বুলি
সবুজে প্রাণবন্ত,
হৃদয় কানন ফুল সমাগম
প্রেমিক সেজেছে সন্ত  ।

যা কিছু তার আছে আপনার
উজাড় করে দিতে চায়,
দেওয়ার মাঝে সব সুখ তার
হৃদয় খুঁজে পায়  ।

আমিও যতনে প্রেমিকের মনের
মাধুরী কুড়ায়ে আজি,
বসন্ত যাপনে ফাগুনের ক্ষণে
ভরিলাম কবিতার সাজি ।

Wednesday, March 6, 2024

অমর আমার একুশ -- সুখের ঘোড়ই

অমর  আমার একুশ 
সুখেন্দু  ঘোড়ই 
২১/২/২০২৪ 
মিষ্টি ছন্দ বৃষ্টি গন্ধ শুদ্ধ মুগ্ধ ভরসা 
মুক্তি শক্তি কৃষ্টি সৃষ্টি বাংলা মোদের মাতৃভাষা । 
বাংলা আমার বুকের ভাষা আমার মায়ের স্নেহ 
মরণ বাঁচন জীবন যাপন ভুলিতে পারিনা কেহ । 
এপারে গঙ্গা ওপারে পদ্মা দুই বাংলার টান 
নজরুল সুরে মোরা ভাই ভাই হিন্দু- মুসলমান । 
রিক্ত হস্ত সিক্ত করে ভাষার সুধা ধারায় 
তীব্র প্রতিবাদের কথায় শত্রু তাহার শক্তি হারায় । 
গভীর দুখে সুখের বাণী শুনি হৃদে কানাকানি 
বাংলা আমার মায়ের ছোঁয়া যতই করো হানাহানি । 
সেই ভাষাকে রক্ষার তরে দামাল ছেলেরা বিদ্রোহ করে 
শতবাধা উপেক্ষা করে মনে অদম্য সাহস ভরে । 
বাংলা মোদের মাতৃভাষা তাই হবে সে "রাষ্ট্রভাষা"
ফাগুন রাতে দামাল মাতে যতই হোক সর্বনাশা । 
একুশে ফেব্রুয়ারী হয় জোরদারী বাংলা স্বীকৃতি আন্দোলন 
অন্ধ বিচারে নির্বিচারে সিপাহী করিল গুলি বর্ষণ । 
কৃষ্ণচূড়া রঙে রাঙিল ভাসিয়া রাস্তা তাজা খুন 
করুণ কান্নায় ভোলা নাহি যায় সেই আটই ফাগুন । 
রক্ত বৃষ্টি ঝরিল ধরায় সালাম বরকত নিধনে 
রসিক জব্বার সফিক সাথে যায়না দেখা নয়নে । 
জ্বলিল আগুন চোখে মুখে সজন হারা ক্রন্দনে 
শহর নগর গ্রাম প্রান্তর ন্যায় অধিকার আন্দোলনে । 
শহীদ তোমায় শ্রদ্ধা জানায় ঢাকা কলকাতা পাশাপাশি 
গাহে"আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি" ।।