Thursday, October 25, 2018

চিঠি - তৃতীয় পর্ব

চিঠি - তৃতীয় পর্ব

না , বাবা সেদিন ফিরেছিলেন না । পরদিন দুপুর প্রায় দুটো নাগাদ বাবা ফিরেছিলেন । সেদিনটা কোনো একটা পর্ব উপলক্ষ্যে স্কুল ছুটি ছিল । আমি দুপুরে খেয়ে দেয়ে ঘরেই ছিলাম । বাবর ডাকে একছুটে বাইরে এসে দাঁড়ালাম । কিন্তু বাবার সাথে ঐ মেয়েটি কে ? ইতিমধ্যে বাবা আমার হাতে একটা ব্যাগ ধরিয়ে দিয়েছে । আমিও আনন্দে নাচতে নাচতে ঘরে ঢুকলাম ।
পরে জেনেছিলাম ঐ মেয়েটি আমার বাবার কেমন সম্পর্কের ভাগ্নী হয় ।  আমার থেকে বছর পাঁচ সাতেকের বড় হবে । রঙটা ফর্সার দিকেই । দেখতে খুব সুন্দর না হলেও খারাপ নয় । কয়েকদিনের মধ্যেই ওর সঙ্গে বেশ ভাব হয়ে গেল ।
শান্তিপুরে সুহানীদির এক কাকা থাকতেন । দিদি এখানে আসার পর কাকা প্রায়ই এসে ওকে নিয়ে যেতেন । এভাবে বছর পাঁচ সাত কেটে গেল । এখন দিদি দেখতে আরো সুন্দরী হয়েছে । যৌবনের পরশে তার দেহ মন সতেজ সরস । আমিও তখন কিশোরী লাজুক লতা । কাজেই দিদির সাথে আমার হৃদ্যতা আগের তুলনায় অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে ।
আগেই বলেছি শান্তিপুরে দিদির কাকার বাড়িতে দিদি মাঝে মাঝেই বেড়াতে যেত । ইদানিং দিদি দুদিন পরপরই আমাকে কাকার বাড়ির কথা বলতে লাগল ।
এরকম বেশ কিছুদিন চলার পর একদিন কাকার বাড়ি থেকে ঘুরে এসে দিদি আমার কানে কানে বলল - একটা জিনিস দেখবি ?
- কি জিনিস ?
- এদিকে আয় । আমার হাত ধরে টানতে টানতেআমার পড়ার ঘরে নিয়ে গেল । হাতে ওর পার্সটা । ঘরে ঢুকে প্রথমে দরজার পর্দাটা ভালো করে টেনে দিল । মৃদু মৃদু হাসতে হাসতে পার্সটা খুলে আমার হাতে ভাজ করা একটা কাগজ দিয়ে রহস্যজনকভাবে হাসতে লাগল । 
- কি এ ?
- খুলে দেখনা ।

আগ্রহের আতিশয্যে ভাঁজ খুলে ফেললাম । একটা চিঠি । দিদির নামে । ইতি - বিনয় । 
- বিনয় কে ?
-  আঃ পড়ে দেখনা ।

আমি রূদ্ধশ্বাসে চিঠিটা পড়তে লাগলাম । দিদি তখন আমার টেবিলক্লথের কোনাটা আঙুলে জড়াচ্ছে আর খুলছে । মুখটা ভারী অদ্ভুত । দিদির এরকম মুখ আমি আগে কখনো দেখিনি ।

No comments: